শ্রেণী | দশম শ্রেণী (মাধ্যমিক) |
বিষয় | মাধ্যমিক বাংলা |
কবিতা | সিন্ধুতীরে (Sindhutire) |
লেখক | সৈয়দ আলাওল |
- ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটির রচয়িতা –
(A) মালিক মুহম্মদ জায়সী
(B) সৈয়দ আলাওল
(C) মাগন ঠাকুর
(D) খদোমিস্তা
Ans: (B) সৈয়দ আলাওল
- ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যের মূল গ্রন্থ ‘ পদুমাবৎ ‘ কাব্যের রচয়িতা –
(A) মালিক মুহম্মদ জায়সী
(B) মাগন ঠাকুর
(C) সৈয়দ আলাওল
(D) দোমিস্তা
Ans: (A) মালিক মুহম্মদ জায়সী
- ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?
(A) লোরচন্দ্রাণী
(B) পদ্মাবতী
(C) সতীময়না
(D) তোহফা
Ans: (B) পদ্মাবতী
- ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের যে – খণ্ড থেকে ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশটি গৃহীত , সেটি হল—
(A) পদ্মা সমুদ্র খণ্ড
(B) লক্ষ্মী সমুদ্র খণ্ড
(C) পদ্মাবতী রত্নসেন খণ্ড
(D) রত্নসেন বন্ধন খণ্ড
Ans: (A) পদ্মা সমুদ্র খণ্ড
- সৈয়দ আলাওল যে – সময়কার কবি , তা হল –
(A) সপ্তদশ শতক
(B) ষোড়শ শতক
(C) অষ্টাদশ শতক
(D) ত্রয়োদশ শতক
Ans: (A) সপ্তদশ শতক
- ‘ দিব্য পুরী ‘ শব্দটির অর্থ হল –
(A) সুন্দর প্রাসাদ
(B) শপথ নিলাম
(C) সুন্দর বাগান
(D) দৈব মহিমা
Ans: A) সুন্দর প্রাসাদ
- ‘ দিব্য পুরী ‘ ছিল—
(A) জলের মাঝারে
(B) পিতৃপুরে
(C) সমুদ্র মাঝারে
(D) উদ্যানের মাঝে
Ans: C) সমুদ্র মাঝারে
- ‘ সমুদ্রনৃপতি সুতা কে ?
(A) লক্ষ্মী
(B) পদ্মা
(C) উমা
(D) বারুণী
Ans: (B) পদ্মা
- ‘ প্রত্যুষ ‘ শব্দের অর্থ হল –
(A) রাত্রি
(B) দ্বিপ্রহর
(C) অপরাহ্ণ
(D) ভোর
Ans: (D) ভোর
- ‘ তুরিত গমনে আসি’— তুরিত গমনে এসেছেন—
(A) সখীগণ
(B) পদ্মা
(C) আলাওল
(D) সমুদ্রনৃপতি
Ans: (B) পদ্মা
- ‘ মধ্যেতে যে কন্যাখানি ‘ সে ছিল –
(A) সংজ্ঞাহীন
(B) আনন্দিত
(C) স্নেহপ্রবণ
(D) নিরাশ
Ans: (A) সংজ্ঞাহীন
- ‘ বিস্মিত হইল বালা ‘ — ‘ বালা ‘ শব্দের অর্থ হল –
(A) সখী
(B) সঙ্গিনী
(C) কন্যা
(D) দুখিনি
Ans: C) কন্যা
- ‘ অনুমান করে নিজ চিতে— সে অনুমান করেছিল যে—
(A) মেয়েটি হল দেবী
(B) মেয়েটি হল পরি
(C) মেয়েটি হল রাজকন্যা
(D) মেয়েটি হল বিদ্যাধরি
Ans: (D) মেয়েটি হল বিদ্যাধরি
- বিদ্যাধরি স্বর্গভ্রষ্ট হতে পারত—
(A) ইন্দ্রের অভিশাপে
(B) স্বেচ্ছায়
(C) মুনির অভিশাপে
(D) অসাবধানতায়
Ans: (A) ইন্দ্রের অভিশাপে
- ‘ ভাঙ্গিল প্রবল বাও’— ‘ বাও ‘ শব্দের অর্থ হল –
(A) প্রণাম
(B) বজ্ৰ
(C) বায়ু
(D) আঘাত
Ans: C) বায়ু
- ‘ আছয় ‘ শব্দের গদ্যরূপ হল –
(A) আশ্রয়
(B) ছয় সংখ্যা
(C) ছন্নছাড়া
(D) আছে
Ans: (D) আছে
- ‘ চিকিৎসিমু ‘ শব্দের গদ্যরূপ হল—
(A) চিকিৎসা করব
(B) চিকিৎসক
(C) চিকিৎসিত
(D) চিকিৎসা
Ans: (A) চিকিৎসা করব
- কৃপা কর — পদ্মা যাঁর কৃপা চাইছেন , তিনি হলেন—
(A) সমুদ্রনৃপতি
(B) মাগনগুণী
(C) নিরঞ্জন
(D) ইন্দ্র
Ans: (C) নিরঞ্জন
- ‘ সখী সবে আজ্ঞা দিল – আজ্ঞা যে দিল , সে হল –
(A) পদ্মা
(B) বিদ্যাধরী
(C) মনোরমা
(D) আলাওল
Ans: (A) পদ্মা
- অচেতন কন্যাদের সংখ্যা ছিল —
(A) পাঁচ
(B) ছয়
(C) চার
(D) তিন
Ans: (A) পাঁচ
- অচেতন পঞ্চকন্যাকে সারিয়ে তোলা হল –
(A) ফল – মূল দিয়ে
(B) তন্ত্র – মন্ত্র – মহৌষধি দিয়ে
(C) কন্দ – শিকড় দিয়ে
(D) ভেষজ ওষুধ দিয়ে
Ans: (B) তন্ত্র – মন্ত্র – মহৌষধি দিয়ে
- শ্ৰীযুত মাগন ’ হলেন –
(A) পদ্মার পিতা
(B) আলাওলের পৃষ্ঠপোষক
(C) ইন্দ্ৰ
(D) মোহন্ত
Ans: (B) আলাওলের পৃষ্ঠপোষক
- ‘ হীন আলাওল সুরচন ।’— কাব্যের মধ্যে কবির আত্মপরিচয় দানের এই রীতিকে বলে—
(A) গৌরচন্দ্রিকা
(B) উপসংহার
(C) উপস্থাপনা
(D) ভনিতা
Ans: (D) ভনিতা
- ‘ সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস ।’— ‘ মাঞ্জুস ’ শব্দটির অর্থ –
(A) ভেলা
(B) জাহাজ
(C) লহর
(D) বজরা
Ans: (A) ভেলা
25.‘ বিদ্যাধরি ’ আসলে কে ?
