পরিচ্ছেদ ১ : বায়ুমণ্ডল
MCQ | HS Geography Question and Answer :
- ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তিস্থল হলো—
(A) উন্ন সমুদ্রপৃষ্ঠ
(B) শীতল সমুদ্রপৃষ্ঠ
(C) উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ
(D) বরফপৃষ্ঠ
Ans: (C) উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ
- জেট বায়ু প্রধানত প্রবাহিত হয়—
(A) ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ারে
(B) নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ার
(C) ঊর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
(D) মেসোস্ফিয়ারে
Ans: (C) ঊর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
- বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ দেখা যায় যে স্তরে ●
(A) ট্রপোস্ফিয়ার
(B) ট্রপোপজ
(C) স্ট্র্যাটোপজ
(D) স্ট্যাটোস্ফিয়ার
Ans:
- মিশরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উন্ন স্থানীয় বায়ু (A) লেভেচ
(B) স্যান্টা আনা
(C) খামসিন
(D) বোরা
Ans: (C) খামসিন
- গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ—
(A) SO
(B) মিথেন
(C) CO₂
(D) O₂
Ans: (C) CO₂
- ঘূর্ণবাত একধরনের
(A) নিয়ত
(B) সাময়িক
(C) আকস্মিক
(D) স্থানীয় — বায়ু
Ans: (C) আকস্মিক
- উপক্ৰান্তীয় উচ্চচাপ ও নিরক্ষীয় নিম্নচাপের মধ্যে যে সঞ্চালন কোশটি আছে তার নাম হলো— (A) হ্যাডলি কোশ
(B) ফেরেল কোশ
(C) মেরু কোশ
(D) কোনোটিই নয় ।
Ans: (A) হ্যাডলি কোশ
- ‘ ফেরেল কক্ষ ‘ কোন বায়ুপ্রবাহের অন্তর্গত ? (A) পশ্চিমা বায়ু
(B) মেরু বায়ু
(C) আয়ন বায়ু
(D) মৌসুমি বায়ু
Ans: (A) পশ্চিমা বায়ু
- ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় নির্গত গ্যাসটি হলো – (A) N²O
(B) MIC
(C) H²O
(D) CO²
Ans: (B) MIC
- পৃথিবীর সর্বাধিক টর্নেডোর উৎপত্তি ঘটে— (A) প্রেইরি অঞ্চলে
(B) চিনে
(C) ভারতে
(D) রাশিয়ায়
Ans: (A) প্রেইরি অঞ্চলে
- ফ্রান্সের রোন উপত্যকায় প্রবাহিত শীতল স্থানীয় বায়ু হলো—
(A) বোরা
(B) মিস্ট্রাল
(C) লেভেচ
(D) সান্টা আনা
Ans: (B) মিস্ট্রাল
- ঘূর্ণবাতের চক্ষু দেখা যায়—
(A) প্রতীপ
(B) নাতিশীতোয়
(C) ক্রান্তীয়
(D) উপক্ৰান্তীয় — ঘূর্ণবাতে
Ans: (C) ক্রান্তীয়
- সেলভা জলবায়ু হলো—
(A) মৌসুমি
(B) নিরক্ষীয়
(C) ভূমধ্যসাগরীয়
(D) সাভানা
Ans: (B) নিরক্ষীয়
- প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে—
(A) নিরক্ষীয় অঞ্চলে
(B) নিম্ন অক্ষাংশে
(C) উচ্চ অক্ষাংশে
(D) মধ্য অক্ষাংশে
Ans: (C) উচ্চ অক্ষাংশে
- বায়ুমণ্ডলীয় বিপর্যয়ের উদাহরণ হলো—
(A) ঘূর্ণবাত
(B) ভূমিকম্প
(C) সুনামি
(D) অগ্ন্যুৎপাত
Ans: (A) ঘূর্ণবাত
- আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস পালিত হয়
(A) 5 জুন
(B) 16 সেপ্টেম্বর
(C) 5 আগস্ট
(D) 15 ডিসেম্বর
Ans: (B) 16 সেপ্টেম্বর
- উন্ন – আর্দ্র জলবায়ুতে মাটি গঠনের হার হয়—
(A) অতিধীর
(B) ধীর
(C) দ্রুত
(D) মাঝারি
Ans: (C) দ্রুত
- বোলসন দেখতে পাওয়া যায়—
(A) নেপালে
(B) বাংলাদেশে
(C) শ্রীলঙ্কায়
(D) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে
Ans: (D) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে
- হ্যাডলি কোশের অবস্থান—
(A) 0 ° –30 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
(B) 30 ° –45 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
(C) 45 ° –60 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
(D) 80 ° –90 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
Ans: (A) 0 ° –30 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ১ : বায়ুমণ্ডল | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে ওজোন পাওয়া যায় ?
