MCQ | প্রশ্ন ও উত্তর
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতাটিতে স্তবকসংখ্যা –
(A) তিন
(B) দুই
(C) চার
(D) এক
Ans: (A) তিন
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতাটি যে মূল কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত –
(A) ছবি আঁকে ছিঁড়ে ফ্যালে
(B) হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য
(C) অনন্ত নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকারে
(D) অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল
Ans: (D) অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল
- কবি বলেছেন , গাছগুলো তুলে এনে –
(A) টবে বসাও
(B) জঙ্গলে লাগাও
(C) নদীতে ভাসাও
(D) বাগানে বসাও
Ans: (D) বাগানে বসাও
- কবির একমাত্র দরকার বলে মনে হয়েছে –
(A) গাছ দেখা
(B) সমুদ্রের কল্লোল
(C) আকাশ দেখা
(D) জঙ্গলে হাটা
Ans: (A) গাছ দেখা
- গাছ দেখে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন –
(A) শহরের অগণিত মানুষ
(B) গ্রামের মানুষ
(C) গ্রামের কৃষক
(D) কবি
Ans: (D) কবি
- কবির মতে , শরীরের খুব দরকার—
(A) মানুষের ভালোবাসা
(B) গাছের সবুজটুকু
(C) গাছের শিকড়বাকড়
(D) জঙ্গলে ভ্রমণ
Ans: (B) গাছের সবুজটুকু
- ‘ গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার’ –
(A) প্রসাধনের জন্য
(B) আরোগ্যের জন্য
(C) পুষ্টির জন্য
(D) বুদ্ধির বিকাশের জন্য
Ans: (B) আরোগ্যের জন্য
- কবি বহুদিন যেতে পারেননি—
(A) সমুদ্রে
(B) মরুভূমিতে
(C) জঙ্গলে
(D) পাহাড়ে
Ans: (C) জঙ্গলে
- বহুদিন _____ কাটেনি দিন
(A) পাহাড়ে
(B) সাগরে
(C) শহরে
(D) জঙ্গলে
Ans: (D) জঙ্গলে
- কবি বহুদিন কোথায় আছেন ?
(A) শহরে
(B) জঙ্গলে
(C) পাহাড়ে
(D) সাগরে
Ans: (A) শহরে
- হাঁ করে কেবল সবুজ খায় ‘ — কে ‘ হাঁ করে সবুজ খায় ’ ? –
(A) শহরের মানুষ
(B) গ্রামের মানুষ
(C) গৃহপালিত পশু
(D) শহরের অসুখ
Ans: (D) শহরের অসুখ
- শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায় ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন—
(A) সবুজ রঙের অভাবকে
(B) মানুষের অসুস্থতাকে
(C) গাছের অপুষ্টিকে
(D) নগরায়ণের বিকৃত বিস্তৃতিকে
Ans: (D) নগরায়ণের বিকৃত বিস্তৃতিকে
- ‘ সবুজের অনটন ঘটে ‘ –
(A) অনাবৃষ্টির ফলে
(B) শহরের অসুখ সবুজ খায় বলে
(C) ঝড়ে গাছ পড়ে যাওয়ার ফলে
(D) অভিজ্ঞ মালি নেই বলে
Ans: (B) শহরের অসুখ সবুজ খায় বলে
- ‘ সবুজের অনটন ‘ কথাটির অর্থ হল –
(A) তারুণ্যের অভাব
(B) ন্যাড়া পত্রহীন গাছের আধিক্য
(C) সবুজ রঙের অভাব
(D) বৃক্ষের স্বল্পতা
Ans: (D) বৃক্ষের স্বল্পতা
- শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায় , ফলে –
(A) সবুজের অনটন ঘটে
(B) সবুজের বিস্তার ঘটে
(C) সবুজের বংশবৃদ্ধি ঘটে
(D) সবুজের সজীবতা বাড়ে
Ans: (A) সবুজের অনটন ঘটে
- ‘তাই বলি । ‘— বক্তা বলতে চান –
(A) ‘ বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন ‘
(B) ‘ বহুদিন জঙ্গলে যাইনি ‘
(C) ‘ গাছ তুলে আনো বাগানে বসাও
(D) ‘ বহুদিন শহরেই আছি ‘
Ans: (C) ‘ গাছ তুলে আনো বাগানে বসাও
- ‘ গাছ তুলে আনো / বাগানে বসাও আমি দেখি ‘ — কবির এমন বলার কারণ —
(A) অনেকদিন জঙ্গলে যাওয়া হয়নি
(B) অনেকদিন শহরের বাইরে যাওয়া হয়নি
(C) সবুজ হারিয়ে যাচ্ছে
(D) চোখ তো সবুজ চায়
Ans: (C) সবুজ হারিয়ে যাচ্ছে
