অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর |
- মাধ্যম অনুমান কাকে বলে ?
Ans: যে অবরোহ অনুমানে একটির বেশি হেতুবাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় , তাকে মাধ্যম অনুমান বলে ।
- সরল আবর্তন কাকে বলে ?
Ans: যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ পৃথক হয় , তাকে অ – সরল আবর্তন বলে ।
- আবর্তন কাকে বলে ?
Ans: যে অমাধ্যম অনুমানে একটি বচনের গুণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে যথাক্রমে অন্য একটি বচনের বিধেয় ও উদ্দেশ্যে পরিণত করা হয় , তাকে আবর্তন বলে ।
- অবরোহ অনুমান কয়প্রকার ও কী কী ?
Ans: দুই প্রকার – অমাধ্যম অনুমান ও মাধ্যম অনুমান।
- অসম আবর্তন কাকে বলে ?
Ans: যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আবর্তনীয় ও আবর্তিত বচনের পরিমাণ ভিন্ন হয় তাকে অসম আবর্তন বলে ।
- বিবর্তনকে অমাধ্যম অনুমান বলা হয় কেন ?
Ans: বিবর্তনে সিদ্ধান্ত কোনো মাধ্যম ছাড়াই অর্থাৎ অন্য আশ্রয়বাক্য ছাড়াই সরাসরি নিঃসৃত হয় ; তাই বিবর্তনকে অমাধ্যম অনুমান বলা হয় ।
- বিবর্তনের ক্ষেত্রে হেতুবাক্যটিকে কী বলা হয় ?
বিবর্তনীয় ।
- বিরুদ্ধ পদ কাকে বলে ?
Ans: যদি দু’টি পদ এমন দু’টি শ্রেণি বোঝায় , যাদের কোনো বস্তুই উভয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না এবং ওই দু’টি পদ দ্বারা নির্দিষ্ট শ্রেণির সবটুকু সম্পূর্ণ হয় , তখন সেই বিরোধী দু’টি পদকে পরস্পরের বিরুদ্ধ পদ বলা হয় ।
- বস্তুগত বিবর্তনের স্রষ্টা কে ?
Ans: যুক্তিবিজ্ঞানী বেন ( Bain ) ।
- বিবর্তনের বিধেয়টি কোন পদ হয় ?
Ans: বিরুদ্ধ পদ হয় ।
- মাধ্যম অনুমানে ক’টি আশ্রয়বাক্য থাকে ?
Ans: দুই বা ততোধিক আশ্রয়বাক্য থাকে ।
- বিবর্তনের বৈধতার গুণ – সংক্রান্ত নিয়মটি কী ?
Ans: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধাস্তের গুণ ভিন্ন হবে অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সদর্থক হলে সিদ্ধান্ত নঞর্থক হবে , আর আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে সিদ্ধান্ত সদর্থক হবে ।
- আবর্তনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটিকে কী বলা হয় ?
Ans: আবর্তিত ।
- বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে ?
Ans: যে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রদত্ত বচনের আকারগত বিবর্তন না করে তার অর্থের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করা হয় এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার সাহায্যে প্রদত্ত বচনটিকে বিবর্তন করা হয় , তাকে বস্তুগত বিবর্তন বলে ।
- ব্যাবর্তন বা বিবর্তন বা প্রতিবর্তন কাকে বলে ?
Ans: যে অমাধ্যম অনুমানে প্রদত্ত বচনটির গুণের পরিবর্তন করে এবং সেই বচনটির বিধেয়ের বিরুদ্ধের পদ সিদ্ধান্তের বিধেয় পদরূপে গ্রহণ করে একটি নতুন বচন গ্রহণ করা হয় তাকে ব্যাবর্তন বা বিবর্তন বা প্রতিবর্তন বলা হয় ।
- বিবর্তনের দু’টি নিয়ম লেখো ।
Ans: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য এক হবে । আশ্রয়বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধপদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হবে ।
- অনুমান ( বা যুক্তি ) কয় প্রকার ও কী কী ? Ans: দুই প্রকার – 1. অবরোহ যুক্তি ও 2. আরোহ যুক্তি ।
নিম্নলিখিত বাক্যগুলিকে বচনে রূপান্তরিত করে আবর্তন করো | উচ্চমাধ্যমিক দর্শন – অম্যাধম মান (চতুর্থ অধ্যায়) অবরোহমূলক তর্কবিদ্যা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Philosophy Question and Answer :
- খুব অল্প লোকই বুদ্ধিমান ।
Ans: L.F. 1 কোনো কোনো লোক হয় বুদ্ধিমান ( আবর্তনীয় ) .
