ক্রন্দনরতা জননীর পাশে (কবিতা) মৃদুল দাশগুপ্ত – প্রশ্ন ও উত্তর

 MCQ |  প্রশ্ন ও উত্তর :

  1. কবি মৃদুল দাশগুপ্তের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম –

(A) জলপাইকাঠের এসরাজ

(B) ঝরাপালক

(C) সোনার তরী

(D) সোনার মাছি খুন করেছি ।

Ans: (A) জলপাইকাঠের এসরাজ

 

  1. ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত ?

(A) সর্ষে ক্ষেত

(B) আমপাতা জামপাতা

(C) ধানক্ষেত থেকে

(D) জলপাইকাঠের এসরাজ

Ans: (C) ধানক্ষেত থেকে

 

  1. কবি দাঁড়াতে চেয়েছেন—

(A) স্নেহময়ী জননীর পাশে

(B) ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

(C) বৃদ্ধা জননীর পাশে

(D) অসুস্থ জননীর পাশে

Ans: (B) ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

 

  1. ‘ এখন যদি না – থাকি ‘ – জননী এখন—

(A) নিগৃহীতা

(B) ক্রন্দনরতা 

(C) নিদ্রিতা

(D) অথর্ব

Ans: (B) ক্রন্দনরতা

 

  1. ‘ এখন যদি না – থাকি ’ – এখন বলতে কবি বুঝিয়েছেন – 

(A) যখন ভূমিকম্পে স্বদেশ বিধ্বস্ত

(B) যখন দস্যুর উৎপাতে সকলে ভীতসন্ত্রস্ত

(C) শাসকশক্তির অত্যাচারে জন্মভূমি যখন বিপন্ন

(D) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যখন চারিদিক রক্তাক্ত

Ans: (C) শাসকশক্তির অত্যাচারে জন্মভূমি যখন বিপন্ন

 

  1. ‘ ক্রন্দনরতা জননী ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন—

(A) গর্ভধারিণীকে

(B) নারীজাতিকে

(C) জন্মভূমিকে

(D) দেশের একটি নির্দিষ্ট অংশকে

Ans: (C) জন্মভূমিকে

 

  1. জননী ক্রন্দনরতা কারণ —-

(A) প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন বিপন্ন

(B) শাসকের অত্যাচারে মানুষের জীবন বিপন্ন

(C) দুর্ঘটনায় মানুষের জীবন বিপন্ন

(D) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মানুষের জীবন বিপন্ন

Ans: (B) শাসকের অত্যাচারে মানুষের জীবন বিপন্ন

 

  1. ক্রন্দনরতা জননীর পাশে না থাকলে , যা বৃথা বলে কবির মনে হয়েছে , তা হল —

(A) লেখা – গান – আঁকা

(B) লেখা – বলা – দেখা

(C) লেখা – গান – নাচ

(D) বলা – শোনা – আঁকা

Ans: (A) লেখা – গান – আঁকা

 

  1. ‘ কেন তবে লেখা , কেন গান গাওয়া ‘ বলার অর্থ —

(A) গাওয়া ও লেখায় অমনোযোগ

(B) লেখা ও গাওয়ার অসম্পূর্ণতা

(C) লেখা ও গাওয়ার অপ্রাপ্তি

(D) লেখা ও গাওয়ার মূল্যহীনতা

Ans: (D) লেখা ও গাওয়ার মূল্যহীনতা

 

  1. ‘ কেন তবে আঁকাআঁকি ? ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন—

(A) আঁকার অসম্পূর্ণতা

(B) আঁকার অপচয়

(C) আঁকার অপ্রয়োজনীয়তা

(D) আঁকার অসারতা

Ans: (D) আঁকার অসারতা

 

  1. নিহত ভাইদের শবদেহ দেখে / না – ই যদি হয়’— 

(A) রোষ

(B) রাগ

(C) ক্রোধ 

(D) ক্ষোভ

Ans: (C) ক্রোধ

 

  1. ‘ না – ই যদি হয় ক্রোধ’— ক্রোধের কারণ— 

(A) রাজনৈতিক দলাদলি

(B) নিহত ভাইয়ের শবদেহ

(C) নিহত দাদার শবদেহ

(C) মানুষের হিংসা

Ans: (B) নিহত ভাইয়ের শবদেহ

 