(A) ইন্দ্রের সভার নৃত্যশিল্পী
(B) ব্রহ্মার মানসকন্যা
(C) ইন্দ্রের সভার বাচিক শিল্পী
(D) ইন্দ্রের সভার গায়িকা
Ans: (D) ইন্দ্রের সভার গায়িকা
- ‘ বাহুরক কন্যার জীবন ।’— এক্ষেত্রে ‘ কন্যা ‘ কে ?
(A) বিদ্যাধরি
(B) পদ্মাবতী
(C) অপ্সরা
(D) পদ্মা
Ans: (B) পদ্মাবতী
- “ সিন্ধুতীরের উপরের পর্বত ছিল—
(A) পশুপাখিতে ভরা
(B) জনমানুষে পূর্ণ
(C) ফল ফুলে সজ্জিত
(D) ঘরবাড়িতে পূর্ণ
Ans: (C) ফল ফুলে সজ্জিত
- ‘ অতি মনোহর দেশ ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে –
(A) সিংহলকে
(B) চিতোরকে
(C) সমুদ্রকে
(D) সমুদ্র পার্শ্ববর্তী পার্বত্য অঞ্চলকে
Ans: (D) সমুদ্র পার্শ্ববর্তী পার্বত্য অঞ্চলকে
- ‘ তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি …’- টঙ্গি ‘ শব্দের অর্থ –
(A) টালি
(B) গাছপালা
(C) তিরধনুক
(D) প্রাসাদ
Ans: (D) প্রাসাদ
- ‘ কন্যারে ফেলিল যথা …’- এই ‘ কন্যা ‘ হলেন –
(A) রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতী
(B) পদ্মাবতীর পঞ্চম সখী
(C) রত্নসেনের কন্যা পদ্মাবতী
(D) সমুদ্রকন্যা পদ্মা
Ans: (C) রত্নসেনের কন্যা পদ্মাবতী
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | সিন্ধুতীরে (কবিতা) সৈয়দ আলাওল – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Sindhutire Question and Answer :
- ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটির রচয়িতা কে ?
Ans: সপ্তদশ শতকে আরাকান রাজসভার কবি সৈয়দ আলাওল ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি রচনা করেন ।
- সৈয়দ আলাওল কোন্ রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন ?
Ans: সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন ।
- ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যগ্রন্থের ‘ পদ্মা সমুদ্র ’ খণ্ড ( ৩৫ – তম ) থেকে গৃহীত ।
- আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যগ্রন্থটি কোন্ কাব্যের অনুসরণে রচিত ?
Ans: আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যগ্রন্থটি হিন্দি কবি মালিক মুহম্মদ জায়সী রচিত ‘ পদুমাবৎ ‘ কাব্যের অনুসরণে রচিত ।
- পাঠ্য হিসেবে নির্বাচিত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের কোন খণ্ড থেকে নেওয়া হয়েছে ?
Ans: পাঠ্য হিসেবে নির্বাচিত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের ‘ পদ্মা সমুদ্র ‘ নামক ৩৫ – তম খণ্ড থেকে নেওয়া হয়েছে ।
- ‘ পদ্মা সমুদ্র ’ খণ্ড থেকে গৃহীত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি কোন ছন্দে লেখা ?
Ans: সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের ‘ পদ্মা সমুদ্র ‘ গণ্ড থেকে গৃহীত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি ত্রিপদী ছন্দে রচিত ।
- দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার ।— “ দিবা পুরী ‘ – র বৈশিষ্ট্য কী ছিল ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় ‘ দিব্য পুরী ‘ বলতে এক অতিমনোহর নগরীর কথা বলা হয়েছে । সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট নেই , সর্বদা সত্যধর্ম ও সৎ – আচরণ পালিত হয় ।
- ‘ সমুদ্রনৃপতি সুতা ’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?
Ans: আলাওল তাঁর ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতায় ‘ সমুদ্রনৃপতি সুতা ’ অর্থাৎ সমুদ্ররাজের কন্যা বলতে , পদ্মা নামের এক গুণবতী কন্যাকে বুঝিয়েছেন । ‘ জায়সী ‘ – র লেখা মূল কাব্যে অবশ্য এঁর নাম ‘ লক্ষ্মী ।
- ‘ সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান ।’— স্থানটিকে ‘ দিব্যস্থান বলা হয়েছে কেন ?
Ans: আলাওলের ‘ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় সমুদ্রের নিকটস্থ নগরটিকে ‘ দিব্যস্থান ’ বলা হয়েছে নগরটির সৌন্দর্য , মানুষের দুঃখকষ্টহীনতা , সত্যধর্ম ও সৎ – আচরণ পালনের জন্য । নগরটির সৌন্দর্য স্বর্গের উদ্যানের সঙ্গে তুলনীয় ।
- ‘ তার পাশে রচিল উদ্যান ।। -কে , কীসের পাশে উদ্যান রচনা করল ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অবলম্বনে , সমুদ্রের তীরে অবস্থিত , সৌন্দর্যময় মনোরম নগরীতে যে – সুউচ্চ পর্বত অবস্থিত , সমুদ্রকন্যা পদ্মা তার পাশে উদ্যান রচনা করেছিলেন ।
- ‘ তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ ।।— ‘ তথা ” বলতে কোন্ স্থানের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশ থেকে গৃহীত আলোচ্য অংশে ‘ তথ্য ‘ বলতে সমুদ্রকন্যা পদ্মার নিজের হাতে রচিত উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত রত্নখচিত উচ্চ টঙ্গি অর্থাৎ রাজপ্রাসাদের কথা বলা হয়েছে ।
- প্রত্যুষ কালে পদ্মা কী করতেন ?
