উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – জনসংখ্যা ও জনবসতি (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর

 MCQ প্রশ্নোত্তর |  | HS Geography Question and Answer : 

  1. জনসংখ্যা পিরামিডের ভূমি প্রশস্থ ও শীর্ষদেশ তীক্ষ্ণ— 

(A) অনুন্নত অর্থনীতির ইঙ্গিত 

(B) বিপর্যস্ত অর্থনীতির ইঙ্গিত 

(C) উন্নত অর্থনীতির ইঙ্গিত দেয় 

(D) কোনোটিই নয় 

Ans: (A) অনুন্নত অর্থনীতির ইঙ্গিত

 

  1. মানব উন্নয়নে সর্বনিম্ন দেশ হলো 

(A) নরওয়ে 

(B) ভারত 

(C) নাইজার 

(D) পাকিস্তান 

Ans: (C) নাইজার

 

  1. কোন দেশটির জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় স্থির হয়ে আছে ? 

(A) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র 

(B) অস্ট্রেলিয়া 

(C) জাপান 

(D) জার্মানি 

Ans: (D) জার্মানি

 

  1. 2011 – এর আদমশুমারি অনুযায়ী ভারতের সর্বাধিক জনঘনত্বময় রাজ্য 

(A) পশ্চিমবঙ্গ 

(B) কেরালা

(C) উত্তরপ্রদেশ 

(D) বিহার 

Ans: (D) বিহার

 

  1. মোট জনসংখ্যা ও মোট জমির পরিমাণের অনুপাতকে বলে— 

(A) মানুষ ষ – জমির অনুপাত 

(B) জনঘনত্ব 

(C) জমিঘনত্ব 

(D) সম্পদ ঘনত্ব 

Ans: (B) জনঘনত্ব

 

  1. জনঘনত্ব সাধারণত বেশি হয়— 

(A) পর্বতে 

(B) মালভূমিতে 

(C) উপকূলে 

(D) জঙ্গলে 

Ans: (C) উপকূলে

 

  1. বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা 90 ভাগ মানুষ বাস করে স্থলভাগের মাত্র 

(A) 10 % 

(B) 20 % 

(C) 15 % 

(D) 30 % – স্থানে 

Ans: (A) 10 %

 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – জনসংখ্যা ও জনবসতি (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer : 

  1. ভারতের সর্বাপেক্ষা সাক্ষর রাজ্য কোনটি ?

Ans: কেরালা । 

  1. 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব কত ? 

Ans: 1028 জন / বর্গ কিলোমিটার । 

  1. ন্যাসপাতির মতো আকৃতিবিশিষ্ট জনসংখ্যা পিরামিড আছে এরূপ একটি দেশের নাম লেখো । 

Ans: ন্যাসপাতির মতো আকৃতিবিশিষ্ট জনসংখ্যা পিরামিজ আছে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে । 

  1. পৃথিবীর কোন দেশের জনসংখ্যা সর্বাধিক ? Ans: পৃথিবীতে চিনের জনসংখ্যা সর্বাধিক । 
  2. Bell – shaped age sex pyramid লক্ষ করা যায় কোন কোন দেশে ? 

Ans: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র , কানাডা । 

  1. শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি দেখা যায় কোন কোন দেশে ? 

Ans: ডেনমার্ক , নরওয়ে , জার্মানি , অস্ট্রেলিয়া ।  

  1. অস্ট্রেলিয়ার জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমিতে কত ?

Ans: অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে প্রতি বর্গ কিমিতে 11-50 জন । 

অস্ট্রেলিয়ার ডাউন্স তৃণভূমি ও দক্ষিণে প্রতি বর্গ কিমিতে 1-10 জন । 

  1. মেধাপ্রবাহ কী ?

Ans: উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশ থেকে বুদ্ধিজীবী , শীর্ষব্যবস্থাপক , গবেষক , বিজ্ঞানী প্রমুখ মানুষের উন্নত দেশে দীর্ঘমেয়াদি স্থানান্তরকে মেধাপ্রবাহ বলে । 

  1. নক্ষত্রাকার বসতি কাকে বলে ? 

Ans: বৃত্তাকার বসতি যখন পায়ে চলা পথ বা অন্য সড়কপথ বরাবর ভিন্ন দিকে বিস্তৃত হয় । তখন ঐ বসতির আকার নক্ষত্রের মতো হয় ।

  1. জনসংখ্যা পিরামিডের অনুভূমিক ও উল্লম্ব অক্ষ দিয়ে কী প্রকাশ করা হয় ? 

Ans: উল্লম্ব অক্ষ দিয়ে বয়স ও অনুভূমিক অক্ষ দিয়ে নারী – পুরুষ ( ডানদিকে নারী ও বামদিকে পুরুষ ) প্রকাশ করা হয় । 

  1. জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি বলতে কী বোঝো ? 

