সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো |
- চুরি করার কারণ কী ?
(A) নিরাপত্তাবোধের অ /
(B) ধনের প্রতি লালসা /
(C) দারিদ্র্য /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- ‘ ‘ ক্লিপ্টোম্যানিয়া ’ কী ?
(A) প্রয়োজন না থাকলেও চুরি করা /
(B) দামি জিনিস দেখলে চুরি করা /
(C) দুষ্প্রাপ্য জিনিস চুরি করা /
(D) উপরের কোনোটিই নয় ।
Ans: (A) প্রয়োজন না থাকলেও চুরি করা
- ভারতবর্ষে প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালিত হয়—
(A) ১৫ এপ্রিল /
(B) ১৫ মার্চ /
(C) ১০ মার্চ /
(D) ৯ এপ্রিল ।
Ans: (B) ১৫ মার্চ /
- শব্দের তীব্রতা পরিমাপের একক
(A) জি.বি. /
(B) ডি.বি. /
(C) সি.বি. /
(D) এল.বি .।
Ans: (B) ডি.বি. /
- মুক – বধিরদের শিক্ষার জন্য মৌলিক পদ্ধতি প্রবর্তন করেন—
(A) কোটি অ্যানকন /
(B) জুয়ান পাবলো বর্নে /
(C) লুইস ব্রেইল /
(D) মেরি কুরি ।
Ans: (B) জুয়ান পাবলো বর্নে /
- ভারতবর্ষে মোট দৃষ্টিহীন ব্যক্তির মধ্যে শিক্ষার সুযোগ পায়—
(A) 5 % /
(B) 10 % /
(C) 1 % /
(D) 4 % !
Ans: (C) 1 % /
- ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষণে ব্যবহৃত হয়—
(A) ব্রেইল পদ্ধতি /
(B) স্পর্শভিত্তিক পদ্ধতি
(C) শব্দভিত্তিক পদ্ধতি /
(D) ওপরের সবক’টি ।
Ans: (D) ওপরের সবক’টি ।
- ব্যতিক্রমী এবং ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশু বলতে বোঝায়
(A) একই /
(B) অনেক পার্থক্য আছে /
(C) ব্যতিক্রমী শিশুর অর্থ নেতিবাচক /
(D) ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশুর অর্থ ইতিবাচক ।
Ans: (A) একই /
- ব্রেইল লেখা হয় ক’টি বিন্দুর সাহায্যে ?
(A) 6 টি বিন্দু দিয়ে /
(B) ৪ টি বিন্দু দিয়ে
(C) 10 টি বিন্দু দিয়ে /
(D) 7 টি বিন্দু দিয়ে ।
Ans: (A) 6 টি বিন্দু দিয়ে /
- ব্রেইলের আবিষ্কর্তা
(A) রোহন ব্রেইল /
(B) লুইস ব্রেইল /
(C) মাদাম কুরি /
(D) ফ্রয়েড ।
Ans: (B) লুইস ব্রেইল /
- শব্দ সৃষ্টি করা বইয়ের সাহায্যে পড়ানো হয়— (A) বধিরদের /
(B) বোবাদের /
(C) দৃষ্টিহীনদের /
(D) বদমেজাজি শিক্ষার্থীদের ।
Ans: (C) দৃষ্টিহীনদের /
- অডিওমিটার যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়
(A) অন্ধত্ব /
(B) বধিরত্ব /
(C) রত্তের মিষ্টত্ব /
(D) রক্তের অম্লত্ব ।
Ans: (B) বধিরত্ব /
- ‘ বিশেষ শিক্ষা ‘ শব্দটি ব্যবহার করা হয়
(A) মেধাবীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে /
(B) ব্যাহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে /
(C) মানসিক সমস্যাক্রান্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে /
(D) চঞ্চল ও অমনোযোগী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ।
Ans: (B) ব্যাহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে /
- ‘ অক্টেভ ব্যান্ড ‘ নামক যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়
(A) অন্ধত্ব /
(B) বধিরত্ব
(C) মানসিক ক্ষমতা /
(D) বোধশক্তি ৷
Ans: (B) বধিরত্ব
- মানসিক দিক থেকে অস্বাভাবিকতার কারণ কী ?
(A) মায়ের গর্ভকালীন অবস্থায় আয়োডিনের অভাব /
(B) শিশুর প্রতি অমানবিক আচরণ /
(C) ভিটামিন A এর অভাব /
(D) (A) ও (B) উভয়ই ।
Ans: (D) (A) ও (B) উভয়ই ।
- ভিন্ন সক্ষমতার শিশু বলতে কী বোঝায় ?
