MCQ সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
- বিশ্বভারতীর হিন্দি ভবনের দেওয়ালে আঁকা ৭৭ ফুট বিস্তৃত, ৮ ফুট মদ্ধযুগের সন্তগণ নামে ছবিটি কার –
(A) বিনোদবিহারী মুখোাধ্যায়
(B) রামকিঙ্কর বেইজ – এর
(C) দেবীপ্রসাদ রায় চৌধুরী
(D) জয়নুল আবেদিন
Ans: (A) বিনোদবিহারী মুখোাধ্যায়
- ‘ জুবিলি আর্ট আকাদেমি ‘ কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
(A) রণদাসপ্রসাদ গুপ্ত
(B) হেনরি হোভার লক
(C) আর্নেস্ট বিনকিন্ড হ্যাভেল
(D) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (A) রণদাসপ্রসাদ গুপ্ত
- শিল্পী নন্দলাল বসু কার ছাত্র ছিলেন ?
(A) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
(B) দেবীপ্রসাদ চৌধুরীর
(C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
(D) গুনেন্দ্র্ণাথ ঠাকুরের
Ans: (C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
- ‘ অস্টসহাস্রিকা – প্রঞ্জপারমিতা ‘ নামের তালপাতার পুথিটির বারোটি রঙিন ছবির সময়কাল –
(A) আনু ৯৮৩ খ্রি:
(B) আনু ৯০০ খ্রি:
(C) আনু ৯৩৩ খ্রি:
(D) আনু ৯৮০ খ্রি:
Ans: (A) আনু ৯৮৩ খ্রি:
- অভিধানে ‘ পট ‘ শব্দটির অর্থ –
(A) পতাকা
(B) পুস্তক
(C) চিত্র
(D) সংগীত
Ans: (C) চিত্র
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা – বাঙালির চিত্রকলা (শিল্প – সাহিত্যিক – সংস্কৃতি) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Question and Answer :
- ‘ সিদ্ধিদাতা গণেশ ’ , ‘ শোকার্ত সিদ্ধার্থ ’ , ‘ জগাই মাধাই’— ছবিগুলি কে অঙ্কন করেছেন ?
Ans: নন্দলাল বসু ।
- ‘ কর্তাবাবা ’ কার আত্মজীবনীমূলক রচনা ?
Ans: বাঙালি চিত্রশিল্পী শ্রীবিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়এর আত্মজীবনী মূলক রচনা ।
- ‘ হরিপুরা পট ’ – এর চিত্রকর কে ?
Ans: ‘ ‘হরিপুরা পট ’ – এর চিত্রকর নন্দলাল বসু ।
- ‘ পাটা ’ শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে ?
Ans: সংস্কৃত ‘ পটু ’ শব্দ থেকে ‘ পাটা ’ শব্দটি এসেছে ।
- রবীন্দ্রনাথ নিজে অলংকরণ করেছেন , তাঁর এমন দু’টি ছোটোদের বইয়ের নাম লেখো ।
Ans: রবীন্দ্রনাথ নিজে অলংকরণ করেছেন , তার এমন দু’টি বই— ‘ খাপছাড়া ’ ও ‘ সে ’ ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা – বাঙালির চিত্রকলা (শিল্প – সাহিত্যিক – সংস্কৃতি) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Question and Answer :
- চিত্রকর যামিনী রায়ের পরিচয় সহ তার চিত্রকলা চর্চা সম্পর্কে তোমার মতামত লিপিবদ্ধ করো ।
অথবা , বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায়ের অবদান সম্পর্কে যা জানো লেখো ।