Ans: কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে মৃত্যুহারের তুলনায় জন্মহার কমে গেলে কিংবা ওই স্থানের মানুষ অধিক সংখ্যায় অন্যত্র গমন করলে তাকে জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি বলে । 

  1. গ্লোবাল সিটি কাকে বলে ? 

Ans: বিশ্বের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এমন নগরগুলিকে গ্লোবাল সিটি , ওয়ার্ল্ড সেন্টার বা আলফা সিটি বলে । 

যেমন— লন্ডন , নিউইয়র্ক , মুম্বই প্রভৃতি । 

  1. অপরিশোধিত জন্মহার কাকে বলে ?

Ans: কোনো দেশের বা অঞ্চলের একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি হাজার জনে নথিভুক্ত জীবিত শিশুর অনুপাতকে অপরিশোধিত জন্মহার বলে । 

  1. মানব উন্নয়ন কাকে বলে ? 

Ans: মানবউন্নয়ন হলো মানুষের জীবনাযাত্রার বহুবিধ আর্থ – সামাজিক উপাদানের অর্থাৎ খাদ্য , বাসস্থান , স্বাস্থ্য , সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদির উন্নয়ন । 

  1. শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি কাকে বলে ? 

Ans: দেশের জন্মহার ও মৃত্যুহার প্রায় সমান হলে অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় স্থিতাবস্থা লাভ করলে , তাকে শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বলে । 

  1. ‘ Census ‘ কী ? 

Ans: Census হলো এক পদ্ধতি বিশেষ , যেখানে সুনির্দিষ্ট নিয়মানুসারে দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে । 

  1. ” The Population map of India follows the rainfall map’— কেন বলা হয় ? 

Ans: ” The Population map of India follows the rainfall map ” — বলার কারণ হলো কৃষিপ্রধান ভারতে বৃষ্টিপাতের উপরই কৃষিকার্য সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল । এছাড়া বৃষ্টিপাত জনবৈতন্নকে সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ করে । 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – জনসংখ্যা ও জনবসতি (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer : 

  1. পৃথিবীর অসম জনবণ্টনের কারণ কী ? 

Ans: প্রাকৃতিক কারণ জনসংখ্যা বণ্টনে প্রাকৃতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । অবস্থান , জলবায়ু , ভূপ্রকৃতি , মৃত্তিকা , জল প্রভৃতি প্রাকৃতিক কারণ জনসংখ্যা বণ্টনে প্রভাব বিস্তার করে থাকে । যথা- 

  1) অবস্থান : উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত এলাকাগুলি প্রবল । শৈত্যের জন্য উদ্ভিদবিরল এবং কৃষির অযোগ্য হয় । ফলে এইসব অঞ্চল জনবিরল । আবার মধ্যঅক্ষাংশ ও ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে কৃষি , পশুপালন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতির জন্য জনঘনত্ব বেশি ।

  2) ভূপ্রকৃতি : বন্ধুর ভূপ্রাকৃতিক অঞ্চলে জীবনধারণ অস্বস্তিকর বলে সাধারণত পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলগুলিতে জনঘনত্ব কম । অন্যদিকে , সমভূমি অঞ্চলে উর্বর মৃত্তিকা , কৃষিকাজ ও উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ঘন জনবসতি গড়ে তোলার জন্য অনুকূল । 

  3) জলবায়ু : অস্বাস্থ্যকর অতি উষ্ম ও আর্দ্র জলবায়ু , শীতল মরু জলবায়ু বা অতিশুষ্ক মরু প্রকৃতির জলবায়ু অঞ্চলে জীবনধারণ কষ্টকর বলে এইসব অঞ্চলে জনবসতি বিশেষ বিশেষ দেখা যায় না । 

  4) মৃত্তিকা : ঊর্বর মৃত্তিকায় কৃজিকাজের প্রাধান্য পরিলক্ষিত । তাই গাঙ্গেয় সমভূমি বা মধ্যইউরোপের উর্বর দোআঁশ , পলিসমৃদ্ধ মৃত্তিকায় অধিক জনঘনত্ব দেখা যায় । 

  5) জলের প্রাপ্যতা : বেশিরভাগ বসতি পানীয় জলের সহজলভ্যতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে । 

  6) উদ্ভিদের বণ্টন : বনভূমি থেকে কাঠ সংগ্রহের জন্য বনভূমির কাছাকাছি ঘনবসতি গড়ে ওঠে । 

  7) খনিজ সম্পদের প্রাপ্তি : খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য খনিগুলির কাছাকাছি ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে । 

অপ্রাকৃতিক কারণ : 

  1) অর্থনৈতিক উন্নতি : পৃথিবীর যে – সমস্ত দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত , শিল্পে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নত এবং জীবিকা নির্বাহের সুবিধা প্রভৃতি বেশি ভোগ করে সেখানে জনবসতির প্রাধান্য দেখা যায় । 

  2) রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা : রাজনৈতিক কারণে দেশ বিভক্ত হলে জনবসতির তারতম্য দেখা যায় । এছাড়াও সমাজে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের ক্রিয়াকলাপের কারণে স্থানবিশেষে । জনবসতির তারতম্য গড়ে ওঠে । 