- ‘ তাই বলি , গাছ তুলে আনো ‘ — কবি গাছ বসাতে চান –
(A) পথের ধারে
(B) বাড়ির ছাদে
(C) বাগানে
(D) টবে
Ans: (C) বাগানে
- কবি ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় বারবার গাছগুলো তুলে আনার কথা বলেছেন —
(A) বাগানে বসানোর প্রয়োজনে
(B) কেটে ফেলার প্রয়োজনে
(C) ঘর সাজানোর প্রয়োজনে
(D) জঙ্গল রক্ষা করার তাগিদে
Ans: (A) বাগানে বসানোর প্রয়োজনে
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতা অনুসারে চোখ চায় –
(A) কালো
(B) ধূসর
(C) সবুজ
(D) ফ্যাকাসে
Ans: (C) সবুজ
- ‘ সবুজের অনটন ঘটে ‘ — ‘ অনটন ‘ শব্দটির অর্থ—
(A) স্বভাব
(B) ঘাটতি
(C) পীড়ন
(D) যথার্থ
Ans: (B) ঘাটতি
- ‘ আরোগ্যের জন্য ঐ সবুজের ভীষণ দরকার ‘ – ‘ আরোগ্য ‘ শব্দটির অর্থ হল –
(A) রুগ্ণ
(B) শয্যাশায়ী
(C) রোগাক্রান্ত
(D) রোগমুক্তি
Ans: (D) রোগমুক্তি
- ‘ আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন—
(A) গাছগাছড়ার ওষুধে মানুষের রোগ – ব্যাধি সারে
(B) প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ওষুধেই আধুনিক রোগ – ব্যাধি জব্দ
(C) সবুজ রঙে মানুষের অসুস্থতা দূর হয়
(D) নাগরিক জীবনের ক্লান্তি – অসুস্থতা থেকে গাছপালার সবুজ আনে মুক্তির আশ্বাস
Ans: (D) নাগরিক জীবনের ক্লান্তি – অসুস্থতা থেকে গাছপালার সবুজ আনে মুক্তির আশ্বাস
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় ‘ বহুদিন ‘ শব্দ আছে—
(A) একবার
(B) দু – বার
(C) তিনবার
(D) চারবার
Ans: (C) তিনবার
- ‘ আমি দেখি ’ কবিতাটি শেষ হয় যে পঙ্ক্তি দিয়ে—
(A) ‘ গাছ তুলে আনো
(B) ‘ আমি দেখি ’
(C) ‘ গাছ আনো , বাগানে বসাও ’
(D) ‘ আমার দরকার শুধু গাছ দেখা
Ans: (B) ‘ আমি দেখি ’
- ‘ আমি দেখি ’ শব্দবন্ধটির মধ্যে প্রচ্ছন্ন আছে—
(A) দু – চোখ ভরে দেখার আকুতি
(B) এ জীবনকে দু – চোখ ভরে দেখার প্রার্থনা
(C) গাছের সবুজ সজীবতাকে দেখার ও উপলব্ধি করার আকুতি
(D) চারপাশের নাগরিক জীবনকে দেখার ও আবিষ্কার করার কামনা
Ans: (C) গাছের সবুজ সজীবতাকে দেখার ও উপলব্ধি করার আকুতি
- ‘ চোখ তো সবুজ চায় । / দেহ চায়’—
(A) সবুজ পাতা
(B) সবুজ বাগান
(C) সবুজ ঘাস
(D) সবুজ উঠান অথবা ,
Ans: (B) সবুজ বাগান
- ‘ দেহ চায় ‘ — দেহ কী চায়—
(A) গাছ
(B) বাগান
(C) সবুজ ঘাস
(D) সবুজ বাগান
Ans: (D) সবুজ বাগান
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি প্রাণভরে দেখতে চেয়েছেন—
(A) বাগানের সবুজ
(B) সমুদ্রের রূপ
(C) জঙ্গলের সবুজ
(D) শহরের অসুখ
Ans: (A) বাগানের সবুজ
- ‘ শহরের অসুখ ‘ কথাটির তাৎপর্য হল –
(A) দূষণ – জনিত রোগ
(B) শহুরে মানুষের বিকৃতি
(C) মানুষের আধুনিক রোগ
(D) সর্বগ্রাসী নগরায়ণ
Ans: (D) সর্বগ্রাসী নগরায়ণ
- ‘ তাই বলি ‘ — কবি বলতে চেয়েছেন –
(A) গাছগুলি রোপণ করো
(B) গাছগুলি উপড়ে ফেল
(C) আগাছা সাফাই করো
(D) গাছ তুলে আনো
Ans: (D) গাছ তুলে আনো
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | আমি দেখি (কবিতা) শক্তি চট্টপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ami Dekhi Question and Answer :
- ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি কোথায় গাছ বসাতে বলেছেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় গাছগুলো তুলে এনে বাগানে বসানোর কথা বলেছেন ।
- ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় গাছের সবুজ কবির কোন ভাবনার প্রতীক ?