Ans: বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ওজোন পাওয়া যায় ।
- যে সীমান্ত বরাবর উঘ্ন বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুত্থকে ঠেলে এগিয়ে চলে তাকে কী বলে ?
Ans: উষ্ণ সীমান্ত ।
- মিস্ট্রাল কী ?
Ans: মিস্টাল হলো শীতল স্থানীয় বায়ু যা ফ্রান্সে রোন নদীর উপত্যকা ধরে ভূমধ্যসাগরীয় নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় ।
- ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা হ্রাস পায় যে প্রক্রিয়ায় তার নাম কী ?
Ans: অবরোহণ প্রক্রিয়া ।
- প্রাকৃতিক সৌরপর্দা কাকে বলে ?
Ans: ওজোন স্তরকে ।
- পৃথিবীর সর্বাধিক টর্নেডোপ্রবণ অঞ্চল কোনটি ?
Ans: যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি – মিসৌরি নদীর মোহনা ।
- বায়ুমণ্ডলে CO , বৃদ্ধির প্রধান উৎস কী ? Ans: জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ।
- টর্নেডো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কী নামে পরিচিত ?
Ans: টর্নেডো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ টুইস্টার ‘ নামে পরিচিত ।
- hing We ঝড়ের চক্ষু কাকে বলে ?
Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৃত্তাকার কেন্দ্রটিকে ঘূর্ণবাতের চক্ষু বলে । এর ব্যাস প্রায় 30-65 কিলোমিটার হয় ।
- CFC কী ?
Ans: এটি একটি গ্রিনহাউস গ্যাস । পুরো নাম ক্লোরোফ্লুরোকার্বন । এই গ্যাস ওজোন স্তরের হ্রাস ঘটায় ।
- সুনামি কী ?
Ans: সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্পের ফলে যে বিশালাকৃতি বিধ্বংসী সামুদ্রিক ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে তাকে জাপানে সুনামি বলে ।
- প্রাকৃতিক সৌরপর্দা কাকে বলা হয় ?
Ans: পৃথিবীর জীবজগৎকে অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ছাতার মতো রক্ষা করে বলে ওজোন স্তরকে পৃথিবীর ‘ প্রাকৃতিক সৌরপর্দা ‘ বলে ।
- বায়ু সঞ্চালন সম্পর্কিত ত্রিকোশ তত্ত্বের প্রবক্তা কে ?
Ans: বিজ্ঞানী পলম্যান বায়ু সঞ্চালন সম্পর্কিত ত্রিকোশ তত্ত্ব উপস্থাপন করেন ।
- ‘ ডোলড্রাম ‘ অঞ্চল কাকে বলে ?
Ans: প্রশাস্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের ITCZ অঞ্চল দিয়ে জাহাজ অতিধীরে অতিক্রম করত বলে নাবিকগণ এর নামকরণ করেন ‘ ডোলড্রাম ‘ ।
- ওজোন স্তরে কোন রশ্মি শোষিত হয় ?
Ans: ওজোন স্তরে সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক Ultra Violet Ray বা অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হয় ।
- এল নিনোর উৎপত্তি কোথায় ঘটে ?
Ans: ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব প্রান্তে পেরু , ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূলে এল নিনোর উৎপত্তি ঘটে ।
- ‘ হ্যাডলি কোশের ‘ অপর নাম কী ?
Ans: হ্যাডলি কোশের অপর নাম ‘ প্রত্যক্ষ তাপীয় কোশ ‘ ।
- কোন প্রকার ঘূর্ণবাতে আবহাওয়া সর্বদা শাস্ত থাকে ?
Ans: প্রতীপ ঘূর্ণবাতে আবহাওয়া সর্বদা শান্ত থাকে ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ১ : বায়ুমণ্ডল | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর জেট বায়ুপ্রবাহের প্রভাব বিশ্লেষণ করো । রসভি তরঙ্গ কাকে বলে ? অনিয়মিত বা আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ কখন সৃষ্টি হয় ?
