উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর

 MCQ: HS Geography Question and Answer : 

  1. অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার ফল অন্তর্গত হলো— 

(A) পর্যায়ন 

(B) আবহবিকার 

(C) সমস্থিতি 

(D) ভূবিপর্যয় 

Ans: (D) ভূবিপর্যয়

 

  1. নিম্নলিখিত কোনটি বহির্জাত প্রক্রিয়া নয় ? 

(A) পুঞ্ঝক্ষয়

(B) হিমবাহ ক্ষয় 

(C) অগ্ন্যুৎপাত 

(D) নদীর মাধ্যমে ক্ষয় 

Ans: (C) অগ্ন্যুৎপাত

 

  1. ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয় কীসের দ্বারা ? 

(A) গিরিজনি আলোড়ন 

(B) মহিভাবক আলোড়ন 

(C) ইউস্ট্যাটিক আলোড়ন 

(D) সমস্থিতিক আলোড়ন 

Ans: (A) গিরিজনি আলোড়ন

 

  1. রাসায়নিক আবহবিকারের প্রাধান্য দেখা যায়— 

(A) শুষ্ক জলবায়ু 

(B) আর্দ্র জলবায়ু 

(C) শীতল জলবায়ু 

(D) প্রায় শুষ্ক জলবায়ু – অঞ্চলে 

Ans: (B) আর্দ্র জলবায়ু

 

  1. অবরোহণ বলতে সাধারণত বোঝায়— 

(A) নদীর 

(B) বায়ুর 

(C) হিমবাহের 

(D) সমুদ্রতরঙ্গের — ক্ষয়কাজ 

Ans: (A) নদীর

 

  1. অবরোহণ ও আরোহণের সম্মিলিত ফল হলো— 

(A) ক্ষয়ীভবন 

(B) পর্যায়ন 

(C) আবহবিকার 

(D) পুঞ্জিত ক্ষয় 

Ans: (B) পর্যায়ন

 

  1. রাসায়নিক আবহবিকার অধিক লক্ষ করা যায়— 

(A) নিরক্ষীয় জলবায়ু 

(B) মরু জলবায়ু 

(C) শুষ্ক নাতিশীতোয় 

(D) মেরু জলবায়ু — অঞ্চলে 

Ans: (A) নিরক্ষীয় জলবায়ু

 

  1. একটি অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার উদাহরণ হলো—

(A) আবহবিকার

(B) গিরিজনি আলোড়ন 

(C) নদীর কাজ 

(D) বায়ুর কাজ 

Ans: (B) গিরিজনি আলোড়ন

 

  1. শিলায় মরচে পড়া কোন ধরনের রাসায়নিক আবহবিকার ? 

(A) অঙ্গারযোজন

(B) শল্কমোচন 

(C) জলযোজন 

(D) জারণ প্রক্রিয়া 

Ans: (D) জারণ প্রক্রিয়া

 

  1. ‘ দ্বিতীয় ক্রম ’ ভূমিরূপ হলো— 

(A) মহাদেশ 

(B) বালিয়াড়ি 

(C) সার্ক 

(D) মালভূমি 

Ans: (D) মালভূমি

 

  1. আরোহণ প্রক্রিয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক হলো— 

(A) ভূমির ঢাল 

(B) পুঞ্জিত স্খলনের পরিমাণ 

(C) স্বাভাবিক উদ্ভিদের আচ্ছাদন 

(D) নদীর ক্ষয়শক্তি 

Ans: (A) ভূমির ঢাল

 

  1. ভূমিরূপ বিদ্যায় পর্যায়ন ধারণাটি কে প্রবর্তন করেন ? 

(A) ডেভিস 

(B) প্যাট 

(C) গিলবার্ট 

(D) পেঙ্ক 

Ans: (A) ডেভিস

 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer : 

  1. আরোহণ প্রক্রিয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক কী ? Ans: আরোহণ প্রক্রিয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক ভূমির ঢাল । 
  2. মহিভাবক আলোড়ন শক্তি কীভাবে কাজ করে ? 