Ans: প্রাণের আদিমতম প্রতিভূ হল গাছ । কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় নগরজীবনের প্রাণহীন বিবর্ণতায় ক্লান্ত হয়ে সজীব – প্রাণময় সবুজের প্রতি অমোঘ আকর্ষণের কথা ঘোষণা করেছেন ।
- ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় নিজের উজ্জীবনীশক্তি কীভাবে কবি প্রকৃতির মধ্যে খুঁজতে চেয়েছেন ?
Ans: সবুজ প্রকৃতি প্রাণের সঞ্চারী ; নগরসভ্যতায় যা অবলুপ্তির পথে । প্রকৃতিপ্রেমিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় নগরজীবনের সেই প্রাণহীন বিবর্ণতাকে সবুজে অবগাহন করাতে , শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য , পরিবেশের স্নিগ্ধতাকে বাঁচিয়ে রাখতে গাছ তুলে এনে বাগানে বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।
- ‘ আমার দরকার … কী দরকার ?
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতা অনুসারে ‘ আমার ’ অর্থাৎ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়োজন শুধু গাছ দেখা ।
- ‘ আমার দরকার শুধু গাছ দেখা ‘ — কবির গাছ দেখা দরকার কেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ধূসর নগরজীবনের ক্লান্তি ও অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে , শরীরের আরোগ্যের প্রয়োজনে গাছের সবুজটুকু হৃদয়ে ধারণ করতে চেয়েছেন ।
- ‘ গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার ‘ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি শরীর ও মনের সুস্থতা আর সজীবতার কামনায় গাছের প্রাণবন্ত ‘ সবুজটুকু শরীরে দরকার ’ বলেছেন ।
- ‘ আরোগ্যের জন্য ঐ সবুজের ভীষণ দরকার ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: শহর তো ইট – বালি – কংক্রিটের এক ধূসর নিষ্প্রাণ জগৎ । এই ক্লান্তিকর জড়ত্বের কবল থেকে আরোগ্য লাভের জন্য গাছগাছালির প্রাণবন্ত সবুজ একান্ত জরুরি । এ কথাই কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বলতে চেয়েছেন ।
- ‘ গাছগুলো তুলে আনো , বাগানে বসাও ’ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: সবুজের অনটনে – অভাবে ক্লান্ত হতশ্রী শহরে গাছেদের সান্নিধ্য ও সংস্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় ওপরের মন্তব্যটি করেছেন ।
- ‘ বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন ‘ — কেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতা অনুসারে , কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন আরণ্যক প্রকৃতির সংস্রব থেকে বিচ্ছিন্ন । এই আক্ষেপ ফুটিয়ে তুলতেই তিনি প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছেন ।
- ‘ বহুদিন জঙ্গলে যাইনি ‘ – জঙ্গলে না – যাওয়ার ফলে কী হয়েছে ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি দীর্ঘকাল জঙ্গলে না যাওয়ায় নগরজীবনের নিষ্প্রাণ , ধূসর – বিবর্ণতায় ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছেন ।
- ‘ বহুদিন শহরেই আছি ‘ — শহরে থাকার ফলে কী হয়েছে ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় বহুদিন শহরে থাকার ফলে বক্তা দেখেছেন নির্বিচারে সবুজ ধ্বংস করে ধূসর – নিষ্প্রাণ নগরে কংক্রিটের বিস্তার ।
- ‘ বহুদিন শহরেই আছি ‘ — কবি বহুদিন শহরেই আছেন কেন ?
Ans: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রুক্ষ – নিষ্প্রাণ নগরের বুকে কর্মব্যস্ততার অক্টোপাশে বন্দি । তাই সবুজের সাহচর্য পাওয়ার প্রত্যাশায় তাঁর হৃদয় আকুল হলেও তিনি শহরে বহুদিন থাকতে বাধ্য হয়েছেন ।
- ‘ বহুদিন শহরেই আছি ।’— শহরে থেকে বক্তা কী উপলব্ধি করেছেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘকাল শহরজীবনে বন্দি থেকে অনুভব করেছেন নগরায়ণের আগ্রাসনে কীভাবে সেখান থেকে সবুজের অলংকার হারিয়ে যায় ।
- ‘ শহরের অসুখ ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরের অসুখ ‘ বলতে ইট – বালি – কংক্রিটের শহরের সর্বগ্রাসী ও বিকৃত বিস্তৃতিকে বুঝিয়েছেন ।
- শহরের অসুখ হাঁ করে ‘ — কী ঘটে ?