Ans: চিত্রকর যামিনী রায়ের জন্ম বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে । জন্মসূত্রেই তিনি চিত্রচর্চার উত্তরাধিকার লাভ করেন । ছেলেবেলা থেকে গ্রামজ পরিবেশ , গ্রামীণ নিসর্গের অবিরাম হাতছানি ও গ্রাম্য মৃৎশিল্পীদের অতি সাধারণ কিতু মায়াময় সঙ্গ ও শিল্প তার শিল্পীমনকে গড়ে দেয় ।
তার প্রথাগত চিত্রশিক্ষার বৃহৎ অঙ্গন ছিল ‘ গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল ‘ , যেখানে ১৯০৬ থেকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাগ্রহণের বিশেষ পর্বে তিনি ‘ ফাইন আর্ট ‘ বিভাগে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতির চিত্রাঙ্কন শিক্ষা করেন । এর কয়েক বছর পর থেকে তার অঙ্কিত চিত্র ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্ট ‘ – এর নিজস্ব ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হতে থাকে । ভারতীয় চিত্রকলায় তার ছবির ভাব – বিষয় – অঙ্কনরীতি সমকালীন শিল্পীদের থেকে এতটাই ভিন্নতাদর্শী ছিল যে , তিনি ক্রমে এক স্বতন্ত্র চিত্ররীতি নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠিত হন ।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে তাঁর ছবি ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে । ১৯৩৫ – এ তাঁর ছবির একটি একক প্রদর্শনী হয় কলকাতা কর্পোরেশন বিল্ডিং – এর সমবায় ম্যানসনে , যেখানে প্রদর্শিত হয় ‘ রামায়ণ উপাখ্যান ‘ , ‘ বাউল বৈয়ব ’ , ‘ সাঁওতাল রমণী ‘ , ‘ মাতৃমূর্তি ও অন্যান্য বিখ্যাত কিছু ছবি । ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের ‘ পদ্মবিভূষণ সম্মান ‘ লাভ করেন । তেলরঙের একজন দক্ষ শিল্পী হলেও জলরঙ্গের প্রতি শিল্পীর পক্ষপাত ছিল । ক্রমে তার চিত্র বিষয়ে উঠে আসে গ্রামের নিসর্গ প্রকৃতি , ধর্মীয় জগৎ , ধর্মকাহিনির পটচিত্র , আদিবাসী জীবন ও জীবিকা । কালীঘাটের পটচিত্রের বিশেষ শৈলী তার মনকে আচ্ছন্ন করে । এককথায় লোকশিল্পের আঙ্গিককে তিনি তাঁর সৃজনবৈশিষ্ট্যে প্রবাহিত করে নতুন মাত্রা দেন । ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল এই মহান শিল্পী তিরোহিত হন ।
- বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিংকর বেইজের অবদান আলোচনা করো ।
Ans: বাংলা চিত্রকলা চর্চার ইতিহাসে রামকিংকর বেইজ একজন উল্লেখযোগ্য ভাস্কর হিসেবে পরিচিত । তবে তিনি শুধু ভাস্কর্য নয় , চিত্র শিল্পেরও চর্চা করেক্ষ্মে ছন একই সাথে । প্রথিতযশা এই শিল্পী বাঁকুড়া জেলার যুগী পাড়ার মানুষ ছিলেন ( ২৫-০৫-১৯০৬–০২-০৮-১৯৮০ ) রামকিংকর বেইজ নিতান্ত দারিদ্র্যের মধ্যে শৈশব কাটালেও আবাল্য তার মনের মধ্যে গভীর শিল্পানুরাগ ছিল । রামকিংকরের শিল্পসত্বা গড়ে উঠেছিল তার যৌবনের শিল্পতীর্থ শান্তিনিকেতনেরই আশেপাশের দলিত আদিবাসীদের জীবনাচরণে রসসিক্ত হয়ে । দেব – দেবীদের ছবি এঁকে । ছুতোর – কামারদের কাজ দেখেও শিখে । মৃৎ শিল্পের ধারায় পুতুল গড়ে শিল্পী তাঁর শিল্পবোধ ও দক্ষতাকে প্রণোদিত করেন ।