Ans: মহিভাবক আলোড়ন পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বরাবর বা উল্লম্বভাবে কাজ করে । 

  1. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ কোন জাতীয় শিলায় দেখা যায় ? 

Ans: একাধিক খনিজের সমন্বয়ে গঠিত শিলায় ক্ষুদ্রকণা বিশরণ দেখা যায় । 

  1. পর্যায়ন কাকে বলে ? 

Ans: বহির্জাত প্রক্রিয়াসমূহের সম্মিলিত ক্ষয় ও সঞ্চয়কাজের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের সমতলীকরণ হলো পর্যায়ন । 

  1. আবহবিকার কাকে বলে ?

Ans: যে প্রক্রিয়ায় আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের সাহায্যে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়োজিত । হয়ে মূল শিলার ওপরেই থেকে যায় সেই প্রক্রিয়াকে আবহবিকার বলে । 

  1. ভূঅভ্যন্তরে যে শিলাস্তর জলশোষণ ও সরবরাহে অক্ষম তাকে কী স্তর বলে ?

Ans: ভূঅভ্যন্তরে যে শিলাস্তর জলশোষণ ও সরবরাহে অক্ষম তাকে অপ্রবেশ্য স্তর বলে । 

  1. গ্রস্ত উপত্যকা ও স্তূপ পর্বত সৃষ্টিতে কোন প্রকার ভূআলোড়ন দায়ী ? 

Ans: মহিভাবক আলোড়ন । 

  1. আরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে ? 

Ans: যে প্রক্রিয়ার দ্বারা ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পায় তাকে আরোহণ প্রক্রিয়া বলে । 

  1. জৈবিক অস্ত্রের মাধ্যমে ব্যাসল্ট শিলার বিয়োজন ঘটে কী ধরনের মৃত্তিা তৈরি হয় ? Ans: কৃমুক্তিকা । চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে জলের দ্রবণকার্যের ফলে ভূপৃষ্ঠে অসংখ্য ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয় , এদের সোয়ালো হোল বলে । এগুলি ফ্রান্সে সচ নামে পরিচিত। 

পরিচ্ছেদ ১ : ভৌমজলের কার্য ও সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়)

MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer

  1. হিমাচল প্রদেশের মণিকরণের উন্ন প্রস্রবণ হলো । একটি— 

(A) সংযোগ 

(B) চ্যুতি 

(C) বিদার 

(D) খনিজ দ্রবণ – প্রস্রবণ 

Ans: (B) চ্যুতি

  1. ভারতে চুনাপাথর ক্ষয়ের ফলে গঠিত বিশিষ্ট ভূমিরূপ দেখা যায়— 

(A) উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে 

(B) মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে 

(C) রাজস্থানের ভরতপুরে 

(D) বিহারের ভোজপুরে 

Ans: (A) উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে 

  1. কার্স্ট অঞ্চলে উভালা অপেক্ষা বিশালাকার গর্তকে বলে— 

(A) ডোলাইন 

(B) হামস 

(C) পোলজে 

(D) সিঙ্কহোল 

Ans: (C) পোলজে

  1. চুনের আধিক্যে মৃত্তিকা হয়— 

(A) অম্লধর্মী

(B) ক্ষারকীয় 

(C) প্রশমিত 

(D) কোনোটিই নয় 

Ans: (B) ক্ষারকীয়

  1. ক্ষুদ্র প্রস্রবণকে বলে— 

(A) গিজার 

(B) ফন্টেনলি 

(C) আর্টেজীয় কূপ 

(D) চ্যুতি প্রস্রবণ 

Ans: (B) ফন্টেনলি

  1. ভারতে প্রস্রবণ রেখা দেখা যায়— 

(A) দেরাদুনে 

(B) বিশাখাপত্তনমে 

(C) শিলঙে 

(D) কোনোটিই নয় 

Ans: (A) দেরাদুনে

  1. বড়ো আকারের গ্রাইককে পূর্বতন যুগোশ্লাভিয়ায়— 

(A) ক্লিস্ট 

(B) বোগাজ 

(C) সিঙ্কহোল

(D) ডোলাইন — বলে 

Ans: (B) বোগাজ

  1. চুনাপাথর থেকে সৃষ্ট ধূসর রঙের মৃত্তিকাকে বলে— 

(A) রেগোলিথ 

(B) টেরারোসা 

(C) রেনজিনা 

(D) কোনোটিই নয় 

Ans: (C) রেনজিনা

  1. দু’টি গ্রাইক – এর মধ্যবর্তী উঁচু ভূমিরূপকে বলে— 

(A) স্ট্যালাগমাইট 

(B) ক্লিন্ট 

(C) ডোলাইন 

(D) পোলজি 

Ans: (B) ক্লিন্ট

  1. স্ট্যালাকটাইট দেখতে পাওয়া যায়— 

(A) পলিগঠিত অঞ্চলে 

(B) মরু অঞ্চলে 

(C) ভারতের পশ্চিম উপকূলে 

(D) কার্স্ট অঞ্চলে 

Ans: (D) কার্স্ট অঞ্চলে

  1. অ্যাকুইফিউজ স্তরের একটি উদাহরণ হলো— 

(A) গ্রানাইট 

(B) কাদাপাথর 

(C) শেল 

(D) চুনাপাথর 

Ans: (A) গ্রানাইট

  1. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় যে জল নির্গত হয় , তাকে বলে— 

(A) জন্মগত জল 

(B) উৎস্যন্দ জল

(C) মিটিওরিক জল 

(D) সামুদ্রিক জল 

Ans: (B) উৎস্যন্দ জল

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer : 

  1. সহজাত জলের অপর নাম কী ? 

Ans: সহজাত জলের অপর নাম জন্মগত জল । অসম্পৃক্ত স্তরের নিম্নগামী জলকে কী বলে ? অসম্পৃত্ত স্তরের নিম্নগামী জলকে ভাদোস জল বলে । 

  1. ‘ কদম পাত্র ‘ কাকে বলে ? 

Ans: যে উয় প্রস্রবণ দিয়ে কাদাজলের মিশ্রণ বের হয় তাকে ‘ কর্দম পাত্ৰ ‘ বলে । 

  1. পোনর কী ? 

Ans: ভূপৃষ্ঠের চিরপ্রবাহী নদী যে পথ দিয়ে অভ্যন্তরে পৌঁছায় সেই সুড়ঙ্গপথটি হলো পোনর । 4. ‘ হেলিকটাইট ‘ কী ? 

Ans: চুনাপাথরের গুহার অভ্যন্তরে ক্যালসাইট তীর্যকভাবে , পাশাপাশি বাঁকানো বা অন্যান্য আকৃতির গড়ে উঠলে তাকে ‘ হেলিকটাইট ‘ বলে । 

  1. মিটিওরিক জল কী ? 

Ans: বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের জল ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ভূঅভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভৌমজলে পরিণত হয় । একে মিটিওরিক জল বলে । 

  1. আবদ্ধ জলাধার কীভাবে তৈরি হয় ? 

Ans: দু’টি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মাঝখানে একটি প্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করলে ও তার উপরিভাগ উন্মুক্ত অবস্থায় থাকলে আবদ্ধ জলাধার তৈরি হয় । 

  1. অ্যাকুইফার কী ? 

Ans: ভূপৃষ্ঠের নীচে প্রবেশ্য শিলাস্তরের পর অপ্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করলে জল চুঁইয়ে প্রবেশ্য শিলাস্তরে সঞ্চিত হয় । এই সঞ্চিত জলকে অ্যাকুইফার বলে । 

  1. আবদ্ধ অ্যাকুইফার কী ? 