Ans: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতা অনুসারে শহরের অসুখ হাঁ করে ক্রমাগত নির্মল সবুজ প্রকৃতিকে গ্রাস করে ।
- কেবল সবুজ খায় ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরের সর্বগ্রাসী বিস্তৃতির কারণে ক্রমাগত সবুজের নিধনকে ফুটিয়ে তুলতে প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছেন ।
- হাঁ করে কেবল সবুজ খায় ‘ — এর ফলে কী ঘটে ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় সর্বগ্রাসী নগরায়ণকে কবি ‘ শহরের অসুখ ‘ বলে মনে করেছেন । এভাবে নির্বিচারে সবুজ ধ্বংসের ফলে শহরে প্রতিনিয়ত গাছপালা কমতে থাকে ।
- ‘ সবুজের অনটন ঘটে …’— কোথায় , কেন ‘ সবুজের অনটন ’ ঘটেছে ?
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতা অনুসারে নির্বিচারে সবুজ ধ্বংস করে নগরায়ণের ফলে শহরে সবুজের অনটন ঘটে ।
- ‘ সবুজের অনটন ঘটে ‘ — কীভাবে ঘটে ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শহরের বিকৃত এবং অনাবশ্যক আগ্রাসনের ফলে সবুজের উচ্ছেদকে স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলতে ‘ সবুজের অনটন ঘটে ‘ বলে উল্লেখ করেছেন ।
- ‘ তাই বলি ‘ — এখানে কবি কাদের উদ্দেশে কী বলেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের নির্বিচারে সবুজ ধ্বংসের বিপক্ষে প্রতিবাদ জানিয়ে গাছগুলো তুলে এনে শহরের বাগানে বসানোর আবেদন জানান ।
- ‘ চোখ তো সবুজ চায় ‘ — কবি এ কথা বলেছেন কেন ?
Ans: বিবর্ণ – ধূসর শহরের কংক্রিটের জঙ্গলে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ক্লান্ত দুটি চোখ প্রাণবন্ত সবুজের সজীবতার সন্ধান করে । তাই তিনি এমন কথা বলেছেন ।
- ‘ দেহ চায় সবুজ বাগান ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতা অনুসারে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে , শহরের ক্লান্তি আর অবসন্নতা থেকে আরোগ্যের তাগিদে মানুষের শরীর সবুজের সান্নিধ্য প্রত্যাশা করে ।
- ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবির চোখ ও দেহ কামনা করেছে ?
Ans: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবির চোখ সজীব প্রাণবন্ত সবুজ আর দেহ সবুজ বাগানে গাছের সান্নিধ্য প্রার্থনা করেছে ।
- ‘ গাছ আনো , বাগানে বসাও ।’- বলা হয়েছে কেন ?
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরের ধূসর বিবর্ণতা থেকে পরিত্রাণের আশায় সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে এমন আহ্বান জানিয়েছেন ।
- ‘ আমি দেখি ।’— কবি কী দেখতে চান ?
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় দু – চোখ ভরে সতেজ প্রাণময় গাছের সবুজকে দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | আমি দেখি (কবিতা) শক্তি চট্টপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ami Dekhi Question and Answer :
1. ‘ আরোগ্যের জন্য ঐ সবুজের ভীষণ দরকার ‘ ঐ সবুজ ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? সেই সবুজকে পাওয়ার জন্য কবি কী কী নির্দেশ দিয়েছেন ?