Ans: সিন্ধুতীরে কবিতায় , সমুদ্রকন্যা পদ্মা পিতৃগৃহে হেসে – খেলে সুখে রাত্রিযাপন করতেন এবং প্রত্যুষে অর্থাৎ খুব সকালে সখীদের সঙ্গে নিয়ে নিজের তৈরি বাগানে ভ্রমণ করতেন ।
- ‘ ডুরিত গমনে আসি – তুরিত গমনে এসে পদ্মা কী দেখতে পেলেন ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতানুসারে ভোরবেলা সখীসহ বাগানে বেড়ানোর সময় পদ্মা সমুদ্রতীরে একটি ভেলা দেখতে পেয়ে দ্রুত সেখানে । পৌঁছে ভেলায় অচৈতন্য পাঁচ কন্যাকে দেখতে পেলেন ।
- ‘ মধ্যেতে যে কন্যাখানি কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা উদ্যান – ভ্রমণে এসে সংজ্ঞাহীন পঞ্চকন্যার মধ্যে স্বর্গের অপ্সরার মতো সুন্দর সিংহল – রাজকন্যা পদ্মাবতীকে আবিষ্কার করলেন । এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে ।
- ‘ দেখিয়া রূপের কলা / বিস্মিত হইল বালা / অনুমান করে নিজ চিতে ।’— ‘ বালা ‘ কী অনুমান করেছিল ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অনুসারে , সংজ্ঞাহীন অপরুপা কন্যাটিকে দেখে , সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেছিলেন যে , হয়তো বা দেবরাজ ইন্দ্রের অভিশাপে কোনো বিদ্যাধরি স্বর্গর্ভন্ট হয়ে পৃথিবীতে এসে পড়েছেন কিংবা সামুদ্রিক ঝড়ের প্রকোপে এই অবস্থা ।
- পদ্মা আর কী অনুমান করেছিল ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অনুসারে , সমুদ্রকন্যা পদ্মা ভেবেছিলেন যে , হয়তো প্রবল ঝড়ের প্রকোপে সমুদ্রের বুকে নৌকাডুবি হয়ে পঞ্চকন্যা সমুদ্রপীড়ায় আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছেন ।
- ‘ সখী সবে আজ্ঞা দিল— সখীদের পদ্মা কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন ?
Ans: আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় উদ্যানে ভ্রমণকালে সংজ্ঞাহীন পঞ্চকন্যাকে দেখে পদ্মা তাঁর সখীদের সেই পঞ্চকন্যাকে বসনে ঢেকে উদ্যানে আনার আদেশ দেন ।
- পদ্মা ও তাঁর সখীরা পঞ্চকন্যার কী চিকিৎসা করেছিলেন ?
Ans: ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতায় পদ্মা ও তাঁর সখীরা অচৈতন্য পঞ্চকন্যাকে মাথায় ও পায়ে গরম সেঁক দেন । পদ্মা তাঁর অর্জিত বিদ্যাবলে তন্ত্রমন্ত্র ও মহৌষধি দিয়ে তাদের চিকিৎসা করেন ।
- ‘ পঙ্খকন্যা পাইলা চেতন / – পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেল ?
Ans: আলাওল রচিত ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশের বর্ণনা অনুযায়ী , সমুদ্রকন্যা পদ্মা ও তার সখীদের বহু যত্ন ও মন্ত্র – তন্ত্র – মহৌষধি সহযোগে । চার দণ্ডব্যাপী চিকিৎসার ফলে পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পেল ।
- ‘ শ্রীযুত মাগন গুণী — আলাওল তাঁর কবিতার শেষে মাগনের নামোল্লেখ করেছেন কেন ?
Ans: কবি সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার অমাত্য মাগন ঠাকুরের আদেশে ‘ পদ্মাবতী ‘ রচনা শুরু করেন । তাই সেকালের মধ্যযুগীয় সাহিত্যরীতি অনুসারে তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে কবিতার শেষে মাগন ঠাকুরের নামোল্লেখ করা হয়েছে ।
- ‘ কন্যারে ফেলিল যথা- কন্যাকে কোথায় ফেল হল ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কাব্যাংশটি ‘ পদ্মাবত কাব্যের অন্তর্গত । এখানে কন্যাটি হল সিংহলরাজ গন্ধর্বসেনের কন এবং চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী । রাজা রত্নসেন সমুদ্রে মধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়ে সব হারান । তখন তিনি স্ত্রী পদ্মাবতীস চারসখীকে একটি মান্দাসে তুলে দিয়েছিলেন । মান্দাস প্রবল ঢেউয়ে ভাসে ভাসতে তটভূমিতে আছড়ে পড়েছিল ।
- ‘ অতি মনোহর দেশ— দেশটিকে মনোহর বলা হয়েছে কেন ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতা অনুসারে সমুদ্রসংল দেশ বা নগরীটি স্বর্গীয় এবং অলৌকিক বৈচিত্র্যে ভরা । সেখানকার মানুষদের কোনো দুঃখ বা দুর্দশা নেই আর সকলে সৎ – ধর্মাচরণ করে ।
- ‘ তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ । কন্যার বসবাসের জায়গাটি কেমন ছিল ?
Ans: 11 নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো ।
- ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় উল্লিখিত দেশটিতে কী নেই ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় ‘ সমুদ্র মাঝার ‘ – এ উল্লিখিত দেশটিতে মানুষের কোনো দুঃখদুর্দশা কিংবা কষ্ট ছিল না ।
- ‘ তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি’— ‘ টঙ্গি ‘ শব্দের অর্থ কী ?
