MCQ | প্রশ্ন ও উত্তর
- ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতাটি লেখা হয়েছিল—
(A) ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতাটি সমর সেনের যে – কাব্যগ্রন্থে আছে , তা হলো –
(A) গ্রহণ
(B) কয়েকটি কবিতা
(C) নানাকথা
(D) খোলা চিঠি
Ans: (B) কয়েকটি কবিতা
- ‘ গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ ‘ – কে এঁকে দেয় –
(A) ডুবন্ত সূর্য
(B) উদীয়মান সূর্য
(C) অলস সূর্য
(D) দুপুরের সূর্য
Ans: (C) অলস সূর্য
- অলস সূর্য ছবি এঁকে দেয় –
(A) সন্ধ্যার জলস্রোতে
(B) মেঘলা দুপুরে
(C) সমুদ্রের ঢেউয়ে
(D) আকাশজুড়ে
Ans: (A) সন্ধ্যার জলস্রোতে
- উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ –
(A) শীতের দুঃস্বপ্নের মতো
(B) গলিত সোনার মতো
(C) সূর্যের আগ্নেয় শরীরের মতো
(D) মহুয়া ফুলের মতো
Ans: (B) গলিত সোনার মতো
- পড়ন্ত সূর্যের আলোর আগুন লাগে –
(A) জলের গভীরে
(B) জলের গভীরে ধূসর ফেনায়
(C) জলের অশ্বকারে ধূসর ফেনায়
(D) জলের অন্ধকারে ধূসর শ্যাওলায়
Ans: (D) জলের অন্ধকারে ধূসর শ্যাওলায়
- শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ঘুরে ফিরে আসে –
(A) ধোঁয়ার নিশ্বাস
(B) ধোঁয়ার বঙ্কিম ঘ্রাণ
(C) ধোঁয়ার বঙ্কিম প্রশ্বাস
(D) ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস
Ans: (D) ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস
- কখন ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস ঘুরে ফিরে আসে ?
(A) সন্ধ্যার উজ্জ্বল স্তন্দ্বতায়
(B) সন্ধ্যার নিবিড় অন্ধকারে
(C) সন্ধ্যার স্নান দুঃস্বপ্নে
(D) সন্ধ্যার অস্পষ্ট আলোয়
Ans: (A) সন্ধ্যার উজ্জ্বল স্তন্দ্বতায়
- ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে আসে –
(A) নির্জন নিঃসঙ্গতার মতো
(B) উজ্জ্বল সন্দ্বতার মতো
(C) সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসের মতো
(D) শীতের দুঃস্বপ্নের মতো
Ans: (D) শীতের দুঃস্বপ্নের মতো
- ‘ অলস সূর্য ‘ – কবি সূর্যের সামনে ‘ অলস ‘ বিশেষণটি প্রয়োগ করেছেন কারণ –
(A) বয়স বোঝাতে
(B) লাল রং বোঝাতে
(C) অস্তগামী সূর্য বোঝাতে
(D) সন্ধ্যা বোঝাতে
Ans: (C) অস্তগামী সূর্য বোঝাতে
- মহুয়ার দেশটি হল –
(A) মেঘের কোলে
(B) মেঘ – মন্থর
(C) মেঘ – মদির
(D) মেঘ – মধুর
Ans: (C) মেঘ – মদির
- ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ‘ কোথায় আছে ?
(A) অনেক , অনেক দূরে
(B) পথের দু – ধারে
(C) খুব , খুব কাছে
(D) নির্জন অরণ্যে
Ans: (A) অনেক , অনেক দূরে
অথবা , ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ‘ আছে—
(A) খুব , খুব কাছে
(B) নিবিড় অরণ্যে
(C) অনেক , অনেক দূরে
(D) প্রান্তরের শেষে
Ans: (C) অনেক , অনেক দূরে
- ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন –
(A) বর্ষায় পূর্ণ এক স্থানকে
(B) ছায়াময় রহস্যে পূর্ণ এক সৌন্দর্যে ভরা অঞ্চলকে
(C) মেঘের মত্ততায় পূর্ণ এক অঞ্চলকে
(D) রহস্যময় ছায়া সুনিবিড় মহুয়া গাছে ঘেরা সৌন্দর্যকে
Ans: (D) রহস্যময় ছায়া সুনিবিড় মহুয়া গাছে ঘেরা সৌন্দর্যকে
- মহুয়ার দেশে সমস্তক্ষণ পথের দু – ধারে কী ঘটে ?
