MCQ | প্রশ্ন ও উত্তর |
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের রচয়িতা হলেন —
(A) শম্ভু মিত্র
(B) রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত
(C) মনোজ মিত্র
(D) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
Ans: (D) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের চরিত্র দুটির নাম –
(A) রজনী চট্টোপাধ্যায় ও কালীনাথ সেন
(B) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ও কালীনাথ দে
(C) রজনীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও কালীনাথ সেন
(D) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ও কালীনাথ সেন
Ans: (D) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ও কালীনাথ সেন
- ‘ নানা রঙের দিন ’ একাঙ্ক নাটকটির উৎস হল –
(A) চেখভের ‘ সোয়ান সং
(B) ইবসেনের ‘ পিপলস এনিমি ’
(C) চেখভের ‘ চেরি অর্চাড ’
(D) ব্রেখটের ‘ থ্রি পেনিজ অপেরা
Ans: (A) চেখভের ‘ সোয়ান সং
- ‘ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন—
(A) ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে
- অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নানা রঙের দিন ‘ একাঙ্ক নাটকটি কত খ্রিস্টাব্দে প্রথম মঞ্চস্থ হয় ?
(A) ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকটিতে চরিত্র আছে—
(A) একটি
(B) তিনটি
(C) দুটি
(D) পাঁচটি
Ans: (C) দুটি
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের নায়ক যে থিয়েটারে অভিনয় করতেন , তা হল –
(A) শখের থিয়েটার
(B) গ্রুপ থিয়েটার
(C) পেশাদারি থিয়েটার
(D) অফিস থিয়েটার
Ans: (C) পেশাদারি থিয়েটার
- মঞ্চের মাঝখানে ওলটানো ছিল —
(A) একটি মোমবাতি
(B) একটি ফুলদানি
(C) একটি টুল
(D) একটি সোফা
Ans: (C) একটি টুল
- রজনীকান্ত কোন্ ঐতিহাসিক চরিত্রের পোশাকে ফাঁকা মঞ্চে প্রবেশ করেন ?
(A) ঔরঙ্গজীবের
(B) মহম্মদের
(C) দিলদারের
(D) শাজাহানের
Ans: (C) দিলদারের
- দিলদারের পোশাক পরিহিত রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ছিল—
(A) মোমবাতি
(B) প্রদীপ
(C) ধূপ
(D) জ্বলন্ত মোমবাতি
Ans: (D) জ্বলন্ত মোমবাতি
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় দিলদারের পোশাকে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন—
(A) স্টেজে
(B) দর্শকাসনে
(C) ব্যালকনিতে
(D) গ্রিনরুমে
Ans: (D) গ্রিনরুমে
- ‘ সব পাত্রপাত্রী ভোভা ‘ — নাটকে যে দুজন পাত্রপাত্রীর নাম । বলা হয়েছে , তারা হল—
(A) শাজাহান – মুমতাজ
(B) শাজাহান – নূরজাহান
(C) মুমতাজ – ঔরঙ্গজীব
(D) শাজাহান – জাহানারা
Ans: (D) শাজাহান – জাহানারা
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের অভিনেতা রজনীকান্তের বয়স —
(A) ৫০ বছর
(B) ৬৮ বছর
(C) ৬০ বছর
(D) ৭০ বছর
Ans: (B) ৬৮ বছর
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সেদিনের অভিনয় ছিল —
(A) বখতিয়ারের চরিত্রে
(B) দিলদারের চরিত্রে
