MCQ | প্রশ্ন ও উত্তর
- ‘ শিকার ‘ কবিতাটিতে যে ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছে , সেটি হলো –
(A) শরৎ ঋতু
(B) বর্ষা ঋতু
(C) হেমন্ত ঋতু
(D) শীত ঋতু
Ans: (D) শীত ঋতু
- ‘ শিকার ‘ কবিতাটি শুরু হয়েছে –
(A) রাত্রির ছবি দিয়ে
(B) দুপুরের ছবি দিয়ে
(C) ভোরের ছবি দিয়ে
(D) বিকেলের ছবি দিয়ে
Ans: (C) ভোরের ছবি দিয়ে
- ভোরের আকাশের রং –
(A) মোরগফুলের মতো লাল
(B) মচকাফুলের মতো লাল
(C) ঘাসফড়িঙের দেহের মতো নীল
(D) টিয়ার পালকের মতো সবুজ
Ans: (C) ঘাসফড়িঙের দেহের মতো নীল
- ‘ কোমল নীল ‘ রং ছিল—
(A) হরিণের দেহের
(B) চিতাবাঘিনির
(C) ঘাসফড়িঙের দেহের
(D) গোধূলিমদির মেয়েটির
Ans: (C) ঘাসফড়িঙের দেহের
- ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল রং হয়েছে , ভোরের—
(A) আকাশের
(B) মাঠের
(C) বনের
(D) জঙ্গলের
Ans: (A) আকাশের
- চারি দিকে পেয়ারা ও নোনার গাছ’ –
(A) গোধূলিমদির মেয়েটির মতো
(B) মচকাফুলের পাপড়ির মতো
(C) ভোরের রৌদ্রের মতো
(D) টিয়ার পালকের মতো
Ans: (D) টিয়ার পালকের মতো
- ‘ চারি দিকে পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ ।’— এখানে ‘ সবুজ ‘ রংটি –
(A) নিসর্গে ভোর হওয়ার প্রতীক
(B) বনজঙ্গলের প্রতীক
(C) নিসর্গের প্রাণময়তার প্রতীক
(D) মনুষ্যত্বের প্রতীক
Ans: (C) নিসর্গের প্রাণময়তার প্রতীক
- ‘ এখন আকাশে রয়েছে ; –
(A) একটি চন্দ্রমা
(B) একটি তারা
(C) একটি সূর্য
(D) মেঘের দল
Ans: (B) একটি তারা
- ‘ একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে : ‘ – এই তারাটিকে কবি তুলনা করেছেন –
(A) মচকাফুলের সঙ্গে
(B) মোরগফুলের সঙ্গে
(C) সকালের আলোর টলমল শিশিরের সঙ্গে
(D) পাড়াগাঁর বাসরঘরের গোধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে
Ans: (D) পাড়াগাঁর বাসরঘরের গোধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে
- ‘ শিকার ‘ কবিতায় পাড়াগাঁর বাসরঘরের মেয়েটিকে কবির মনে হয়েছে—
(A) গোধূলিমদির
(B) তন্দ্রালস
(C) চমকপ্রদ
(D) সাহসিনী
Ans: (A) গোধূলিমদির
- হাজার হাজার বছর আগের মুক্তা রেখেছিল , সে হল –
(A) মিশরের মানুষী
(B) দেশোয়ালি মানুষ
(C) হৃদয়ের মানবী
(D) স্বপ্নের মানবী
Ans: (A) মিশরের মানুষী
- মিশরীয় মানবী তার বুকের মুক্তা , ‘ আমার নীল মদের গেলাসে রেখেছিল’—
(A) কয়েকশো বছর আগে এক রাতে
(B) হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে
(C) কোনো এক রাতে
(D) কয়েকদিন আগে এক রাতে
Ans: (B) হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে
- ‘ হিমের রাতে শরীর ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য ‘ আগুন জ্বালিয়েছিল—
(A) পর্যটকেরা
(B) দেশোয়ালিরা
(C) বনবাসীরা
(D) গ্রামবাসীরা
Ans: (B) দেশোয়ালিরা
- সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বলেছিল , তার রং –
(A) করবীফুলের মতো
(B) মচকাফুলের মতো
(C) মোরগফুলের মতো
(D) কেয়াফুলের মতো
Ans: (C) মোরগফুলের মতো
- সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে — কারা আগুন জ্বেলেছে ?
(A) প্রবাসীরা
(B) দেশোয়ালিরা
(C) অতিথিবৃন্দ
(D) বনবাসীরা
Ans: (B) দেশোয়ালিরা
- ‘ হিমের রাতে শরীর ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে’ –
(A) গান করেছে
(B) খেলায় মেতেছে
(C) নাচ করেছে
(D) আগুন জ্বেলেছে
Ans: (D) আগুন জ্বেলেছে
- দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুন ভোরবেলাতেও জ্বলছিল –
(A) অর্জুনের বনে
(B) পেয়ারা ও নোনা গাছের তলায়
(C) শুকনো বনের পাতায়
(D) শুকনো অশ্বত্থ পাতায়
Ans: (D) শুকনো অশ্বত্থ পাতায়
- ‘ সূর্যের আলোয় তার রং কুকুমের মতো নেই আর ; —কীসের রং ?
(A) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের
(B) তারার আলোর
(C) হরিণের মাংস রাঁধবার আগুনের
(D) মচকাফুলের
Ans: (A) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের
- ‘ সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর ; — তার রং কীসের মতো হয়ে গেছে ?
(A) শুকনো পাতার ধূসর ইচ্ছার মতো
(B) কচি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ
(C) রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো
(D) নীল আকাশের মরা চাঁদের আলোর মতো
Ans: (C) রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো
- দেশোয়ালিরা আগুন জ্বেলেছিল—
(A) মুচড়ানো পেয়ারা পাতায়
(B) দুমড়ানো অশ্বত্থ পাতায়
(C) শুকনো অর্জুন পাতায়
(D) বাতাবিলেবুর জঙ্গলে
Ans: (B) দুমড়ানো অশ্বত্থ পাতায়
- ‘ রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো ।’
(A) কবি হৃদয়ের রং
(B) আকাশের রং
(C) সূর্যের আলোর রং
(D) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের রং
Ans: (D) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের রং
- ‘ শিকার ’ কবিতায় শিকারের ঘটনাটি ঘটেছিল—
(A) বিকেলে
(B) রাতে
(C) ভোরে
(D) অপরাহ্ণে
Ans: (C) ভোরে
- ‘ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে’—
(A) আকাশ ও মাঠ
(B) সুন্দরীর বন ও অর্জুনের বন
(C) মাঠ ও বন
(D) বন ও আকাশ
Ans: (D) বন ও আকাশ
- চারিদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করে , সকালের আলোয়—
(A) টলমল শিশিরে
(B) টলমল স্রোতে
(C) টলমল জলে
(D) টলমল বর্ষায়
Ans: (A) টলমল শিশিরে
- সারারাত হরিণ নিজেকে বাঁচিয়েছিল যার হাত থেকে—
(A) হিংস্র বাঘ
(B) চিতাবাঘিনি
(C) শিকারি
(D) চিতাবাঘ
Ans: (B) চিতাবাঘিনি
- ‘ সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে ঘুরে ! ‘ – এখানে বলা হয়েছে—
(A) দেশোয়ালিদের কথা
(B) গোধূলিমদির মেয়েটির কথা
(C) মিশরের মানুষীর কথা
(D) বাদামি হরিণটির কথা
Ans: (D) বাদামি হরিণটির কথা
- নক্ষত্রহীন মেহগনির মতো অন্ধকার নেমে এসেছিল –
(A) ভোরে
(B) রাতের সুন্দরী আর অর্জুনের বনে
(C) আগুন জ্বালানো মাঠে
(D) ঘাসের বিছানায়
Ans: B) রাতের সুন্দরী আর অর্জুনের বনে
- ‘ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ।’
(A) দেশোয়ালিরা
(B) মিশরীয় মানুষী
(C) একটি সুন্দর বাদামি হরিণ
(D) শিকারিরা
Ans: (C) একটি সুন্দর বাদামি হরিণ
- ‘ ভোরের আলোয় নেমে এসেছে –
(A) চিতাবাঘিনি
(B) বাদামি হরিণ
(C) গোধূলিমদির মেয়েটি
(D) বনের ময়ূর
Ans: (B) বাদামি হরিণ
- কবি ‘ কচি বাতাবিলেবু ‘ – র সঙ্গে তুলনা করেছেন—
(A) অর্জুন গাছকে
(B) ভোরের আকাশকে এসেছে
(C) ভোরের বনকে
(D) সবুজ ঘাসকে
Ans: (D) সবুজ ঘাসকে
- সুন্দর বাদামি হরিণ ভোরের আলোয় নেমে প্রথমে –
(A) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জলে নেমেছে
(B) সুন্দরী অর্জুনের বনে ছুটেছে
(C) বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধী ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে
(D) হরিণীর পর হরিণীতে চমকে দিতে চেয়েছে