(A) ফুল ঝরে পড়ে
(B) ছায়া পড়ে
(C) দেবদারুর ছায়া পড়ে
(D) অস্পষ্ট আওয়াজ ভাসে
Ans: (C) দেবদারুর ছায়া পড়ে
- মহুয়ার দেশে পথের দু – ধারে ছায়া ফেলে –
(A) দেবদারু গাছ
(B) কদম গাছ
(C) অর্জুন গাছ
(D) মহুয়া গাছ
Ans: (A) দেবদারু গাছ
- মহুয়ার দেশে দীর্ঘ রহস্যে পূর্ণ হল –
(A) দেবদারু গাছ
(B) উইলো গাছ
(C) পাইন গাছ
(D) ফার গাছ
Ans: (A) দেবদারু গাছ
- দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস –
(A) রাত্রির অন্ধকারকে আলোড়িত করে
(B) রাত্রির নিঃসঙ্গ অন্ধকারকে আলোড়িত করে
(C) রাত্রির নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে
(D) রাত্রির শীতের দুঃস্বপ্নকে আলোড়িত করে
Ans: (C) রাত্রির নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে
- ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় রাতের নির্জন – নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে—
(A) নিশাচরের কোলাহর
(B) শিকারীর পদসঞ্চার
(C) অবসন্ন মানুষের আনাগোনা
(D) সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস
Ans: (D) সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস
- ‘ আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক’—
(A) বকুল ফল
(B) শিউলি ফল
(C) মহুয়া ফুল
(D) এদের কোনোটিই নয়
Ans: (C) মহুয়া ফুল
- মহুয়ার গন্ধ নেমে আসবে –
(A) কবির বাগানের ওপর
(B) মহুয়ার দেশে
(C) কবির দেহের ওপর
(D) কবির ক্লান্তির ওপর
Ans: (D) কবির ক্লান্তির ওপর
- মহুয়ার দেশে নেমে আসে –
(A) গুমোট অন্ধকার
(B) রহস্যময় অন্ধকার
(C) নিবিড় অন্ধকার
(D) নিকষ অন্ধকার
Ans: (C) নিবিড় অন্ধকার
- ‘ মাঝে মাঝে শুনি ‘ – কী শোনা যায় ?
(A) ধামসা – মাদলের আওয়াজ
(B) কয়লাখনির গভীর বিশাল শব্দ
(C) জঙ্গলের জন্তুদের ডাক
(D) দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস
Ans: (B) কয়লাখনির গভীর বিশাল শব্দ
- কয়লাখনির গভীর বিশাল শব্দ ভেসে আসে –
(A) জঙ্গলের ভিতর থেকে
(B) মহুয়া বনের ধার থেকে
(C) মহুয়া বনের ভিতর থেকে
(D) নদীর ধার থেকে
Ans: (B) মহুয়া বনের ধার থেকে
- মহুয়ার দেশে সকাল –
(A) কুয়াশার হিমে আচ্ছন্ন
(B) বৃষ্টিতে জলে ভাসমান
(C) সূর্যের আলোয় উজ্জ্বল
(D) শিশিরে – ভেজা সবুজ
Ans: (D) শিশিরে – ভেজা সবুজ
- মহুয়ার দেশের মানুষের শরীরে ফুটে ওঠে –
(A) সপ্রতিভতা
(B) স্বাস্থ্য ও সাহস
(C) উন্মত্ততা
(D) অবসন্নতা
Ans: (D) অবসন্নতা
- মহুয়ার দেশের ক্লান্ত মানুষের শরীরে লেগে আছে –
(A) মাঠের কাদা
(B) লাল মাটির দাগ
(C) জঙ্গলের বিষাদ
(D) ধুলোর কলঙ্ক
Ans: (D) ধুলোর কলঙ্ক
- ‘ অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি’—
(A) ধুলোর কলঙ্ক
(B) পোড়া দাগ
(C) অপমানের কলঙ্ক
(D) চাঁদের কলঙ্ক
Ans: (A) ধুলোর কলঙ্ক
- ‘ অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক , ‘ –সময়টা—
(A) দুপুর
(B) সকাল
(C) রাত্রি
(D) বিকেল
Ans: (B) সকাল
- মহুয়ার দেশের মানুষের চোখ –
(A) লাল
(B) তন্দ্রাচ্ছন্ন
(C) ঘুমহীন
(D) অস্থির
Ans: (C) ঘুমহীন
- মহুয়ার দেশের মানুষের ঘুমহীন চোখে হানা দেয়—
(A) ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন
(B) ক্লান্তির ঘুম
(C) ক্লান্ত আবেশ
(D) সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস
Ans: (A) ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন
- মহুয়া বনের ধারে রয়েছে –
(A) কয়লাখনি
(B) সাঁওতাল গ্রাম
(C) নদী
(D) মন্দির
Ans: (A) কয়লাখনি
- সবুজ সকাল কীসে ভেজা ?
(A) শিশিরে
(B) মেঘে
(C) জলে
(D) ভোরের আলোয়
Ans: (A) শিশিরে
- ‘ কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ‘ — এই দুঃস্বপ্ন কীসের ?
(A) দুর্ঘটনার দুঃস্বপ্ন
(B) শহীদের মৃত্যুর দুঃস্বপ্ন
(C) অরণ্যের অধিকার হারানোর দুঃস্বপ্ন
(D) নাগরিক জীবনের দুঃস্বপ্ন
Ans: (C) অরণ্যের অধিকার হারানোর দুঃস্বপ্ন
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মহুয়ার দেশ (কবিতা) সমর সেন – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Mahuar Desh Question and Answer :
- ‘ মাঝে মাঝে সন্ধ্যার জলস্রোতে কী ঘটে ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা অনুসারে মাঝে মাঝে সন্ধ্যার জলস্রোতে অলস সূর্য গলিত আলোকস্তম্ভ এঁকে দেয় ।
- ‘ অলস সূর্য দেয় এঁকে ‘ — এখানে ‘ অলস ‘ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কেন ?