(C) ঔরঙ্গজীবের চরিত্রে
(D) শাজাহানের চরিত্রে
Ans: (B) দিলদারের চরিত্রে
- ‘ হাসছেন তিনি ।’— তাঁর হাসির কারণ—
(A) রাত্রির ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহ
(B) দর্শকের তুমুল করতালি
(C) গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়া
(D) রামব্রীজের মাতাল হয়ে যাওয়া
Ans: (C) গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়া
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে প্রম্পটার কালীনাথ সেন – এর বয়স হয়েছিল—
(A) ৬৫ বছর
(B) ৫৮ বছর
(C) ৬২ বছর
(D) ৬০ বছর
Ans: (D) ৬০ বছর
- ‘ এত টানলে কি আর কাণ্ডজ্ঞান থাকে ? ’ বলতে বোঝানো হয়েছে –
(A) অতিরিক্ত বয়সকে
(B) অতিরিক্ত খাওয়াকে
(C) অতিরিক্ত মদ্যপানকে
(D) অতিরিক্ত ধূমপানকে
Ans: (C) অতিরিক্ত মদ্যপানকে
- ‘ বাঃ । বাঃ বুঢ়ঢ়া ।’— এখানে বুঢ়ঢ়া হলেন—
(A) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়
(B) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
(C) কালীনাথ সেন
(D) রামব্রীজ
Ans: (A) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়
- ‘ আরে গেল কোথায় লোকটা ? ‘ — এখানে ‘ লোকটা ‘ হল –
(A) রজনীকান্ত
(B) কালীনাথ
(C) দিলদার
(D) রামব্রীজ
Ans: (D) রামব্রীজ
- ‘ কোথায় ধেনো টেনে পড়ে আছে ব্যাটা ।’— ‘ ধেনো ‘ হল —
(A) এক রকমের গাছ
(B) এক রকমের মদ
(C) এক রকমের বীজ
(D) এক রকমের ফল
Ans: (B) এক রকমের মদ
- ‘ আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়া গেছে …’— পাগলের সঙ্গে কাকে তুলনা করা হয়েছে ?
(A) কালীনাথ
(B) রজনীকান্ত
(C) রামব্রীজ
(D) বাসিনী
Ans: (C) রামব্রীজ
- ‘ মুখের ভেতরটা যেন ____।’
(A) অডিটোরিয়াম
(B) ফাঁকা মঞ্চ
(C) খেলার মাঠ
(C) স্টেডিয়াম
Ans: (A) অডিটোরিয়াম
- রজনীবাবু তার চুলে ডেইলি কতটা করে কলপ লাগান ?
(A) হাফশিশি
(B) একশিশি
(C) দেড় শিশি
(D) দুই শিশি
Ans: (A) হাফশিশি
- ‘ আমি লাস্ট সিনে প্লে করব না ভাই , আমাকে ছেড়ে দিন । – এখানে ‘ লাস্ট সিন ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(A) দিলদারের অভিনয়ের শেষ দৃশ্য
(B) শাজাহান নাটকের শেষ দৃশ্য
(C) নাটকের শেষ দৃশ্য
(D) মৃত্যুর সময়
Ans: (D) মৃত্যুর সময়
- ‘ ওপারের দূত উইংসে রেডি ‘ — এখানে ‘ ওপারের দূত ‘ হল—
(A) রামব্রীজ
(B) কালীনাথ
(C) দিলদার
(D) মৃত্যুদূত
Ans: (D) মৃত্যুদূত
- ‘ এ হচ্ছে সবই মাতালের কারবার ।’— কোন্ ঘটনার জন্য এমন মন্তব্য ?
(A) প্রেক্ষাগৃহে একা একা পায়চারি করার পরিপ্রেক্ষিতে
(B) পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনে প্রথমবার মাঝরাতে একা স্টেজে দাঁড়ানো
(C) গ্রিনরুমের চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়া
(D) মাঝরাতে ট্যাক্সি ডেকে একা একা বাড়ি ফেরা
Ans: (B) পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনে প্রথমবার মাঝরাতে একা স্টেজে দাঁড়ানো
- ‘ ওর দেয়ালে কালো কালো অঙ্গারে লেখা আছে— কী লেখা আছে ?