  1. ‘ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ‘ কবির মনে জাগে —

(A) হতাশা

(B) করুণা

(C) ক্রোধ

(D) আতঙ্ক

Ans: (C) ক্রোধ

 

  1. নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবির ক্রোধের কারণ— 

(A) হিংসা

(B) ভালোবাসা ও মূল্যবোধ

(C) সামাজিকতা

(D) কর্তব্যবোধ

Ans: (B) ভালোবাসা ও মূল্যবোধ

 

  1. ‘ নিহত ভাইয়ের ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন — 

(A) মৃত নিজের ভাইকে

(B) মৃত আত্মীয়কে

(C) মৃত প্রতিবেশীকে

(D) মৃত মানুষকে

Ans: (D) মৃত মানুষকে


  1. ‘ কীসের মূল্যবোধ । ‘ বলার অর্থ — 

(A) মনুষ্যত্ব

(B) সামাজিকতা

(C) সচেতনতা

(D) কর্তব্যবোধ

Ans: (A) মনুষ্যত্ব

  1. ক্রুদ্ধ কবি ভাইয়ের শবদেহ দেখে অনুভব করেছেন – 

(A) প্রতিহিংসা

(B) ভালোবাসা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা

(C) ভালোবাসা

(D) বিদ্বেষ 

Ans: (B) ভালোবাসা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা

  1. নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ভালোবাসা , সমাজ ও মূল্যবোধের প্রশ্ন কবির মনে জেগে ওঠে , কারণ —

(A) এগুলি মানুষ পছন্দ করে

(B) এগুলি আধুনিক জীবনে অচল 

(C) মানুষের জীবনে এগুলির গুরুত্ব চিরকালীন 

(D) এগুলি ছুঁড়ে ফেলার সময় এসেছে ।

Ans: (C) মানুষের জীবনে এগুলির গুরুত্ব চিরকালীন

  1. ‘ ছিন্নভিন্ন / জঙ্গলে তাকে পেয়ে ‘ – সে ছিল এক– 

(A) নিখোঁজ মহিলাখ 

(B) বিখ্যাত মহিলা 

(C) মহিলা

(D) অপহৃত মহিলা

Ans: (A) নিখোঁজ মহিলাখ

  1. নিখোঁজ মেয়েটিকে পাওয়া গিয়েছিল— 

(A) সমুদ্রে 

(B) পাহাড়ে 

(C) গুহায় 

(D) জঙ্গলে 

Ans: (D) জঙ্গলে

  1. বিধির বিচার চেয়ে ‘ বলতে কবি বুঝিয়েছেন —

(A) বিধাতার বিচার প্রার্থনা করে 

(B) ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে 

(C) ন্যায়বিচার চেয়ে

(D) মানুষের আদালতে বিচার চেয়ে 

Ans: (A) বিধাতার বিচার প্রার্থনা করে

  1. নিখোঁজ ছিন্নভিন্ন মেয়েটিকে দেখার পর কবি আর অপেক্ষা নিয়ে তাকাতে চান না —

(A) জঙ্গলের দিকে 

(B) মানুষের দিকে 

(C) আকাশের দিকে

(D) শহরের দিকে 

Ans: (C) আকাশের দিকে

  1. ‘ আমি কি তাকাব আকাশের দিকে’— বলার অর্থ – 

(A) সৌন্দর্য উপভোগ করা 

(B) চোখ মেলে দেখা 

(C) নির্মোহ উদাসীন হতে না – পারা 

(D) উড়ন্ত পাখির দলকে দেখা 

Ans: (C) নির্মোহ উদাসীন হতে না – পারা

  1. বিধির বিচারের চেয়ে , কবির মতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ —

(A) আকাশের দিকে দেখা 

(B) প্রতিবাদ 

(C) প্রতিহিংসা

(D) সান্ত্বনা

Ans: (B) প্রতিবাদ

  1. ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া গেছে যে মেয়েটির , সে —