Ans: (C) বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধী ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে
- সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের আলোয় নেমে এসেছে –
(A) আশ্বস্ত হয়ে
(B) ভয় পেয়ে
(C) চিতাবাঘিনিটির তাড়া খেয়ে
(D) বনের পথ ভুলে
Ans: (A) আশ্বস্ত হয়ে
- ‘ নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল ‘ — তার জলে নামার কারণ –
(A) ঘুমহীন ক্লান্ত শরীরটাকে আবেশ দেওয়া
(B) জল খাওয়া
(C) স্নান করা
(D) সাঁতার কাটা
Ans: (A) ঘুমহীন ক্লান্ত শরীরটাকে আবেশ দেওয়া
- ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল ‘ শরীরটাকে নদীর জলে আবেশ দিতে চেয়েছিল –
(A) টেরিকাটা কয়েকজন মানুষ
(B) দেশোয়ালি মানুষ
(C) কয়েকটি শিকারি
(D) একটি বাদামি হরিণ
Ans: D) একটি বাদামি হরিণ
- ‘ স্রোতের মতো একটা আবেশ দেওয়ার জন্য ; ‘ — বলার অর্থ –
(A) জলের ঢেউয়ে সাঁতার কাটার জন্য
(B) সকালের আলোয় জীবনীশক্তি আহরণ করার জন্য
(C) জলে খেলা করার জন্য
(D) জলে স্নান করার জন্য
Ans: (B) সকালের আলোয় জীবনীশক্তি আহরণ করার জন্য
- সুন্দর বাদামি হরিণটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়—
(A) কচি লেবু পাতা
(B) কচি বাতাবিলেবুর পাতা
(C) সবুজ সুগন্ধি ঘাস
(D) কচি বাতাবিলেবু
Ans: (C) সবুজ সুগন্ধি ঘাস
- ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল শরীরটাকে স্রোতের মতো / একটা আবেশ দেওয়ার জন্য ; ‘ — হরিণটি কী করল ?
(A) নরম ঘাসের ওপর শুয়ে পড়ল
(B) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জলে নামল
(C) অর্জুন বনের ছায়ায় বসে রইল
(D) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের উত্তাপ নিল
Ans: (B) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জলে নামল
- জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ‘ ভোর ‘ শব্দটি দ্বিতীয় বার ব্যবহৃত হয়েছে –
(A) ভোরের প্রবহমানতা বোঝাতে
(B) ভোরের পারম্পর্য রক্ষা করতে
(C) ভোরে জঙ্গলে প্রাণীর আচরণ বোঝাতে
(D) ভোরের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে নাটকীয় পট – পরিবর্তন বোঝাতে
Ans: (D) ভোরের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে নাটকীয় পট – পরিবর্তন বোঝাতে
- ‘ একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য ; ‘ – এই ‘ উল্লাস ‘ পেতে চেয়েছিল –
(A) দেশোয়ালিরা
(B) চিতাবাঘিনি
(C) বাদামি হরিণ
(D) শিকারি মানুষ
Ans: (C) বাদামি হরিণ
- নদীর জলে নামার আগে হরিণের শরীরটা ছিল—
(A) ‘ ক্লান্ত বিহ্বল ঘুমহীন ‘
(B) ‘ বিহ্বল ঘুমহীন ক্লান্ত
(C) ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল ‘
(D) ‘ ঘুমহীন বিহ্বল ক্লান্ত
Ans: (C) ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল ‘
- হরিণের বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার কারণ –
(A) ভোরের অফুরান রৌদ্রালোক
(B) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জল
(C) অন্ধকার বনের রোমাঞ্চ
(D) চিতাবাঘিনির হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া
Ans: (D) চিতাবাঘিনির হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া
- নীল আকাশের নীচে হরিণটি জেগে উঠেছিল –
(A) সোনার বর্শার মতো
(B) সোনার তরবারির মতো
(C) সূর্যের সোনার বর্শার মতো
(D) সূর্যের সোনার কিরণের মতো
Ans: (C) সূর্যের সোনার বর্শার মতো
- ‘ একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য ; – হরিণের এই ‘ উল্লাস ‘ – তুলনা করা হয়েছে –
(A) সকালের আকাশের সঙ্গে
(B) ভোরের রৌদ্রের সঙ্গে
(C) হিম অন্ধকারের সঙ্গে
(D) হিম নদীর জলের সঙ্গে
Ans: B) ভোরের রৌদ্রের সঙ্গে
- ‘ হরিণীর পর হরিণীকে চমক লাগিয়ে দেবার ইচ্ছা হয়েছিল হরিণের –
(A) ‘ সাহসে সাধে সৌন্দর্যে ‘
(B) ‘ সাহসে সৌন্দর্যে সংকল্পে ‘
(C) ‘ সাহসে সংকল্পে সাধে ‘
(D) ‘ সাধে উল্লাসে আনন্দে
Ans: (A) ‘ সাহসে সাধে সৌন্দর্যে ‘
- সূর্যের সোনার বর্শার মতো জেগে উঠেছিল—
(A) নীল আকাশ
(B) বাদামি হরিণ
(C) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুন
(D) বন ও আকাশ
Ans: (B) বাদামি হরিণ
- হরিণের হৃদয়ে সাহস , সাধ ও সৌন্দর্য জেগে ওঠার মুহূর্তেই –
(A) সূর্যের সোনার বর্শা জেগে উঠেছিল
(B) নদীর শীতল স্রোত আবেশ ধরিয়েছিল
(C) বন ও আকাশ ঝিলমিল করে উঠেছিল
(D) একটা অদ্ভুত শব্দ হয়েছিল
Ans: (D) একটা অদ্ভুত শব্দ হয়েছিল
- ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ ।’— এই শব্দটি হল—
(A) জন্তুর ডাক
(B) বন্দুকের গুলির
(C) হরিণের আর্ত চিৎকার
(D) মানুষের আর্তনাদ
Ans: (B) বন্দুকের গুলির
- ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ ।’— এখানে ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দটি ব্যবহারের কারণ –
(A) শানিত ছুরির ধাতব আওয়াজ
(B) জঙ্গলের রহস্যময় শব্দ
(C) হরিণের ছুটে যাওয়ার শব্দ
(D) নৈসর্গিক পরিবেশে বন্দুকের ধাতব আওয়াজ
Ans: (D) নৈসর্গিক পরিবেশে বন্দুকের ধাতব আওয়াজ
- ‘ নদীর জল _____ পাপড়ির মতো লাল । ‘
(A) মচকাফুলের
(B) জবা ফুলের
(C) গোলাপ ফুলের
(D) মোরগফুলের
Ans: (A) মচকাফুলের
- ‘ নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল । নদীর জল লাল হওয়ার কারণ –
(A) সূর্যাস্তের আলো
(B) ভোরের সূর্যের আলোর ছটা
(C) চিতাবাঘিনির দেহের লাল রক্তের রং
(D) নিহত হরিণের দেহের লাল রক্তের রং
Ans: (D) নিহত হরিণের দেহের লাল রক্তের রং
- ‘ আগুন জ্বলল আবার — প্রথমবার আগুন জ্বলেছিল –
(A) হিম রাতে শরীরের ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য ,
(B) বন্য জন্তুদের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে
(C) রাতের অন্ধকার দূর করার জন্য
(D) হরিণের মাংস তৈরির প্রয়োজনে
Ans: (A) হিম রাতে শরীরের ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য ,
- ‘ আগুন জ্বলল আবার ‘ – দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার সময়টি ছিল—
(A) রাত্রি বেলা
(B) ভোর বেলা
(C) দুপুর বেলা
(D) বিকেল বেলা
Ans: (B) ভোর বেলা
- নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় হত—
(A) অনেক পুরোনো শিশিরভেজা গল্প
(B) অনেক পুরোনো দিনের গল্প
(C) অনেক পুরোনো বৃষ্টির দিনের গল্প
(D) অনেক পুরোনো ভালোবাসার গল্প
Ans: (A) অনেক পুরোনো শিশিরভেজা গল্প
- ‘ উষ্ণ লাল ‘ রংটি ছিল—
(A) ভোরের সূর্যের
(B) অস্তগামী সূর্যের
(C) হরিণের মাংসের
(D) দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের
Ans: (C) হরিণের মাংসের
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | শিকার (কবিতা) জীবানন্দ দাশ – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Shikar Question and Answer :
- ‘ শিকার ’ কবিতায় প্রথমেই ‘ ভোর ‘ শব্দটি কী অর্থ ফুটিয়ে তোলে ?