(A) প্রতিবন্ধী শিশু /
(B) অক্ষম শিশু /
(C) ব্যাহত শিশু /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- নীচের কোনটি প্রতিবন্ধীর উদাহরণ ?
(A) পোলিও আক্রান্ত শিশু /
(B) ডান হাতের কোনো আঙুল নেই /
(C) বুদ্ধ্যঙ্ক ৭০ /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (A) পোলিও আক্রান্ত শিশু /
- অ্যাবাকাস কোন শিক্ষার উপকরণ ?
(A) গণিত /
(B) জীবনবিজ্ঞান /
(C) বাংলা /
(D) ইতিহাস ।
Ans: (A) গণিত /
- ইন্দ্রিয়গত ত্রুটিযুক্ত ব্যক্তিদের কী বলা হয় ?
(A) শিক্ষণে অক্ষম শিক্ষার্থী /
(B) আংশিক প্রতিবন্ধী /
(C) মানসিক প্রতিবন্ধী /
(D) দৈহিক প্রতিবন্ধী ।
Ans: (D) দৈহিক প্রতিবন্ধী ।
- যে সমস্ত শিশু শুনতে পায় না , তাদের কী বলে ?
(A) দৃষ্টিহীন /
(B) খোঁড়া /
(C) বোবা /
(D) কালা ।
Ans: (D) কালা ।
- মনোবিদ লোয়েনফেল্ড দৃষ্টিহীনদের ক’টি ভাগে ভাগ
(A) পাঁচটি /
(B) চারটি /
(C) ছ’টি /
(D) তিনটি ।
Ans: (B) চারটি /
- দৃষ্টিহীন ও ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কী ?
(A) বৃত্তির সুযোগ সৃষ্টি /
(B) সংগতি বিধানে সহায়তা /
(C) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুদের প্রধান সমস্যা কী ?
(A) সামগ্রিক অভিজ্ঞতা অর্জনে অসুবিধা /
(B) হীনম্মন্যতা /
(C) পারদর্শিতায় পিছিয়ে থাকা
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- নীচের কোন ধরনের বিকাশে মূক ও বধিরদের সমস্যা দেখা যায় ?
(A) মানসিক বিকাশে /
(B) সামাজিক বিকাশে /
(C) প্রাক্ষোভিক বিকাশে /
(D) দৈহিক বিকাশে ।
Ans: (B) সামাজিক বিকাশে /
- ব্যক্তির ঊর্ধ্বক্রমিক চাহিদার প্রবর্তক কে ?
(A) উডওয়ার্থ /
(B) স্কিনার /
(C) ধর্নডাইক /
(D) স্যাসলো ।
Ans: (D) স্যাসলো ।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা (নবম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer :
- অন্ধ শিশুদের জন্য একটি শিক্ষাপদ্ধতির উল্লেখ করো ।
Ans: অন্ধ শিশুদের জন্য একটি শিক্ষাপদ্ধতির নাম ব্রেইল পদ্ধতি ।
- দৃষ্টিহীনদের শিক্ষার প্রসারে সরকারের যে কোনো একটি পদক্ষেপ কী ?
Ans: দৃষ্টিহীনদের শিক্ষার জন্য ভারত সরকার বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করেছে ।
- পূর্ণ অন্ধদের শিক্ষাদান পদ্ধতি কী ?
Ans: ব্রেইল পদ্ধতি ।
- আইনত দৃষ্টিহীন কারা ?
Ans: যে সব মানুষের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক মানুষের দৃষ্টিশক্তির থেকে অপেক্ষাকৃত কম , যারা চোখে দেখতে পায় না , তাদের আইনত দৃষ্টিহীন বলা হয় ।
- বর্তমানে ব্যতিক্রমী শিশুদের কী বলা হয় ?
Ans: বর্তমানে ব্যতিক্রমী শিশুরা Differently abled children নামে পরিচিত ।
- জাতীয় স্তরে মূক ও বধিরদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম কী ?
Ans: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপড।
- শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের একটি আচরণগত সমস্যা কী ?
Ans: শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার উদাহরণ স্কুল পালানো , মিথ্যা কথা বলা ।
- ব্যাহত শিশু বলতে কী বোঝো ?