Ans: প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশ থেকে গৃহীত । ‘ টঙ্গি ’ শব্দের অর্থ হল প্রাসাদ ।
- ‘ সিন্ধুতীরে কবিতায় দুজন নারীকে ‘ কন্যা ’ বলা হয়েছে , সেই দুই কন্যা কে কে ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশে , দুই কন্যার একজন হলেন চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী এবং আরেকজন হলেন সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা । ‘ নিপতিতা চেতন রহিত ।
- কে , কোথায় চেতনা হারিয়েছে ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যাংশ অনুসারে রাজা রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী মান্দাসে শুয়ে ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে সমুদ্রতীরবর্তী এক স্থানে এসে চেতনা হারিয়েছিলেন ।
- ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটি কোন সময়ের বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন ?
Ans: কবি সৈয়দ আলাওল আনুমানিক ১৬৪৫ থেকে ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যটি রচনা করেন । পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশটি ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত । সুতরাং , এটি সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন ।
- ‘ মোহিত পাইয়া সিন্ধু – ক্লেশ ।।- ‘ সিন্ধু – ক্লেশ ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতা অনুসারে , অচেতন পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মার মনে হয়েছিল সমুদ্রঝড়ে আক্রান্ত হয়ে নৌকাডুবি হওয়ার ফলে , সামুদ্রিক পীড়া বা সিন্ধু – ক্লেশের ফলে তিনি জ্ঞান হারিয়েছেন ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | সিন্ধুতীরে (কবিতা) সৈয়দ আলাওল – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Sindhutire Question and Answer :
1.. ‘ কন্যারে ফেলিল যথা— কন্যার পরিচয় দাও । তাকে যেখানে ফেলা হয়েছিল , সেই স্থানটি কীরুপ ছিল ?
Ans: সপ্তদশ শতকের আরাকান রাজসভার কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যের থেকে গৃহীত ‘ সিন্ধুতীরে ’ নামক পদ্যাংশ থেকে কন্যার পরিচয় আলোচ্য অংশটি উদ্ধৃত । কাব্যের মুখ্য চরিত্র পদ্মাবতীকেই এখানে ‘ কন্যা ‘ বলে সম্বোধন করা হয়েছে । পদ্মাবতী ছিলেন সিংহল রাজদুহিতা । ইতিহাস ও লোকশ্রুতি অনুসারে এই পদ্মাবতী পরবর্তীকালে চিতোরের রানা রত্নসেনের দ্বিতীয় পত্নীর মর্যাদা লাভ করেন ।
পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অনুসারে পদ্মাবতী সমুদ্রের তীরে যেখানে পড়েছিলেন , সেখানে একটি অনন্য সৌন্দর্যময় নগরী অবস্থিত । সেখানে দুঃখদুর্দশার লেশ মাত্র নেই । ন্যায় , সত্যধর্ম ও সদাচা সেখানে সর্বদা বিরাজমান । সেই সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে পর্বত সমীপে সমুদ্ররাজ ও তাঁর কন্যার বাসস্থান । সমুদ্র – অধিপতি – কন্যা পদ্মা স্থানটির বর্ণনা CAR সেখানে এক উদ্যান রচনা করেছিলেন । নানা সৌন্দর্যময় ও সুগন্ধি ফুলে সে – উদ্যান সুরভিত । সেইসব ফুলের সৌরভ মূল্যবান সুগন্ধির চেয়েও সুগন্ধময় । সমুদ্রসুতার এই উদ্যানটি বিভিন্ন ধরনের সুলক্ষণযুক্ত বৃক্ষে পরিপূর্ণ । এইখানে মণিমাণিক্যখচিত প্রাসাদে রাজকন্যা বসবাস করতেন । হতচেতন পদ্মাবতী তাঁর সখীসহ এখানে এসে পড়েছিলেন ।
2. সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্যের ঐতিহাসিক ও সাহিত্যিক পরিপ্রেক্ষিত আলোচনা করো ।
Ans: মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি সৈয়দ আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ । এই কাব্যটি ‘ হিন্দি – অবধি ‘ ভাষার কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত ‘ পদুমাবৎ ‘ কাব্যের ভাবানুবাদ । আলাওল তাঁর কাব্যকে অবলম্বন করে বাংলা ভাষায় পয়ার – ত্রিপদী ছন্দে ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্য রচনা করেন । ‘ পদ্মাবতী ’ মৌলিক কাব্য না হলেও আলাওলের লেখনীর গুণে মৌলিকত্ব লাভ করেছে । এর কাহিনি রাজপুত ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত । তাই হিন্দুসমাজ ও জীবনের গল্পই এতে প্রাধান্য লাভ করেছে । মুহম্মদ জায়সীর ‘ পদুমাবৎ ‘ রচনার প্রায় একশো বছর পর কবি আলাওল আরাকানে ‘ পদ্মাবতী ‘ রচনা করেন । আরাকানে মগরাজা থদোমিস্তার রাজত্বকালে সৈয়দ আলাওল নিজের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটিয়েছিলেন । রাজা থদোমিস্তার মৃত্যুর পর তাঁর এক পুত্র ও এক কন্যা যুগ্মভাবে শাসনকার্য চালাতে থাকেন । এই কন্যার প্রধান অমাত্য ছিলেন মাগন ঠাকুর , যাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় মূলত ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্য রচিত হয় । আলাওলের প্রতিভায় মুগ্ধ মাগন ঠাকুরের নির্দেশেই তিনি ‘ পদ্মাবতী ’ রচনায় উদ্যোগী হন । তবে জায়সীর কাব্য প্রধানত অধ্যাত্মতত্ত্বের ব্যাখ্যা হলেও আলাওল মোটেই সে – পথে হাঁটেননি । বরং তিনি এক অসামান্য মানবীয় প্রেমকাব্য রচনা করেছেন । মধ্যযুগের ধর্মভাব – ভারাক্রান্ত কাব্যিক পরিমণ্ডলে দাঁড়িয়ে আলাওল মানবিক প্রেমের জয়গান গেয়েছেন । এখানেই তাঁর অনন্যতা ও স্বাতন্ত্র্য ।
3. ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ – র নাম কী ? ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতা অবলম্বনে ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ – র চরিত্র আলোচনা করো ।
Ans: মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে অন্যতম ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ – র কবি সৈয়দ আলাওল । তাঁর ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্য থেকে গৃহীত আমাদের পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশে ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ হলেন পদ্মা । নাম ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ – র চরিত্র আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্য থেকে ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটি গৃহীত হলেও এখানে কবি পদ্মাবতী অপেক্ষা সমুদ্রনৃপতিকন্যা পদ্মার ওপরই বেশি করে আলোকপাত করেছেন । কবি যে – পদ্মার কথা বলেছেন তিনি গুণযুক্তা , সৌন্দর্যপ্রিয় , কৌতূহলী , উদার , পরদুঃখে কাতর , সেবাপরায়ণা অর্থাৎ এককথায় সর্বগুণসম্পন্না নারী ।
> সৌন্দর্যপ্রিয় ও প্রকৃতিপ্রেমী : সমুদ্রের মাঝে মনোহর দ্বীপ দেখে সেখানে তিনি সুন্দর উদ্যান ও রত্নখচিত প্রাসাদ গড়ে তোলেন এবং সেখানেই তিনি সর্বদা থাকতেন । এর থেকে তাঁর সৌন্দর্যপ্রিয়তা ও প্রকৃতিপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায় ।
> কৌতূহলী সদাহাস্যময়ী পদ্মা উদ্যানে ভ্রমণকালে সমুদ্রতীরে ভেলা দেখে কৌতূহলী হয়ে পড়েন । এই কৌতূহলের বশবর্তী হয়েই তিনি সেখানে গিয়ে পদ্মাবতীসহ পাঁচকন্যাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন ।
> সেবাপরায়ণ শুধু উদ্ধার নয় তিনি তাঁর সেবাপরায়ণতা গুণের দ্বারা তাদের যথাসাধ্য সেবাশুশ্রুষার ব্যবস্থাও করেন । > উদারমনা ও পরোপকারী : তিনি অকপটে অপরূপা সুন্দরী নারী পদ্মাবতীর সৌন্দর্যের তারিফ করে তাঁর উদার মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছেন । তাঁর তন্ত্রমন্ত্র , মহৌষধ ইত্যাদি প্রয়োগে পঞ্চকন্যার চেতনা এ ছাড়াও পদ্মার মায়া – মমতা , বাস্তববুদ্ধি এবং ঈশ্বরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস তাঁকে পাঠকের কাছে আরও বেশি করে আদৃত করেছে ।
4. তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ । ” – কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে ? কন্যা কোথায় এবং কেন সর্বক্ষণ থাকে ?
Ans: মধ্যযুগীয় দেবনির্ভর সাহিত্য থেকে বাংলা সাহিত্যের মুক্তি ঘটাতে এবং তাকে মানবিক করে তুলতে আরাকান রাজসভার কবি সাহিত্যিকদের অবদান অনস্বীকার্য । আলাওল এই কন্যার পরিচয় অন্যতম কবি । আমাদের পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটি তাঁর ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অংশ – বিশেষ । এখানে কন্যা বলতে ‘ সমুদ্রকন্যা ‘ পদ্মার কথা বলা হয়েছে । রাজসভার কন্যা কোথায় এবং কেন সর্বক্ষণ থাকে
→ কবি আলাওল সিন্ধুতীরের যে অংশে পদ্মাবতী অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল সেখানকার এক সুন্দর বর্ণনা তুলে ধরেছেন । ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ পদ্মা এখানেই তার বাসস্থান গড়ে তোলেন । অপরূপ সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য স্থানটিকে দিব্যভূমির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে । সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না । ছিল শুধু সদ্আচরণ ও সত্যধর্ম পালনের অভ্যাস । সেই দিব্যভূমির উপরের দিকে ছিল এক পর্বত । সেখানেই । সমুদ্রকন্যা পদ্মা এক উদ্যান তৈরি করেন । যে – উদ্যানে ফল ও ফুলের প্রাচুর্য ছিল । নানান ফুলের সুগন্ধে বাগানটি ভরে থাকত । এরই মাঝে পদ্মা রত্নশোভিত বিচিত্র প্রাসাদ গড়ে তোলেন । এইরূপ অপরূপ রূপময় সৌন্দর্যপূর্ণ স্থান পরিত্যাগ করতে কারই বা ভালো লাগে । তাই পদ্মাও সমুদ্রতীরের সেই দিব্যস্থান ত্যাগ না করে সেখানেই সর্বক্ষণ থাকেন ।
5. ‘ পঞ্চকন্যা পাইল চেতন / – পঞ্চকন্যা কাদের বলা হয়েছে । পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেয়েছিল ?