Ans: ‘ শিকার ’ কবিতার শুরুতেই ‘ ভোর ’ শব্দটি আলোকিত আকাশ , অরণ্য ও নিসর্গের সৌন্দর্যের জাগরণের ইঙ্গিতকে ফুটিয়ে তোলে ।
- ভোরবেলার আকাশ এবং গাছপালা দেখে ‘ শিকার ’ কবিতায় কবির কী মনে হয়েছিল ?
Ans: কবি জীবনানন্দের মনে হয়েছিল ভোরবেলার আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল এবং পেয়ারা – নোনা প্রভৃতি চারপাশের গাছের রং টিয়ার পালকের মতো সবুজ ।
- আকাশের সঙ্গে ঘাসফড়িঙের দেহ কিংবা টিয়ার পালকের সঙ্গে গাছের রঙের তুলনা কবি করেছেন কেন ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রাণময়তা এবং গভীরতাকে ফুটিয়ে তুলতেই আকাশের সঙ্গে ঘাসফড়িঙের দেহের কোমল নীল আর গাছপালার সঙ্গে টিয়ার পালকের সবুজ রঙে র তুলনা করেছেন ।
- ‘ একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে ; ‘ — কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: পাঠ্য ‘ শিকার ’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ ভোরের আকাশে ফুটে থাকা একটিমাত্র তারার কথা বলেছেন ।
- ‘ সব চেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো ; ‘ — কবি কার সঙ্গে এমন তুলনা করেছেন ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ ভোরের আকাশে ফুটে থাকা তারাটির রূপময়তাকে পাড়াগাঁর বাসরঘরের সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে তুলনা করেছেন ।
- ‘ একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে : ‘ — ‘ এখন ‘ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?
Ans: ভোরের আকাশ ক্রমশ আলোকিত হয়ে ওঠার কারণে কেবল একটি তারাই ফুটে আছে । এ কথা ফুটিয়ে তুলতেই কবি ‘ এখন ‘ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে ‘ — তারাটিকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
অথবা , ‘ তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও ’ – তারাটিকে দেখে কবির কী কী মনে হয়েছে ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ ভোরের আকাশে জেগে থাকা একটি মাত্র তারার সৌন্দর্যকে পাড়াগাঁর বাসরঘরের গোধূলিমদির মেয়েটি কিংবা হাজার হাজার বছর আগের মিশরীয় মানবীর বুকের মুক্তার সঙ্গে তুলনা করেছেন ।
- ‘ টিয়ার পালকের মতো সবুজ ।’— কীসের সঙ্গে এমন তুলনা ?
Ans: ‘ শিকার ’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের ভোরবেলাকার পেয়ারা আর নোনা গাছকে টিয়ার পালকের মতো সবুজ বলে মনে হয়েছে ।
- ‘ শিকার ’ কবিতায় ‘ ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল ’ কী ছিল ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ভোরবেলার আকাশ ছিল ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল ।
- ‘ সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে — কারা আগুন জ্বেলেছে ?
Ans: হিম রাতে শরীর ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে ।
- তার বুকের থেকে যে মুক্তা ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: ‘ শিকার ‘ কবিতা অনুসারে হাজার হাজার বছর আগে । মিশরীয় মানবী বুক থেকে নিয়ে যে – মুক্তো কথকের নীল মদের গেলাসে রেখেছিল , ঠিক তেমনই ভোরের আকাশের তারাটির লাবণ্য ।
- তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও । ‘ -‘এখনও ‘ শব্দটি প্রযুক্ত হওয়ার কারণ কী ?
Ans: “ শিকার ’ কবিতা অনুসারে হাজার হাজার বছর আগে মিশরীয় মানুষী বুক থেকে যে – মুক্তো নিয়ে কথকের নীল মদের গেলাসে রেখেছিল , ঠিক তেমনই এক তারা আজও ভোরের আকাশে জ্বলছে ।
- ‘ সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে — আগুন জ্বালার কারণ কী ছিল ?
Ans: দেশোয়ালিরা হিম রাতে শরীর ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছিল ।
- ‘ মোরগফুলের মতো লাল আগুন ; এখানে কোন আগুনের কথা বলা হয়েছে ?
অথবা এই আগুন মো মতো লাল আগুন ; ‘ — কখন , দেশোয়ালিরা জ্বালিয়েছিল ?
Ans: ‘ মোরগফুলের মতো লাল আগুন ‘ বলতে দেশোয়ালিরা হিম রাতে শরীর ‘ উম্ ‘ রাখবার জন্য সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বেলেছিল , তার কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ এখনও আগুন জ্বলছে তাদের ; —কীভাবে ‘ এখনও ’ আগুন জ্বলছে ?
Ans: দেশোয়ালিরা শরীর ‘ উম্ ’ রাখার জন্য শুকনো অশ্বত্থ পাতা দুমড়ে যে – আগুন জ্বেলেছিল , তা ভোরের আলোয় রোগা শালিকের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো এখনও জ্বলছে ।
- ‘ লাল আগুন ‘ — আগুনটি কেমন ছিল ?
Ans: রাতে দেশোয়ালিদের জ্বালানো মাঠের আগুন ছিল । মোরগফুলের মতো লাল ।
- ‘ এখনও আগুন জ্বলছে ‘ — এখনও ‘ আগুন জ্বলছে ’ কেন ?
Ans: অশ্বত্থ পাতা পুড়ে ছাই না – হওয়ায় দেশোয়ালিদের রাতে জ্বালানো আগুন ভোরবেলাতেও জ্বলছে ।
- তার রং কুকুমের মতো নেই আর ; ‘ — এখানে ‘ তার ‘ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: এখানে ‘ তার ’ বলতে দেশোয়ালিদের সারারাত মাঠে জ্বালানো আগুনের কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ তার রং কুকুমের মতো নেই আর ; তার রং আর ‘ কুকুমের মতো ’ নেই কেন ?
Ans: ভোরবেলায় সূর্যের আলোর উজ্জ্বলতার কারণে দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের রং আর কুকুমের মতো নেই ।
- তার রং কুকুমের মতো নেই আর ; ‘ — এখন তার রং কেমন হয়েছে ?
Ans: দেশোয়ালিদের জ্বালানো মাঠের আগুনের রং ভোরের সূর্যালোকে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো হয়ে গেছে ।
- হয়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো । -কোন প্রসঙ্গে এমন উক্তি ?
Ans: হিম রাতে শরীর উম্ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা মাঠে যে আগুন জ্বালিয়েছিল , ভোরের সূর্যালোকে তার রং রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো হয়ে গেছে ।
- ‘ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে ‘ — কখন এমন ঘটেছিল ?
Ans: চারদিকের বন ও আকাশ সকালের আলোয় টলমলে শিশিরে ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছিল । 23. শিকার কবিতায় ‘ ভোর ‘ শব্দটি পুনর্বার ব্যবহারের কারণ কী ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ‘ ভোর ‘ শব্দটি অপরূপ নৈসর্গিক পরিবেশের মাঝে নাটকীয় পট পরিবর্তনকে সূচিত করতে পুনবার ব্যবহৃত হয়েছে ।
- হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে ‘ — কে , কার হাত থেকে নিজেকে সারারাত বাঁচিয়েছিল ?