Ans: কবি সমর সেন ‘ ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় দিন শেষে } = অস্তগামী সূর্যের ক্লান্ত – বিষণ্ণ রূপ ফুটিয়ে তুলতে ‘ অলস ’ বিশেষণটি = প্রয়োগ করেছেন ।
- ‘ অলস সূর্য দেয় এঁকে ‘ — অলস সূর্য কী এঁকে দেয় ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা অনুসারে অলস সূর্য সন্ধ্যার জলস্রোতে উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভ এঁকে দেয় ।
- ‘ অলস সূর্য দেয় এঁকে ‘ — ‘ অলস সূর্য ‘ কী আঁকে ? সূর্যকে ‘ অলস ’ বলার কারণ কী ?
Ans: আধুনিক কবি সমর সেন বিরচিত ‘ মুহুয়ার দেশ ’ কবিতা অনুসারে অলস সূর্য সন্ধ্যার জলস্রোতে উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভ এঁকে দেয় । দিনান্তে সূর্য পশ্চিম দিগন্তে অস্তাচলগামী । তাই কবির কথায় সূর্য ‘ অলস ‘ ।
- ‘ জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় ।’— কী ঘটে ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতা অনুসারে পড়ন্ত সূর্যের লাল আলোয় জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় আগুন লাগে ।
- ‘ গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: অস্তমিত সূর্যের আলোয় সন্ধ্যায় জলস্রোত গলানো সোনার মতোই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে । উদ্ধৃত পক্তির মাধ্যমে কবি সমর সেন সন্ধ্যার জলস্রোতের সেই স্বর্ণালি রূপকেই বুঝিয়েছেন ।
- ‘ সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায় ‘ — এখানে কীসের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় কবি সমর সেন পড়ন্ত সূর্যের আলোয় সন্ধ্যার জলস্রোতে অন্ধকার ধূসর ফেনায় যে আগুন লাগে , তাকে ফুটিয়ে তুলতে ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায় ’ — ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ’ বলার কারণ কী ?
Ans: কবি সমর সেন ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় বিদায়ী সূর্যের স্বর্ণালি আলোয় উদ্ভাসিত সান্ধ্য মুহূর্তে মুগ্ধ মৌনতাকে বোঝাতে ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে ’ — ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় কবি , আধুনিক সভ্যতায় নগরজীবনের দূষণকে ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ’ বলে বিদ্রূপ করেছেন ।
- ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস কীভাবে কবির কাছে আসে ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা অনুসারে মধ্যবিত্ত শহুরে জীবনে সভ্যতা ও যান্ত্রিকতার দুষিত এবং হতশ্রী ছবি যেন ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাসের মতো ঘুরে ফিরে আসে ।
- কবি কাকে ‘ শীতের দুঃস্বপ্ন ‘ বলেছেন ।
Ans: কবি সমর সেন তাঁর ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ’ – কে ‘ শীতের দুঃস্বপ্ন ’ বলেছেন ।
12 ‘ সেই উজ্জ্বল স্তখতা ‘ কেন স্থায়ী হয় না ?
Ans: নগরজীবনের দুষিত , দম বন্ধ করা ধোঁয়া , শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ঘুরে ফিরে আসায় , অস্তগামী সূর্যের আলোর ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ‘ দীর্ঘস্থায়ী হয় না ।
- অনেক , অনেক দুরে — কী আছে ?
Ans: সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা অনুসারে ‘ অনেক , অনেক দূরে ’ আছে মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ।
- ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ , ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতা অনুসারে দুষিত নাগরিক জীবনের আবদ্ধতার বিপরীতে প্রকৃতির রহস্যময় সৌন্দর্যের মায়াময়তা ফুটিয়ে তুলতে কবি সমর সেন ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ বলেছেন ।
- ‘ মহুয়ার দেশ ” বলতে কবি সমর সেন কোন জায়গাকে বোঝাতে চেয়েছেন ?
Ans: কবি সমর সেন শাল ও মহুয়া তরুর স্নিগ্ধ ছায়ায় মোহময় হয়ে ওঠা তাঁর স্বপ্নকল্পনার সাঁওতাল পরগনাকে ‘ মহুয়ার দেশ ’ বলে অভিহিত করেছেন ।
- ‘ পথের দুধারে ছায়া ফেলে ‘ — কী ছায়া ফেলে ?
Ans: মহুয়ার দেশে পথের দু – ধারে দীর্ঘ দেবদারু গাছ রহস্যময় ছায়া ফেলে ।
- ‘ অনেক , অনেক দূরে আছে মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ , এখানে ‘ মহুয়ার দেশ ’ কীসের প্রতীক হয়ে ওঠে ?
Ans: পাঠ্য কবিতায় কবি মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের দূষিত , যান্ত্রিক ও একঘেয়ে বন্দিত্ব থেকে মুক্তির ও পরিত্রাণের প্রতীক হিসেবে ‘ মহুয়ার দেশ ’ – কে ফুটিয়ে তোলেন ।
- ‘ সমস্তক্ষণ সেখানে …’— কী ঘটে ?