Ans: যাদের বিশেষ কাজে অসুবিধা হলেও সব কাজে হয় না তাদের ব্যাহত শিশু বলে ।
- অক্ষম শিশুদের অধিকার কোন সম্মেলনে স্বীকৃতি পায় ?
Ans: 1989 খ্রিস্টাব্দে শিশুর অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বীকৃতি পায় ।
- বিশেষ শিক্ষা বলতে কী বোঝো ?
Ans: বিশেষ শিক্ষা হলো এমন এক অভিনব পদ্ধতি যা অক্ষম শিশুদের বাধাগুলিকে সরিয়ে তাদের বিদ্যালয় ও সমাজের উপযুক্ত হিসাবে গড়ে তোলে ।
- ব্রেইল কাকে বলে ?
Ans: দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে লুইস ব্রেইল দ্বারা আবিষ্কৃত শিখন উপকরণকেই বলা হয় ব্রেইল ।
- ব্যতিক্রমী শিশু কারা ?
Ans: যে সমস্ত শিশুর দৈহিক , মানসিক , প্রাক্ষোভিক ও সামাজিক বৈশিষ্ট্যগুলির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে বেশি পার্থক্য চোখে পড়ে তাদের ব্যতিক্রমী শিশু বলে ।
- জন্মগতভাবে সম্পূর্ণ অন্ধ কাদের বলে ?
Ans: যে – সমস্ত শিশু জন্ম থেকেই সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন তাদের জন্মগতভাবে সম্পূর্ণ অন্ধ Sod বলে ।
- অর্জিত অন্ধত্ব বলতে কী বোঝো ?
Ans: যে – সমস্ত শিশু জন্মের পাঁচ বছর পর কোনো কারণে পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে এধরনের অন্ধত্বকে অর্জিত অন্ধত্ব বলে ।
- অর্জিত আংশিক অন্ধত্ব কী ?
Ans: যে – সমস্ত শিশু জন্মের সময় স্বাভাবিক দৃষ্টি নিয়ে জন্মালেও পরে আংশিকভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তাদের অর্জিত আংশিক অন্ধত্ব বলে ।
- আংশিক বধির শিশু কারা ?
Ans: যারা পুরোপুরি বধির না হলেও তাদের শ্রবণেন্দ্রিয় এবং বাগ্যন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় তারা কোনরকমে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারে তাদের আংশিক বধির শিশু বলা হয় ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা (নবম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer :
- দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী ?
Ans: যেসব শিশুর দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় কম , যারা চোখে দেখতে পায় না , তাদের দৃষ্টিহীন বা ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায়— ব্যবহারিক দিক থেকে যে সব শিশুর দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির 20 ভাগের কম , বা যারা দেড় মিটার দূর থেকে আঙুল গুনতে পারে না , সেইসব শিশু দৃষ্টিহীন বা ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু ।
দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য :
- স্পর্শ , শ্রবণ ইত্যাদি উপায়ে দৃষ্টিহীন শিশুরা নানা বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে । এভাবে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় ।
- উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণ করলে দৃষ্টিহীন শিশুরাও দেশের উৎপাদনশীলতার অংশ হয়ে উঠবে , এমন ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হবে । এভাবে তারা সমাজসচেতন হয়ে উঠবে ।
- দৃষ্টিহীন শিশুরা নিজস্ব মানসিক প্রবণতা অনুযায়ী শিক্ষালাভ করে যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেইজন্য সহযোগিতা করা এই শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য।
- দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য তাদের বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ দেওয়া । এভাবে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে ।
- হীনম্মন্যতা ছেড়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যাতে দৃষ্টিহীন শিশুরা বড়ো হয়ে ওঠে এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে সেজন্য তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় ।