(A) নিখোঁজ ছিল 

(B) পালিয়ে গিয়েছিল 

(C) খেলতে গিয়েছিল

(D) পথ হারিয়েছিল

Ans: (A) নিখোঁজ ছিল

  1. ‘ আমি তা পারি না ।’- কবি পারেন – 

(A) গান গাইতে 

(B) কবিতা লিখতে

(C) আঁকতে 

(D) বিধির বিচার চেয়ে বসে থাকতে

Ans: (D) বিধির বিচার চেয়ে বসে থাকতে

  1. কেবল / সে – ই কবিতায় জাগে ‘ বলতে বুঝিয়েছেন— 

(A) বিশেষ কারও কথা 

(B) তাঁর কবিতায় বারবার যা ফুটে ওঠে 

(C) ফেলে আসা স্মৃতির কথা

(D) শৈশবের বন্ধুর কথা

Ans: (B) তাঁর কবিতায় বারবার যা ফুটে ওঠে

  1. … যা পারি কেবল / সে – ই কবিতায় জাগে’– কবিতায় জাগে —

(A) কবির বিবেক 

(B) কবির ক্লোধ 

(C) কবির হিংসা 

(D) কবির অক্ষমতা

Ans: (A) কবির বিবেক

  1. ‘ আমার বিবেক ‘ বলার অর্থ —

(A) কবির মনোভাব 

(B) কবির অন্তরাত্মা 

(C) কবির শৈলী

(D) কবির দর্শন

Ans: (B) কবির অন্তরাত্মা

  1. বিস্ফোরণের আগে জেগে উঠেছিল—

(A) কবির বিবেক 

(B) গাঁয়ের লোকজন

(C) কবির দর্শন

(D) সাধারণ মানুষ 

Ans: (A) কবির বিবেক

  1. বারুদ জেগে উঠেছিল—

(A) লড়াইয়ের আগে

(B) যুদ্ধের আগে

(C) ঘোষণার আগে

(D) বিস্ফোরণের আগে

Ans: (D) বিস্ফোরণের আগে

  1. কবিহৃদয়ে বারুদ ছাড়াও আর যা জেগে উঠেছিল , তা হল —

(A) বিদ্বেষ 

(B) ক্রোধ

(C) ভালোবাস

(D) বিবেক

Ans: (D) বিবেক

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ক্রন্দনরতা জননীর পাশে (কবিতা) মৃদুল দাশগুপ্ত – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Krondonrota Jananir Pase Question and Answer : 

  1. ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটি কোন্ মূল কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটি কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ ধানক্ষেত থেকে ’ নামক কবিতা পুস্তিকার অন্তর্গত । 

  1. জননীকে ‘ ক্রন্দনরতা ‘ বলা হয়েছে কেন ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ – মৃত্যু ও যন্ত্রণায় বিপন্ন মাতৃভূমিকে কবির ‘ ক্রন্দনরতা ‘ বলে মনে হয়েছে । 

  1. ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটি কোন সময়ে লেখা ?

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের স্বীকারোক্তি অনুসারে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর – ডিসেম্বর মাসে হুগলি জেলার সিঙ্গুরে কৃষিজমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে যে অন্যায় দমন – পীড়ন সংঘটিত হয়েছিল , ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটি তারই বহিঃপ্রকাশ ।

  1. ‘ এখন যদি না থাকি ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ‘ ক্রন্দনরতা ‘ অসহায় জননী তথা দুঃখী মাতৃভূমির পাশে থাকার কথা বলেছেন । 

  1. ‘ এখন যদি না – থাকি ‘ বলতে কার পাশে কখন না – থাকার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রন্দনরতা অসহায় জননী তথা দুঃখী মাতৃভূমির অসহায় পরিস্থিতিতে তার পাশে না – থাকার কথা বলেছেন । 

  1. ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ না – থাকলে কবি কী কী ব্যর্থ বলে মনে করেছেন ?

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত জন্মভূমির গভীর দুঃখ ও যন্ত্রণার সময়ে তাঁর পাশে না থাকলে , লেখা – গান – আঁকার মতো সৃষ্টিশীল কাজকে অর্থহীন বলে মনে করেন ।

  1. ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকতে না পারলে কবির কী মনে হবে ?