: . 1 কোনো কোনো বুদ্ধিমান হয় লোক ( আবর্তিত )
- বৈজ্ঞানিক দার্শনিক হতে পারেন ।
Ans: L.F. – I কোনো কোনো বৈজ্ঞানিক হন দার্শনিক ( আবর্তনীয় )
: . I কোনো কোনো দার্শনিক হন বৈজ্ঞানিক ( আবর্তিত )
- হলুদ পাখি আছে ।
Ans: L.F. – I কোনো কোনো পাখি হয় হলুদ ( আবর্তনীয় )
- শুধু ধার্মিক ব্যক্তিরাই সুখী ।
Ans: L.F. A সকল সুখী ব্যক্তি হয় ধার্মিক ( আবর্তনীয় ) `
. I কোনো কোনো ধার্মিক ব্যক্তি হয় সুখী ( আবর্তিত )
- অশিক্ষিত মানুষও বুদ্ধিমান ।
Ans: L.F. – I কোনো কোনো অশিক্ষিত মানুষ হয় বুদ্ধিমান ( আবর্তনীয় ) I
কোনো কোনো বুদ্ধিমান মানুষ হয় অশিক্ষিত ( আবর্তিত )
- প্রত্যেক কবিই প্রতিভাশালী ।
Ans: L.F. A সকল কবি হয় প্রতিভাশালী ( আবর্তনীয় ) :
I কোনো কোনো প্রতিভাশালী ব্যক্তি হয় কবি ( আবর্তিত )
- কোনো মানুষ সুখী নয় ।
Ans: L.F. E কোনো মানুষ নয় সুখী ( আবর্তনীয় ) : . E কোনো সুখী নয় মানুষ ( আবর্তিত )
- সংগীত কে না ভালোবাসে ।
Ans: L. F. A সকল ব্যক্তি হয় ব্যক্তি যারা সংগীত ভালোবাসে ( আবর্তনীয় ) .
: . I কোনো কোনো ব্যক্তি যারা সংগীত ভালোবাসে হয় ব্যক্তি ( আবর্তিত )
- কোনো শ্রমিক নয় শোষক ।
Ans: কোনো শ্রমিক নয় শোষক ( আবর্তনীয় ) .
E কোনো শোষক নয় শ্রমিক ( আবর্তিত )
- সকল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী হয় ছাত্র ।
Ans: L.F.A সকল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী হয় ছাত্র ( আবর্তনীয় ) .
: . I কোনো কোনো ছাত্র হয় এমন যারা এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণকারী ( আবর্তিত )
- সমস্ত কাক কালো নয় ।
Ans: L.F.A – O কোনো কোনো কাক নয় কালো ( আবর্তিত ) :
: O বচনের আবর্তন সম্ভব নয় ।
- পরিশ্রমী ছাড়া কেউই জীবনে সফল হতে পারে না ।
Ans: L.F. A সকল সফল ব্যক্তি হয় পরিশ্রমী (আবর্তনীয়) .
: . I কোনো কোনো পরিশ্রমী ব্যক্তি হয় সফল (আবর্তিত)
- ব্যবসায়িকরা কদাচিৎ সৎ হয় ।
Ans: L.FO কোনো কোনো ব্যবসায়িক নয় সৎ (আবর্তিত) .
O বচনে আবর্তন সম্ভব নয় ।
- কবিরা সাধারণত শান্তিপ্রিয় হন ।
Ans: L.F.A- I কোনো কোনো কবি হন শাস্তিপ্রিয় ব্যক্তি (আবর্তনীয়) ..