Ans: আমাদের পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটি সৈয়দ আলাওল রচিত পঞ্চকন্যা কারা ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অংশ – বিশেষ । এই কবিতায় পণকন্যা বলতে সিংহল রাজকন্যা ‘ পদ্মাবতী ‘ ও তার চার সখীকে ( চন্দ্রকলা , বিজয়া , রোহিণী , বিষন্নলা ) বোঝানো হয়েছে ।
প্রাতঃকালে ভ্রমণরতা পদ্মা সমুদ্রতীরে ভেলায় চার সখীসহ অপরূপ পদ্মাবতীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান । তাদের বসন ও কেশ বিন্যাস দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল সমুদ্রের প্রবল ঝড়ে তাদের এই অবস্থা । মমতাবশত পদ্মা তাদের পরীক্ষা করে দেখেন যে , তাদের মধ্যে সামান্যতম শ্বাস বর্তমান । স্নেহময়ী পদ্মা বিধাতার ওপর বিশ্বাস রেখে দেবতার কাছে অচৈতন্য পঞ্চকন্যার জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করেন । তিনি দেবতার কাছে এও অঙ্গীকার করেন যে , তিনি এই কন্যাদের প্রাণপণে চিকিৎসা করবেন । সেইমতো সখীদের তিনি নির্দেশও দেন । সঙ্গীরা পঞ্চকন্যাকে কাপড়ে ঢেকে উদ্যানের মাঝে আনেন । তারপর তাদের মাথায় ও পায়ে গরম সেঁক দেওয়া হয় , এ ছাড়া মন্ত্র – তন্ত্র – মহৌষধ সব কিছুই প্রয়োগ করা হয় । এইভাবে চারদণ্ড চলার পর পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পান ।
6. ‘ দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা / অনুমান করে নিজ চিতে ‘ — ‘ বালা ‘ শব্দের অর্থ কী ? তার বিস্মিত হওয়ার কারণ কী ? তাকে দেখে বক্তার কী মনে হয়েছিল ?
Ans: সপ্তদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ কাব্য থেকে আমাদের পাঠ্য ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটি গৃহীত । এখানে ‘ বালা ’ শব্দের অর্থ ‘ কন্যা ‘ । কবিতায় সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মাকে বোঝানো হয়েছে ।
সমুদ্রকন্যা পদ্মা সমুদ্রতীরে ভেলায় চার সখী পরিবৃতা এক অপরূপা বিস্মিত হওয়ার কারণ সুন্দরী রমণীকে দেখেছিলেন । তাকে দেখে তাঁর রম্ভা অর্থাৎ স্বর্গের অপ্সরা বলে মনে হয় এবং তিনি তার রূপে বিস্মিত হন । বস্তার প্রতিক্রিয়া → সখী পরিবৃতা অচৈতন্য পদ্মাবতীর রূপ – লাবণ্য দেখে পদ্মা তাকে স্বর্গের অপ্সরার সঙ্গে তুলনা করেন এবং বিস্মিত হন । তিনি এও চিন্তা করেন যে , কন্যা বুঝি স্বর্গের গায়িকা বিদ্যাধরি । ইন্দ্রের শাপে হয়তো স্বর্গ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছেন । তার ( তাদের ) অচৈতন্য অবস্থায় অপলক চাহনি , পরনের কাপড় ও মাথার চুলের অবিন্যস্ত অবস্থা দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মার মনে হয় এই কন্যারা প্রবল সমুদ্র ঝড়ের মুখে পড়েছিল । তাই হয়তো তাদের নৌকা ভেঙে গিয়েছিল কিংবা সমুদ্রপীড়ায় কাবু হওয়ার ফলে তাদের এই অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে । অচৈতন্য পদ্মাবতীকে পরীক্ষা করার সময় পদ্মার মনে হয়েছে অপূর্ব সুন্দরী কন্যা যেন পটে আঁকা ছবি ।
7. ‘ সিন্ধুতীরে ’ কবিতাটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের অন্যতম সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অংশ বিশেষ ‘ সিন্ধুতীৱে ‘ কবিতাটি শুরু হচ্ছে সিংহল – রাজকন্যা পদ্মাবতী ও তার চার সখীর সমুদ্রের জলে পতন ও সমুদ্রবক্ষে অবস্থিত এক নগরীতে এসে পড়া দিয়ে । নগরীর বর্ণনাতে তিনি এক রূপকথার সব পেয়েছির দেশ এঁকেছেন , যে – দেশে মনোরম সৌন্দর্যের পাশাপাশি দুঃখ – ক্লেশের লেশমাত্র নেই , সত্য ধর্ম ও সদাচার যে – নগরীর শিরোভূষণ , সেই নগরীতে বাস করেন সমুদ্রনৃপতি – কন্যা পদ্মা । পর্বতের পাশে অবস্থিত এক সুন্দর উদ্যানের রচয়িতা তিনি , যে – উদ্যানে নানাবর্ণ ও গন্ধের ফুল এবং ফলের সমারোহ । সেখানে আসার পথে পদ্মা সন্দ্বীদের সঙ্গে এক অপরূপা কন্যাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পান । সেই কন্যার অবস্থা দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেন হয়তো স্বর্গের কোনো অপ্সরা তার সন্দ্বীদের সঙ্গে ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গভ্রষ্ট হয়েছেন অথবা কোনো সামুদ্রিক ঝড়ের প্রকোপে তাদের এই অবস্থা । মৃতপ্রায় পদ্মাবতী ও তার চার সখীকে রক্ষা করার জন্য সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিজের সকল বিদ্যা প্রয়োগ করেন । বহু তন্ত্রমন্ত্র ও মহৌষধি প্রয়োগের পর অবশেষে তাদের জ্ঞান ফেরে । ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতার এই হল মূল উপজীব্য ।
8. মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের বিচারে সৈয়দ আলাওল রচিত ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটির বৈশিষ্ট্য ও ব্যতিক্রমী স্বাতজ্যের দিকটি আলোচনা করো ।