Ans: ‘ ঐ সবুজ ‘ বলতে গাছের সবুজকে কবি বোঝাতে চেয়েছেন ।
প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশসচেতন কবি গাছ তুলে এনে বাগানে । বসানোর আবেদন জানিয়েছেন । নগরের সীমাহীন বিস্তারের ফলে সবুজকে পাওয়ার তিনি দেখেন সবুজের ক্ষয়িফ্লু – কোণঠাসা জন্য কবির নির্দেশ অবস্থা । ক্রমাগত সবুজকে গিলে খাওয়ার এই নাগরিক আগ্রাসনকে তিনি মন থেকে মেনে নিতে পারেন না । সবুজের স্নিগ্ধ মায়ামমতায় কবি মুক্তির আশ্রয় খোঁজেন , নাগরিক অবসাদমোচনে গাছ তুলে এনে বাগানে বসাতে বলেন । তাঁর চোখ চায় সবুজ আর শরীর চায় সবুজ বাগান । কবি জানেন এবং মানেন , রোগমুক্তির জন্য , ক্লেদ – ক্লান্তি উপশমের জন্য সবুজের একান্ত প্রয়োজন । নাগরিক জীবনে তাই বৃক্ষকে ফিরিয়ে এনে তিনি শরীর ও মনের যাবতীয় কষ্ট দূর করতে চান । তাই কোনোপ্রকার ভণিতা না – করে কবির সরাসরি নির্দেশ — ‘ গাছ আনো , বাগানে বসাও । ‘ কবিতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই একই ভাব ব্যক্ত করেছেন নাগরিক যন্ত্রণায় ক্লান্ত – বিধ্বস্ত কবি ।
2. ‘ গাছগুলো তুলে আনো , বাগানে বসাও ’ –‘আমি দেখি কবিতা অবলম্বনে গাছেদের প্রতি কবির অন্তরের ভালোবাসা ও দরদ কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে তা লেখো ।
Ans: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় মানুষের সঙ্গে গাছের নিবিড় সান্নিধ্যের কামনা প্রকাশ পেয়েছে । কবি শহুরে জীবনে সবুজের প্রয়োজনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সবুজ – সতেজ প্রকৃতির প্রতি তাঁর অন্তরের অকৃত্রিম ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন । সৃষ্টির আদিমতম কালে প্রাণের একমাত্র প্রতিনিধি ছিল গাছ । তারপর জীবের বিবর্তনের আশ্চর্য পথে এ পৃথিবীতে মানুষ এসেছে । তাই মানুষের সঙ্গে গাছগাছালির সম্বন্ধ চিরকালীন এবং অবিচ্ছেদ্য । কিন্তু সভ্যতার অগ্রগতির হাত ধরে নগরায়ণের ফলে , সবুজকে নির্বিচারে ধ্বংস করেছে মানুষ । তার চারদিক হয়ে উঠেছে । ধূসর – বর্ণহীন ও নিষ্প্রাণ । এমনই এক অসহনীয় নাগরিক পরিবেশে ক্লান্ত – অবসন্ন কবি বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে গাছগুলোকে তুলে আনার আহ্বান জানিয়েছেন ।
শহরের বিস্তৃতির সর্বগ্রাসী ক্ষুধায় সবুজকে ধ্বংস হতে দেখে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বিষণ্ণ ও হতাশ । অথচ কবির হতাশা সমস্ত অসুস্থতা থেকে আরোগ্যের জন্য গাছের সবুজটুকুই আজ একান্ত জরুরি । নগরজীবনের ব্যস্ততা যান্ত্রিকতা ক্রমে জঙ্গলের সঙ্গে মানুষের ব্যবধান বাড়িয়েছে । জঙ্গলের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে কবিকেও । কিন্তু তাঁর চোখ খুঁজে চলে সবুজের সজীবতা , তাঁর হৃদয় চায় সবুজের সংস্পর্শ । শহুরে কৃত্রিমতার কংক্রিট ভেঙে কবি বাগানে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সবুজ গাছের প্রাণবন্ত নিশান । এভাবেই তিনি গাছের প্রতি ভালোবাসা ও দরদকে যেমন ফুটিয়ে তুলেছেন , তেমনই সবুজের প্রয়োজনীয়তার অনিবার্য দিকটিকেও স্পষ্ট করেছেন ।
3. ঐ সবুজের ভীষণ দরকার ‘ -‘এই সবুজ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তার দরকার কেন ?