Ans: মহুয়ার দেশে পথের দু – ধারে সমস্তক্ষণ দীর্ঘ দেবদারু গাছ । রহস্যময় ছায়া ফেলে ।
- ‘ দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য , ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: সমর সেন ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় , দীর্ঘ দেবদারু গাছের ছায়ায় পরিপূর্ণ রহস্যময় বিস্তৃতি ও সৌন্দর্যের ছবি প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
- ‘ আর দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস ’ বলার তাৎপর্য কী ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় আরও দূর সমুদ্রের ঢেউয়ের আলোড়নকে নিঃসঙ্গ হৃদয়ে অনুভব করার কথা বলতে গিয়ে কবি সমর সেন ‘ সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস ‘ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন ।
- রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে ।’— কীভাবে ?
Ans: সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় আরও দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে ।
- রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতা ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: ‘ রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতা ‘ বলতে কবি সমর সেন মধ্যবিত্ত শহুরে জীবনের ক্লান্তি , বিচ্ছিন্নতা , যান্ত্রিকতা এবং দুঃসহ একাকিত্বকে বুঝিয়েছেন ।
- আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক ‘ — কী করবে ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা অনুসারে কবির ক্লান্তির ওপর মহুয়া ফুল ঝরে পড়ার কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ মহুয়ার দেশ ‘ – এ কবি কীসের আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশ করেছেন ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় কবি সমর সেন ক্লান্তির ওপরে মহুয়া ফুল ঝরে পড়া এবং মহুয়ার গন্ধ নেমে আসার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন ।
- এখানে অসহ্য , নিবিড় অন্ধকারে / মাঝে মাঝে শুনি ‘ — বস্তুা কী শোনেন ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় অসহ্য নিবিড় অন্ধকারে বক্তা কয়লাখনির গভীর ও বিশাল শব্দ শোনেন ।
- ‘ এখানে অসহ্য , নিবিড় অন্ধকারে ‘ — অন্ধকারকে অসহ্য এবং নিবিড় বলার কারণ কী ?
Ans: ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় মধ্যবিত্ত জীবনের ক্লান্তি , বিবর্ণতা ও হতাশাকে কবি সমর সেন নিবিড় ও অসহ্য অন্ধকারের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন ।
- গভীর , বিশাল শব্দ , ‘ —কী গভীর এবং সেখানে কীসের শব্দ হয় ।
Ans: কবি সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় বর্ণিত কয়লাখনি গভীর এবং সেখানে খনিগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের উৎকট ও যান্ত্রিক শব্দ ধ্বনিত হয় ।
- ‘ গভীর , বিশাল শব্দ , কয়লাখনির শব্দকে ‘ গভীর ’ এবং ‘ বিশাল ’ বলার কারণ কী ?
Ans: কবি সমর সেন ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় শান্ত প্রকৃতির নির্মল পটভূমিতে যান্ত্রিকতার সামঞ্জস্যহীন বৈপরীত্যকে স্পষ্ট করে তোলার জন্য কয়লাখনির শব্দকে ‘ গভীর ’ এবং ‘ বিশাল ’ বলে উল্লেখ করেছেন ।
- ‘ শিশিরে – ভেজা সবুজ সকালে ‘ — বক্তা কী দেখেন ?
Ans: কবি সমর সেন ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় কবি স্বয়ং শিশিরে ভেজা সবুজ সকালে অবসন্ন মানুষের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক দেখতে পান ।
- ‘ ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয় – কাদের চোখে কী হানা দেয় ?
Ans: মহুয়ার দেশের মানুষদের ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন
- ‘ ঘুমহীন তাদের চোখে ‘ — তাদের চোখ ঘুমহীন কেন ?
Ans: সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় মহুয়ার দেশের খনি – শ্রমিকদের চোখ আধুনিক সভ্যতার ক্লান্তি ও বিপন্নতায় ঘুমহীন ।
- ‘ কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ‘ — এই দুঃস্বপ্ন কীসের ?
Ans: কবি সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় বর্ণিত ক্লান্ত – শ্রান্ত খনি – শ্রমিকদের বিনিদ্র চোখে যে দুঃস্বপ্ন হানা দেয় তা আসলে অরণ্যের অধিকার হারানোর আতঙ্ক ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | মহুয়ার দেশ (কবিতা) সমর সেন – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Mahuar Desh Question and Answer :
1. ‘ মাঝে মাঝে সন্ধ্যার জলস্রোতে / অলস সূর্য দেয় এঁকে — দৃশ্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । এই দৃশ্যটি কবিমনে কী প্রভাব বিস্তার করে আলোচনা করো ।
অথবা , ‘ গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ / আর আগুন লাগে জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় / কীসের কথা বলা হয়েছে । এমন পরিস্থিতিতে কবির মনে কোন ভাবনার উদয় হয় ?