Ans: আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর জেট বায়ুপ্রবাহের যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায় । যথা—
1) ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের ওপর জেট বায়ুর প্রভাব : জেট বায়ু ও জেট বায়ুকক্ষের অবস্থানের ওপর ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত অবস্থান করায় জেট বায়ু ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ।
2) মধ্য অক্ষাংশীয় ঘূর্ণবাত : দু’টি বিপরীতধর্মী বায়ুপুঞ্জ মিলিত হয়ে নাতিশীতোয় মণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত , বৃষ্টিপাত , তুষারপাত সৃষ্টি হয় ।
3) নিম্ন অক্ষাংশীয় গোলযোগ : জেট বায়ু জীবনচক্রের অন্তিম পর্যাযে নিম্ন বায়ুস্তরে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের উৎপত্তি ঘটিয়ে ভয়ংকর ঝড় , বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয় ।
4) মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ : ভারতে দক্ষিণ – পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা অনেকাংশে ক্রান্তীয় পূর্বালি জেটের উপর নির্ভর করে । বর্ষাকালে ভারতের ওপর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে তার তীব্রতা অনেকাংশে নির্ভর করে ক্রান্তীয় পূর্বালি জেটের ওপর ।
উভয় গোলার্ধে পৃথিবীকে বেষ্টন করে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে প্রতিনিয়তই পশ্চিমাবায়ুর প্রবাহ দেখা যায় । এই বায়ুপ্রবাহে যে বৃহদাকৃতি তরঙ্গের সৃষ্টি হয় , তাকে রসভি তরঙ্গ বলে । জেট বায়ু যখন আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয় তখন তা রসবি তরঙ্গ নামে পরিচিত হয় ।
কোনো জায়গায় যদি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বা হঠাৎই বায়ুর চাপ অত্যধিক কমে যায় । বা বৃদ্ধি পায় , তাহলে প্রবল বেগে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে আকস্মিক বা অনিয়মিত বায়ু বলে ।
- এল নিনোর উৎপত্তি ব্যাখ্যা করো । ( Monsoon Trough ) বলতে কী বোঝো ?
Ans: পশ্চিমি ঝঞ্ঝা কাকে বলে ও ‘ মনসুন ট্রাফ ’ এল নিনো হলো একটি স্প্যানিশ শব্দ যার অর্থ হলো ছোট্ট ছেলে । প্রায় 100 বছর আগে পেরুর জেলেদের চোখে প্রথম এই স্রোেত ধরা পড়ে এবং সেই থেকে এই নামকরণ । প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব প্রান্তে পেরু উপকূল দিয়ে যে দক্ষিণমুখী উয় স্রোত প্রবাহিত হয় তাকে এল নিনো বলে ।
এন নিনোর উৎপত্তির কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলি লক্ষণীয় সেগুলি হলো—
1) নাজাকা পাতের অধোগমন : পেরু ও চিলি উপকূলে নাজাকা নামক মহাসাগরীয় পাতটি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশীয় পাতের নীচে প্রবেশ করায় ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত ম্যাগমা বেরিয়ে এসে সমুদ্রের জলকে উত্তপ্ত করে । এইভাবে এল নিনো উৎপত্তি লাভ করে ।
2) বায়বীয় অগ্ন্যুৎপাত : দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমাংশে দক্ষিণ ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর উপকূল বরাবর চিম্বারাজো , কটোপক্রি ইত্যাদি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণের ফলে পেরু উপকূলের সমুদ্রজল উত্তপ্ত হয়ে এল নিনোর উৎপত্তি হয় ।
3) বার্কনেস – এর মতবাদ : জে . বার্কনেস – এর মতে , পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে বৈষম্যমূলক তপ্তবিন্দু উৎপন্ন হলে ওয়াকার ও বাণিজ্য বায়ুপ্রবাহ দুর্বল হয়ে পড়ে । ফলে পূর্বদিকে ক্রমশ জলের উয়তা বৃদ্ধি পেয়ে এল নিনোর উৎপত্তি হয় । মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমনের সময় শীতকালে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের প্রভাবে উত্তর ভারত ও মধ্যপাকিস্তানে শাস্ত আবহাওয়া বিঘ্নিত হয় । এসময়ে 3-4 দিন আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে , হাল্কা বৃষ্টি হয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাত ঘটে । একে পশ্চিমি ঝঞ্ঝঞ্ঝা বা পশ্চিমি ঝামেলা বলে । গ্রীষ্মকালে সূর্যের উত্তরায়ণের সাথে সাথে ITCZ উত্তরদিকে সরে গিয়ে স্থলভাগে অবস্থান করে । উত্তর – পশ্চিম ভারত ও সংলগ্ন পাকিস্তান সীমান্তে তখন সৃষ্টি হয় নিম্নচাপ কক্ষ এবং গাঙ্গেয় সমভূমিতে মৌসুমি অক্ষ ( Monsoon trough ) অবস্থান করে ।
- মধ্য অক্ষাংশীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তির পর্যায়গুলি বর্ণনা করো । PSC কী ?