I কোনো কোনো শাস্তিপ্রিয় ব্যক্তি হন কবি (আবর্তিত)
- অশিক্ষাই অশান্তির মূল ।
উত্তর L.F. – A সকল অশিক্ষাই হয় অশান্তির মূল (বিবর্তনীয়) :
. E কোনো অশিক্ষাই নয় অ – অশান্তির মূল (বিবর্তিত)
- কেবলমাত্র কবিরাই আবেগপ্রবণ ।
Ans: L.F. – A সকল আবেগপ্রবণ ব্যক্তি হয় কবি (বিবর্তনীয়) .
. E কোনো আবেগপ্রবণ ব্যক্তি নয় অ – কবি (বিবর্তিত)
- সব তিমি হয় স্তন্যপায়ী ।
Ans: L.FA সকল তিমি হয় স্তন্যপায়ী ( বিবর্তনীয় ) :
. E কোনো তিমি নয় অ – স্তন্যপায়ী ( বিবর্তিত )
- কোনো শিক্ষক বিজ্ঞানী নয় ।
Ans: L.F. – E কোনো শিক্ষক নয় বিজ্ঞানী (বিবর্তনীয়) :
A সকল শিক্ষক হয় অ – বিজ্ঞানী ( বিবর্তিত )
- কোনো পাখিই স্তন্যপায়ী নয় ।
Ans: L. F. – E কোনো পাখি নয় স্তন্যপায়ী (বিবর্তনীয়)
A সকল পাখি হয় অ – স্তন্যপায়ী ( বিবর্তিত )
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক দর্শন – অম্যাধম মান (চতুর্থ অধ্যায়) অবরোহমূলক তর্কবিদ্যা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Philosophy Question and Answer :
- বিবর্তন কাকে বলে ? দৃষ্টান্ত সহ বিবর্তনের নিয়মগুলি ব্যাখ্যা করো ।
Ans: প্রদত্ত বচনটির গুণের পরিবর্তন করে এবং সেই বচনটির বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয়রূপে গ্রহণ করে যে অমাধ্যম অনুমানে একটি নতুন বচন গ্রহণ করা হয় তাকে বিবর্তন বলে । যেমন— A সকল মানুষ স্বার্থপর ( বিবর্তনীয় ) – … কোনো মানুষ নয় অ – স্বার্থপর ( বিবর্তিত )
বিবর্তনের নিয়ম :
১ ) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য এক হয় ।
২ ) আশ্রয়বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধপদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হয় ।
৩ ) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ভিন্ন হবে । অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য যদি সামান্য হয় , সিদ্ধান্ত নঞর্থক হবে ৷ আশ্রয়বাক্য যদি নঞর্থক হয় তবে সিদ্ধান্ত সদর্থক হবে।
৪ ) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ এক হয় । অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য যদি সামান্য হয় তবে সিদ্ধান্ত সামান্য হবে এবং আশ্রয়বাক্য যদি বিশেষ হয় তবে সিদ্ধান্ত বিশেষ হবে ।
- অমাধ্যম অনুমান কী ? দৃষ্টান্ত সহকারে মাধ্যম এবং অমাধ্যম অনুমানের মধ্যে 2141 পার্থক্য ব্যাখ্যা করো ।
Ans: অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত একটি যুক্তিবাক্য থেকে আসতে পারে , আবার একাধিক যুক্তিবাক্য থেকেও আসতে পারে । যুক্তিবাক্যের এই সংখ্যাকে সামনে রেখে অবরোহ অনুমানকে দু’টি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা— অমাধ্যম ‘ অনুমান ও মাধ্যম অনুমান ।
অমাধ্যম অনুমান : যে অবরোহ অনুমানে সিদ্ধান্ত একটিমাত্র যুক্তিবাক্য থেকে সরাসরি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় এবং যেখানে মাধ্যম হিসাবে অন্য কোনে যুক্তিবাক্যের সাহায্য গ্রহণ করা হয় না , তাকে অমাধ্যম অনুমান বলে । অর্থাৎ অমাধ্যম অনুমান হলো দু’টি বচনের অনুমান- এদের একটি হলো যুক্তিবাক্য এবং অপরটি হলো সিদ্ধান্ত ।
উদাহরণ : A – সকল বাঙালি হয় ভারতীয় । ( যুক্তিবাক্য )
. : I – কোনো কোনো ভারতীয় হয় বাঙালি । ( সিদ্ধান্তবাক্য )