Ans: যে অ্যাকুইফারের উপরে ও নীচে অপ্রবেশ্য শিলাস্তর থাকে এবং দুই প্রান্ত উন্মুক্ত হয় , তাকে আবদ্ধ অ্যাকুইফার বলে । আর্টেজীয় কূপ তৈরি হয় ) ।

  1. ‘ Valley of Geysers ‘ কোথায় দেখা যায় ?

Ans: রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে প্রায় 6 কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে 90 টি গিজার রয়েছে । এটি Valley of Geysers নামে পরিচিত । 

  1. অ্যাকুইক্লুড কাকে বলে ? 

Ans: অ্যাকুইকুড হলো একটি জলরোধক স্তর । এই স্তর অত্যধিক সচ্ছিদ্রতার জন্য জলপূর্ণ হয়ে পড়লে অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মতো আচরণ করে অর্থাৎ এই স্তর থেকে জল পরিবাহিত হতে পারে না ।

  1. ‘ গিজার ’ কী ? 

Ans: আগ্নেয়গিরি অধ্যুষিত অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের কোনো কোনো স্থান থেকে একটি নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট সময় অন্তর বাষ্প মিশ্রিত জল ফোয়ারার মতো প্রবল বেগে গর্জন করে উপরের দিকে উৎক্ষিপ্ত হয় , তাকে গিজার বলে । 

  1. কার্স্ট পিনাকেল কাকে বলে ? 

Ans: ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবশিষ্ট উচ্চভূমি হলো কার্স্ট টাওয়ার এবং টাওয়ারগুলি অতিতীক্ষ্ণ আকার হলে তাকে কার্স্ট পিনাকেল বলে । 

  1. অন্ধ উপত্যকার সংজ্ঞা দাও । 

Ans: চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর গতিপথে হঠাৎ কোনো সিঙ্কহোল সৃষ্টি হলে নদী উপত্যকাটি যেহেতু জলপূর্ণ থাকে এবং তারপর হঠাৎ ভূগর্ভে অন্তর্হিত হয় , তাই সিঙ্কহোল পর্যন্ত প্রসারিত এই নদী উপত্যকাটিকে অন্ধ উপত্যকা বলে । 

  1. প্রস্রবণ রেখা কাকে বলে ? 

Ans: যদি কোনো রেখা ধরে জলপৃষ্ঠ ভূপৃষ্ঠকে স্পর্শ করে , তবে সেই রেখা বরাবর অনেকগুলি প্রস্রবণ পর পর গড়ে ওঠে , একে প্রস্রবণ রেখা বলে । 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer : 

  1. ভৌমজলের নিয়ন্ত্রকগুলি ব্যাখ্যা করো ।

Ans: ভাদোস স্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জলকে বলা হয় ভাদোস জল । ভাদোস জল যখন নীচের স্তরে পৌঁছায় , তখন তাকে ভৌমজল বলে । ভৌমজলের প্রধান উৎস সাধারণ জল , বৃষ্টিপাতের জল ও তুষারগলা জল । এছাড়াও অন্য যে – সমস্ত উৎস থেকে ভৌমজল পাওয়া যায় , সেগুলি হলো – 

 ( ক ) মিটিওরিক জল বা আবহিক জল : বৃষ্টিপাত ও তুষারগলা জল ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে জলের একটি অংশ ভূঅভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভৌমজলে পরিণত হয় । একে মিটিওরিক জল বলে । আবহমণ্ডলের প্রধান উপাদান বৃষ্টিপাত এই জলের প্রধান উৎস । তাই এই জলকে আবহিক জলও বলা হয় ।

 ( খ ) সামুদ্রিক জল : উপকূলে খুব অল্প পরিমাণে সমুদ্রের জল শিলাস্তরের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভে প্রবেশ করে ভৌমজলের স্তর গঠন করে । একে সামুদ্রিক জল বলে । এই ধরনের জল ভূঅভ্যন্তরে খুব অল্প পরিমাণে পাওয়া যায় , একে আবার মহাসাগরীয় জলও বলা হয়৷ 