রামকিংকর বেইজকে পাদপ্রদীপের আলোয় আনেন প্রবাসীর সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় । তাঁর উল্লেখযোগ্য চিত্রগুলি হলো- ‘ লেডি উইথ ডগ ’ , ‘ সুজাতা ‘ , ‘ সান্থাল ফ্যামিলি ’ , ‘ যক্ষ – যক্ষী ’ , ‘ নতুন শস্য ’ , ‘ গ্রীষ্মের দুপুর ’ , ‘ রবীন্দ্রনাথ ’ , ‘ অবনীন্দ্রনাথ ’ প্রমুখের প্রতিকৃতি প্রভৃতি ৷ নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি । বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ দেশিকোত্তম ’ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট , ‘ পদ্মভূষণ ‘ ( ১৯৭০ ) প্রভৃতি ।
কলকাতা , দিল্লি , মুম্বাই প্রভৃতি স্থানে প্রদর্শিত হয় তাঁর ছবি । এছাড়া প্যারিস বা জাপানে প্রদর্শনীতে গেছে তাঁর ছবি । শুধু তাই নয় , তার নানা শিল্পকর্ম এদেশের প্রধান প্রধান শিল্প সংগ্রহ শালায় রক্ষিত আছে ।
রামকিংকর নিজের শিল্প সম্পর্কে বলতেন তার সমস্ত মূর্তিই মুভিং । স্থবিরতাই বিশ্বাস নেই । আজও সবার মনে মাটির মানুষ শিল্পী রামকিংকর বাংলার মাটির অলংকার অহংকার হয়ে রয়েছেন ।
- বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান আলোচনা করো ।
Ans: বাংলা চিত্রকলার ক্ষেত্রে নন্দলাল বসু একটি উল্লেখযোগ্য নাম । চিত্রশিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুযোগ্য শিষ্য ছিলেন ‘ সহজপাঠ ‘ বইটির অসামান্য অলংকরণের স্রষ্টা ছিলেন । নন্দলাল বসুর জন্ম ৩ ডিসেম্বর ১৮৮২ সালে । বাংলা চিত্রকলাচর্চার ধারায় তার অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না ।
১৯২০ সালে নন্দলাল বসু শান্তিনিকেতনে কলাভবনে স্থায়ীভাবে যোগদান করার পর থেকেই শিল্প শিক্ষার এক বিশিষ্ট পদ্ধতি এই প্রতিষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করে তোলে ৷ নন্দলাল বসুই প্রথম ভারতীয় শিল্প শিক্ষায় ‘ out door study ‘ বা ‘ Nature Study ’ এর উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন । শান্তিনিকেতনের দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর মাঠে বিচরণরত মোষ , নারী – পুরুষ – শিশু , হাটযাত্রী পথিক , মাল বোঝাই গোরুর গাড়ি এই সমস্তই উঠে এল তাঁর ছবির বিষয় হিসেবে । এছাড়াও ১৯৩০ সালে ডান্ডি লবণ আন্দোলনে গান্ধিজীর গ্রেফতারের পর নন্দলাল সাদা কালোয় চলমান গান্ধিজীকে এঁকেছিলেন লাঠি হাতে । এই চিত্রটি অহিংস আন্দোলনের প্রায় আইকন বা প্রতীকে পরিণত হয় ।
নন্দলাল বসু তাঁর অসামান্য প্রতিভার
জন্য ১৯৫৪ সালে ভারত সরকারের ‘ পদ্মবিভূষণ ’ বিশ্বভারতীর ‘ দেশিকোত্তম ’
উপাধি লাভ করেন । তাঁর দুই খানি উল্লেখযোগ্য শিল্প গ্রন্থ হলো ‘ শিল্পচর্চা
’ ও ‘ রূপাবলী ’ । অবশেষে তিনি ১৬ ই এপ্রিল ১৯৬৬ সালে পরলোকগমন করেন ।