পার্থক্য : 1. অমাধ্যম অনুমানে দু’টি বচন থাকে – একটি যুক্তিবাক্য , অন্যটি সিদ্ধান্ত । মাধ্যম অনুমানে দু’টির বেশি বচন থাকে – একাধিক যুক্তিবাক্য ও একটি সিদ্ধান্ত ।
- অমাধ্যম অনুমানে দু’টি পদ থাকে । যুক্তিবাক্যের দু’টি পদ বা তাদের বিরুদ্ধপদই অমাধ্যম অনুমানের সিদ্ধান্তে উপস্থিত থাকে । মাধ্যম অনুমানের যুক্তিবাক্য – গুলিতে অন্তত তিনটি পদ থাকে । সিদ্ধান্তে ঐ পদগুলির মধ্যে দু’টি পদ উপস্থিত থাকে ।
- একটিমাত্র যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে অমাধ্যম অনুমানের ক্ষেত্রটি অত্যন্ত সংকীর্ণ । সেইজন্যই কোনো কোনো যুক্তিবিজ্ঞানী অমাধ্যম অনুমানকে প্রকৃত অনুমান বলে স্বীকার করতে চাননি । মাধ্যম অনুমানের ক্ষেত্রটি প্রসারিত । তাই এখানে এই প্রশ্ন ওঠেনি ।
- আবর্তন কী ? সরল আবর্তন এবং সীমিত আবর্তনের মধ্যে পার্থক্য করো ।
Ans: আবর্তন : যে অমাধ্যম অনুমানে একটি বচনের গুণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে যথাক্রমে অন্য একটি বচনের বিধেয় ও উদ্দেশে পরিণত করা হয় , তাকে আবর্তন বলে ।
সরল আবর্তন ও সীমিত আবর্তনের পার্থক্য : যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আবর্তনীয় ও আবর্তিত বচনের পরিমাণ অভিন্ন হয় তাকে সরল আবর্তন বলে ।
উদাহরণ : E- বচনকে E- বচনে আবর্তন ।
যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আবর্তনীয় ও আবর্তিত বচনের পরিমাণ ভিন্ন হয় তাকে সীমিত ও আবর্তন বলে ।
উদাহরণ : A- বচনকে I- বচনে আবর্তন । যেমন : A- সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব । ( আবর্তনীয় )
কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ । ( আবর্তিত )
উপরে উল্লিখিত যুক্তিটিতে আবর্তনীয় বচনের পরিমাণ ও আবর্তিত বচনের পরিমাণ ভিন্ন । আবর্তনীয় বচন হয়েছে সার্বিক আর অবর্তিত বচন হয়েছে বিশেষ । A বচনের সরল আবর্তন সম্ভব নয় । A বচনকে সরল আবর্তন করলে A বচনই আবর্তিত হয় । যেমন : A- সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব । ( আবর্তনীয় ) A- সকল মরণশীল জীব হয় মানুষ । ( আবর্তিত ) উপরে উল্লিখিত যুক্তিটি বৈধ নয় । A বচনকে আবর্তিত করে যদি A বচন পাওয়া যায় , তাহলে আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম লঙ্ঘিত হবে । আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম অনুযায়ী যে পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য নয় , সেই পদ সিদ্ধাস্তে ব্যাপ্য হতে পারে না । উক্ত অনুমানে আশ্রয় বাক্যের বিধেয় পদ মরণশীল জীব A বচনের বিধেয় পদে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি । কিন্তু ঐ পদ সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে , ফলে অনুমানটি আবর্তন জনিত দোষে দুষ্ট । কাজেই বচনের আবর্তন সম্ভব নয় । এই কারণে A বচনকে I বচনে আবর্তন করা হয় । যেমন : A- সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব । ( আবর্তনীয় ) I- কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ । ( আবর্তিত ) উপরের যুক্তিটিতে আবর্তনের কোনো নিয়ম লঙ্ঘিত হয়নি তাই বৈধ ।
- মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমান কাকে বলে ? অমাধ্যম অনুমানকে কি প্রকৃত অনুমান বলা যায় ?