Ans: শিকার ’ কবিতায় , সারারাত চিতাবাঘিনির হাত সুন্দর বাদামি হরিণ নিজেকে বাঁচিয়েছিল ।
- ‘ নক্ষত্রহীন মেহগনির মতো অন্ধকার’— কোথায় নেমে এসেছিল ?
Ans: ‘ শিকার ’ কবিতা অনুসারে সুন্দরী আর অর্জুনের বনে যেখানে বাদামি হরিণটি ঘুরে বেড়িয়েছিল , সেখানে নক্ষত্রহীন মেহগনির মতো অন্ধকার নেমে এসেছিল ।
- রাতের অন্ধকারকে মেহগনির সঙ্গে তুলনা করার কারণ কী ?
Ans: মেহগনি কালচে পীত বর্ণের মূল্যবান কাঠ । রাতের অন্ধকারের গভীরতা বোঝানোর জন্য কবি জীবনানন্দ দাশ এখানে মেহগনির উপমা ব্যবহার করেছেন ।
- মেহগনির মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বনে ‘ কী ঘটেছিল ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতার সুন্দর বাদামি হরিণটি মেহগনির মতো গাঢ় নিকষ অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে ভোরের আলোর অপেক্ষা করছিল ।
- ‘ সুন্দর বাদামি হরিণ ‘ চিতাবাঘিনির হাত থেকে বাঁচতে কোন্ কোন্ বনে ঘুরেছিল ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণ ‘ চিতাবাঘিনির হাত থেকে বাঁচতে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে বনে ঘুরেছিল ।
- ‘ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল । ‘ –কে , কোন ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ।
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতার সুন্দর বাদামি হরিণটি বিপন্মুক্ত এক অনাবিল , উজ্জ্বল ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ।
- ‘ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ।’- কেন ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতার বাদামি হরিণটি চিতাবাঘিনির হাত থেকে বাঁচতে অন্ধকার বনে বনে ঘুরে সূর্যালোকের স্পষ্টতা এবং আশ্বস্ততার খোঁজে ভোরের আলোর জন্য অপেক্ষা করছিল ।
- এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে ।’- ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ?
Ans: এখানে ‘ সে ‘ বলতে সুন্দর বাদামি হরিণটির কথা বলা
- মেহগনির মতো অন্ধকারে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ রাত্রে সুন্দরী ও অর্জুন গাছের বনের অন্ধকারের গাঢ় গভীরতা বোঝাতে ‘ মেহগনির মতো অন্ধকারে শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন ।
- সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে : কার কথা বলা । হয়েছে ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতা অনুসারে সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের আলোয় ‘ সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে ।
- ‘ সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে : ‘ — ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার কারণ কী বলে মনে হয় ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটি সারারাত চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে অন্ধকার বনে বনে ঘুরে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত ছিল ; তাই সে ভোরের আলোয় সতেজ ঘাস খেয়ে তৃপ্ত হয় ।
- ‘ কচি বাতাবিলেবুর মতো ‘ — কার সঙ্গে এমন তুলনা ?
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ ‘ শিকার ’ কবিতায় কচি বাতাবিলেবুর সঙ্গে সবুজ সুগন্ধি ঘাসের তুলনা করেছেন ।
- ‘ কচি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ‘ — কবি এমন তুলনা করেছেন কেন ?
Ans: কচি বাতাবিলেবুর সঙ্গে ঘাসের তুলনার কারণ উভয়ের গাঢ় সবুজ রং , সজীবতা এবং সুগন্ধ ।
- ‘ সে নামল ‘ — এখানে ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতা অনুসারে ‘ সে ’ বলতে । সুন্দর বাদামি হরিণটির কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ সে নামল ‘ — সে কোথায় নামল ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের আলোয় আশ্বস্ত হয়ে নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে নেমেছিল ।
- ‘ নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল ‘ — ‘ সে ‘ নদীতে কেন ?
Ans: সারারাত চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে বনে ঘুরে ঘুরে ঘুমহীন ক্লাস্ত ও বিহ্বল শরীরটাকে স্রোতের মতন আবেশ । দেওয়ার জন্য বাদামি হরিণটি নদীর জলে নেমেছিল ।
- নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে ‘ — ঢেউকে ‘ তীক্ষ্ণ শীতল ‘ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: ‘ শিকার ‘ কবিতা অনুসারে , নদীর জলের তীব্র গতিময় । শীতলতাকে কবি জীবনানন্দ দাশ তীক্ষ্ণ শীতল ‘ শব্দবন্ধের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
- হরিণটিকে ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতার সুন্দর বাদামি হরিণটি চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে সারারাত বনের অন্ধকারে ঘুরে ভোরবেলায় ক্লান্ত ও বিহ্বল হয়ে পড়েছিল ।
- ‘ স্রোতের মতো একটা আবেশ দেওয়া ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটি সারারাতের ঘুমহীনতার ক্লান্তি ও ভয়জনিত বিহ্বলতা দূর করার জন্য , শরীরটাকে স্রোতের মতো প্রাণময় ও গতিশীল একটা আবেশ দিতে নদীর তীক্ষ্ণ ঢেউয়ে নেমেছিল ।
- ‘ অন্ধকারের হিম কুণ্ঠিত জরায়ু ছিঁড়ে কে বেরিয়ে আসে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতা অনুসারে অন্ধকার রাত্রের ‘ হিম কুণ্ঠিত জরায়ু ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা ভোরের রৌদ্রের মতো বেরিয়ে আসে প্রাণচঞ্চল , সুন্দর বাদামি হরিণ ।
- ‘ একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য । ‘ —বিস্তীর্ণ উল্লাস ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: ভোরের আলোর প্রাণময় আশ্বস্ততা এবং রাত্রে চিতাবাসিনির হাত থেকে আত্মরক্ষার আনন্দের অপরিমেয়তা বোঝাতে কবি জীবনানন্দ দাশ বিস্তীর্ণ উল্লাস ’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ বিস্তীর্ণ উল্লাস ‘ পাবার জন্য হরিণটি কী করেছিল ?
Ans: রাতজাগা ক্লান্ত ও বিহ্বল হরিণটি ভোরের আলোয় কচি বাতাবিলেবুর মতো সুগন্ধি ঘাস খেয়ে এবং নদীর প্রাণময় শীতল স্রোতে নেমে ‘ বিস্তীর্ণ উল্লাস ’ পেতে চেয়েছিল ।
- ‘ একটা বিস্তীর্ণ উল্লাস পাবার জন্য , ‘ — হরিণটির বিস্তীর্ণ উল্লাসকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ?
Ans: অন্ধকারের হিমকুঞ্চিত জরায়ু ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা ভোরের সূর্যালোকের সঙ্গে সুন্দর বাদামি হরিণের বিস্তীর্ণ উল্লাসের তুলনা করা হয়েছে ।
- ‘এই নীল আকাশের নীচে ’ কী ঘটেছিল ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের অপরূপ নীল আকাশের নীচে সূর্যালোকের স্পর্শে জীবনীশক্তি ফিরে পেয়ে জেগে উঠেছিল ।
- সূর্যের সোনার বর্শার মতো জেগে ওঠা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: সারারাতের সমস্ত ক্লান্তি , উদবিগ্নতা কাটিয়ে ভোরের আলোয় হরিণটির উজ্জ্বল সূর্যালোকের মতোই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠাকে বোঝাতেই কবি জীবনানন্দ দাশ এই উপমা ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ সোনার বর্শার মতো জেগে উঠে ‘ হরিণটি কী করতে চেয়েছিল ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের সূর্যালোকে সোনার বশীর মতো জেগে উঠে ‘ সাহসে – সাধে – সৌন্দর্যে ‘ হরিণীর পর হরিণীকে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল ।
- ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ ‘ — এখানে ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কেন ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ভোরের অপরুপ প্রাকৃতিক পরিবেশে বন্দুকের গুলির ধাতব শব্দের বিসদৃশ ও নির্মম ব্যঞ্জনা সৃষ্টির জন্য কবি ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ ‘ — শব্দটি কখন হয়েছিল ?