Ans: নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টির পর্যায় নিম্নলিখিতভাবে ব্যাখ্যা করা যায়—
1) প্রাথমিক পর্যায় ( সাম্য সীমান্ত গঠন ) : মেরু অঞ্চল থেকে শীতল বায়ুপুর ও ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে আগত উন্ন বায়ুপুঞ্জ পরস্পরের সমান্তরালে বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়ে সাম্য সীমান্ত গঠন করে ।
2) দ্বিতীয় পর্যায় ( উয় ও শীতল সীমান্তের সৃষ্টি ) : শীতল বায়ুপুঞ্জ উয় বায়ুপুঞ্জের অভিমুখে এবং উয় বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুঞ্জের অভিমুখে এগিয়ে গেলে উয় বায়ুর পেছনের অংশে শীতল সীমান্ত এবং শীতল বায়ুর পেছনের অংশে উয় সীমান্ত গঠিত হয়ে থাকে ।
3) তৃতীয় পর্যায় ( বাততরঙ্গের বিকাশ ) : সাম্য সীমান্ত বরাবর উয় বায়ুপুঞ্জ ও শীতল বায়ুপুঞ্জের সংঘর্ষের ফলে উহ্ণ বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুঞ্জের মধ্যে ঢুকে পড়ে । এতে বাততরঙ্গের উদ্ভব হয় ।
4) চতুর্থ পর্যায় ( ঘূর্ণবাতের প্রাবল্য ) : শীতল বায়ুপুঞ্জ উয় বায়ুপুঞ্জের পেছনে ধাক্কা মেরে উয় – আর্দ্র বায়ুকে মেরু অঞ্চল অভিমুখে অভিক্ষিপ্ত হতে বাধ্য করে এবং মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল ও শুষ্ক বায়ু উয় – আর্দ্র বায়ুটিকে ঘিরে ফেলে ।
5) পঞ্চম পর্যায় ( অক্লুডেড সীমান্ত ) : শীতল বায়ুসীমান্ত উয় সীমান্তের অভিমুখে দ্রুত বেগে এগিয়ে এলে অনায়াসে একটি বক্রাকার সীমান্ত বরাবর উয় সীমান্তের সংস্পর্শে আসে । এই ধরনের বক্রাকার সীমান্তকে অক্লুডেড সীমান্ত বলে ।
6) অস্তিম পর্যায় : এই পর্যায়ে অক্লুডেড সীমান্ত বরাবর উষ্ম বায়ুপুঞ্জটি শীতল বায়ুপুঞ্জের দ্বারা পরিবৃত হয় । ফলে মূল বায়ুপুঞ্জ থেকে আলাদা হয়ে যায় । তাপমাত্রা অত্যধিক কমে যাওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে অতিশীতল মেঘের সৃষ্টি হয় , যাকে ‘ পোলার স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক ক্লাউড ’ ( PSC ) বা মেরুদেশীয় ‘ শাস্তমণ্ডলীয় মেঘ ‘ বলে ।
- মৌসুমি বায়ুর উপর এল নিনোর প্রভাব বর্ণনা করো ।
Ans: মৌসুমি বায়ুর ওপর এল নিনোর প্রভাব : উপমহাদেশে মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি প্রসঙ্গে আধুনিকতম তত্ত্বটি হলো ENSO তত্ত্ব । এতে বলা হয়েছে , উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে নিরক্ষরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত কয়েকটি ওয়াকার কক্ষ থাকে । ওয়াকার কক্ষগুলির সঙ্গে এল নিনো , দক্ষিণী দোলন এবং মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক আছে । এই ওয়াকার কক্ষগুলি যে বছরে স্বাভাবিক পরিচলন ক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুপ্রবাহকে সক্রিয় রাখে , সেই পর্বকে ওয়াকার কক্ষের স্বাভাবিক ও শক্তিশালী অবস্থা বলে । এই পর্যায়ে চারটি বৃহৎ নিম্নচাপ বিশিষ্ট ওয়াকার কক্ষ দেখা যায় । যথা— 1) আমাজন অঞ্চল , 2) মধ্যআফ্রিকা , 3) ভারত এবং 4) ইন্দোনেশিয়া । ফলে এই চারটি অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে । ভারতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্বাভাবিক সময়ে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে । আবার একই সময়ে চারটি নিম্নচাপ কক্ষের পাশাপাশি তিনটি উচ্চচাপ কক্ষেরও সৃষ্টি হয় । যথা— ( ক ) পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর , ( খ ) পশ্চিম ভারত মহাসাগর , ( গ ) দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর ।
এর প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে নিম্নচাপের পরিবর্তে গ্রীষ্মকালে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় । এর ফলে ভারতে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেরিতে আসে । দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু থেকে অন্তত 10 শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয় । ফলে খরার সৃষ্টি হয় ।
পরিচ্ছেদ ২ : জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ২ : জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- জলবায়ু পরিবর্তনের মনুষ্যসৃষ্ট তিনটি প্রধান কারণ লেখো । ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাতের কারণ কী ?