(A) হৃদয়ের যন্ত্রণার কথা
(B) জীবনের শেষ কথাগুলো
(C) জীবনের ভালোলাগার কথা
(D) জীবনের আরম্ভের কথা
Ans: (B) জীবনের শেষ কথাগুলো
- ‘ সব মিলিয়ে যেন একটা শ্মশান’— রজনী চাটুজ্জের শ্মশান বলে মনে হয়েছিল —
(A) প্রেক্ষাগৃহকে
(B) ফাঁকা অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহকে
(C) ফাঁকা গ্রিনরুমকে
(D) ফাঁকা মঞ্চকে
Ans: (B) ফাঁকা অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহকে
- সব মিলিয়ে যেন আয়োজন করে রেখেছে –
(A) নিঃঝুম ঘুমের
(B) পরবর্তী নাটকের
(C) শাজাহানের পরবর্তী দৃশ্যের
(D) মৃত্যুর নিঃঝুম ঘুমের
Ans: (D) মৃত্যুর নিঃঝুম ঘুমের
- সব ভূতুড়ে বাড়ির মতো খাঁ খাঁ করার কারণ—
(A) লোডশেডিং
(B) জনমানবহীন অন্ধকার
(C) অন্ধকারে কাউকে দেখা যাচ্ছে না
(D) চোখের দৃষ্টি শক্তি অভাব
Ans: (B) জনমানবহীন অন্ধকার
- কালীনাথ মিথ্যে কথা বলেননি কারণ —
(A) রজনী চাটুজ্জে মদ্যপান করেছেন
(B) রজনী চাটুজ্জে বৃদ্ধ মানুষ
(C) রজনী চাটুজ্জে বড়ো অভিনেতা
(D) রজনী চাটুজ্জে বামুন মানুষ
Ans: (D) রজনী চাটুজ্জে বামুন মানুষ
- ‘ এ কথাটা মালিকের কানে তুলবেন না চাটুজ্জেমশাই’ কোন কথাটা ?
(A) গ্রিনরুমে ঘুমানোর কথা
(B) ফাঁকা মঞ্চে অভিনয়ের কথা
(C) চাটুজ্জেমশাইয়ের সঙ্গে বক্তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা
(D) চাটুজ্জেমশাইকে বাড়ি পৌঁছে দিতে চাওয়ার কথা
Ans: (A) গ্রিনরুমে ঘুমানোর কথা
- এ কথাটা মালিকের কানে তুলবেন না চাটুজ্জেমশাই’— কারণ—
(A) মালিক দুঃখ পাবেন
(B) মালিক তাঁর মাইনে কমিয়ে দেবেন
(C) বক্তা একেবারে বেঘোরে মারা পড়বেন
(D) মালিক তাকে তাড়িয়ে দেবেন
Ans: (C) বক্তা একেবারে বেঘোরে মারা পড়বেন
- সেদিনের শো – তে রজনী চাটুজ্জে ক্ল্যাপ পেয়েছিলেন—
(A) পাঁচটা
(B) আটটা
(C) সাতটা
(D) দশটা
Ans: (C) সাতটা
- ‘ মরা হাতি সোয়া লাখ ।’- বলেছিল এক দর্শক –
(A) বখতিয়ারের চরিত্রে রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে
(B) শাজাহানের চরিত্রে রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে
(C) দিলদারের চরিত্রে রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে
(D) আলমগিরের চরিত্রে রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে
Ans: (C) দিলদারের চরিত্রে রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে
- বাড়ি চলুন , আপনাকে আমি বাড়ি পৌঁছে দেব ‘ — বলেছিল—
(A) রামব্রীজ
(B) কালীনাথ
(C) রজনী চাটুজ্জে
(D) এক দর্শক
Ans: (B) কালীনাথ
- রজনী চাটুজ্জের মতে দর্শকের কাছে একজন অভিনেতার কদর —
(A) সারাজীবন
(B) অভিনয়ের পরে
(C) মঞ্চে ওঠার আগে
(D) মঞ্চে অভিনয়ের সময়
Ans: (D) মঞ্চে অভিনয়ের সময়
- রজনী চাটুজ্জে , ‘ ধু – ধু করা দুপুরে জ্বলন্ত মাঠে বাতাস ‘ – এর সঙ্গে নিজের তুলনা করেছেন—