Ans: প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি কবি সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতা থেকে গৃহীত । কবি এখানে শহরের সূর্যাস্তের তাৎক্ষণিক সৌন্দর্যের এক অসামান্য ছবি এঁকেছেন । সারাদিন পরিক্রমা শেষে অলস সূর্য সন্ধ্যার জলস্রোতে আলোর মায়াজাল বিস্তার করে । জলে প্রতিফলিত সূর্যালোককে মনে হয় গলিত সোনার উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভের মতো । তা অন্ধকার জলের ধূসর ফেনায় যেন আগুন জ্বালিয়ে দেয় । ঘনায়মান সন্ধ্যার বুকে সমাগত এই ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ‘ – র মায়ালোক কবিকে মুহূর্তের জন্য বিহ্বল করে ।
নগরজীবনে সৌন্দর্যের এই পটভূমি ভঙ্গুর ও স্বল্পস্থায়ী । ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাসের মতো চারপাশের যান্ত্রিকতা ও সর্বগ্রাসী দূষণ তাকে নিমেষেই গ্রাস করে । তখন পরিপার্শ্বকে কবির ‘ শীতের দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয় তাঁর হৃদয় । ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ‘ – এর কথা ভেবে উন্মুখ হয়ে ওঠে । সে – দেশের পথের দু – ধার রহস্যময় দেবদারুর দীর্ঘ ছায়ায় আবৃত । সেখানে দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসে রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতা আলোড়িত হয় । শহুরে জীবনের একঘেয়ে বন্দিদশার ক্লান্তির ওপর কবি চান মহুয়া ফুল নির্মল আনন্দ হয়ে ঝরে পড়ুক । মহুয়ার মত্ত সুঘ্রাণ তাঁর অবসন্ন মনে এক সতেজ উন্মাদনা ছড়িয়ে দিক । কবির কাছে মহুয়ার দেশ যেন বিশুদ্ধ জীবনের মুক্তির ঠিকানা ও প্রতীক হয়ে ধরা দেয় ।
2. ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে / শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ।’— ‘ মহুয়ার দেশ ” কবিতায় মধ্যবিত্ত নগরজীবনের যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে , উদ্ধৃতাংশটির আলোকে তা আলোচনা করো ।
Ans: কবি সমর সেন নাগরিক মধ্যবিত্ত মানসের ক্লান্তি – হতাশা ও সংকটকে ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় এক ভিন্ন ব্যঞ্জনা দান করেছেন— আধুনিক সভ্যতার ধুলো – ধোঁয়ার ধূসরতায় ক্লান্ত কবি নগরজীবনের কৃত্রিমতা , প্রাণহীনতা তুলে ধরেছেন । কবিতার শুরুতেই অস্তগামী সূর্যের আলোয় প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য প্রকাশ পায় । শহরে ঘনায়মান সন্ধ্যার জলস্রোতে , গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভ ফুটে ওঠে । মনে হয় ‘ অলস ‘ লাল সূর্য জলের অন্ধকার ধূসর ফেনায় যেন আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে । শান্ত প্রকৃতির অনাবিল চিত্র অস্তগামী সূর্যের ‘ উজ্জ্বল স্তব্ধতা ‘ দীর্ঘস্থায়ী হয় না । আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার দূষিত ধোঁয়া সমস্ত সৌন্দর্যকে দ্রুত গ্রাস করে । যান্ত্রিকতায় বন্দি এ জীবনকে কবির ‘ শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ’ বলে মনে হয় । তিনি পরিত্রাণের আশায় কল্পনার মহুয়ার দেশে দেবদারুর দীর্ঘ ছায়ায় লুকোতে চান , নাগরিক হৃদয়ের ক্লান্তির উপশম খোঁজেন । মহুয়ার গন্ধে । তবে কবির রোমান্টিক ভাববিলাস বাস্তবতার আঘাতে ভেঙে যায় । তিনি শোনেন গভীর – বিশাল কয়লাখনির একঘেয়ে শব্দে প্রতিনিয়ত চূর্ণবিচূর্ণ হয় । তাঁর স্বপ্নের মহুয়ার দেশ । সেখানে শিশিরভেজা সকালেও , মানুষের গায়ে ধুলোর মলিনতা লাগে । বেঁচে থাকার চাপে কোণঠাসা সেই রাতজাগা মানুষগুলির চোখেও হানা দেয় একই ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ।
এভাবেই যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসনে , নগরায়ণের ইশারায় স্বপ্নের মহুয়ার দেশ হারিয়ে যায় । জীবনযন্ত্রণার ‘ ক্লান্ত দুঃস্বপ্নে ’ বিপন্ন বাস্তবে কোনো মুক্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়া কখনোই সম্ভব হয় না ।