 ( গ ) জন্মগত বা সহজাত জল : মহিখাত পাললিক শিলায় গঠিত । গঠনের সময় থেকেই সমুদ্র বা হ্রদের একাংশ জল ঐ শিলাস্তরের মধ্যে থেকে যায় , একে সহজাত জল বা জন্মগত জল বলে ।

 ( ঘ ) ম্যাগমাটিক জল : অগ্ন্যুৎপাতের সময় ভূগর্ভ থেকে যে খনিজ মিশ্রিত উত্তপ্ত জ বেরিয়ে আসে , তাকে ম্যাগমাটিক জল বলে । এই জল ভূগর্ভ থেকে প্রথম ভূপৃষ্ঠে উৎসারিত হয় , তাই একে উৎস্যন্দ জল বলে । উৎস্যন্দ – এর অর্থ উৎ = উত্থান এবং স্যন্দ = গমন । 

  1. প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ করে সংক্ষেপে আলোচনা করো । 

Ans: প্রকৃতি অনুযায়ী প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ : জলের উপাদান , উয়তা , স্থায়িত্ব প্রভৃতি প্রকৃতি অনুযায়ী প্রস্রবণকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা হয় । যথা – 

  1. স্থায়িত্ব অনুসারে : স্থায়িত্ব অনুসারে প্রস্রবণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন— 

( ক ) অবিরাম প্রস্রবণ : সারাবছর যে প্রস্রবণ থেকে নিয়মিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল বেরিয়ে আসে , তাকে অবিরাম প্রস্রবণ বলে ।

( খ ) সবিরাম প্রস্রবণ : শুধুমাত্র বর্ষা বা আর্দ্র ঋতুতে যেসব প্রস্রবণ থেকে জল নির্গত হয় , অন্য সময় প্রস্রবণ শুকিয়ে যায় , তাকে সবিরাম প্রস্রবণ বলে । 

  1. উন্নতা অনুযায়ী : উয়তা অনুযায়ী প্রস্রবণকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । যথা : 

( ক ) উয়ু প্রস্রবণ : ভৌমজল অনেক গভীরে পৌঁছালে ভূগর্ভের তাপে তা উত্তপ্ত হয় । এই উয় জল ( > 98 ° F ) ভূপৃষ্ঠের কোনো ছিদ্র বা ফাটল দিয়ে নির্গত হয় । এই জলধারাকে উত্ন প্রস্রবণ বলা হয় । যথা– পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর । 

( খ ) গিজার ও গাইজার : অনেকসময় উয় প্রস্রবণের জল ও বাষ্প নিয়মিতভাবে কিছুক্ষণ পর পর স্তম্ভাকারে ওপর দিয়ে প্রবল বেগে উৎক্ষিপ্ত হয় । এদের গিজার বলে । যেমন— আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইউলোস্টোন পার্কের ওল্ড ফেথফুল গিজার । 

( গ ) শীতল প্রস্রবণ : অনেকসময় যে প্রস্রবণ থেকে শীতল জল নির্গত হয় , তাকে শীতল প্রস্রবণ বলে । উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের কাছে সহস্রধারা প্রস্রবণটি শীতল প্রস্রবণের উদাহরণ । 

  1. খনিজ উপাদান অনুসারে : এটি দু’ভাগে বিভক্ত । যথা— 

( ক ) খনিজ প্রস্রবণ : অনেক প্রস্রবণের জলে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ যেমন— লবণ , লোহা যৌগ , সালফার যৌগ ইত্যাদি দ্রবীভূত থাকে , এদের খনিজ প্রস্রবণ বলে । যেমন — বক্রেশ্বর বা রাজগিরের প্রস্রবণ খনিজ প্রস্রবণ । 

( খ ) স্বাদুজলের প্রস্রবণ : প্রস্রবণের জলে দ্রাব্য খনিজ পদার্থের পরিমাণ কম হলে তাকে স্বাদুজলের প্রস্রবণ বলে । 

গঠন অনুসারে প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ : 