Ans: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আমি দেখি ‘ কবিতায় শহরের রুক্ষ , প্রাণহীন পরিবেশে সবুজের সান্নিধ্য পাওয়ার আকুলতা ব্যক্ত করেছেন । অরণ্যভূমি সবুজের আভরণে সৌন্দর্যময়ী হলেও নগরায়ণ , শিল্পায়নের দাবিতে শহর আজ হয়ে উঠেছে বিবর্ণ সভ্যতার মুখ । কবি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন বলেই উপরোক্ত আহ্বানের মাধ্যমে । শহরের বুকে সবুজের অভিযান কামনা করেছেন । ‘ ‘ ঐ সবুজ ’ বলতে অরণ্যভূমির প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা অপরিমেয় সবুজ গাছপালার কথা । বোঝাতে চেয়েছেন ।
শহর আসলে সবুজের বধ্যভূমি । তার সর্বগ্রাসী ‘ হাঁ ‘ মুখে ) জলাভূমি – ধানজমি – সবুজ গাছপালা ক্রমশ তলিয়ে যেতে থাকে । আর সেখানে গজিয়ে ওঠে ইট – বালির আকাশছোঁয়া সবুজবিহীন শহরের ইমারত । এভাবেই সবুজ সজীব প্রাণের বদলে , কৃত্রিমতা কাঠামোর প্রাণহীন ইস্পাতে – কংক্রিটে বন্দি হতে থাকে মানুষের জীবন । শহরের এই অসুখে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ক্লান্ত বোধ করেন । কেন – না বহুদিন এমনই এক শহরে তিনি আটকে পড়ে আছেন । জঙ্গলের মধ্যে সবুজ গাছপালার প্রাণবন্ত জগতে দীর্ঘদিন তাঁর যাওয়া হয় না । ক্রমে যান্ত্রিক নগরের বিবর্ণ একঘেয়েমিতে গাছের ‘ ঐ সবুজ ’ – এর প্রয়োজন । সঙ্গে বিচ্ছেদের আক্ষেপে তাঁর মনখারাপ তীব্র হয়ে ওঠে । চারপাশের এই কৃত্রিম আয়োজন । থেকেই মুক্তির আশ্রয় খোঁজেন কবি । দমবন্ধ করা পরিবেশে শরীর ও মন অসুস্থ হয়ে ওঠে , তা থেকে আরোগ্যের জন্য সতেজ – সবুজের ভীষণ দরকার । তাই সার্বিক আরোগ্যের অনাড়ম্বর আয়োজনে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় সবুজের প্রয়োজন অনুভব করেছেন ।
4. ‘ সবুজের অনটন ঘটে বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন , তা কবিতা অনুসারে আলোচনা করো ।
অথবা , ‘ শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায় ’ –উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় গাছের সঙ্গে মানুষের আত্মিক সম্পর্কের দিকটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন । তিনি বোঝাতে চেয়েছেন , আমাদের সুস্থ – স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে গাছ কতটা অপরিহার্য ।
কবি দেখেছেন , নগরায়ণের সর্বগ্রাসী বিস্তারে আজ সবুজ বিপন্ন । কারণ শহর মানেই তো আসলে বৃক্ষহীন জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অট্টালিকার সারি । নগরায়ণ ছাড়াও শিল্পায়ন , সড়ক সম্প্রসারণ , বৈদ্যুতিকরণ ইত্যাদির প্রয়োজনে সভ্যতার অঙ্গ থেকে আজ হারিয়ে যাচ্ছে সবুজের অলংকার । কবি নিজেও কাজের চাপে ব্যস্ততায় কিংবা যান্ত্রিকতায় দীর্ঘকাল তাঁর প্রিয় আরণ্যক জগতের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন । অথচ তিনি বিশ্বাস জালের মধ্যে ঈশ্বর গড়েন । / মানুষের বসবাস সহজ সহজতর হবে বলে । ‘ তাইতো গভীর আক্ষেপের সঙ্গে তিনি লেখেন , ‘ বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন । এই বিষণ্ণতা প্রকৃতিসংলগ্নতা প্রত্যাশী এক মানুষের । যে জানে জঙ্গলে নিসর্গের কোলে , ‘ সম্পন্ন সবুজে / …. শুধু হাহাকার নয় , আনন্দও আছে , / মাদলে – মাদলে বাজে হাতের অল্গুনী , / পায়ের নূপুর বাজে জলে যেন নুড়ি । ‘ অন্যদিকে নাগরিক কৃত্রিমতায় কেবল বেড়ে চলে ক্লান্তি , অবসাদ আর সবুজের হাহাকার ।
প্রতি মুহূর্তে নগরোন্নয়নের দোহাই দিয়ে , বিকাশ ও অগ্রগতির হাঁ মুখে চালান হতে থাকে সবুজ গাছের সজীব দেহ । নগরের এই অসুখেই তো সবুজের অনটন ঘটে । প্রশ্নোধৃত অংশে কবি সেই সত্যই তুলে ধরেছেন ।
5. ‘ আমার দরকার শুধু গাছ দেখা –বক্তা কে ? তার গাছ দেখা দরকার কেন ?