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ‘ ক্রন্দনরতা জননী ‘ অর্থাৎ মাতৃভূমির বিপন্ন মুহূর্তে তার পাশে না থাকলে লেখা , গান গাওয়া , আঁকাআঁকির মতো সৃজনশীল কর্মকে অর্থহীন বলে মনে করেছেন । 

  1. ‘ কেন তবে লেখা , কেন গান গাওয়া ‘ বলা হয়েছে কেন ? 

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত মনে করেছেন বিপন্ন – আক্রান্ত স্বদেশের প্রতি দায়বদ্ধতায় , ভালোবাসায় যদি শিল্পী তাঁর সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে প্রতিবাদ না – জানায় , তাহলে লেখা আঁকা – গান এসবই অর্থহীন হয়ে যায় ।

  1. ‘ কেন তবে আঁকাআঁকি ? ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় বলেছেন মাতৃভূমির বিপন্নতার দিনে সৃষ্টিশীল মানুষের শিল্পীসত্তার বিদ্রোহী প্রকাশ না – ঘটলে , শিল্প – সাহিত্য মূল্যহীন হয়ে পড়ে ।

  1. ‘ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ‘ কবির কী মনে হয় ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে ক্লোধ জেগে ওঠে ।

  1. ‘ নিহত ভাই ‘ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মৃত সহনাগরিককে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ‘ নিহত ভাই ‘ বলে উল্লেখ করেছেন ।

  1. ‘ না – ই যদি হয় ক্রোধ ‘ বলা হয়েছে কেন ?

Ans: অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মৃত সহনাগরিকের বা ‘ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রোধের বহিঃপ্রকাশকেই স্বাভাবিক বলে মনে করেন ।

  1. ‘ না – ই যদি হয় ক্লোধ ‘ — তখন কী হবে ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে হয় নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ক্রোধ না – হলে ভালোবাসা , সমাজ ও মূল্যবোধ — এসব কিছুই ব্যর্থ হয় ।

  1. ‘ কেন ভালোবাসা , কেন – বা সমাজ / কীসের মূল্যবোধ ? কোন্ মানসিক যন্ত্রণা থেকে কবি এ কথা বলেছেন ?

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে মানুষের অমানুষী নৃশংসতায় ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন ।

  1. জঙ্গলে তাকে পেয়ে —জঙ্গলে কাকে , কীভাবে পাওয়া যায় ?

Ans: মৃদুল দাশগুপ্তের ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটিকে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল ।

  1. ‘ জঙ্গলে তাকে পেয়ে ’ কবির প্রতিক্রিয়া কী ?

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে দেখে , কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ভীরুচেতা মানুষের মতো বিধির বিচার চেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না ।

  1. ‘ আমি কি তাকাব আকাশের দিকে ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে দেখে ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত দুর্বলচেতা মানুষের মতো বিধির বিচারের অপেক্ষায় ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে সময় নষ্ট করতে রাজি নন ।

  1. ‘ আমি তা পারি না । ‘ -বক্তা কী পারেন না ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ দেখে বিধির বিচার চেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না ।

  1. ‘ যা পারি কেবল ‘ – কে , কী পারেন ।

Ans: মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় আক্রান্ত জন্মভূমির বিপন্নতার দিনে কবি তাঁর লেখা কবিতায় নিজের বিবেককে জাগিয়ে রাখতে পারার কথা বলেছেন ।

  1. ‘ সে – ই কবিতায় জাগে ’ – কী জাগে ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন দেহ দেখে , স্বদেশের দুঃখ ও যন্ত্রণায় তাড়িত কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিজের বিবেক বা অন্তরাত্মাকে জেগে উঠতে দেখেন ।

  1. ‘ সে – ই কবিতায় জাগে / আমার বিবেক ‘ — বিবেককে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ?

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত বিবেককে বিস্ফোরণের জন্য প্রস্তুত বারুদের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

  1. ‘ বিস্ফোরণের আগে ‘ কী ঘটে ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্তের বিবেক বারুদের মতো বিস্ফোরণের প্রত্যাশা নিয়ে তাঁর কবিতায় জেগে ওঠে ।

  1. ‘ আমার বিবেক , আমার বারুদ ’ – বক্তার বিবেক কী করে ?