Ans: কবিতার বৈশিষ্ট্য ব্যতিক্রমী স্বাস্থ্যের পরিস্ফুটন উত্তর বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে আরাকান রাজসভার মুসলমান কবিরা প্রচলিত রীতিনীতি ও আঙ্গিক থেকে বেরিয়ে এক নতুন দিশার সন্ধান দিয়েছিলেন । যদিও সৈয়দ আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ’ ও ‘ লোরচন্দ্রাণী কাব্যের কিছু অংশ ছাড়া প্রায় সব রচনাই ইসলামি শাস্ত্র ও আধ্যাত্মিকতার প্রচার । তা সত্ত্বেও মধ্যযুগে যে সময়ে দেবদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনাই ছিল রচনাকারদের মুখ্য অভিপ্রায় । সেই সময়ে দাঁড়িয়ে সৈয়দ আলাওল ‘ পদ্মাবতী ‘ – তে মানব – মানবীর প্রণয়কাহিনিকে মূল উপজীব্য করে কাব্য রচনা করেছেন । ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটিতেও লক্ষ করা যায় , পদ্মাবতী ও তার সখীদের চেতনা ফেরাতে সমুদ্রকন্যা পদ্মা ঈশ্বরকে স্মরণ করেছেন ; পিতার পুণ্যবল ও নিজের ভাগ্যের ওপরেও ভরসা করেছেন ; তা সত্ত্বেও সর্বোপরি সমগ্র কবিতাটিতে প্রধান হয়ে উঠেছে মানবিকতা । সমুদ্রকন্যা পদ্মার অচেনা – অজ্ঞাত নামপরিচয়হীন পঞ্চকন্যার আরোগ্য নিয়ে যে – দুশ্চিন্তা , আকুতি ও ব্যাকুলতা প্রকাশিত হয়েছে , তা তৎকালীন সাহিত্যে বিরল । মধ্যযুগীয় সাহিত্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় , কাব্যের নায়ক বা নায়িকা সংকটজনক পরিস্থিতিতে নিজ নিজ আরাধ্য দেবতাকে স্মরণ করেন এবং দেবতার মাহাত্ম্যেই তার বিপন্মুক্তি ঘটে । কিন্তু ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় কবি সমুদ্রকন্যা পদ্মাকে দিয়ে ঈশ্বরকে স্মরণ করালেও শেষপর্যন্ত কার্যোদ্ধার করেছেন পদ্মা নিজেই । কোনো দেবমাহাত্ম্য নয় , পদ্মার অন্তরের মানবিকতা এবং জ্ঞান ও বিদ্যাই এতে সহায়ক হয়েছে । সুতরাং , মানবিকতায় পরিপূর্ণ ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটি মধ্যযুগে লেখা হলেও , আধুনিক সাহিত্যের মানবতাবোধের পূর্বসুরি , এখানেই তার বিশিষ্টতা ও স্বাতন্ত্র্য ।
9. ‘ সিন্ধুতীরে কবিতার কবি সৈয়দ আলাওলের কবিপ্রতিভা সম্পর্কে তোমার ধারণা ব্যক্ত করো ।
Ans: ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অন্তর্ভুক্ত ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতার কবি সৈয়দ আলাওলের কবিপ্রতিভা বিচার করতে গেলে প্রথমেই বিচার্য হয় , অনুবাদক হিসেবে তাঁর সাফল্যের কথা । মুহম্মদ জায়সীর ‘ পদুমাবৎ ‘ কাবাকে , সরল পয়ার ও ত্রিপদীতে রূপান্তরিত করে আলাওল ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যটির অনুবাদ করেন । তাঁর ভাষা সাবলীল ও সহজ । ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটি সমগ্র কাব্যের একটি অতিক্ষুদ্র অংশ হলেও , চরিত্রগুলি স্পষ্ট ও মানবিকতার পরিপূর্ণ । পয়ার – ত্রিপদী হলেও কবির দক্ষতা ” সিতীয়ে– কবির , কিন্তু আলাওলের কাব্য জায়সীর অনুবাদ হলেও , তা বিশুদ্ধ মর্ত্যলোকে কেন্দ্র করেই রচিত । আলাওল অনুবাদের সময় খুঁটিনাটির দিকে লক্ষ রেখেছেন । উদ্যানের বর্ণনায় , নগরীর বর্ণনায় বা পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মার মানসিক প্রতিক্রিয়া বর্ণনায় তিনি প্রায় নিখুঁত । মধ্যযুগীয় দেবকৃপা নির্ভরতা – ভনিতা প্রভৃতি রীতিনীতি অনুসরণ করেও তিনি মানবতাকে অবলম্বন করে , তাঁর কাব্যে আধুনিকতার স্পষ্ট । ছাপ রেখে গেছেন ।
10. মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন হিসেবে সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতার ভাষা , ছন্দ ও উপমা সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans: মধ্যযুগীয় অন্য কবিরা যে – সময়ে দেবদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনায় রত , তখন আরাকানে বসে আলাওল সম্পূর্ণ মানবীয় প্রেমকাহিনি – নির্ভর কাব্য রচনা করেছেন । তাঁর মৌলিকতার পরিচয় বিধৃত রয়েছে এই কাব্যটিতে । আলাওলের কাব্য জায়সীর প্রায় কবিতার ভাষা আক্ষরিক অনুবাদ হলেও জায়সীর অধ্যাত্মরস তাঁর কাব্যে অনুপস্থিত । আলাওলের অনুবাদের ভাষা এ কথার প্রমাণ দেয় যে , হিন্দি ভাষায় তিনি যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন । অন্য অনেক অনুবাদ কাব্যের মতো ‘ পদ্মাবতী ’ আড়ষ্ট অনুবাদ নয়— এক ধরনের রূপকথার সাবলীলতা তাতে লক্ষ করা যায় ।