অথবা , ‘ আমার দরকার শুধু গাছ দেখা / গাছ দেখে যাওয়া কার উক্তি ? তার এমন মন্তব্যের কারণ কী লেখো ।
Ans: ‘ আমি দেখি ’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্নোদৃত মন্তব্যটি করেছেন ।
কবি হতশ্রী নগরের ধূসর ভয়াবহতায় আক্রান্ত বোধ করেন । নগরের সীমাহীন বিস্তারের ফলে তিনি দেখেন সবুজের ক্ষয়িষ্ণু – কোণঠাসা অবস্থা । গাছগাছালির কোমল প্রাণময়তার অনটনে , সংবেদনশীল কবিমন হতাশ ও অবসন্ন হয় । ক্রমাগত সবুজকে গিলে খাওয়ার এই নাগরিক আগ্রাসনকে তিনি মন থেকে মেনে নিতে পারেন না ।
গাছের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ভালোবাসা ও নির্ভরতার অচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা । সবুজের সেই স্নিগ্ধ মায়াময়তায় কবি মুক্তির আশ্রয় খোঁজেন , নাগরিক প্রাণহীনতার অবসাদ কাটাতে গাছগুলোকে তুলে এনে সবুজের সন্ধানে কবি বাগানে বসাতে বলেন । আধুনিক সভ্যতার অনেক অসুখের উপশম রয়েছে গাছের সবুজে । তাই শরীর ও মনের আরোগ্যের প্রয়োজনে আজ সবুজকে বড়ো প্রয়োজন । জঙ্গল থেকে বিচ্ছিন্ন কবি শহরের বাগানের এক মুঠো সবুজের মধ্যেই পেতে চান একান্ত নির্ভরতার আশ্বাস । তাঁর চোখ চায় সবুজ আর শরীর চায় সবুজ বাগান ।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এই সবুজ দেখার মধ্যে যেন মনুষ্যত্বের এক আশ্চর্য আকুতি প্রকাশিত হয় , ‘ গাছের ভিতরে যদি যেতে পারি একবার জীবনে / … রস আছে , স্নেহ আছে , ভালোবাসা , বিবেচনা আছে , / ও গাছ আমাকে নাও , মুহূর্তের জন্যে হলে নাও । ‘ – এই নীরব প্রার্থনাই প্রশ্নোধৃত অংশে ধ্বনিত হয়েছে ।
6. ‘ আমি দেখি ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো ।
Ans: নামকরণের তাৎপর্য অংশটি দ্যাখো ।
7. ‘ আমি দেখি কবিতা অবলম্বনে কবিমানস ও রচনাশৈলীর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো ।
Ans: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রকৃতির প্রতি আজন্ম এক অমোঘ টান অনুভব করতেন । কংক্রিট শাসিত এই শহরের বিপন্নতা থেকে মুক্তি পেতে তাই আমি দেখি ‘ কবিতায় তিনি গাছকেই একমাত্র আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন । কবিতাটির কবিমানস ভাষা সহজ ও ভারহীন । কারণ শহরের ‘ হা ’ মুখে প্রতিনিয়ত সবুজকে তলিয়ে যেতে দেখার দুঃখ ও যন্ত্রণা শুধু কবির একার নয় , সকলের । তাই সজীব সবুজের সান্নিধ্যের লোভ টের পায় ধুসর নগরজীবনে ক্লান্ত প্রতিটি নাগরিক । গাছের সবুজটুকু শরীরে মেখে তারা বেঁচে থাকার ক্লান্তি ও অবসন্নতা থেকে আরোগ্য লাভ করতে চায় ।
কবি এভাবেই আধুনিক জীবনের ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে যেমন সর্বজনীন করে তুলেছেন , তেমনই সরল – প্রচলিত শব্দের সঙ্গে ‘ আরোগ্য ’ , ‘ অনটন ‘ প্রভৃতি তৎসম শব্দ প্রয়োগ করে বক্তব্যটিকে জোরালোভাবে প্রকাশ করেছেন । কারণ কবি জানেন , প্রকৃতিবিচ্ছিন্ন শহুরে মানুষের পরিত্রাণের একমাত্র পথ বাগানে গাছের পরিচর্যা । শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায় ’ –এর মতো চিত্রকল্পে তিনি নগরজীবনের ভয়াবহতার পাশেই , মানুষের চিরকালীন আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করেছেন ‘ দেহ চায় সবুজ বাগান ’ – এর মতো আশ্চর্য বাক্বিন্যাসে । এভাবেই কবি সরল শৈলীর অভিনবত্বে , কৌশলী উপমায় সবুজের প্রতি ব্যক্তিমনের আন্তরিক ভালোবাসাটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