(A) একাকিত্ব বোঝাতে
(B) উত্তাপ বোঝাতে
(C) বেপরোয়া স্বভাব বোঝাতে
(D) জীবনের ঝড় – ঝাপটা বোঝাতে
Ans: A) একাকিত্ব বোঝাতে
- আপনার মতো লোকের এত দুঃখ চাটুজ্জেমশাই ‘ – এ দুঃখের কারণ—
(A) রজনী চাটুজ্জের অভিনয় কেউ দেখে না
(B) রজনী চাটুজ্জে বৃদ্ধ হয়েছেন
(C) রক্তমাংসের রজনী চাটুজ্জের একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতা
(D) রজনী চাটুজ্জের শারীরিক অসুস্থতা
Ans: (C) রক্তমাংসের রজনী চাটুজ্জের একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতা
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের সমস্ত খাতাখানাকে চোখের সামনে মেলে ধরেছিল —
(A) কালীনাথ সেন
(B) রামব্রীজ
(C) অন্ধকার গ্রিনরুম
(D) থিয়েটারের অন্ধকার দেয়াল
Ans: D) থিয়েটারের অন্ধকার দেয়াল
- থিয়েটারের দেয়ালে দেয়ালে অঙ্গারের গভীর কালো অক্ষরে লেখা –
(A) রজনী চাটুজ্জের জীবনের পঁয়ত্রিশটা বছর
(B) রজনী চাটুজ্জের জীবনের পঁয়তাল্লিশটা বছর
(C) রজনী চাটুজ্জের জীবনের আটষট্টিটা বছর
(D) রজনী চাটুজ্জের জীবনের একুশটা বছর
Ans: (B) রজনী চাটুজ্জের জীবনের পঁয়তাল্লিশটা বছর
- ওরই মধ্যে কোথায় যেন আগুন লুকিয়েছিল ‘ — এখানে যার কথা বলা হয়েছে , সে একজন –
(A) অভিনেত্রী
(B) মেয়ে
(C) নায়িকা
(D) অভিনেতা
Ans: (B) মেয়ে
- ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর সে’- ‘ ‘ সে ‘ হল রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের—
(A) প্রাক্তন প্রেমিকা
(B) প্রাক্তন বন্ধু
(C) অচেনা এক নারী
(D) প্রেমিকা
Ans: (A) প্রাক্তন প্রেমিকা
- ও শুধু আমাকে আলমগিরের পার্ট করতে দেখেছিল ‘ — এখানে । যার কথা বলা হয়েছে , সে হল রজনী চাটুজ্জের –
(A) প্রেমিকা
(B) আত্মীয়
(C) প্রতিবেশীঘ
(D) অনুরাগী
Ans: (A) প্রেমিকা
- ‘ অন্ধকার রাতে একা একা ভাবলে মনে হত সে যেন —
(A) পশ্চিম আকাশে সূর্যাস্তের মেঘ
(B) অচেনা দিনের আলো
(C) লাল সিঁদুরে মেঘ
(D) এক পাহাড়ি ঝরনা
Ans: (B) অচেনা দিনের আলো
- ‘ আর একদিন তাকে দেখে মনে হয়েছিল—
(A) মোমের আলোর চেয়েও পবিত্র
(B) চাঁদের আলোর চেয়েও স্নিগ্ধ
(C) ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর
(D) গোধূলির আলোর চেয়েও মায়াবী
Ans: (C) ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মেয়েটির চুলগুলির সঙ্গে তুলনা করেছেন –
(A) ভোরের সবুজ গাছের
(B) সমুদ্রের ঢেউয়ের
(C) অন্ধকার রাত্রির
(D) অন্ধকার পাহাড়ের
Ans: (B) সমুদ্রের ঢেউয়ের
- ” মরে যাব তবু ভুলব না ‘ — কী ?
(A) মেয়েটির অদ্ভুত হাসি
(B) মেয়েটির অদ্ভুত চেয়ে থাকা
(C) মেয়েটির অদ্ভুত কান্না
(D) মেয়েটির অদ্ভুত কালো চুল
Ans: (B) মেয়েটির অদ্ভুত চেয়ে থাকা
- ‘ এসব বাজে কথায় আমি বিশ্বাস করি না ।’— ‘ বাজে ‘ কথাটি কী ?