Ans: মানুষের নানা অবিবেচনামূলক ক্রিয়াকলাপের ফলে ওজোন স্তর ক্ষয় , গ্রিনহাউস এফেক্ট ও বিশ্ব উয়ায়নের প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটেছে । যথা—
1) জীবাশ্ম জ্বালানির দহন : সমগ্র বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির শিল্প – কলকারখানা , যানবাহন , তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন , রান্নার কাজে , খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস যথেচ্ছভাবে ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইড – এর পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পরোক্ষ ভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে ।
2) অরণ্যচ্ছেদন : বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার ফলে ক্রমাগত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে যথা কৃষি , শিল্প , রাস্তাঘাট , বসতি নির্মাণের জন্য অরণ্যচ্ছেদন চলছে । ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইডের পরিমাণ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে ।
3) কৃষিকাজ : মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দ্রুত ও উচ্চ ফলনশীল শস্য চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে ফলে NH , CH , N , O গ্যাস বৃদ্ধি পায় ৷ এগুলিও জলবায়ু পরিবর্তনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে ।
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুতে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত শীতকালে হওয়ার কারণ : ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো উয় ও শুষ্ক গ্রীষ্মকাল ও আর্দ্র শীতকাল । শীতকালে সাধারণত পশ্চিমি বায়ু ও নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের সম্মিলিত প্রভাবে এখানে বৃষ্টিপাত হয় । সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়টি আস্তে আস্তে দক্ষিণে সরে যায় । ফলে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে পশ্চিমি বায়ুর প্রভাব পড়ে । ভূমধ্যসাগর অঞ্চল থেকে আগত পশ্চিমি বায়ু এবং ভূমধ্যসাগরে সৃষ্ট নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের যৌথ প্রক্রিয়া ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।
- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলি আলোচনা করো ।
Ans: জলবায়ু পরিবর্তনের নানা কারণ রয়েছে । এর মধ্যে প্রধান হলো মহাদেশীয় সরণ , আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণ , সমুদ্রের স্রোতপ্রবাহ এবং পৃথিবীর হেলে থাকা ।
1) মহাদেশীয় সরণ : পৃথিবীর স্থলভাগ যখন একটু একটু করে সরে যেতে শুরু করল তখনই ধীরে ধীরে সৃষ্টি হলো মহাদেশের । মাটির এই সরে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর স্থলভাগের জলাশয়গুলির অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে । এই পরিবর্তনগুলি জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলে ।
2) আগ্নেয়গিরি : আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণের ফলে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাই – অক্সাইড গ্যাস , জলীয় বাষ্প , ধুলো , ছাই নির্গত হয় । ফলে দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটায় ।
3) পৃথিবীর হেলে থাকা : পৃথিবী তার কক্ষপথের উল্লম্ব তলের সঙ্গে 231 , 2 ° কোণে হেলে রয়েছে । পৃথিবীর হেলে থাকার পরিবর্তন হলে তা জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলে ।
4) সমুদ্রের স্রোতপ্রবাহ : জলবায়ুর উপর সমুদ্রের একটি বড়ো ভূমিকা রয়েছে । সমুদ্র পৃথিবীর 71 শতাংশ জুড়ে রয়েছে । সমুদ্র বায়ুমণ্ডলের চেয়ে দ্বিগুণ সূর্যের বিকিরণ শোষণ করে ।
পরিচ্ছেদ ৩ : জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ
MCQ প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ৩ : জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- একটি নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ হলো—
(A) হাইড্রিলা
(B) কচুরিপানা
(C) শালুক
(D) পদ্ম
Ans: (A) হাইড্রিলা
- উচ্চ তাপমাত্রায় যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের বলে
(A) মেগাথার্ম
(B) মেসোধার্ম
(C) মাইক্রোথার্ম
(D) হেকিস্টোথার্ম
Ans: (A) মেগাথার্ম
- অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটে—
(A) জলজ উদ্ভিদের
(B) জাঙ্গল উদ্ভিদের
(C) লবণাম্বু উদ্ভিদের
(D) কোনোটিই নয়
Ans: (A) জলজ উদ্ভিদের
- আমাজন অববাহিকার গভীর অরণ্যকে বলে— (A) প্রেইরি
(B) পম্পাস
(C) ভেন্ড
(D) সেলভা
Ans: (D) সেলভা
- লজ্জাবতী লতা হলো –
(A) অক্সিলোফাইট
(B) লিথোফাইট
(C) স্যামোফাইট
(D) চ্যাসমোফাইট — জাতীয় উদ্ভিদ
Ans: (C) স্যামোফাইট
- উভচর জলজ উদ্ভিদের উদাহরণ হলো –
(A) হাইড্রিলা
(B) মস
(C) পদ্ম
(D) ফার্ন
Ans: (C) পদ্ম
- ‘ মেসোথার্মস ’ উদ্ভিদের উদাহরণ হলো—
(A) মস
(B) পাইন
(C) সেগুন
(D) আয়রন উদ্ভ
Ans: (C) সেগুন
- নিউম্যাটাফোর হলো-
(A) স্তম্ভমূল
(B) ঠেসমূল
(C) গুচ্ছমূল
(D) শ্বাসমূল
Ans: (D) শ্বাসমূল
- আলোকবিদ্বেষী উদ্ভিদ হলো –
(A) সূর্যমুখী
(B) জবা
(C) গন্ধরাজ
(D) পান
Ans: (D) পান
- আলোকপ্রেমী উদ্ভিদ হলো
(A) পান
(B) মানিপ্ল্যান্ট
(C) ফার্ন
(D) সূর্যমুখী
Ans: (D) সূর্যমুখী
- স্বাভাবিক উদ্ভিদ বণ্টনে সর্বাধিক প্রভাব ফেলে—
(A) বৃষ্টিপাত
(B) উয়তা
(C) আর্দ্রতা
(D) বায়ুপ্রবাহ
Ans: (A) বৃষ্টিপাত
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ৩ : জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র হওয়ার কারণ কী ? জলজ উদ্ভিদ কত প্রকার ও কী কী ?
Ans: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অন্তর্গত দেশগুলিতে বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় 75 % শীতকালে হয়ে থাকে । এর কারণগুলি হলো—
1) গ্রীষ্মকালে : উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু মহাদেশের পূর্বাংশে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে পশ্চিম প্রাস্তে এলে জলীয় বাষ্প না থাকায় বৃষ্টিপাত গ্রীষ্মকালে হয় না । আবার নিরক্ষীয় নিম্নচাপ ও মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় উচ্চচাপের শীতল ও শুষ্ক বায়ুর আগমন হওয়ায় বায়ু সংকুচিত হয় এবং তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায় । ফলে গ্রীষ্ম উয় ও শুষ্ক হয় ।
2) শীতকালে : দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে পার্বত্য অঞ্চলে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় । ফলে শীতকাল আর্দ্র ও শীতল হয় ।
জলজ উদ্ভিদ : জলজ উদ্ভিদকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা—
1) ভাসমান জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের পাতা জলের ওপরে ভেসে থাকে তাদের ভাসমান জলজ উদ্ভিদ বলে ।
2) নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের সমগ্র অংশটাই জলে ডুবে থাকে , তাদের নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ বলে ।
3) উভচর জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের মূল জলের নীচের মাটিতে থাকে এবং কাণ্ড জলের ওপরে থাকে , তাদের উভচর জলজ উদ্ভিদ বলে ।
- স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর সূর্যালোকের প্রভাব লেখো । জলজ উদ্ভিদের কাণ্ডের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans: 1) স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর সূর্যালোকের প্রভাব : পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস হলো সূর্যালোক । এই সূর্যালোকের উপর উদ্ভিদের জন্ম – বৃদ্ধি – অস্তিত্ব প্রভৃতি নির্ভর করে ।