Ans: অমাধ্যম অনুমান : একটিমাত্র যুক্তিবাক্য থেকে যে অবরোহ অনুমানে অন্য কোনো বচনের সাহায্য না নিয়ে সরাসরি একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় তাকে অমাধ্যম অনুমান বলে । যেমন— সকল মানুষ হয় মরণশীল : কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ।
মাধ্যম অনুমান : মাধ্যম অনুমান হলো একপ্রকার অবরোহ অনুমান । এখানে একাধিক যুক্তিবাক্যকে আশ্রয় করে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় । যেমন- সকল মানুষ মরণশীল
রাম হয় একজন মানুষ
..রাম হয় মরণশীল ।
অমাধ্যম অনুমানকে প্রকৃত অনুমান বলা যায় : অমাধ্যম অনুমানকে প্রকৃত অনুমান বলা যাবে কি না এ বিষয়ে যুক্তিবিদগণ সহমত নন । মিল , বেন প্রমুখ যুক্তিবিদ মনে করেন , অমাধ্যম অনুমান প্রকৃত অনুমান নয় । – C মিল বলেন , কোনো অনুমানকে যথার্থ অনুমান হতে গেলে সিদ্ধান্তে নতুনত্ব থাক চাই । কিন্তু অমাধ্যম অনুমানে যেমন — ‘ কোনো রাজা নয় ফকির ’ ( E ) – এই হেতুবাক থেকে ‘ কোনো ফকির নয় রাজা ‘ ( E ) – এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে হেতুবাক্যে আমর যা জানি সেটি সিদ্ধান্তে অন্যভাবে বলা হয় , কোনো নতুন জ্ঞান পাওয়া যায় না ।
বেন – এর মতে , অমাধ্যম অনুমানে আমরা প্রদত্ত তথ্য থেকে নতুন তথ্যে যাই না , বর এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় যাই । এ কারণে মিল এবং বেন অমাধ্যম অনুমানকে প্রকৃত অনুমান বলতে রাজি নন । মিল এবং বেন – এর মতের বিরুদ্ধে বলা যায় , সিদ্ধান্তে নতুন ত = নেই বলে অমাধ্যম অনুমানের কোনো প্রয়োজন নেই একথা ঠিক নয় । কারণ সেক্ষেত্রে একই কারণে অবরোহ অনুমানকে তথা ‘ ন্যায় ‘ অনুমানকেও বাতিল করতে হয় । বস্তুঃ অবরোহ অনুমানে তা অমাধ্যম হোক বা মাধ্যম হোক , হেতুবাক্যে যা সুপ্ত বা অস্পষ্ট ন তা সিদ্ধান্তে সুস্পষ্ট ও ব্যক্ত হয় । এ প্রসঙ্গে যুক্তিবিদ ক্রাইটনও বলেন , অমাধ্যম অনুমানের হেতুবাক্যে যে সত্যটি অস্পষ্টভাবে থাকে তার পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট রূপ সিদ্ধান্তে পাওয়া যায় । সেজন্য অমাধ্যম অনুমানে হেতুবাক্য থেকে সিদ্ধান্তে যাওয়ার সময় প্রদত্ত জ্ঞাত বিষ থেকে অজ্ঞাত বিষয়ে আমরা যাই বলে অমাধ্যম অনুমানকে প্রকৃত অনুমান বলা সংগত ।
- বস্তুগত বিবর্তন বলতে কী বোঝো ? বস্তুগত বিবর্তনকে কি প্রকৃত বিবর্তন বলা হয় ?