(A) ‘ হ্যাঁ , আমি ওকে চিনি
(B) ‘ তুমি থিয়েটারওয়ালা একটা নকলনবীশ ‘
(C) নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প
(D) ‘ একটা অস্পৃশ্য ভাঁড় ‘
Ans: (C) নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প
- ‘ কিন্তু কোনো সামাজিক সম্মান তুমি পাবে না ।’- রজনী চাটুজ্জে ‘ সামাজিক সম্মান নেই বলে মনে করেন —
(A) গরিব লোকেদের
(B) শিক্ষকদের
(C) আইনজ্ঞদের
(D) নাটকের অভিনেতাদের
Ans: (D) নাটকের অভিনেতাদের
- ‘ তুমি থিয়েটারওয়ালা – একটা নকলনবীশ — একটা অস্পৃশ্য ভাঁড় ‘ বলে মনে করে –
(A) পাবলিক মহোদয়
(B) মধ্যবিত্ত লোক
(C) রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়
(D) ধনী লোকেরা
Ans: (A) পাবলিক মহোদয়
- ‘ আমারও আর কিছু ভালো লাগত না ‘ — কারণ—
(A) বার্ধক্যের অসুখ
(B) মেয়েটি কোথায় গেল কী হল কে জানে
(C) দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তা কমে যাওয়া
(D) আবোলতাবোল সব পার্ট করার অসুবিধা
Ans: (B) মেয়েটি কোথায় গেল কী হল কে জানে
- ‘ আবোলতাবোল সব পার্ট করতে লাগলাম ‘ — কারণ—
(A) অতিরিক্ত লোভ
(B) টাকার প্রয়োজনীয়তা
(C) প্রেম ভেঙে যাওয়া
(D) নাটকের প্রতি বিতৃয়া
Ans: (C) প্রেম ভেঙে যাওয়া
- ‘ বাঃ বাঃ দারুণ । কী ট্যালেন্ট ।’- রজনী চাটুজ্জের অভিনয় দেখে এমন বলেছিল –
(A) সাধারণ পাবলিক
(B) একটি মেয়ে
(C) নাট্য সমালোচকের দল
(D) জ্ঞানী ব্যক্তিদের দল
Ans: (D) জ্ঞানী ব্যক্তিদের দল
- ‘ আস্তে আস্তে বয়স বাড়ল ‘ — ফলে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের—
(A) গলার কাজ নষ্ট হল ও চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে গেল
(B) গলার কাজ নষ্ট হল ও চরিত্রকে বুঝে ফুটিয়ে তোলবার ক্ষমতা নষ্ট হল
(C) ভালো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ কমে গেল
(D) চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলবার ক্ষমতা বেড়ে গেল
Ans: (B) গলার কাজ নষ্ট হল ও চরিত্রকে বুঝে ফুটিয়ে তোলবার ক্ষমতা নষ্ট হল
- থিয়েটারের দেয়ালে অঙ্গারের কালো কালো জ্বলন্ত অক্ষরে লেখা ছিল —
(A) প্রেমের অপমৃত্যুর দুঃসংবাদ
(B) প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি
(C) রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ
(D) রজনী চাটুজ্জের অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ
Ans: (C) রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ
- ঝলসে দেবে আমাকে ‘ রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে ঝলসে দেবে –
(A) রজনী চাটুজ্জে
(B) প্রম্পটার কালীনাথ
(C) বুড়ো রজনী চাটুজ্জে
(D) রামব্রীজ