  1) ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ । 

  2) চ্যুতি ও দারণ প্রস্রবণ ।

  3) ডাইক প্ৰস্রবণ । 

  4) আর্টেজীয় কূপ । 

  1. কার্স্ট অঞ্চলে সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ কীভাবে সৃষ্টি হয় তার ব্যাখ্যা দাও । 

Ans: কার্স্ট অঞ্চলে ভৌমজলের সঞ্চয়কার্যের ফলে বিভিন্ন শ্রেণির ভূমিরূপ গড়ে উঠে । যেমন— 

সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : 

  1. স্ট্যালাকটাইট : চুনাপাথরযুক্ত কার্স্ট অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে । জল চুনাপাথরকে দ্রবীভূত করে এবং চুনমিশ্রিত ঐ জল গুহার ছাদ ও দেওয়ালের অসংখ্য ফাটল ও দারণের মধ্য দিয়ে চুঁইয়ে নীচে নেমে আসে , একে স্ট্যালাকটাইট বলে । 
  2. স্ট্যালাগমাইট : কার্স্ট অঞ্চলে গুহার ছাদ থেকে চুনের ফোঁটা মেঝেতে পড়ে জমা হয় । ফলে চুনের অপেক্ষাকৃত মোটা স্তম্ভ উপরের দিকে বাড়তে থাকে । একে স্ট্যালাগমাইট বলা হয় । 
  3. হেলিকটাইট : চুনাপাথরের গুহার মধ্যে বহু অস্বাভাবিক আকৃতি ও ভঙ্গির মূর্তি গড়ে ওঠে । এর ফলে দ্রবীভূত চুনের মূর্তি ওপরে , নীচে এবং পার্শ্ব বরাবর তির্যকভাবে অথবা বক্রভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে , একে হেলিকটাইট বলে । 
  4. স্তম্ভ বা পিলার : চুনাপাথরযুক্ত কার্স্ট অঞ্চলে উপর থেকে নীচে নামতে থাকা স্ট্যালাকটাইট এবং নীচ অর্থাৎ গুহার মেঝে থেকে উপরের দিকে বাড়তে থাকা স্ট্যালাগমাইট দু’টি পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি দণ্ডের মতো বা স্তম্ভের মতো হয় , একে স্তম্ভ বলে । উল্লিখিত ভূমিরূপগুলি ছাড়াও ড্রেপ বা কার্টেন , গ্লোবুলাইট , হেলিগমাইট , অ্যানথোডাইট হলো সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ । 
  5. কার্স্ট অঞ্চলে সৃষ্ট সিঙ্কহোল , ডোলাইন , পোলজি এবং ড্রিপস্টোন কীরূপে গঠিত হয়েছে তা আলোচনা করো । 

Ans: সিঙ্কহোল চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে জলের দ্রবণকার্যের ফলে যে গোলাকার অবন।মত স্থান সৃষ্টি হয় তাকে সিঙ্কহোল বলে । 

ডোলাইন : সার্বিয়ান শব্দ Dolina থেকে Doline শব্দটি এসেছে । এর অর্থ হলো— ভূদৃশ্যের মধ্যে এক অবনমন । চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে দ্রবণ ও ক্ষয়কার্যের ফলে ফাটল আকৃতির সোয়ালো হোলগুলি ক্রমশ আয়তনে বেড়ে যে বৃহৎ আকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয় , তাদের ডোলাইন বলে । 

পোলজি : চুনাপাথর গঠিত অঞ্চলে দ্রবণ ও ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট বৃহদাকৃতির ইউভালাগুলিকে বলা হয় পোলজি । যেমন — পূর্বতন যুগোস্লাভিয়ার লিভোনো হলো পৃথিবী বিখ্যাত পোলজি ৷ 

ড্রিপস্টোন : ভূতত্ত্ববিদ W.M. Davis স্ট্যালাকটাইট , স্ট্যালাগমাইট , স্তম্ভ ও হেলিকটাইটকে একত্রে বলেছেন ড্রিপস্টোন ।