Ans: ভোরের অপরূপ সূর্যালোকে সুন্দর বাদামি হরিণটির সাহসে , সাধে ও সৌন্দর্যে জেগে ওঠার সময়েই ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দটি হয়েছিল ।
- ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ— কীসের শব্দের কথা এখানে বলা হয়েছে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দটি হল হিরণময় অরণ্যভূমির শান্ত নির্জন পরিবেশে বন্দুকের গুলির ধাতব আওয়াজের ।
- অদ্ভুত শব্দের পরে নদীর জলের রং কেমন হয়েছিল ?
Ans: বন্দুকের গুলির ‘ অদ্ভুত ‘ শব্দের পরেই নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে উঠেছিল ।
- ‘ নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল ‘ হয়ে উঠেছিল কেন ?
Ans: নির্মম শিকারির নিক্ষিপ্ত গুলিতে বিদ্ধ নিরীহ নিরপরাধ হরিণের দেহের রক্তে নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে উঠেছিল ।
- ‘ মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল ‘ — কোন্ প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য ?
Ans: নৃশংস মানুষের বন্দুকের গুলিতে নিহত হরিণের রক্তে নদীর জল লাল হয়ে ওঠাকে , কবি জীবনানন্দ ‘ মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল ‘ বলে উপমায়িত করেছেন ।
- আগুন জ্বলল আবার ’ – এর আগে কখন আগুন জ্বলেছিল ?
Ans: ‘ শিকার ’ কবিতা অনুসারে হিম রাতে শরীর গরম রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে আগুন জ্বালিয়েছিল ।
- ‘ আগুন জ্বলল আবার ‘ — আবার আগুন জ্বলেছিল কেন ?
Ans: শিকারে মৃত হরিণের মাংস তৈরি করার জন্য দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলেছিল ।
- ‘ উষ্ণ লাল হরিণের মাংস তৈরি হয়ে এল ।’- কারা মাংস তৈরি করল ?
Ans: শিকারের নৃশংস আমোদ ও মত্ততায় অভ্যস্ত হৃদয়হীন নাগরিক মানুষ , সুন্দর বাদামি হরিণটিকে হত্যা করে রসনা পরিতৃপ্তির আশায় তার লাল মাংস তৈরি করেছিল ।
- ‘অনেক পুরানো শিশিরভেজা গল্প ; ‘ — কোথায় এমন ঘটেছিল ?
Ans: নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় বসে , নির্মম – হৃদয়হীন ঘাতক মানুষেরা অনেক পুরোনো শিশিরভেজা গল্প করেছিল ।
- ‘ নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় বসে ‘ — কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ শিকার ’ কবিতা অনুসারে ভোরবেলায় নিরীহ হরিণের হত্যালীলা সাঙ্গ করে মৃত হরিণের মাংস তৈরির সময় হত্যাকারী মানুষের দল নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় বসেছিল ।
- ‘ নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় ’ কারা বসে রয়েছে ?
Ans: নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় টেরিকাটা মাথার শিকারি মানুষের দল বসে রয়েছে ।
- ‘ নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় ‘ — কীসের ধোঁয়ার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় হৃদয়হীন ঘাতক মানুষের সিগারেটের ধোঁয়ার কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা ; ‘ — এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতায় হৃদয়হীন হত্যাকারী মানুষের দলটির নাগরিক বেশভূষা ও অভ্যাসকে ফুটিয়ে তুলতে কবি ‘ টেরিকাটা কয়েকটি মানুষের মাথা ‘ কথাগুলির ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ এলোমেলো কয়েকটা বন্দুক ’ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: বন্দুকের মতো একটি ভয়াবহ মারণাস্ত্রের বিপজ্জনক বিভীষিকা এবং মানুষের সঙ্গে তার মনুষ্যত্বহীন সংলগ্নতাকে ফুটিয়ে তোলে প্রশ্নোদ্ধৃত শব্দবন্ধটি ।
- ‘ এলোমেলো কয়েকটা বন্দুক ‘ — বন্দুকগুলি দিয়ে কী করা হয়েছিল ?
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতা অনুসারে বন্দুকগুলি দিয়ে নাগরিক সভ্যতার প্রতিভূ হৃদয়হীন মানুষেরা হরিণ শিকার করেছিল ।
- “ নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ।’— এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: জীবনানন্দ দাশ ‘ শিকার ’ কবিতায় নিরীহ হরিণের মৃত অবস্থাটিকে বর্ণনা করতে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন ।
- ‘ নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ।’— ঘুমকে ‘ নিস্পন্দ ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটির মৃত্যু চিরকালীন নিদ্রাকে ফুটিয়ে তোলে বলেই তার ঘুমকে ‘ নিস্পন্দ ‘ বলা হয়েছে ।
- নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ।’— ঘুমকে ‘ নিরপরাধ ‘ বলা হয়েছে ?
Ans: নিষ্পাপ প্রকৃতির ভোরের আলোর মতোই সুন্দর বাদামি হরিণটি ছিল নিরীহ । তাকে হত্যা করা হল বিনা অপরাধে । তাই হরিণের এই মৃত্যুরূপী ঘুমকে কবি জীবনানন্দ দাশ ‘ নিরপরাধ ’ বলেছেন ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | শিকার (কবিতা) জীবানন্দ দাশ – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Shikar Question and Answer :
1. জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতাটিতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও মানুষের হৃদয়হীন কদর্যতার যে – প্রকাশ ঘটেছে , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো ।
অথবা , “ ভোর ’ –এই শব্দটিই যেন শিকার কবিতার দুটি অংশে প্রবেশের দুটি চাবি , যা এই কবিতার শুরুতে এবং মাঝে উচ্চারিত হয়েছে ।’— ‘ শিকার ’ কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা করে উদ্ধৃত বক্তব্যটি বিশ্লেষণ করো ।
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ ‘ শিকার ’ কবিতায় ভোরের প্রেক্ষাপটে প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপলাবণ্যের মাঝে , মানুষের চিরকালীন হৃদয়হীনতাকে আশ্চর্য নাটকীয়তায় প্রকাশ করেছেন । ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল রঙের আকাশকে রাঙিয়ে এ পৃথিবীতে ভোর নেমে আসে । মৃদু আলোয় চারদিকের পেয়ারা – নোনার গাছ হয়ে ওঠে টিয়ার পালকের মতো সবুজ । পাড়াগাঁয়ের বাসরঘরের মেয়েটির মতোই স্নিগ্ধ একটি তারা তখনও উজ্জ্বল হয়ে ফুটে থাকে নীলাভ নির্মল আকাশের ক্যানভাসে । দেশোয়ালিরা হিম রাতে শরীরকে গরম রাখবার জন্য যে – লাল আগুন জ্বেলেছিল , তা ক্রমশ দীপ্ত সূর্যের আলোয় বিবর্ণ হয়ে আসে । সকালের সদ্যোদিত রক্তিম আলোর উদ্ভাসে শিশিরের জলে , চারদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ – নীল ডানার মতো যেন ঝিলমিল করে ওঠে ।