Ans: বস্তুগত বিবর্তন তর্কবিজ্ঞানী বেন ( Bain ) বস্তুগত বিবর্তনের কথা বলেে যেখানে উদ্দেশ্যের বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদ সিদ্ধাস্তের উদ্দেশ্য এবং বিধেয়ের বিপরী ঠিক আকারগত নয় । বাস্তব জ্ঞানের সাহায্যে এক নতুন বচন গঠন করা হয় মাত্র । এ বা বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয় হিসাবে গ্রহণ করা হয় । এক্ষেত্রে এই রকম বিবর্তন বিবর্তনে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ও পরিমাণ একই থাকে ।
বস্তুগত বিবর্তনের উদাহরণ :
( ক ) A সততা হলো উৎকৃষ্ট ( বিবর্তনীয় )
A অসততা হলো নিকৃষ্ট ( বিবর্তিত )
( খ ) A জ্ঞান হলো ইষ্ট ( বিবর্তনীয় )
: . A অজ্ঞান হয় অনিষ্ট ( বিবর্তিত )
( গ ) A পরিশ্রম হয় কষ্টদায়ক ( বিবর্তনীয় )
: . A বিশ্রাম হয় আরামদায়ক ( বিবর্তিত )
( ঘ ) A আলো হয় উজ্জ্বল ( বিবর্তনীয় )
: A অন্ধকার হয় নিষ্প্রভ ( বিবর্তিত )
( ঙ ) A শাস্তি হয় কল্যাণসূচক ( বিবর্তনীয় )
: . A অশান্তি হয় অকল্যাণসূচক ( বিবর্তিত ) উপরিলিখিত উদাহরণগুলির সিদ্ধান্তে আশ্রয়বাক্যের বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদ উদ্দেশ্য ও বিধেয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে , যদিও আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ও পরিমাণ একই এবং এই ধরনের বস্তুগত বিবর্তন বাস্তব জ্ঞানসম্মত ।
দ্বিতীয় অংশ : এখন প্রশ্ন এই যে বস্তুগত বিবর্তনকে কি প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় ? নিম্নলিখিত কারণে বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলে ধরে নেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়— 1. অবরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যে সিদ্ধান্ত নিহিত থাকে । অথচ এই বিবর্তনের বেলায় আশ্রয়বাক্যে সিদ্ধান্তের সমর্থন সব সময় পাওয়া যায় না । 2. বস্তুগত বিবর্তন বাস্তব অভিজ্ঞতাজনিত । কিন্তু বস্তুর অভিজ্ঞতার কোনো মূল্য অবরোহানুমানে নেই । 3. বৈধ বিবর্তনের ক্ষেত্রে যা হয় , অর্থাৎ আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য অভিন্ন হয় । এক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি । আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্যের বিপরীত বা বিরুদ্ধপদ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যরূপে ব্যবহৃত হয় । 4. বৈধ বিবর্তনের ক্ষেত্রে যা হয় অর্থাৎ আশ্রয়বাক্যের বিধেয়পদের বিরুদ্ধপদ সিদ্ধান্তে বিধেয় হিসাবে ব্যবহৃত হয় । এক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যে বিধেয়পদও সিদ্ধান্তের বিধেয়পদ হতে পারে । যথার্থ বিবর্তনের নিয়ম এই যে বিবর্তনীয় ও বিবর্তিত দুই বচনে গুণ আলাদা বা ভিন্ন হবে । কিন্তু বস্তুগত বিবর্তনের ক্ষেত্রে বিবর্তনীয় ও বিবর্তিত এই দুই বচনের গুণের কোনো প্রভেদ নেই । বস্তুগত বিবর্তনে প্রকৃত বিবর্তনের নিয়মগুলি অনুসৃত হয়নি । তাই বস্তুগত বিবর্তনের পিছনে বেন ( Bain ) – এর যত যুক্তিই থাক , এই বিবর্তনকে ন্যায়সংগত বিবর্তন বলা যায় না ।