Ans: মৃদুল দাশগুপ্তের ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় কবির বিবেক বারুদের মতো বিস্ফোরণের প্রত্যাশা নিয়ে জেগে ওঠে ।

  1. ‘ আমি কি তাকাব আকাশের দিকে / বিধির বিচার চেয়ে ? ‘ — কবিতায় এর কী উত্তর মেলে ?

Ans: ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতা থেকে বোঝা যায় ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বৃথা সময় নষ্ট না করে , কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিজের সৃষ্টিশীলতায় প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠতে চেয়েছেন ।

  1. ‘ আমি কি তাকাব আকাশের দিকে / বিধির বিচার চেয়ে ? ‘ — বক্তা কার কাছে জানতে চেয়েছেন ?

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিজের বিবেক বা অন্তরাত্মার কাছে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ক্রন্দনরতা জননীর পাশে (কবিতা) মৃদুল দাশগুপ্ত – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Krondonrota Jananir Pase Question and Answer : 

1. ‘ কেন তবে লেখা , কেন গান গাওয়া / কেন তবে আঁকাআঁকি ? — ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় কবির এই মানসিকতার প্রকাশ কীভাবে ঘটেছে , তা লেখো ।

Ans: পাঠ্য ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবির ভালোবাসা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার এক বলিষ্ঠ প্রকাশ ঘটেছে । সাধারণ মানুষের দুঃখে – অসহায়তায় যেন জন্মভূমি হাহাকার করে ওঠে ।

   সমাজসচেতন কবি মৃদুল দাশগুপ্ত আলোচ্য কবিতায় স্বদেশ জননীর সেই ক্রন্দনধ্বনি শুনতে পেয়েছেন । কবি দেখেছেন নিরপরাধ ভাইয়ের মৃত্যু । এভাবে অকালে এক সহ নাগরিকের মৃত্যুতে তিনি ক্রুদ্ধ হয়েছেন । জঙ্গলে এক নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ দেখে তাঁর মনে হয়েছে , এরপরে কোনো সংবেদনশীল মানুষই পারে না ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বসে থাকতে । তাহলে মানুষকে ভালোবাসাই তো অর্থহীন হয়ে যায় । কবির অন্তরের এই অনুভূতির কারণেই , ঘটে – চলা অমানবিক নৃশংসতার বিরুদ্ধে তাঁর হৃদয় ক্ষোভে – ক্রোধে প্রতিবাদে উন্মুখ হয়ে ওঠে । তিনি নিজস্ব কৌশলে রচনা করেন , আপন প্রতিবাদের ভাষ্য । কবিতায় জেগে ওঠে তাঁর বিবেক । নিজের মানবীয় স্বধর্ম সেখানে বারুদ হয়ে জ্বলে ওঠে । 

   স্বজনের কান্নায় সাড়া দিয়ে পাশে না দাঁড়ালে লেখালেখি , গান গাওয়া কিংবা ছবি আঁকার কোনো সার্থকতা থাকে না । মানবতাবাদী কবি মৃদুল দাশগুপ্ত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে সে – কথাই বলতে চেয়েছেন ।

2. ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় কবি জননীকে ‘ ক্রন্দনরতা ‘ বলেছেন কেন ? এই পরিস্থিতিতে কবি কী করা উচিত বলে মনে করেছেন ? 

অথবা , ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে / এখন যদি না থাকি’— ‘ এখন ’ বলতে কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে । কবি কীভাবে ‘ ক্রন্দনরতা জননী ‘ – র পাশে থাকতে চেয়েছেন লেখো ।

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় জননী হলেন দেশমাতা । রবীন্দ্রনাথ বলেছেন , “ দেশ মাটি দিয়ে গড়া নয় , মানুষ দিয়ে গড়া । ” দেশের মানুষ দেশমাতার সন্তান । দেশের মানুষ বিপন্ন হলে দেশমাতা নীরবে অশ্রুপাত করেন , তেমনি দেশমাতা বিপন্ন হলে দেশের মানুষ সহানুভূতি , সহমর্মিতার সঙ্গে মায়ের পাশে দাঁড়ান । নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি দেশমাতাকে ব্যথিত করে । তাঁর সন্তান যদি সঙ্কটাপন্ন হয় তাহলে দেশমাতার চোখে জল আসে । এই দুই কারণে দেশমাতা ক্রন্দনরতা । 