একটি সুন্দর বাদামি হরিণ সারারাত বনে বনে ঘুরে চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে ক্লান্ত শরীরে ভোরের আলোয় সবুজ সুগন্ধি ঘাস খেয়ে , নদীর প্রাণবন্ত স্রোতে নেমে বেঁচে থাকার উল্লাসকে খুঁজে পেতে চায় । হরিণটি সাহসে সাথে সৌন্দর্যে মানুষের হিংস্রতার বলি হল হরিণ , রাঙিয়ে দিতে চায় হরিণীর হৃদয় । কিন্তু আচমকা গুলির শব্দ শোনা যায় । নদীর জল লাল হয়ে ওঠে । তথাকথিত সভ্য শহুরে মানুষের হাতে পড়ে হরিণটি নিষ্প্রাণ মাংসপিণ্ডে রূপান্তরিত হয় । ভোরের আলো , নিসর্গের অতুলনীয় লাবণ্য , হরিণের উল্লাস —এসব কোনো কিছুই মানুষের নির্মমতাকে যেন বদলাতে পারে না । আধুনিক ভোগবাদী নাগরিক সভ্যতায় অভ্যস্ত মানুষের সীমাহীন । লোভ , অমানবিকতা ও হৃদয়হীনতাকে কবি এভাবেই তুলে ধরেছেন ।
2. ‘ শিকার ’ কবিতায় কবি জীবনানন্দের প্রতিভা ও বৈশিষ্ট্য কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে , তা কবিতা অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো ।
অথবা , ‘ শিকার ’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের যে মানসিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটেছে , তা বিশ্লেষণ করো ।
Ans: বাংলা কবিতার ধারায় রবীন্দ্র – পরবর্তী কবিদের মধ্যে সবচেয়ে স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল হলেন কবি জীবনানন্দ দাশ । পাঠ্য ‘ শিকার ‘ কবিতাটিতেও তাঁর স্বতন্ত্রতা – স্বরূপ আশ্চর্য চিত্রধর্মিতায় প্রকাশ পেয়েছে ।
‘ ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল ’ আকাশ বা ‘ টিয়ার পালকের মতো সবুজ ’ গাছপালা অথবা আকাশের তারার ‘ পাড়াগাঁর নিসর্গ বর্ণনায় অনবদ্য বাসরঘরের সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়ে ’ হয়ে । উপমা প্রয়োগ ওঠা কিংবা মাঠের আগুনের ‘ মোরগফুলের মতো লাল হয়ে জ্বলে থাকা প্রভৃতি ভোরের নিসর্গকে দ্রুত বদলে যেতে থাকা আলোর মতোই ফুটিয়ে তোলে । তারার সৌন্দর্যকে মিশরীয় মানুষীর বুকের নীল মুক্তোর সঙ্গে তুলনা প্রকৃতির শাশ্বত বৈভবের অর্থপূর্ণ ছবি হিসেবে তুলে ধরে । তৃতীয় স্তবকে ‘ ভোর শব্দকে পুনর্বার ব্যবহার করে কবি সচেতনভাবেই প্রেক্ষাপট বদলের ইঙ্গিত দেন । কবি এরপর এক সমাজসচেতনতার ছটফটে হরিণের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা , ঘাস খাওয়া এবং নদীর জলে নামার উল্লাসকে তুলে ধরেন । তারপর ‘ অদ্ভূত শব্দ ‘ – এর সঙ্গে নদীর জল লাল হয়ে ওঠা , এক প্রাণঘাতী আয়োজনকে নিমেষে স্পষ্ট করে তোলে । বিপন্ন যুগযন্ত্রণার স্বভাবসিদ্ধ বাঙ্ময় প্রকাশ ঘটে কবির অনুপম লেখনীতে । কবি এভাবেই চিত্রকল্প নির্মাণে , শব্দ প্রয়োগে এবং ব্যঞ্জনা সৃষ্টির দক্ষতায় হৃদয়হীন মানুষের আমোদ ও লালসার শিকার ‘ হয়ে নিরপরাধের চিরঘুমে চলে যাওয়াকে মাত্রাহীন অভিব্যক্তি দান করেছেন ।
3. ‘ শিকার ‘ কবিতায় ‘ ভোর ‘ – এর সৌন্দর্য ও পরিবেশ কীভাবে তাৎপর্যবাহী হয়ে উঠেছে ব্যাখ্যা করো ।
অথবা , ‘ শিকার ‘ কবিতায় কবি ‘ ভোর ‘ – এর প্রেক্ষাপটকে কীভাবে দুটি ভিন্ন ব্যঞ্জনায় ব্যবহার করেছেন , তা কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো ।
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতায় ‘ ভোর ‘ এক মায়াময় নৈসর্গিক পরিবেশ থেকে , মানুষের অমানবিক নির্মমতার রক্তাক্ত সাক্ষ্য বহন করে । কবিতার প্রথমাংশে ‘ ভোর ‘ – এর আলোয় ঘাসফড়িঙের দেহের মতো লাবণ্যময় নীলে ভরে ওঠে আকাশ ; চারপাশের পেয়ারা , নোনা প্রভৃতি গাছের রং হয়ে ওঠে টিয়ার অপরুপ সৌন্দর্যমণ্ডিত পালকের মতো সবুজ । পাড়াগাঁর সলজ্জ বধূ কিংবা মিশরীয় মানুষীর বুকের নীল মুক্তোর ভোর মতো একটিমাত্র তারা আকাশে ফুটে থাকে । দেশোয়ালিদের মাঠের আগুন ক্রমশ সূর্যের আলোয় উজ্জ্বলতা হারিয়ে , হয়ে আসে স্নান । কেবল সকালের আলোয় টলমলে শিশিরে ঝিলিক দিয়ে ওঠে চারপাশের বন ও আকাশ ।
জঙ্গলের এই নির্মল সৌন্দর্যের কোলে একটি সুন্দর বাদামি । হরিণ এসে উপস্থিত হয় । সারারাত বনের অন্ধকারে ঘুরে চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে , সে হিংসতায় কলুষিত রক্তাক্ত ভোর ক্লান্ত , ক্ষুধার্ত , বিহ্বল । হরিণটি কচি সুগন্ধি ঘাস খায় ; নদীর স্রোতে নামে । প্রাণবন্ত জলের আবেশ সে যখন গায়ে মাখছে , তখনই গুলির শব্দে জল হয়ে ওঠে লাল । ঘাতক মানুষের পৈশাচিক আমোদ আর লোভে হরিণটি ততক্ষণে উয় লাল মাংসপিণ্ডে রূপান্তরিত হয়েছে । পাঠ্য কবিতায় ‘ অন্ধকারের হিম কুঞ্চিত জরায়ু ছিঁড়ে যে – স্নিগ্ধ আলোকপূর্ণ ভোরের উদ্ভাস ফুটে ওঠে , তা মানুষের হাতে মৃত হরিণের রক্তে করুণ ও বিষণ্ণ হয়ে ওঠে । তাই ‘ ভোর ’ এখানে দুটি বিপরীত ব্যঞ্জনার এক আশ্চর্য দৃষ্টান্তকে প্রকাশ করে ।
4. ‘ তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও । ‘ শিকার ‘ কবিতায় কবি আকাশের নক্ষত্রের প্রসঙ্গকে কীভাবে ব্যবহার করেছেন , লেখো ।
অথবা , ‘ পাড়াগীর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো ‘ — ‘ শিকার ‘ কবিতায় বর্ণিত ভোরের নিসর্গের সঙ্গে উদ্ধৃত প্রসঙ্গটির যোগসূত্র আলোচনা করো ।
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতাটি ভোরের পটভূমিকায় লেখা । এ ভোরের ছবি সীমাহীন নিসর্গ আর আরণ্যক প্রকৃতির আলোর স্পর্শে জেগে ওঠার । ঘাসফড়িঙের ভোরের অভ্যুদয় কোমল নীল রঙের মতো আকাশ আর টিয়ার সবুজ পালকের মতো ডালপালা বুকে নিয়ে ভোর নেমে আসে । তখনও আকাশে একটি তারাকে দেখা যায় । উজ্জ্বল তারাটিকে কবির মনে হয় , ‘ পাড়াগাঁর বাসরঘরের সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো । গ্রামের সলজ্জ বধূটির সঙ্গে তারার তুলনা প্রসঙ্গে কবি ‘ গোধূলিমদির ‘ শব্দটি ব্যবহার করেন । এক চিরকালীন স্নিগ্ধতা প্রকাশ পায় ‘ গোধূলিমদির ‘ শব্দবন্ধের দীপ্যমান তারার উপমা মাধ্যমে । ভোরে ফুটে থাকা তারাটির মধ্যে প্রতিফলিত হয় গ্রামের লাজুক মেয়েটির শাস্ত সৌন্দর্য । এরপরেই কবি প্রকৃতির প্রাচীনতা ও শাশ্বত ব্যাপ্তি বোঝাতে মিশরীয় মানুষীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন । হাজার হাজার বছর আগে কোনো এক ‘ মিশরের মানুষী ‘ বুকের থেকে যে মুক্তো খুলে নিয়ে কথকের নীল মদের গেলাসে রেখেছিল , যেন ঠিক তেমনই নীলাভ – জ্বলন্ত । সেভাবেই নীল মদের ন্যায় ভোরের আকাশে মুক্তোর মতো স্নিগ্ধ একটি তারা ফুটে থাকে । কবি জীবনানন্দ ভোরের আকাশের তারাটিকে একদিকে বাংলার লোকায়ত সলজ্জ বধূর চাপা মত্ততা , আর অন্যদিকে মিশরীয় মানুষীর বুকের মুক্তোর সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করে সর্বকালীন ঐশ্বর্য দান করেন ।