Ans: (C) বুড়ো রজনী চাটুজ্জে
- ‘ পুত্র । রাজনীতি বড়ো কূট ।’— যাঁর উদ্দেশ্যে এ কথাটি বলা হয়েছিল , তিনি হলেন —
(A) ঔরঙ্গজীব
(B) মোরাদ
(C) দারা সিকোহ
(D) মহম্মদ
Ans: (D) মহম্মদ
- ‘ রাজনীতি বড়ো কূট ।’— কথাটি বলেছিলেন —
(A) রজনী
(B) কালীনাথ
(C) মহম্মদ
(D) মোরাদ
Ans: (A) রজনী
- ‘ ওই তারা আবার আমায় ঘিরে নাচছে ‘ — ‘ তারা ‘ হল —
(A) দারার শির , সুজার দেহ ও মোরাদের কবন্ধ
(B) দারার দেহ , সুজার শির ও মোরাদের কবন্ধ
(C) দারার শির , সুজার কবন্ধ ও মোরাদের দেহ
(D) দারার শির , সুজার দেহ , মোরাদের মস্তক
Ans: B) দারার দেহ , সুজার শির ও মোরাদের কবন্ধ
- ‘ আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি কালীনাথ ।’— রজনীকান্ত স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন যে —
(A) তাঁর বয়স হয়েছে
(B) তাঁর অভিনয় ক্ষমতা এখনও অটুট
(C) প্রতিভার মৃত্যু নেই
(D) কিছুই চিরদিন থাকে না
Ans: (C) প্রতিভার মৃত্যু নেই
- ‘ আজ তবে হাসো , কথা কও , —সুজা শেষ যুদ্ধযাত্রার আগে কথাগুলো বলেছিলেন—
(A) পিয়ারাবানুকে
(B) জাহানারাকে
(C) নূরজাহানকে
(D) মুমতাজকে
Ans: (A) পিয়ারাবানুকে
- ‘ তোমার প্রেমে আমাকে আবৃত করে দাও ।’— কথাটি বলেছে–
(A) সুজা
(B) মোরাদ
(C) দারা
(D) পিয়ারাবানু
Ans: (A) সুজা
- ‘ ঠিক পুরোনো দিনের মতোই আছেন আপনি ।’— কালীনাথ যা দেখে এ সিদ্ধান্তে এসেছেন , তা হল —
(A) রজনীকান্তের স্মৃতিশক্তি
(B) রজনীকান্তের আচরণ
(C) রজনীকান্তের স্বরক্ষেপণ
(D) রজনীকান্তের সামগ্রিক প্রতিভা
Ans: (D) রজনীকান্তের সামগ্রিক প্রতিভা
- কার বার্ধক্য , একাকিত্ব , রোগ কিংবা মৃত্যুভয় নেই ?
(A) যে ভালো অভিনেতা
(B) যে সৎভাবে জীবনযাপন করে
(C) যে শিল্পকে ভালোবাসে
(D) যে এগিয়ে চলায় বিশ্বাসী
Ans: (C) যে শিল্পকে ভালোবাসে
- ‘ তাও আর বছর কয়েক পরে মানাবে না আমাকে – কোন্ চরিত্রের ভূমিকায় মানাবে না ?
(A) ঔরঙ্গজীব
(B) শাজাহান
(C) দিলদার
(D) মোরাদ
Ans: (C) দিলদার
- Farewell the tranquil mind’- এই সংলাপটি যে – নাটকের , সেটি হল —
(A) কিং লিয়ার
(B) ওথেলো
(C) ম্যাকবেথ
(D) হ্যামলেট
Ans: (B) ওথেলো
- Life’s but a walking shadow’- এই সংলাপটি যে – নাটকের , সেটি হল—
(A) ম্যাকবেথ
(B) কিং লিয়ার
(C) ওথেলো
(D) হ্যামলেট
Ans: (A) ম্যাকবেথ
( গ্র হ্যামলেট
- A horse ! horse ! My kingdom for a horse’ উদ্ধৃত সংলাপটি কোন্ নাটক থেকে গৃহীত হয়েছে—
(A) ম্যাকবেথ
(B) রিচার্ড দ্য থার্ড
(C) ম্যাকবেথ
(D) জুলিয়াস সিজার
Ans: (B) রিচার্ড দ্য থার্ড
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের শেষ দিকে রজনীকান্ত কোন্ ইংরেজি নাটকের সংলাপ উচ্চারণ করেছেন ?