   আক্রান্ত জন্মভূমির পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন কবি । ভগবানের হাতে সব ছেড়ে দিয়ে তিনি নিপীড়িত ও লাঞ্ছিত মানুষের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় বিশ্বাসী নন । তাঁর বিশ্বাস , বিবেকবান কবির সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কর্তব্যবোধ লেখা – গান – আঁকা — এ সবই মূল্যহীন হয়ে পড়ে । তাই নিজের বিবেকের তাগিদে , কবিতাকেই তিনি প্রতিবাদের অস্ত্র করে তোলেন । এই প্রতিবাদের বারুদ শতসহস্র মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে সম্মিলিত বিস্ফোরণে — এমনটাই কবির প্রত্যাশা ।

3. ‘ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে / না – ই যদি হয় ক্রোধ ‘ — কবিতা অবলম্বনে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ কেন ভালোবাসা , কেন – বা সমাজ / কীসের মূল্যবোধ ! বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন নিজের ভাষায় আলোচনা করো ।

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতায় স্বদেশের বিপন্ন মুখচ্ছবির কথা ফুটে উঠেছে । রাজনৈতিক পীড়ন ও অত্যাচারে দেশের সাধারণ মানুষ রক্তাক্ত । ‘ নিহত ভাইয়ের শবদেহ ‘ দেখে কবি স্থির থাকতে পারেন না । বিনা কারণে সহায়সম্বলহীন মানুষের অসহায় মৃত্যুতে তিনি যন্ত্রণায় ও ক্রোধে উদ্‌বেল হয়ে উঠেছেন । স্বদেশের ব্যথিত মানবাত্মার সীমাহীন দুর্দশায় কবি শুনতে পেয়েছেন জননীর কান্না । মাতৃভূমির অশ্রুপাতের হাহাকারে ক্রুদ্ধ কবি অনুতপ্ত বোধ করেছেন । জেগে উঠেছে তাঁর বিবেক । বিপর্যস্ত জননীকে তিনি কোনোভাবেই ত্যাগ করতে পারেন না । 

   বিবেকবান কবি মৃদুল দাশগুপ্ত স্বজন ও স্বদেশভূমির বিপন্ন অবস্থা প্রত্যক্ষ করে আলোড়িত বোধ করেন । ঈশ্বরের মুখাপেক্ষী থেকে এসব মুখ বুজে সহ্য করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় । তিনি কোনো অবস্থাতেই মানুষের প্রতি ভালোবাসাকে প্রতিবাদমুখরতা বিসর্জন দিতে পারেন না । নিজের সামাজিক দায়বদ্ধতা কিংবা মূল্যবোধের প্রশ্নে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করতে পারেন না কবি । তাই তাঁর কবিতায় বিবেক ও অন্তরাত্মা জাগ্রত হয় । সোচ্চার প্রতিবাদে প্রতিরোধে তিনি জননীর কান্নার প্রত্যুত্তর খোঁজেন । 

4. ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো ।

Ans: ‘ নামকরণের তাৎপর্য অংশটি দ্যাখো ।

5. ‘ আমি কি তাকাব আকাশের দিকে / বিধির বিচার চেয়ে ? —এমন বলার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় , লেখো ।

Ans: ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতাটিতে এক সমাজমনস্ক – দরদি কবির কণ্ঠস্বর ধ্বনিত হয়েছে । ‘ শিল্প ’ বা সৃষ্টিশীলতা যে শুধু শিল্পের জন্য নয় বরং একইসঙ্গে অসহায় – নিপীড়িত মানুষের প্রতিবাদের এক শানিত অস্ত্র , এ কবিতা তার উজ্জ্বল প্রমাণ । 