5. মোরগফুলের মতো লাল আগুন , – কবি এখানে কোন আগুনের কথা বলেছেন ? এ আগুন সম্পর্কে কবির ভাবনার পরিচয় দাও ।
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ’ কবিতার পটভূমি রচিত হয়েছে হেমন্ত ঋতুতে । হেমন্ত ঋতুর সেই হিমেল আচ্ছন্নতা কাটাতে দেশোয়ালিরা হিম রাতে শরীর ‘ উম্ ’ রাখবার আগুনের প্রসঙ্গ জন্য সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বেলেছিল , তার কথা বলা হয়েছে ।
দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুনের বর্ণনা প্রসঙ্গে কবি জীবনানন্দ দুটি উপমা ব্যবহার করেছেন । হেমন্তের অন্ধকার রাতে যখন আগুন সদ্য প্রজ্বলিত , তখন তার তীব্রতা ও রঙের ঔজ্জ্বল্য থাকে অনেক বেশি ; কবি কল্পনা করেছেন তা মোরগফুলের মতো লাল কিংবা কুঙ্কুমের মতো উজ্জ্বল । রাত পার হয়ে ভোরের আলো ফুটলে স্পষ্ট । সূর্যালোকে তা ক্রমশ ম্লান ও বিবর্ণ হয়ে আসে । আগুনের সেই নিষ্প্রভ – অনুজ্জ্বল – হতশ্রী অবস্থাকে ফুটিয়ে তুলতে কবি দ্বিতীয়বার উপমা ব্যবহার করেছেন , সেই আগুন যেন ‘ রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো ।
আগুন সম্পর্কে কবির ভাবনা কবি আগুনের এই ভিন্ন ভিন্ন রূপের পার্থক্যে প্রকৃতপক্ষে এক বিপরীত ব্যঞ্ছনার পূর্বাভাস দিয়েছেন । রাতের আগুন জীবনের উত্তাপ ও উন্নতার প্রতীক । আর তথাকথিত নাগরিক সভ্যতার লোভ – লালসার শিকার খুন হওয়া হরিণের মাংস তৈরি করার প্রয়োজনে ভোরে জ্বলে ওঠা আগুন যেন ‘ হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো ‘ বিষণ্ণ , অনুজ্জ্বল -লালসার প্রতীক ।
6. ‘ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল । –কে অপেক্ষা করছিল ? তার পরিণতি কী হয়েছিল ?
অথবা , ‘ সাহসে সাথে সৌন্দর্যে হরিণীর পর হরিণীকে চমক লাগিয়ে দেবার জন্য । –কে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল ? কবিতাটি অবলম্বনে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: চিত্ররূপময় কবিতার কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘ শিকার ‘ কবিতার অন্তর্গত প্রশ্নোধৃত অংশে ভোরের আলোয় নেমে আসা সুন্দর বাদামি হরিণটির অপেক্ষমাণের পরিচয় কথা বলা হয়েছে ।
সারারাত অন্ধকারে সুন্দরী – অর্জুনের বনে ঘুরে ঘুরে চিতাবাঘিনির হাত থেকে সুন্দর বাদামি হরিণটি নিজেকে বাঁচিয়েছিল । আত্মরক্ষাকে নিশ্চিত করার জন্য তার অন্তরে ছিল ভোরের আলোর প্রত্যাশা । সকালের আলোয় টলমলে শিশিরে চারপাশের উদ্ভাসিত বন ও আকাশ হরিণটিকে আশ্বস্ত করেছিল । অবশেষে সে কচি বাতাবিলেবুর মতো সুগন্ধি ঘাস খেয়ে রাতের ঘুমহীন – ক্লান্ত শরীরটায় প্রাণময়তার আবেশ জাগাতে নেমেছিল নদীর জলে । তীক্ষ্ণ – শীতল স্রোতে হরিণটি ফিরে পেতে চেয়েছিল প্রাণের উন্মাদনা । হিম অন্ধকার ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা ভোরের রৌদ্রের মতোই সৌন্দর্যে অন্যান্য হরিণীদের চমকে দেওয়ার সাধ হয়েছিল তার । একটা অদ্ভুত শব্দে আচমকা নদীর জল লাল হয়ে উঠল । নাগরিক আধুনিকতার বিকৃত লালসায় সুন্দর বাদামি হরিণটি ‘ উয় লাল ’ মাংসে রূপান্তরিত হল । হিংস্র চিতাবাঘিনির চেয়েও হিংস্রতম মানুষের জান্তব উল্লাসের বলি হল সে । হরিণের আত্মরক্ষার লড়াই – বিপমুক্তির আনন্দ — পরিশেষে লোভ – লালসার শিকার হৃদয়হীন মানুষ ঘাসের বিছানায় , সিগারেটের ধোঁয়ায় , পুরানো শিশিরভেজা গল্পের অমানবিক ঔদাসীন্যে হরিণটিকে বধ করল । আর ‘ নিরপরাধ ’ হরিণের সাধ – স্বপ্ন , হিম ঘুমে চিরকালের মতো নিস্পন্দ হল । এভাবেই ঘাতক মানুষের নৃশংসতা এবং বেঁচে থাকার সৌন্দর্যে মত্ত এক নিরীহ হরিণের মর্মান্তিক পরিণতিকে কবি আশ্চর্য ব্যঞ্জনা দান করেছেন ।
7. ‘ একটা অদ্ভুত শব্দ ‘ — কোন শব্দের কথা বলা হয়েছে ? শব্দটি ‘ অদ্ভুত ’ কেন ? এরপর কী ঘটনা ঘটেছিল সংক্ষেপে লেখো ।
Ans: কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘ শিকার ’ কবিতার অন্তর্গত প্রশ্নোদৃত অংশে হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে কোন শব্দ ? লোলুপ শহুরে মানুষের নিক্ষিপ্ত গুলির শব্দের কথা বলা হয়েছে ।
শান্ত অরণ্যানীর স্নিগ্ধ পরিবেশে যান্ত্রিক শব্দটি অচেনা ও অশ্রুতপূর্ব । তাই গুলির শব্দটি ‘ অদ্ভুত ‘ ।
হিংস্র চিতাবাঘিনির হাত থেকে বাঁচার দুরস্ত তাগিদে একটি সুন্দর বাদামি হরিণ মেহগনির মতো নক্ষত্রহীন অন্ধকারে সুন্দরী বন থেকে অর্জুনের বনে আত্মগোপন করে অবশেষে প্রার্থিত ভোরে নেমে এসেছিল । বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে খেয়ে বিনিদ্র রাত্রির ক্লান্তি ও অবসন্নতা মুছে ফেলতে , সে অবগাহনে নেমেছিল নদীর তীক্ষ্ণ শীতল তরঙ্গায়িত জলে । এমন সময় নির্জন অরণ্যভূমির হিরণ্ময় নীরবতা ভঙ্গ করে একটা ‘ অদ্ভুত শব্দ ‘ । নদীর জল নিমেষে রক্তরঞ্চিত হয়ে মচকাফুলের পাপড়ির বর্ণ ধারণ করে । অচেনা আততায়ীর অপ্রত্যাশিত গুলিতে প্রাণচঞ্চল হরিণ ‘ নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ’ – এ ঢলে । পড়ে । তাদের জান্তব উল্লাসে রসনা পরিতৃপ্তির জন্য সুন্দর বাদামি হরিণ নিষ্প্রাণ মাংসপিণ্ডে পরিণত হয় । হিংস্র চিতাবাখিনির চেয়েও হিংস্রতম মানুষের ভোগবাসনায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চিরন্তন প্রতীক হরিণটির অপমৃত্যু যেন সভ্যতার অভিশাপ ।
8. ‘ শিকার ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার পরবর্তী ঘটনার বিবরণ করো ।
Ans: নামকরণের তাৎপর্য অংশটি দ্যাখো ।
9. নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে — ‘ শিকার ’ কবিতাসূত্রে উদ্ধৃত অংশটির নিহিতার্থ লেখো ।