আলাওল মুহম্মদ জায়সীর কাব্যের হিন্দি চৌপাই ছন্দ ভেঙে বাংলা পয়ার – ত্রিপদীতে তাঁর ‘ পদ্মাবতী ’ রচনা করেছিলেন , কবিতার ছন্দ যা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে । কবিতায় ব্যবহৃত উপমা আলোচ্য ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতায় পাঠক সমগ্র ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের উপমা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন । কবি উদ্যানে প্রস্ফুটিত পুষ্পের বর্ণনা দিতে দিয়ে জানাচ্ছেন ‘ সুগন্ধি সৌরভতর ‘ অর্থাৎ সুগন্ধি অপেক্ষাও যার সৌরভ সুঘ্রাণ । পদ্মাবতীকে প্রথম দর্শনেই সমুদ্রকন্যা পদ্মা স্বর্গের অপ্সরা রম্ভার সঙ্গে তুলনা করেছেন । তারপর একে একে ‘ ইন্দ্রশাপে স্বর্গভ্রষ্ট বিদ্যাধরি ‘ , ‘ চিত্রের পোতলি ‘ ইত্যাদি উপমায় ভূষিত করেছেন । এই সমস্ত উপমা থেকেই বোঝা যায় , কবি আলাওলের উপমা সৃষ্টিতে দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত । তাই ভাষা , ছন্দ ও উপমা নির্মাণে সৈয়দ আলাওল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে একজন প্রথম শ্রেণির কবি হিসেবেই বিবেচিত হন ।
11. ‘ সিন্ধুতীরে ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো ।
Ans: নামকরণের সার্থকতা ’ অংশটি দ্যাখো ।
12. ‘ দেখিয়া রুপের কলা বিস্মিত হইল বালা’— উদ্ধৃত অংশের ‘ বালা ” কে ? পাঠ্য কবিতা অবলম্বনে বালার সৌন্দর্যপ্রীতির পরিচয় দাও ।
Ans: প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি সৈয়দ আলাওলের ‘ পদ্মাবতী ‘ কাব্যের অন্তর্গত ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশ থেকে গৃহীত । এখানে ‘ বালা ’ বলতে সমুদ্ররাজার কন্যা গুণবতী পদ্মার কথা ‘ বালা ‘ – র পরিচয় বলা হয়েছে । বালার সৌন্দর্যপ্রীতির পরিচয়
কবি আলাওল সিন্ধুতীরের যে অংশে পদ্মাবতী অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল সেখানকার এক সুন্দর বর্ণনা তুলে ধরেছেন । ‘ সমুদ্রনৃপতিসুতা ’ পদ্মা এখানেই তার বাসস্থান গড়ে তোলেন । অপরূপ সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য স্থানটিকে দিব্যভূমির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে । সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না । ছিল শুধু সআচরণ ও সত্যধর্ম পালনের অভ্যাস । সেই দিব্যভূমির উপরের দিকে ছিল এক পর্বত । সেখানেই সমুদ্রকন্যা পদ্মা এক উদ্যান তৈরি করেন । যে – উদ্যানে ফল ও ফুলের প্রাচুর্য ছিল । নানান ফুলের সুগন্ধে বাগানটি ভরে থাকত । এরই মাঝে পদ্মা রত্নশোভিত বিচিত্র প্রাসাদ গড়ে তোলেন । এইরূপ অপরুপ রুপময় সৌন্দর্যপূর্ণ স্থান পরিত্যাগ করতে কারই বা ভালো লাগে । তাই পদ্মাও সমুদ্রতীরের সেই দিব্যস্থান ত্যাগ না করে সেখানেই সর্বক্ষণ থাকেন । এভাবে এই স্থানটির বর্ণনায় । কবি সমুদ্রকন্যার হৃদয়ের প্রকৃতিপ্রেম ও সৌন্দর্যবোধকে যেমন তুলে ধরেছেন , তেমনই মানবিক সৌন্দর্যপ্রীতির এক চিরকালীন আবেদনকে ফুটিয়ে তুলেছেন । মধ্যযুগীয় সাহিত্যে যা আধুনিক সৌন্দর্যভাবনার পূর্বসূরি । পিতৃপুরীতে রাত্রিযাপন করে পুনরায় সকালে সখীদের সঙ্গে উদ্যানে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে পদ্মার হৃদয়ের সেই দিকটিরই প্রকাশ ঘটেছে ।
13. ‘ সিন্ধুতীরে রহিছে মানুস । সিন্ধুতীরে মাপ্তসে কারা , কাকে দেখল ? তারপরে কী ঘটল আলোচনা করো ।
Ans: সৈয়দ আলাওলের ‘ সিন্ধুতীরে ’ কাব্যাংশ অনুসারে সমুদ্রকন্যা মাসে কারা , কাকে দ্যাখে পদ্মা সখীদের সঙ্গে উদ্যানে যাওয়ার সময় সমুদ্রতীরে ভেলায় চার সখীসহ পদ্মাবতীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান ।
মান্দাসে ভাসমান অসহায় পঞ্চকন্যাকে দেখে পদ্মা কৌতূহলবশত দ্রুত সেখানে ছুটে যান । চার সখীর মাঝে এক অপরূপ সৌন্দর্যময়ী নারীকেও অচেতন অবস্থায় দেখেন । সেই কন্যার অবস্থা দেখে তাঁর মনে হয় ইন্দ্রের অভিশাপে হয়তো কোনো স্বর্গের অপ্সরা সখীদের পরবর্তী ঘটনার বর্ণনা সঙ্গে স্বর্গভ্রষ্ট হয়েছেন কিংবা কোনো সামুদ্রিক ঝড়ের প্রভাবে এই অবস্থা । তখনও তাদের শরীরে আর সামান্য শ্বাসবায়ু অবশিষ্ট আছে দেখে ; পদ্মার মন দয়ায় পূর্ণ হয়ে ওঠে । তিনি স্নেহপূর্ণ মনে ঈশ্বরের কাছে এদের জন্য মঙ্গল কামনা করেন । পিতার পুণ্য এবং নিজের ভাগ্যবলের দোহাই দিয়ে পঞ্চকন্যার জীবন ফিরে পাওয়ার আশায় তিনি বিধাতার কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে থাকেন । সেইসঙ্গে নিজেও যথাসাধ্য চিকিৎসা করার সংকল্প করেন । এরপরেই তাঁর নির্দেশে সখীরা পঞ্চকন্যাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে যায় । বারবার তাদের মাথায় পায়ে আগুনের গরম সেঁক দেয় । একইসঙ্গে তন্ত্রমন্ত্র ও মহৌষধ অর্থাৎ পদ্মার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় অবশেষে চারদণ্ড পরে পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পায় । এভাবেই সমুদ্রকন্যার মায়া , মমতা ও ভালোবাসায় পদ্মাবতী এবং তাঁর সখীরা পুনর্জীবন লাভ করে ।