   নিরপরাধ সন্তানের অকারণ রক্তাক্ত মৃত্যুতে দেশজননীও নিগৃহীতা । তাঁর কান্নার শব্দ শুনে কবি জননীর পাশে এসে দাঁড়ান । তিনি দেখেন ভাইয়ের মৃতদেহ । নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর । শাসকের বিরুদ্ধে মাতৃভূমির এই দুর্দশায় তিনি ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ প্রতিবাদ হন । তাঁর হৃদয়ে লালিত মূল্যবোধে আঘাত লাগে । কবির অন্তর্মনকে নাড়িয়ে দিয়ে যায় শাসকের নৃশংসতায় মানুষের সীমাহীন যন্ত্রণার ছবি । শিল্পীসুলভ সংকল্প দুর্বিষহ এই পরিস্থিতিতে তিনি নিস্পৃহ ভঙ্গিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবেন , বিধাতার দোহাই দিয়ে সমকালীন ক্ষয় – অপচয় ও বিনাশের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন— তা তো শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতার বিপরীতে । কবি তাই প্রতিবাদকেই বেছে নেন । এই প্রতিবাদেই লুকিয়ে থাকে শিল্পীর স্বধর্ম । কবি মৃদুল দাশগুপ্তের এই কবিতায় জাগ্রত বিবেক বিস্ফোরক বারুদের মতো জ্বলে ওঠে । নিপীড়িত মানুষের সপক্ষে দাঁড়িয়ে মনুষ্যত্বের শাশ্বত মূল্য অর্জন করার লক্ষ্যে কবি অবিচল থাকেন । 

6. ‘ আমি তা পারি না ’ – কে পারেন না ? না – পারার বেদনা কীভাবে কবিকে আলোড়িত করেছে তা কবিতাটি অবলম্বনে 

অথবা , ‘ আমি তা পারি না ‘ — উদ্ধৃতাংশটির আলোকে কবির কবিমানস ও শৈলীর বিশেষত্ব আলোচনা করো । 

Ans: মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোধৃত অংশটিতে কবি নিজের সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন । 

   কবি মৃদুল দাশগুপ্ত অন্ত্যমিল ব্যবহার করে ছড়ার চলনে সমগ্র কবিতায় আশ্চর্য আবেগ আর আন্তরিকতা ছড়িয়ে দিয়েছেন । প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অসহায় সন্তানের দুঃখে , কবিতা হল প্রতিবাদের দেশজননী কুন্দনরতা । কবি পরম মমতায় সেই আক্রান্ত স্বদেশের পাশে দাঁড়ান । ভাইয়ের মৃত্যু , নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত শরীর দেখে তাঁর ক্ষুব্ধ মনে সন্দেহ জাগে । ভালোবাসা – সমাজ – মূল্যবোধ অর্থাৎ আশৈশব লালিত মনুষ্যত্বের শিক্ষা কি অর্থহীন হয়ে যাবে । নাকি জীবনের সর্বৈব প্রকাশ – লেখা , আঁকা , গানের মতো যেসব সৃষ্টিশীলতায় , তা এই রক্তাক্ত বিনাশের দিনে তুলে ধরবে চূড়ান্ত ব্যক্তিগত প্রত্যাঘাত । ঈশ্বরের অজুহাত খাড়া করে সময় নষ্ট করার অমানবিক বিলাসিতা দেখাতে কবি পারেন না । তাই ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ‘ কবিতাটি তাঁর জাগ্রত বিবেকের , বিক্ষোভের এবং সোচ্চার প্রতিবাদের সর্বজনীন ইস্তেহার হয়ে ওঠে ।

7. ‘ আমি তা পারি না ” কবি কী পারেন না ? যা পারি কেবল ‘ — কবি কী পারেন ?