অথবা , ‘ শিকার ‘ কবিতায় মানবসভ্যতার ও মানবস্বভাবের নির্মম নৃশংসতার যে – দিকটি প্রকাশিত হয়েছে , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো ।
অথবা , উয় লাল হরিণের মাংস তৈরি হয়ে এল ।’- মাংসলোভী মানুষের যে হিংস্রতার ছবি ‘ শিকার ’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে , তা নিজের ভাষার বর্ণনা করো ।
Ans: আধুনিক সভ্যতার অমানবিক লালসার অন্ধ কুৎসিত । দিকটিকে কবি জীবনানন্দ দাশ ‘ শিকার ’ কবিতায় নাটকীয় ব্যঞ্জনায় উন্মোচন করেছেন । কবিতার শুরুতেই আছে ভোরের প্রাণবন্ত লাবণ্যের ছবি । সেখানে ঘাসফড়িঙের গায়ের মতো কোমল নীলাকাশ আর চারপাশের গাছপালাকে টিয়ার পালকের মতো সবুজে ভরিয়ে ভোর নেমে আসে । শিশিরে ভেজা সকালে অরণ্যের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো উদ্ভাসিত হয় ।
হিংস্র চিতাবাঘিনির হাত থেকে বাঁচতে বন থেকে বনান্তরে ছুটে বেড়ানো সুন্দর বাদামি হরিণ অন্ধকারের গর্ভ ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে এই ভোরের আলোয় সাহসে সাধে বেঁচে থাকার বিস্তীর্ণ উল্লাস খুঁজে পায় । অন্যদিকে নাগরিক জীবনের প্রতিভূ টেরিকাটা মানুষের দল দৃশ্যমান জঙ্গলকে শিকারের উপযুক্ত ক্ষেত্র বলে মনে করে । মানুষের পাশবিকতার বন্দুকের ট্রিগারে হাত রাখে । এদিকে রাতজাগা শিকার নিরীহ পশু হরিণটি খিদের তাড়নায় অফুরান সুগন্ধি ঘাস খায় ; বেঁচে থাকার প্রাণবন্ত আবেশ গায়ে মাখতে নদীর গতিময় শীতল জলে নামে । ঠিক তখনই তথাকথিত ‘ আধুনিক ’ ও ‘ সভ্য ’ মানুষের নিখুঁত পরিকল্পনা সাঙ্গ হয় বন্দুকের গুলির শব্দে । ঘাতক মানুষ নির্দ্বিধায় সৌন্দর্যের এক চিরন্তন প্রতীককে হত্যা করে । বিকৃত নাগরিক আমোদ ও লালসার চিহ্ন মেখে নদীর জল ‘ মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে ওঠে । সভ্যতার এই নির্মম চিরকালীন সত্যকেই কবি আলোচ্য কবিতায় আশ্চর্য দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন ।
10. ‘ শিকার ‘ কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো । সেই পরিবেশ কোন ঘটনায় করুণ হয়ে উঠল ?
অথবা , ‘ এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে সেই ভোরের বর্ণনা দাও । ‘ সে ‘ ভোরের আলোয় নেমে আসার পর কী ক ঘটল , লেখো ।
Ans: ‘ নির্জনতার কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা ‘ শিকার ’ কবিতার ক্যানভাসে অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত অনুপম এক ভোরের চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে । কবিতার প্রথমাংশের প্রশান্ত ভোরে প্রকৃতির লাবণ্যময় পরিবেশে লক্ষ করা যায় অনাবিল স্নিগ্ধতার ছোঁয়া । আকাশ যেন ঘাসফড়িং এর দেহের মতো কোমল নীল । চারদিকে পেয়ারা ও নোনা গাছের সবুজ পাতায় সুসজ্জিত প্রকৃতির অঙ্গে মোহনরী রূপের বাহার । বিদায়ী রাতের অস্তিত্বের শেষ প্রতিনিধির ন্যায় আকাশে তখনও দেদীপ্যমান একটি রাতজাগা নীরব তারা । নির্মল নীল আকাশের তারাটি বাসরঘরে জেগে থাকা যৌবনোচ্ছ্বল সলজ্জ অথচ উজ্জ্বল নববধূ কিংবা নীল মদের গ্লাসে নিমজ্জিত মিশরীয় মানুষীর বুকের দীপ্ত মুক্তোর দানার মতো । শীতার্ত দেশোয়ালিদের দ্বারা প্রজ্বলিত মোরগফুলের মতো লাল আগুন ভোরের ম্লানালোকে আরও ম্রিয়মাণ । তারপর সদ্যোদিত সূর্যের রক্তিম আলোকচ্ছটায় নীলাভ আকাশ আর সবুজ অরণ্যের আভরণে সেজে ওঠা শিশিরসিক্ত সকাল ময়ূরের বর্ণোজ্জ্বল রঙিন ডানার মতো ঝিলমিল করছে ।।
কবিতার পরিণতিতে পরিলক্ষিত হয় রক্তাক্ত নির্মম এক ভোর । একটি হরিণ ক্ষিপ্ত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে সারারাত্রি বন থেকে বনান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে । অবশেষে বিপন্মুক্তির আনন্দে সে নেমে এসেছিল কাঙ্ক্ষিত ভোরের আলোয় । পরমানন্দে সে ছিঁড়ে খেয়েছে ‘ কচি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ‘ । বিনিম্ন রাত্রির ক্লান্তি দূর করে যৌবনের বিস্তীর্ণ উল্লাস সারাশরীরে অনুভবের আশায় , সাহসে সাধে – সৌন্দর্যে হরিণীদের মুগ্ধ করার জন্য হরিণটি নেমেছিল ‘ নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে ‘ কিন্তু তথাকথিত সভ্যের বর্বরোচিত , বিকৃত আনন্দ ও রসনা পরিতৃপ্তির বাসনায় তাদের নিক্ষিপ্ত গুলিতে অবশেষে সে নিষ্প্রাণ মাংসপিণ্ডে পরিণত হল ।
11. ‘ রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো -কোন প্রসঙ্গে এমন উক্তি । ‘ শিকার ‘ কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নোদ্ভূত অংশটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখো ।
Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘ শিকার ‘ কবিতার পটভূমিকায় রয়েছে হেমন্তের ভোর । এসময়ে প্রকৃতিজুড়ে নেমে আসে শিশির ও কুয়াশার হিমেল আচ্ছন্নতা । এই হিম রাতে শরীরকে গরম রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে মোরগফুলের মতো লাল আগুন । উদ্ধৃতাংশের প্রসঙ্গ জ্বালায় । তবে সকালের আলোয় সে আগুনের রং আর কুঙ্কুমের মতো উজ্জ্বল থাকে না ; বরং স্পষ্ট সূর্যালোকে তা ক্রমশ ম্লান ও বিবর্ণ হয়ে আসে । সেই মাঠের আগুনের নিষ্প্রভ – অনুজ্জ্বল – হতশ্রী অবস্থাকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন ।
রাতের আগুন জীবনের উত্তাপ ও উয়তার প্রতীক । কিন্তু ভোরের আগমনে তা ক্রমশ নিজস্ব উজ্জ্বলতা হারায় । বন আর আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো অপরূপ লাবণ্যে ঝিলিক দিয়ে ওঠে । তাৎপর্য আলোর আশ্বস্ততায় অরণ্য – প্রকৃতি ও প্রাণীকুল প্রাণের উল্লাস ফিরে পায় । কচি বাতাবিলেবুর মতো সজীব ঘাসে , নদীর তীক্ষ্ণ শীতল স্রোতে , হরিণটি বেঁচে থাকার নিশ্চয়তার আনন্দে রাতজাগার ক্লান্তি কাটায় । কিন্তু আধুনিক জীবনের বাস্তবতায় এমন নিশ্চিন্দির কোনো স্থান নেই । তাই লোভী মানুষের ঘাতক চাহনি মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন করে হরিণের দেহ । ফের আগুন জ্বলে , খুন হওয়া হরিণের মাংস তৈরি করার প্রয়োজনে । তাই হিম রাতে উত্তাপের আয়োজনে জ্বলে ওঠা আগুনের সকালে ‘ হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো ‘ বিষণ্ণ , নিভন্ত দশা আসলে লালসার আগুন জ্বলে ওঠার বিপরীত ব্যঞ্জনাবাহী এক আশ্চর্য পূর্বাভাস ।