3. ‘ মহুয়ার দেশ ” কবিতায় কবি শহরে ‘ ধোয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস এবং মহুয়ার দেশে ‘ ধুলোর কলঙ্ক ‘ দেখেছেন আবার যেখানে মহুয়ার গন্ধ নেমে আসার কথা বলেন , সেখানেই কয়লার খনির / গভীর , বিশাল শব্দ শুনতে পান — এ ধরনের বিপরীতধর্মিতা কবিতার কোন্ ব্যঞ্জনাকে প্রকাশ করে আলোচনা করো ।
Ans: কবি সমর সেনের কবিতার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল । বৈপরীত্যের মাধ্যমে জীবনের বাস্তবতার উন্মোচন । ‘ মহুয়ার দেশ কবিতাটিও এর ব্যতিক্রম নয় ।
নাগরিক সভ্যতার আগ্রাসন ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতার মূলভাব হল ধূসর – হতশ্রী নাগরিক জীবনের ক্লান্ত একঘেয়েমির হাত থেকে মুক্তি । শহুরে জীবনের দূষিত – রুক্ষ – নির্মমতাকে কবির ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নাগরিক জীবন থেকে নিঃশ্বাস ‘ – এর মতো বলে মনে হয় । তাই এই মুক্তির আকুলতা দুঃস্বপ্নের জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য সৌন্দর্যে – পবিত্রতায় পরিপূর্ণ মহুয়ার দেশে কবি আশ্রয় খোঁজেন । সেখানে পথের দু – ধারে দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকে । তিনি শহুরে অবসন্নতার কাছ থেকে নিষ্কৃতির আশায় হৃদয়ে ধারণ করতে চান মহুয়ার সতেজ সুঘ্রাণ । রূঢ় বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রোমান্টিক কবির স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে । তিনি অসহ্য অন্ধকারে বসে শোনেন মহুয়া বনের ধারে কয়লাখনির ‘ গভীর , বিশাল শব্দ ’ । সেখানেও মানুষের গায়ে ধুলোর কলঙ্ক আর রাতজাগা চোখে জীবনের অনিশ্চয়তার ‘ ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ‘ । কবিতায় ব্যবহৃত এই অসামঞ্জস্য ও বিপরীতধর্মিতাই অত্যন্ত সহজে ফুটিয়ে তোলে যান্ত্রিক নগরসভ্যতার নীরব বিস্তৃতিকে । এর গভীর – বিশাল বিস্তার প্রান্তবর্তী প্রকৃতিকেও গ্রাস করে । কবি বুঝিয়ে দেন মানুষ কেবল স্বপ্ন দেখে ; কিন্তু বাস্তবজীবনের বিপন্ন – বিবর্ণতাকে সে কোথাও অতিক্রম করতে পারে না ।
4. ‘ অনেক দূরে আছে মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ –কবিতা অবলম্বনে ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার দেশ ’ – এর সৌন্দর্য ও তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: মহুয়ার দেশের ছায়াময় লাবণ্য , সৌন্দর্য এবং রহস্যময়তাকে ফুটিয়ে তোলে এই ‘ মেঘ – মদির ’ শব্দবন্ধটি । পাঠ্য ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতাটি ছাড়াও কবি সমর সেন ‘ সাঁওতাল পরগনার মেঘ – মদির আকাশ ‘ – এর কথা একাধিক কবিতায় উল্লেখ করেছেন । আক্রয়সন্ধান কবি সমর সেন তেমনই এক দেশে আশ্রয় খোঁজেন , নগরজীবনের বিবর্ণতা , বিপন্নতা এবং অবক্ষয় , প্রকৃতির যে স্বর্গরাজ্যকে এখনও স্পর্শ করতে পারেনি ; যেখানে বেঁচে থাকার অসহ্য ক্লান্তি ‘ শীতের দুঃস্বপ্নের মতো মানুষকে তাড়া করে ফেরে না ; যে দেশে পথের দু – ধারে ছায়া ফেলে রহস্যময় দীর্ঘ দেবদারু ; যেখানে দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসের মতো বাতাসে রাত্রির নির্জন নিঃসঙ্গতা আলোড়িত হয় । কবি স্বপ্ন দেখেন , সেই নৈসর্গিক মহুয়ার দেশের ফুলে – গন্ধে আধুনিক নাগরিক মধ্যবিত্তের সমস্ত ক্লান্তি আর নৈরাশ্য যেন ধুয়ে – মুছে নির্মল হয়ে উঠবে ।
স্বপ্নের সওদাগর সমর সেন তাঁর স্বপ্নকল্পনার ‘ মেঘ – মদির মহুয়ার । দেশ ‘ – এ পৌঁছে হতাশ হন । সেখানে মহুয়া বনের ধার থেকে ভেসে আসা কয়লাখনির যান্ত্রিক একঘেয়ে শব্দ শোনেন কবি । তাঁর চোখে । ধরা পড়ে সেখানকার ধুলোর কলঙ্কমাখা মানুষের রাতজাগা চোখে বিপন্ন পৃথিবীর ‘ ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ‘ । নাগরিক যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসনে ‘ মহুয়ার দেশ ’ এক কল্পরাজ্য হয়েই থেকে যায় ; আর সর্বত্র মানুষের দৈনন্দিন বর্তমানকে আচ্ছন্ন করে বিপন্নতা , বিকৃতি ও ক্লান্তি ।
5. ‘ আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া – ফুল / নামুক মহুয়ার গন্ধ ।— ‘ আমার ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? এমন কামনার কারণ কী ?