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের লেখা ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতাটি তাঁর সমাজমনস্কতার বিশ্বস্ত দলিল । সাধারণ মানুষের দুর্দশা কবিকে ব্যথিত করে । মৃত্যুর বিভীষিকায় মাতৃভূমি যখন রক্তাক্ত , নারকীয় অত্যাচারে মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত , তখন একজন যথার্থ সংবেদনশীল কবি হিসেবে মৃদুল দাশগুপ্ত অনুভব করেছেন অন্যায় পীড়ন ও বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হওয়ার আন্তরিক তাগিদ । ভ্রাতৃপ্রতিম কৃষকের মৃত্যু কবি যা পারেন না দেখে কবি বিচলিত হয়েছেন । তাঁর মনে হয়েছে সহ – নাগরিকের মৃত্যুতে তাঁর হৃদয়ে যদি ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ না – ঘটে তবে সামাজিকতা , মানবিকতা , মূল্যবোধ সবই নিরর্থক । নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে খুঁজে পেয়ে কবি দুর্বল ভীরুচেতা মানুষের মতো বিধির দোহাই দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে নির্বাকভাবে বসে থাকতে পারেন না । কারণ তিনি জানেন ক্ষমা ক্ষীণ দুর্বলতা । আর এই ক্ষমায় অন্যায়কারী প্রশ্রয় পায় , পায় নতুনভাবে অন্যায়ে প্রবৃত্ত হওয়ার স্পর্ধা । তাই শোষণ – বঞ্চনার প্রতিবিধান চেয়ে হাত – পা গুটিয়ে বসে থেকে ঈশ্বরের দরবারে বিচারের প্রার্থনা কবির পক্ষে সম্ভব নয় । 

   সৃজনশীল সত্তার অধিকারী শিল্পীরা শুভচেতনাসম্পন্ন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি । তাঁরা সমাজের অগ্রগামী সেনাপতিস্বরূপ । সামাজিক সংকটে সঠিক পথের দিশা দেখানো এঁদের কর্তব্য । তাই কবি মৃদুল দাশগুপ্ত মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিহত কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর নৈতিকতা অনুভব কবি যা পারেন করেছেন । অসহায় মাতৃসমা নারীর প্রতি পাশবিক প্রবৃত্তির প্রকাশ দেখে তাঁর বিবেককে বারুদের মতো বিস্ফোরকে পরিণত করতে চেয়েছেন । কবি চেয়েছেন , কবিতা যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদের আগ্নেয়াস্ত্ররূপে ব্যবহার করতে । 

8. ‘ কবিতায় জাগে / আমার বিবেক , আমার বারুদ / বিস্ফোরণের আগে । — কবিতা অবলম্বনে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

Ans: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘ ধানক্ষেত থেকে ‘ কাব্যগ্রন্থের অন্য একটি কবিতায় লিখেছেন , ‘ দানব জেগেছে আজ / কী অবাক / তারও দুটো হাত । / ঠেলা দাও — হয়ে বিবেকবান কবির যাবে কাত্ । অর্থাৎ যে – কোনো রকমের প্রতিবাদ নিপীড়নের বিরুদ্ধে কবি প্রতিবাদ ও প্রত্যাঘাতে বিশ্বাস করেন । কবির এই দৃঢ় – ঋজু আত্মবিশ্বাস ধ্বনিত হয় পাঠ্য ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ’ কবিতাটিতেও । শাসকের অন্যায় নির্যাতনে কবি শুনতে পান মাতৃভূমির কান্না । অকারণে তাঁর সহ – নাগরিক ভাই – বোনেদের নারকীয় নির্বিচার মৃত্যু তাই তাঁকে ক্রুদ্ধ করে । এ অবস্থায় বিধাতার বিচা প্রত্যাশা করা , অমানুষি মূৰ্খামি ছাড়া তো আর কিছুই নয় । 

   অন্তরের ভালোবাসা ও মূল্যবোধের কারণে মানুষের ওপর নেমে আসা এই দারুণ আঘাতকে কবি নিজের ওপর আঘাত বলেই মনে করেন । তাই তাঁর হৃদয়ে জ্বলে ওঠে বিবেক ও মনুষ্যত্বের আগুন , যা বারুদের মতো সর্বগ্রাসী বিস্ফোরণে কবির সংকল্প ওলটপালট করে দিতে চায় শাসকের সমস্ত অন্যায় ষড়যন্ত্র । সংবেদনশীল কবি মৃদুল দাশগুপ্তের স্বপ্নসম্ভাবনা ও বিশ্বাসের কথাই প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ধ্বনিত হয়েছে ।