- ব্রেইল পদ্ধতির ওপর সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো । Ans: সারা বিশ্বে দৃষ্টিহীন শিশুদের পড়ানোর জন্য ব্রেইল পদ্ধতি চালু আছে । এটি একধরনের স্পর্শভিত্তিক লিপি । প্রখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ লুই ব্রেইল ১৮২৯ সালে এই পদ্ধতি প্রচলন করেন । বর্তমানে পদ্ধতিটি আরও উন্নত হয়েছে । UNESCO- র উদ্যোগে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ব্রেইল লিপি অনূদিত হয়েছে । বাংলা ভাষায় ব্রেইল সংস্করণ প্রচলন করেন লালবিহারী সাহা । তিনি কলকাতার বেহালায় ‘ কলকাতা ব্লাইন্ড স্কুল ’ প্রতিষ্ঠা করেন ।
এই পদ্ধতিতে পুরু কার্ডবোর্ডের উপর শক্ত জিনিস দিয়ে চাপ দিয়ে উঁচু উঁচু ডট বা বিন্দু দেওয়া হয় । এগুলিকে বলে ‘ স্টাইলাস ’ । এক্ষেত্রে বামদিক থেকে ডানদিকে পড়া হয় । হাত দিয়ে ‘ ডট’গুলি স্পর্শ করে গণিতের সংখ্যা থেকে শুরু করে এমনকী গানের স্বরলিপিও পড়া হয় । ব্রেইলে দৃষ্টিহীন শিশুরা উন্নত বিষয়কেন্দ্রিক জ্ঞানও আহরণ করতে পারে । দক্ষ শিক্ষার্থী ব্রেইলে মিনিটে ৬০ টি শব্দ পড়তে পারে । এখন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা লিখেও মনের ভাব জানাতে পারে । ব্রেইল লেখার জন্য টাইপ মেশিন ব্যবহৃত হয় । হাতে লেখার ক্ষেত্রে ছোটো আকারের শ্লেট ব্যবহার করা হয় ।
- প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার সমস্যাগুলি উল্লেখ করো ।
Ans: দৈহিক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা : যাদের অঙ্গের গঠনগত ত্রুটি তারাই দৈহিক প্রতিবন্ধী । এরা সামাজিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে অক্ষম । এদের জীবনের বিকাশ স্বাভাবিক শিশুর মতো হয় না । শিক্ষায় সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও প্রতিবন্ধকতার জন্য এরা জীবনে খুব বেশি দূর এগোতে পারে না । কয়েকটি সমস্যা বিশদে আলোচনা করা হলো –
- অর্থের দৈন্যতা : প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাকে বাস্তবায়িত করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সরকার সেই পরিমাণ অর্থ খরচ করতে ব্যর্থ । আবার যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয় তা মোটেই যথেষ্ট নয় ।
- শিক্ষকের সংকুলান না হওয়া : এই সমস্ত শিশুর শিক্ষার জন্য যে ধরনের প্রশিক্ষিত শিক্ষকের প্রয়োজন তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে । এদের জন্য সাধারণ পাঠদান পদ্ধতি মোটেই কার্যকরী নয় ।
- শিক্ষোপকরণের অভাব : প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য যে ধরনের পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজন , শিক্ষোপকরণ দরকার তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে । প্রয়োজনীয় পুস্তক ও উপকরণের অভাবে এদের শিক্ষা বিশেষভাবে ব্যাহত হচ্ছে ।
- অভিভাবকদের ঢিলেমি : এদের শিক্ষার পরিকল্পনা কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হচ্ছে অভিভাবকদের উদাসীনতা । এঁরা এদের শিক্ষার ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখান না । এদের জন্য যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে তারা অপচয় বলে মনে করেন ।
- হীনম্মন্যতা : এই শিশুরা দৈহিক এবং মানসিক দিক থেকে অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকার জন্য হীনম্মন্যতা রোগে ভুগতে থাকে । ফলে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক সমাজে নিজেদের গুটিয়ে নেয় এরা ।
- বিদ্যালয়ের অভাব : এই সমস্ত ছেলে – মেয়ের জন্য যে ধরনের বিদ্যালয়ের প্রয়োজন তার সংখ্যা খুবই কম । বিদ্যালয়ের অপ্রতুলতার জন্য এই সমস্ত শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বর্ণিত হয় ।
- শিক্ষার্থীদের আচরণগত যেকোনো চারটি সমস্যা ও তাদের প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans: আচরণগত সমস্যা : সমাজ – অবাঞ্ছিত উপায়ে চাহিদা পুরণ করার প্রক্রিয়াকে বলে আচরণগত সমস্যা আচরণগত সমস্যার প্রধান কারণ মৌলিক চাহিদা পরিতৃপ্ত না হওয়া । শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার প্রধান কারণ বিদ্যালয়ঘটিত ও পারিবারিক । শিক্ষার্থীর বাবা – মায়ের মধ্যে নিত্যকলহ চলতে থাকলে তাদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় । আবার বিদ্যালয়ের পরিবেশে শিক্ষার্থীর স্বাধীনতা না থাকলেও আচরণগত সমস্যা হয়ে থাকে । শিক্ষকের একঘেয়ে শিক্ষণ পদ্ধতিও শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যার কারণ।
শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা ও প্রতিকার : শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার মধ্যে বদমেজাজ , স্কুল পালানো , আক্রমণধর্মিতা , নেতিবাচক আচরণ , মিথ্যা কথা বলা , সহপাঠীদের উৎপীড়ন , চুরি করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ ও স্কুল চত্বরে দীর্ঘসময় সহপাঠীদের সঙ্গে কাটায় । এসময় তার আচরণগত সমস্যা সমাধানে শিক্ষক ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বড়ো ভূমিকা থাকে । এক্ষেত্রে কয়েকটি কৌশল প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা সমাধান করা যায় । যেমন— • শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ।
- শিক্ষার্থীকে উৎসাহ দেওয়া ।
- শিক্ষণের বিষয়বস্তু আকর্ষণীয় করা ।
- সব ধরনের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা । শিক্ষকদের মতো শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যা সমাধানে বাবা – মায়েরও গুরুদায়িত্ব রয়েছে । যেমন – 1. মৌলিক চাহিদা পূরণ করা , 3. পারিবারিক সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতি বজায় রাখা , 3. শিশুকে দরকার অনুযায়ী স্বাধীনতা দেওয়া 4. বয়ঃসন্ধিকালে পরামর্শ ও সঠিক দিক্নির্দেশ । এছাড়াও—
(A) শিক্ষক – শিক্ষিকাদের স্নেহ – ভালোবাসা , সঙ্গদান , সহানুভূতি , সুপরামর্শ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক আচরণের মতো সমস্যার প্রতিকার করা যায় , তাদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলাও যায় ।
(B) বিভিন্ন প্রকার সহপাঠক্রমিক কাজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ও খেলাধুলার সুবিধা করে দিয়েও শিক্ষার্থীদের আক্রমণধর্মিতা থেকে বিরত করা যায় । কারণ এতে তাদের মধ্যে দলগত মনোভাব গড়ে উঠে ।
(C) শিক্ষার্থীর মৌলিক চাহিদা পূরণ করা , দলগত কাজে নিয়োগ করা ও সুপরামর্শ দিয়ে তাদের মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত করা যায় ।
(D) বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশকে আনন্দদায়ক , চিত্তাকর্ষক করা , শিক্ষকদের পাঠদান কৌশলে পরিবর্তন , প্রাসঙ্গিকতা ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুল পালানো থেকে বিরত করা যায় ।
( E ) সব ছাত্র – ছাত্রীকে শিক্ষক সমান দৃষ্টিতে দেখলে ও মনোচিকিৎসার সাহায্য নিলে সহপাঠীদের উৎপীড়ন করা থেকে শিক্ষার্থীকে বিরত করা যায় ।
- ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার সমস্যা আলোচনা করো ।
Ans: ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা লক্ষ করা যায় । নীচে কয়েকটি প্রধান সমস্যা আলোচিত হলো—
- দৃষ্টিশক্তির অভাব / ইন্দ্রিয়জনিত সমস্যা : এদের দৃষ্টিশক্তির অভাব থাকে । ফলে এরা স্বাভাবিক শিশুদের মতো লিখতে , পড়তে ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে না । তাই এদের শিক্ষায় ত্রুটি থেকে যায় ।
- শিক্ষাজনিত সমস্যা : সাধারণ শিশুদের চেয়ে বেশি বয়সে এরা স্কুলে আসে ৷ ফলে এরা পিছিয়ে থাকে এবং এদের মধ্যে হীনম্মন্যতা কাজ করে । এতে শিক্ষালাভে ব্যাঘাঃ ঘটে ।
- সামগ্রিক অভিজ্ঞতা অর্জনে সমস্যা : মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইন্দ্রিয় হলে চোখ ৷ একে জ্ঞানের সবচেয়ে মূল্যবান প্রবেশদ্বার বলা হয়ে থাকে । ফলে ব্যাহত দৃষ্টিশক্তির শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে না ।
- নিরাপত্তাজনিত সমস্যা : এরা অন্যদের চেয়ে বেশি আবেগপ্রবণ হয় । আবেগে বশে এরা অনেক সময় নিজ পরিবেশ – পরিস্থিতির সঙ্গেও মানিয়ে নিতে পারে না । অপরের করুণা , তাচ্ছিল্য , বিদ্রুপ ইত্যাদি এদের মধ্যে হীনম্মন্যতার জন্ম দেয় । ফলে এদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয় । এভাবে শিক্ষার ক্ষেত্রেও এরা সমস্যায় পড়ে ।
- দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার পাঠক্রম সম্বন্ধে আলোচনা করো ।
Ans: দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাঠক্রম : দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় –
- ভাষা ও সাহিত্য : দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মতোই দু’টি ভাষা শিখতে পারে । একটি হলো তার মাতৃভাষা এবং অন্যটি হলো ইংরেজি বা অন্য কোনো জাতীয় ভাষা । ভাষা ও সাহিত্য পাঠের ক্ষেত্রে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা তাদের বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে ।
- মানবীয় বিদ্যা ও সমাজবিজ্ঞান : মানবীয় বিদ্যায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে যে বিষয়ে পড়াশোনা করে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরাও তা – ই পড়ে । উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও তারা যে বিষয়গুলি পড়তে আগ্রহী তা নিয়েই পড়াশোনা করতে পারে ।
- অঙ্ক ও বিজ্ঞান : দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মতোই অঙ্ক এবং বিজ্ঞানের বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে । এজন্য তারা বিশেষ শিখন পদ্ধতির সাহায্যে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে ।
- স্বাস্থ্যশিক্ষা : দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার আর একটি বিষয় হলো স্বাস্থ্যশিক্ষা । খুব সহজেই সাধারণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে পাঠদান করা যায় ৷ এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করলে তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ে ।
উপসংহার : দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে পাঠক্রমিক বিষয় ছাড়াও যদি সহপাঠ্যক্রমিক বিষয়গুলিকে বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা হলে যেমন তারা নানারকম সৃজনধর্মী কাজে দক্ষতা দেখাতে পারে তেমনি যদি পাঠক্রমের মধ্যে বৃত্তিমূলক বিষয়গুলিকে বেশি করে ঢোকানো যায় তা হলে ভবিষ্যতে তারা যে কোনো একটি পেশা অবলম্বন করেই এগোতে পারে ।
- দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষাপদ্ধতি সম্বন্ধে আলোচনা করো ।
Ans: দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিখন পদ্ধতি :
( i ) ব্রেইল পদ্ধতি : ব্রেইল বলতে বোঝায় অন্ধ শিশুদের জন্য এক ধরনের স্পর্শভিত্তিক লিপি । লুইস ব্রেইল নামে একজন ফরাসি চিন্তাবিদ ১৮২৯ সালে এই পদ্ধতি আবিস্কার করেন । এই পদ্ধতিতে যে কোনো ভাষার অক্ষরগুলিকে ছয়টি উঁচু উঁচু বিন্দু বা ডটের দ্বারা প্রকাশ করা হয় । অন্ধ শিশুরা হাত দিয়ে এই ডটগুলি স্পর্শ করে এবং পাঠ করে । বর্তমানে তাদের মনের ভাব লিখিতভাবে এই পদ্ধতিতে প্রকাশ করতে পারে ।
( ii ) ব্যক্তিকেন্দ্রিক পদ্ধতি : বিশেষজ্ঞদের অভিমত ব্রেইল পদ্ধতিকে বাস্তবায়িত করতে হলে ব্যক্তিনির্ভর পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে । তাদের ব্যক্তিগতভাবে খুবই নজর দিতে হবে ।
( iii ) সামগ্রিক পদ্ধতি : সামগ্রিক পদ্ধতি বলতে বোঝায় কোনো বিষয়ের একটা সামগ্রিক অভিজ্ঞতা অর্জন । কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে । তারা যেহেতু কোনো কিছু দেখতে পায় না সেহেতু তাদের সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয় না । সেজন্যই তারাও যাতে কোনো বস্তু বা কোনো বিষয়ের একটা সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে সেদিকে শিক্ষকদের বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে ।
( iv ) সক্রিয়তাভিত্তিক শিখন পদ্ধতি : দৃষ্টিহীন শিশুরা বস্তুকে দেখতে না পেলেও গন্ধ – স্পর্শ – শব্দ ইত্যাদি দ্বারা অনুভব করতে পারে । তাই তাকে যদি মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রাখা যায় তা হলে তার শিখন প্রক্রিয়ায় গতি আসে ৷