অথবা , ‘ সমস্তক্ষণ সেখানে পথের দুধারে ছায়া ফেলে / দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য – নাগরিক জীবনের ক্লান্তি ও আবদ্ধতা থেকে শান্তির প্রত্যাশা কবিতায় কেমনভাবে প্রকাশ পেয়েছে , তা উদ্ধৃতাংশটির আলোকে বিচার করো ।
Ans: সমর সেনের লেখা ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোধৃত অংশে ‘ আমার ‘ বলতে কবি নিজেকে বোঝাতে চেয়েছেন ।
অস্তগামী সূর্যের এক করুণ ও উজ্জ্বল ছবি দিয়ে পাঠ্য ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতাটি শুরু হয় । ঘনায়মান সন্ধ্যায় অলস সূর্যের আলো , গলিত সোনার মতো অন্ধকার জলতলের ধূসর ফেনায় যেন আগুন লাগিয়ে দিয়ে যায় । কিন্তু বিবর্ণ শহরের ‘ ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাসে তা দ্রুত হারিয়ে যেতে থাকে । ক্লান্ত নাগরিক হৃদয়ে শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ’ তাড়া করে বেঁচে থাকার অবসাদ , একঘেয়েমি ও হতাশা । মধ্যবিত্ত মন তখন যেন অনেক দূরের মহুয়ার দেশের মেঘ – মদির সৌন্দর্য আর বিশুদ্ধতার খোঁজে ব্যাকুল হয়ে ওঠে । নাগরিক জীবন ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবির কাছে হয়ে ওঠে এই বন্দিদশা থেকে মুক্তির একমাত্র প্রতীক । সেখানে দীর্ঘ দেবদারুর রহস্যময় ছায়াবৃত পথের দু – ধারে আলো – আঁধারির এক অপরূপ মায়ালোক সৃষ্টি করে । দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসে রাত্রির নির্জন – নিঃসঙ্গতা আলোড়িত হয় । নির্মল প্রকৃতির হাওয়ায় , জীবনের আলো – ছায়ায় যেন অবসন্নতা – নৈরাশ্য ঘুচে যায় । মহুয়া ফুলের সুঘ্রাণের মধ্যে কবি ক্লান্তির উপশম খুঁজে পান । তাই তিনি প্রার্থনা করেন , ‘ আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া ফুল , / নামুক মহুয়ার গন্ধ ‘ । নগরসভ্যতার ক্লান্তিকর আয়োজন থেকে পরিত্রাণের খোঁজে তিনি স্বপ্নের স্নিগ্ধ – সজীব মহুয়ার দেশে আশ্রয় নেওয়ার বাসনাই প্রকাশ করেন ।
6. ‘ ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয় / কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন । –কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয় কেন ?
অথবা , ‘ অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক , কাদের কথা বলা হয়েছে ? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য আলোচনা করো ।
Ans: অবসন্ন মানুষের পরিচয় ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতায় কবি সমর সেন আধুনিক সভ্যতায় মানুষের জীবনযন্ত্রণায় ক্লান্ত , বিপন্ন ও বিধ্বস্ত অবস্থাটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন । প্রশ্নোদৃত অংশে মহুয়ার দেশের কয়লাখনির শ্রমিক তথা সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে ।
যান্ত্রিক নাগরিক জীবনের ক্লান্তি , দুষণ ধোঁয়ার মতোই প্রকৃতির নৈসর্গিকতাকে গ্রাস করে । ধূসর বিবর্ণতায় কবি সমর সেনের মন বিষণ্ণ হয়ে ওঠে । এখান থেকে পরিত্রাণ লাভের আশায় তাঁর চেতনায় জেগে ওঠে মেঘ – মদির মহুয়ার দেশের কথা । সেখানে পথের দু – ধারে ছায়া ফেলে রহস্যময় দেবদারু । কবি চান , তাঁর ক্লান্তির ওপরে ঝরে পড়ুক মহুয়া ফুল । ইট – কাঠ – কংক্রিটের নগরে যে – স্নিগ্ধ প্রাণময়তার অভাব , তা তিনি মহুয়ার দেশে খুঁজে পাবেন বলে ভাবেন । বাস্তবের আঘাতে কবির এই স্বপ্নকল্পনা দীর্ঘস্থায়ী হয় না । কবি শোনেন মহুয়া বনের ধারে ভেসে আসা কয়লাখনির একঘেয়ে শব্দ । সেখানে শিশিরে সমুজ্জ্বল সবুজ সকালেও মানুষের গায়ে লেগে থাকে ধুলোর কলঙ্ক । তাদের রাতজাগা চোখেও বেঁচে থাকার একই দুঃসহ ক্লান্তি এবং আধুনিক জীবনের অনিশ্চয়তা হানা দেয় । অরণ্য প্রকৃতির নির্মল কোলে বেড়ে ওঠা মানুষেরা যান্ত্রিক নগরসভ্যতার কোপে এইভাবে ক্রমে যন্ত্রমানবে পরিণত হয় । বর্তমান পৃথিবীর ক্লান্তি , ক্ষয় , সংকট ও বিপন্নতার হাত থেকে মহুয়ার দেশও মুক্তি পায় না । এই বন্দিত্ব এবং মুক্তির ঠিকানাহীন বেঁচে থাকার বেদনাবহ সত্যকে প্রকাশ করার কবিতাই হল ‘ মহুয়ার দেশ ‘ ।