8. ‘ চোখ তো সবুজ চায় । / দেহ চায় সবুজ বাগান —উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
অথবা , চোখ তো সবুজ চায় । — এই মন্তব্যের আলোকে গাছের প্রতি কবির মমত্ববোধ কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা ‘ আমি দেখি কবিতা অবলম্বনে লেখো ।
Ans: ‘ আমি দেখি ‘ কবিতায় কবি গাছের সবুজ প্রাণময়তার কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে চেয়েছেন । নগরজীবনের বিবর্ণতায় ক্লান্ত হয়ে তিনি যেন জেগে উঠতে চেয়েছেন গাছগাছালির চিরসবুজ স্পর্শে ।
এ শহর মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দি করেছে । কবির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি । অথচ বারবারই তিনি সবুজের প্রয়োজন বলেছেন , ‘ শিকড়ে , বিহ্বল – প্রান্তে , কান পেতে আছি নিশিদিন । ‘ কিন্তু সেই জঙ্গল থেকে , আপন শিকড় থেকে তিনি দীর্ঘকাল বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন । প্রকৃতির সঙ্গে , সবুজের সঙ্গে এই ব্যবধান কবি মেনে নিতে পারেননি । কারণ তাঁর চেতনায় গাছ এমন এক সজীব সত্তা , যার ‘ এলিয়ে রয়েছে ছায়া , সীমাহীন রোদের ভিতরে । ‘ এমন আশ্রয় ও নির্ভরতার খোঁজেই তো তিনি বারবার গাছের কাছে ছুটে যান । অথচ শহরের সর্বগ্রাসী খিদের কবলে পড়ে । সবুজ ফুরিয়ে আসে । কবি এ নিয়েই আক্ষেপ করে এই বৃদ্ধহীন ধূসর ভয়াবহতার হাত থেকে মুক্তির আশায় সবুজের মধ্যে শান্তি ও পরিত্রাণ খোঁজেন । সবুজের মধ্যেই মানুষের চোখ পায় প্রাণের আরাম এবং সবুজ বাগানে তাঁর শরীর – মন বেঁচে থাকার ক্লান্তি ভুলে সর্বরোগহর জীবনের উচ্ছলতার সন্ধান পায় । প্রশ্নোদৃত অংশে কবি এ কথাই বলতে চেয়েছেন ।
9. ‘ বহুদিন জঙ্গলে যাইনি / বহুদিন শহরেই আছি —উদ্ধৃত পঙ্ক্তি দুটি কবির কোন্ ভাবনাকে প্রকাশ করে , তা কবিতা অনুসারে লেখো ।
অথবা , ‘ বহুদিন জঙ্গলে যাইনি — কবি কেন জঙ্গলে যেতে চান বুঝিয়ে লেখো ।
Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ আমি দেখি ‘ কবিতা থেকে নেওয়া । এখানে নগরজীবনের একঘেয়েমিতে ক্লান্ত কবির আক্ষেপ ও দীর্ঘশ্বাস ধ্বনিত হয়েছে ।
শহরে বেঁচে থাকার কৃত্রিমতায় এবং হতশ্রী দূষণে কবিমন হাঁপিয়ে ওঠে । প্রতিমুহূর্তে নগরের সীমাহীন তথাকথিত উন্নয়নের কোপে পড়ে , সবুজ নীরবে হারিয়ে যায় । সবুজের এই দারিদ্র্য , অনটন তাঁকে আরও ক্লান্ত করে । তিনি যেন ক্রমশ নিরাশ্রয় হন । বৃক্ষহীন শহরের এই ধূসর শহুরে জীবনের যন্ত্রণা জগতে , যান্ত্রিকতার যন্ত্রণা ক্রমে তীব্রতর হয় । অথচ তিনি ভালোবাসেন , ‘ বনের কাঁথায় … / আর তুমি যাবে , যেন চোখ বুজে / ডিঙোবে পাহাড় বন সেগুনের শালের কেন্দুর — । ‘ কিন্তু এই আরণ্যক জীবন থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন । হয়েছেন । প্রকৃতির মায়াময় সংস্পর্শ থেকে আজ বহুদিন তিনি অনেক দূরে ।
যে সরল সবুজের ব্যাপ্ত স্নিগ্ধতায় জীবন জেগে ওঠে , হৃদয় আলোড়িত হয় ; নিসর্গের সেই সান্নিধ্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বহুদিন কাটাননি । এখন কবির শহুরে জীবনে । সবুজ – সান্নিধ্যের নেমে এসেছে উন্মুক্ততার বদলে আবহুতা ; আকুলতা প্রকৃতির সবুজ শিখরে প্রাণের মুক্তির পরিবর্তে বিবর্ণ , নিষ্প্রাণ ঘরবাড়ির বিপন্ন মন্থর হাহাকার । কবি তাই শান্তির শীতল স্পর্শের সন্ধানে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন । তাঁর সেই না – পাওয়ার যন্ত্রণাসঞ্জাত আক্ষেপ ও স্বীকারোত্তিই প্রশ্নোত অংশে প্রকাশ পেয়েছে ।