যথা — 1) সূর্যালোকের সাহায্যে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় জল ও কার্বন ডাই – অক্সাইড থেকে তাদের খাদ্য তৈরি করে । 2) বীজের অঙ্কুরোদ্গম থেকে শুরু করে উদ্ভিদের ফুল , ফল ও পাতা প্রভৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে সূর্যালোক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । 3) সূর্যালোকের মাধ্যমে উদ্ভিদের শ্বসনের হ্রাস – বৃদ্ধি ঘটে । 4) দিনের বেলায় সূর্যালোকের প্রভাবে উদ্ভিদের পত্ররন্ধ্র উন্মুক্ত থাকে বলে বাষ্পমোচনের হার বেশি হয় । 5) সূর্যালোকের প্রকৃতি অর্থাৎ লাল , নীল , অতিবেগুনি রশ্মির দ্বারা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশলাভ হয় ।
জলজ উদ্ভিদের কাণ্ডের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য হলো—
1) কাণ্ডে কিউটিকল থাকে না ।
2) কাণ্ডের ত্বক একস্তরীয় যা প্যারেনকাইমা বা কোলেনকাইমা দিয়ে গঠিত ।
3) কাণ্ডের কর্টেক্স প্যারেনকাইমা দিয়ে গঠিত এবং তাতে বায়ুগহ্বর থাকে ।
- বিভিন্ন প্রকার মরু উদ্ভিদের বিবরণ দাও । হাইড্রোফাইটের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans: মরু উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ : জাঙ্গল বা মরু উদ্ভিদ বা Xerophytes উদ্ভিদকে মূলত চার ভাগে ভাগ করা যায় । যথা –
1) খরা সহিহ্ উদ্ভিদ : যে – সমস্ত উদ্ভিদ মরু অঞ্চলে দীর্ঘ খরা সহ্য করে বেঁচে থাকে , তাদের খরা সহিয়ু উদ্ভিদ বলে । যেমন — বাবলা , আকন্দ ইত্যাদি ।
2) খরা প্রতিরোধী উদ্ভিদ : যে সমস্ত উদ্ভিদ দীর্ঘসময় ধরে খরাকে প্রতিরোধ করে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকে , তাদের খরা প্রতিরোধী উদ্ভিদ বলে । যেমন — ফণীমনসা , ক্যাকটাস ইত্যাদি ।
3) খরা এড়ানো উদ্ভিদ : যে – সমস্ত উদ্ভিদ জলের অভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জীবনচক্র সম্পন্ন করে , তাদের খরা এড়ানো উদ্ভিদ বলে । •
4) খরা পলায়নি উদ্ভিদ : যে সমস্ত উদ্ভিদ মাটির নীচের মূল অংশ থেকে জন্মায় তাদের খরা পলায়নি উদ্ভিদ বলে । আর্দ্র – ক্রান্তীয় ও জলজ
হাইড্রোফাইট উদ্ভিদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য : 1) নাতিশীতোহ্ণ জলবায়ুতে জন্মায় । 2) জলজ উদ্ভিদের মূলগুলি সুগঠিত হয় না । উদ্ভিদের কাণ্ড নরম ও দুর্বল প্রকৃতির । 3) জলজ উদ্ভিদের পাতাগুলির আকার বড়ো । 4) জলজ উদ্ভিদের প্রস্বেদন প্রক্রিয়া বেশি ।
পরিচ্ছেদ ৪ : জলবায়ু পরিবর্তন
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ৪ : জলবায়ু পরিবর্তন :
- এল নিনোর প্রভাবে কোথায় বেশি বৃষ্টিপাত হয় ?
Ans: এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ আমেরিকার পেরু উপকূলে ও আটকামা মরুভূমিতে বৃষ্টিপাত হয় ।
- ভারতের একটি ধসপ্রবণ রাজ্যের নাম লেখো ।
Ans: ভারতের সর্বাধিক ধসপ্রবণ রাজ্য – হিমাচল প্রদেশ , উত্তরাখণ্ড । অধিক ধসপ্রবণ রাজ্য — অরুণাচল প্রদেশ , মিজোরাম ।
- মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে বছরে বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন কেমন হয় ?
Ans: গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও শীতকালে উত্তর – পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় । 4. বায়ুমণ্ডলে CO , বৃদ্ধির প্রধান উৎস কী ?
Ans: বায়ুমণ্ডলে CO , বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ।
- DART- এর পুরো কথাটি কী ?
Ans: DART -এর পুরো কথাটি হলো- Deep Ocean Assessment and Reporting of Tsunami .
- কোপেনের জলবায়ু শ্রেণি বিভাগে BS জলবায়ু বলতে কী বোঝো ?
Ans: কোপেনের জলবায়ু শ্রেণিবিভাগে BS জলবায়ু বলতে মরুপ্রায় বা স্তেপ জলবায়ুকে বোঝানো হয় ৷
- সুনামি কী ?
Ans: বিশালাকার সামুদ্রিক ঢেউকে জাপানি ভাষায় সুনামি বলে । সমুদ্রগর্ভে ভূমিকম্পের মাত্রা ৪ অতিক্রম করলে সুনামির সৃষ্টি হয় ।
- ভাস্কুলার কলা কাকে বলে ?
Ans: জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলা দিয়ে গঠিত বিশেষ ধরনের উদ্ভিদকলা যা উদ্ভিদদেহে জল ও খাদ্যের পরিবহণ করে , তাকে ভাস্কুলার কলা বলে ।
- অধমূল কী ?