7. ‘ অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক এখানে কোন মানুষদের কথা বলা হয়েছে ? তাঁরা অবসন্ন কেন ? ‘ ধুলোর কলঙ্ক ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: নাগরিক জীবনের সার্থক রূপকার কবি সমর সেনের ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতা থেকে গৃহীত উদ্ধৃত পঙ্ক্তিতে কবি কয়লাখনির ক্লান্ত , অবসন্ন শ্রমজীবী মানুষদের কথা বলেছেন ।
অবসন্ন কেন শহরের ধূসর নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত কবি ক্লান্তি থেকে মুক্তির স্বাদ পেতে ছুটে যান স্বপ্নকল্পনার মেঘ – মদির মহুয়ার দেশে । কবি চান তাঁর ক্লান্তিকে ভুলিয়ে দিক মহুয়ার গন্ধ । কিন্তু কবি যখন খুব কাছ থেকে মহুয়ার দেশকে দেখেন , উপলব্ধি করেন বর্তমান সভ্যতার রুঢ় বাস্তবতা সেখানেও গ্রাস করেছে । নিবিড় অন্ধকারেও তিনি শুনেছেন কয়লাখনির মর্মভেদী শব্দ । শিশিরধৌত নির্মল সকালে দেখেছেন খনি থেকে বেড়িয়ে আসা অবসন্ন শ্রমজীবী মানুষগুলির ধূলিমলিন দেহ । পুঁজিবাদের আগ্রাসনে মহুয়ার দেশের প্রকৃতিলগ্ন মানুষগুলির নির্মম আত্মসমর্পণ কবির যাবতীয় স্বপ্নকল্পনাকে বাস্তবে এনে দাঁড় করিয়েছে । সারারাত শ্রম দিয়েও ভালো থাকতে না পারার যন্ত্রণার এই ক্লান্ত – শ্রান্ত মহুয়ার দেশের মানুষগুলির শরীর অবসন্ন হয়ে পরেছে ।
রূঢ় বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রোমান্টিক কবির স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে । প্রকৃতির উদার সান্নিধ্যেও মহুয়ার দেশের মানুষ সরল জীবনযাপন করতে পারে না । পুঁজিবাদী সভ্যতার দাপটে সেখানেও মানুষের গায়ে ধুলোর কলঙ্ক আর রাতজাগা চোখে জীবনের অনিশ্চয়তার ‘ ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ‘ । প্রগতির কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করতেই হয় প্রকৃতিকে । অরণ্যপ্রকৃতির নির্মল কোলে বেড়ে ওঠা মানুষেরাও যান্ত্রিক নগরসভ্যতার কোপে এইভাবে ‘ ধুলোর কলঙ্ক গায়ে মেখে ক্রমে যন্ত্রমানবে পরিণত হয় । কবির সহজ উপস্থাপনায় ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গির গুণে ধনতান্ত্রিক সমাজকাঠামোয় গঠিত বর্বর নগরসভ্যতার সর্বগ্রাসী চেহারাটি প্রকট হয়ে উঠেছে ।
8. ‘ মহুয়ার দেশ ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো ।
Ans: ‘ নামকরণের তাৎপর্য ‘ অংশটি দ্যাখো ।
9. ‘ মহুয়ার দেশ ” কবিতা অবলম্বনে কবি সমর সেনের কবিপ্রতিভা , রচনাশৈলী এবং রোমান্টিক মনের যে প্রকাশ ঘটেছে , তা আলোচনা করো ।
Ans: কবি সমর সেন আদ্যন্ত নাগরিক । তাঁর লেখায় শহুরে “ মধ্যবিত্ত জীবনের ক্লান্তি , বিক্ষোভ ও বিকৃতির আশ্চর্য প্রকাশ দেখা যায় । ‘ মহুয়ার দেশ ’ কবিতায় সেই ক্লান্ত সহ – নাগরিকের বেদনা – স্বপ্ন ও দীর্ঘশ্বাসের শব্দ ধ্বনিত হয়ে ওঠে । স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের অলস সূর্যের উজ্জ্বল স্তব্ধতার মোহ মুছে দিয়ে , দূষিত হতশ্রী শহর কবিমনকে ‘ শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ’ চেপে ধরে । তখন সৌন্দর্য ও বিশুদ্ধতার খোঁজে তাঁর হৃদয় ‘ মহুয়ার দেশ ’ – এ আশ্রয় খোঁজে । যান্ত্রিক বিবর্ণতা ত্যাগ করে তিনি দেবদারুর দীর্ঘ ছায়ায় গিয়ে দাঁড়াতে চান । এখানে বক্তব্য ও চিত্রকল্পকে কবি গদ্যছন্দে এমন নিপুণভাবে ব্যবহার করেছেন যে , ‘ ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া ফুল ’
পঙ্ক্তিটি এক আশ্চর্য মোহময় আবেশ সৃষ্টি করে । কিন্তু সচেতন শিল্পী মাত্রেই নন বর্তমান তার রূঢ় বা আসলে মানুষের স্বপ্নভঙ্গের ভিত্তিভূমি । তাই রোমান্টিক কল্পনা ভেঙে চুরমার করে মহুয়া বনের ধার থেকে ভেসে আসে কয়লাখনির গভীর ক্লান্তিকর শব্দ । সেই মানুষগুলোর গায়ে তিনি দেখেন নির্মলতার পরিবর্তে ‘ ধুলোর কলঙ্ক ’ আর চোখে অবসন্ন দুঃস্বপ্ন । কবি সহজ উপস্থাপনায় ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গির গুণে মানুষের ক্লান্তি – বিপন্নতা এবং হতশ্রী অবস্থাটি যেমন স্পষ্ট হয়ে ওঠে , তেমনই বর্বর নগরসভ্যতার সর্বগ্রাসী চেহারাটিও ভয়াবহ প্রকট হয়ে দেখা দেয় ।