  1. গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতির বৈশিষ্ট্য লেখো । বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে ওঠার কারণ লেখো । 

Ans: কোনো বিশেষ কারণে কোনো একটি অঞ্চলে একসাথে অনেক গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে উঠলে তাকে গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি বলে । গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতির বৈশিষ্ট্য হলো— 

  1) বসতিগুলি ঘনসন্নিবদ্ধভাবে অবস্থান করে । 2) বসতিগুলির ব্যবধান খুবই সামান্য । 3)  বসবাসকারীদের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক মেলবন্ধন গড়ে ওঠে । 4) এইপ্রকার বসতি ছোটো ও বড়ো উভয় প্রকারই হতে পারে । এইপ্রকার বসতিতে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ বসবাস করে । 

বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বসতি : কোথাও কোথাও প্রাকৃতিক ও আর্থ – সামাজিক কারণে একটি পরিবার আর একটি পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে বসতি গড়ে তুললে তাকে বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বসতি বলে । 

বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বসতি গড়ে উঠার কারণ : বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বসতি গড়ে উঠার কারণগুলি নিম্নরূপ : 1) দুর্গম অরণ্য ও বিস্তীর্ণ তৃণক্ষেত্রের কারণে বিক্ষিপ্ত বসতি গড়ে উঠতে দেখা যায় ।  2) প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ ভূপ্রকৃতির অবস্থানও বিক্ষিপ্ত বসতির কারণ । 3) জলের সহজলভ্যতার কারণেও বিক্ষিপ্ত , বসতি গড়ে উঠে । 4) বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের অবস্থান । 

  1. আয়তন অনুযায়ী পৌরবসতির শ্রেণিবিভাগ করো ।

Ans: আয়তন অনুযায়ী পৌরবসতির শ্রেণিবিভাগ : আয়তন অনুযায়ী পৌরবসতিকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পৌর বসতিগুলি হলো— 

  1) শহর ( Town ) : ভারতীয় আদমশুমারি অনুযায়ী যে সব অঞ্চলের বা স্থানের জনসংখ্যা ন্যূনতম ৫,০০০ , প্রতি বর্গকিমিতে কমপক্ষে ৪০০ জন ও জনসাধারণের ৭৫ শতাংশ অকৃষিজীবী সেই সব পৌরবসতি বা অঞ্চল বা স্থানকে শহর বলে । ছোটো ছোটো শিল্পকে কেন্দ্র করে সাধারণত শহর গড়ে উঠে । 

যেমন — – উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহর ।

  2) নগর ( City ) : সাধারণত ১ লক্ষের বেশি এবং ১০ লক্ষের চেয়ে কম জনসংখ্যা বিশিষ্ট শহর বা বড়ো পৌরবসতিকে নগর বলা হয় । যেমন – দুর্গাপুর ।

  3) মহানগর ( Metropolis ) : সাধারণভাবে ১০ লক্ষ বা তার বেশি লোকসংখ্যা বিশিষ্ট পৌরবসতিকে মহানগর বলা হয় । যেমন – দিল্লি , কলকাতা । 

  4) মহানগরপুঞ্জ বা পৌরমহাপুঞ্জ ( Megalopolis ) : যখন মহানগর বাড়তে বাড়তে পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চল এবং বড়ো বড়ো নগর ও শিল্পাঞলকে গ্রাস করে এমন এক বিশাল মাপের পৌরবসতিকে পৌরমহাপুঞ্জ বা মহানগরপুঞ্জ বলা হয় । গটম্যান প্রথম মেগালোপলিস শব্দটি ব্যবহার করেন । যেমন – বোস্টন , ফিলাডেলস্ফিয়া প্রভৃতি । 

মেগাসিটি : পৌরবসতির জনসংখ্যা ৫০ লক্ষ বা তার বেশি হলে সেই অঞ্চলকে মেগাসিটি বা কনারবেশন বা মেট্রোপ্লেক্স বলা হয় । যেমন — বৃহত্তর মুম্বই , বৃহত্তর কলকাতা পৌরপিণ্ড । – গ্লোবাল সিটি : যে সব নগর বিশ্বের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে তাকে গ্লোবাল সিটি বা ওয়ার্ল্ড সিটি বা আলফা সিটি বা ওয়ার্ল্ড সেন্টার বলে । 

যেমন – লন্ডন , নিউইয়র্ক ইত্যাদি বিশ্ব – নগর । 

দ্বৈত নগরী ( Twin Cities ) : অনেক সময় পাশাপাশি দু’টি নগরের একত্রীকরণের ফলে পরস্পর যুক্ত হয়ে দ্বৈত নগরী গড়ে উঠে ।

  যেমন – ভারতের কলকাতা – হাওড়া , হায়দ্রাবাদ সেকেন্দ্রাবাদ ইত্যাদি ।