Ans: অনেক সময় লবণাম্বু উদ্ভিদের কাণ্ডের নীচের দিকে চারদিক থেকে তক্তার মতো চ্যাপটা অংশ বের হয় এবং মাটিতে ঢুকে যায় , একে বলা হয় অধিমূল ৷
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – পরিচ্ছেদ ৪ : জলবায়ু পরিবর্তন | উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Question and Answer :
- গ্রিনহাউস এফেক্ট ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং কী ? এর কারণ ও প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: গ্রিনহাউস এফেক্ট : শীতপ্রধান দেশে অত্যধিক ঠান্ডার হাত থেকে উদ্ভিদকে বাঁচাতে কাচের ঘর তৈরি করা হয় । এতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় কিন্তু বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান যথা — কার্বন ডাই – অক্সাইড , মিথেন , ক্লোরোফ্লুরোকার্বন , নাইট্রাস অক্সাইড , ওজোন , জলীয় বাষ্প প্রভৃতি যুক্ত হয়ে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে , একেই গ্রিনহাউস এফেক্ট বা প্রভাব বলে ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং : সাধারণত বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইড ( CO ) , মিথেন ( CH , ) , নাইট্রাস অক্সাইড ( NO ) , ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( CFC ) প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীর গড় উয়তা বৃদ্ধি বা উয়তার ক্রমবর্ধমান অবস্থাকে সাধারণত Global Warming বা বিশ্ব উয়ায়ন বলে ।
বিশ্ব উন্নায়নের কারণ :
1) জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইডের ( CO ) পরিমাণ বৃদ্ধি । 2) কারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে বায়ুমণ্ডলে CO , এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
3) জ্বালানি কাঠ দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে CO- এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
4) পচনশীল আবর্জনা , গবাদি পশুর গোবর , জলাভূমি , ধানখেত ইত্যাদি থেকে নির্গত গ্যাস থেকে মিথেনের ( CH ) পরিমাণ বৃদ্ধি ।
5) রেফ্রিজারেশন , হিমঘর , রং শিল্প , ইলেকট্রনিক শিল্প প্রভৃতি থেকে বায়ুমণ্ডলে ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের ( CFC ) পরিমাণ বৃদ্ধি ।
6) পৃথিবীর জনসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস ও বর্জ্য বৃদ্ধিতে বায়ুমণ্ডলে CO- এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
বিশ্ব উন্নায়নের ফলাফল :
1) জলবায়ুর পরিবর্তন : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধির ফলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর নানা রকমের পরিবর্তন ঘটবে । যেমন — বন্যা , খরা , দীর্ঘায়িত গ্রীষ্মকাল , বজ্রপাত , বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় – বৃষ্টি , সাইক্লোন , টর্নেডো প্রভৃতির ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে ।
2) বরফ গলন : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধির ফলে কুমেরু অঞ্চলের গভীর পুরু বরফের স্তর এবং অন্যান্য মহাদেশীয় ও পার্বত্য হিমবাহ গলতে থাকবে এবং সমুদ্রজলপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধি ঘটবে ।
3) সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি : বিশ্ব উয়ায়নে মেরুদেশীয় বরফ গলনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটবে , কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে , সামুদ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটবে ।
4) দাবানলের সৃষ্টি : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধি পেলে গাছে গাছে ঘষা লেগে বারে বারে দাবানল সৃষ্টির মাধ্যমে বনভূমি নষ্ট হবে ।
5) জৈববৈচিত্র্য হ্রাস : পৃথিবীর গড় উয়তা বৃদ্ধির কারণে অসংখ্য প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনহানি ঘটবে এবং জৈববৈচিত্র্য বিপন্ন হবে ।
- গ্রিনহাউসের প্রভাব বর্ণনা করো ।
Ans: গ্রিনহাউস প্রভাব :
1) বায়ুমণ্ডলের গড় উয়তা বৃদ্ধি : কলকারখানা , যানবাহন প্রভৃতি থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে কার্বন ডাই – অক্সাইড – এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে । •
2) জলবায়ু পরিবর্তন : ক্রমাগত উন্নতা বৃদ্ধির ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাবে এবং খরার প্রকোপ বেড়ে যাবে । কোথাও অতিবৃষ্টি আবার কোথাও অনাবৃষ্টি দেখা দেবে ।
3) সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি : তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে জমাটবাঁধা বরফের বিশাল শিলাস্তূপ গলে গিয়ে সামুদ্রিক জলের প্রসার ঘটবে । ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে ।
4) কৃষি উৎপাদন ও পানীয় জলের হ্রাস : উয়তা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটবে । তার ফলে কৃষিজমির সংকোচন ঘটবে , ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাবে । খাল , বিল , পুকুর , নদী প্রভৃতি শুকিয়ে যাবে উষ্মতা বৃদ্ধির ফলে । ফলস্বরূপ প্রাণীকুল গভীর জলসংকটে পড়বে ।
5) অরণ্যের ধ্বংস ও জীববৈচিত্র্যের সংকট : উন্নতা বৃদ্ধির ফলে দাবানলের সৃষ্টি , মরুভূমির সম্প্রসারণ প্রভৃতি কারণে অরণ্য ধ্বংস হবে এবং জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস লক্ষ করা যাবে ।