(A) ওথেলো
(B) জুলিয়াস সিজার
(C) ওথেলো
(D) মার্চেন্ট অফ ভেনিস
Ans: (A) ওথেলো
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | নানা রঙের দিন (নাটক) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Nana Ronger Din Question and Answer :
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ কী ধরনের নাটক ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা রঙের দিন ‘ একটি একাঙ্ক নাটক ।
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকটি কোন বিদেশি নাটকের অনুপ্রেরণায় লিখিত ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ , আস্তন চেখভের ‘ সোয়ান সং ‘ নাটকের অনুপ্রেরণায় লেখা হয়েছিল ।
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ -এর ‘ চরিত্রলিপি ‘ বয়সসহ উল্লেখ করো ।
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে চরিত্র দুটি ও তাদের বয়স হল । বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ( বয়স ৬৮ ) এবং প্রম্পটার কালীনাথ সেন ( বয়স ৬০ ) ।
- নাটকে ‘ প্রম্পটার ‘ – এর কাজ কী ?
Ans: নাটকে প্রম্পটার ‘ – এর কাজ হল উইংসের পাশে বসে অভিনেতাদের সংলাপের সূত্র বা খেই ধরিয়ে দেওয়া ।
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের প্রারম্ভে মঞ্চসজ্জার কীরকম বর্ণনা দেওয়া আছে ?
অথবা , নানা রঙের দিন ‘ নাটকের প্রারম্ভে মঞ্চসজ্জার বিবরণ আছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।
Ans: নানা রঙের দিন ‘ নাটকের পটভূমিকায় রয়েছে একটি পেশাদারি থিয়েটারের ফাঁকা মঞ্চ । সেখানে ছড়ানো ছেটানো রয়েছে নাটকের অবশিষ্ট দৃশ্যপট , জিনিসপত্র আর যন্ত্রপাতি । মঞ্চের মাঝখানে একটি টুল ওলটানো রয়েছে ।
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কীভাবে মঞ্চে প্রবেশ করেছিলেন ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় দিলদারের পোশাক গায়ে হাসতে হাসতে হাতে জ্বলন্ত মোমবাতি নিয়ে মঞে প্রবেশ করেছিলেন ।
- ‘ সব পাত্রপাত্রী ভোঁঙা ‘ — তখন মঞ্চে কে প্রবেশ করেন ?
Ans: ‘ দিলদার ’ – রূপী রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ঘুম ভেঙে উঠে দেখেন শাজাহান – জাহানারা প্রভৃতি নাটকের পাত্রপাত্রীরা সবাই চলে গেছে । এ সময় তিনি মঞ্চে প্রবেশ করেন ।
- ‘ এত টানলে কি আর কান্ডজ্ঞান থাকে ? ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের অপরিমিত মদ্যপানের কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ বাঃ বাঃ বুঢ়ঢ়া । আচ্ছাহি কিয়া । ক্যায়া হোগা তুম্ সে ? কুছ নেহি । বিলকুল কুছ নেহি ‘ — কার উক্তি ? কেন এই উক্তি করেছেন ?
Ans: আলোচ্য উদ্ধৃতিটি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নানা
- ‘ তাতে বয়েসটা ঠিক বোঝা যায় না ‘ — কীসে ‘ বয়েস ’ বোঝা যায় না ?
অথবা , ‘ তাতে বয়েসটা ঠিক বোঝা যায় না । বোঝা যায় না ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় লম্বা লম্বা চুলে রোজ আধ শিশি কলপ লাগিয়ে যেমন রঙ্গ – রসিকতা করেন , তাতে তাঁর বয়সটা ঠিক বোঝা যায় না ।
- ‘ আমি লাস্ট সিনে কেরব না ভাই , আমাকে ছেড়ে দিন’— বলার কারণ কী ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মৃত্যুকে সামনে দেখেও তার মুখোমুখি হতে না – চেয়ে এমন মন্তব্য করেছেন ।
- এখন শুধু মাঝরাত্তিরের অপেক্ষা ‘ — এখানে ‘ মাঝরাত্তির ‘ কীসের প্রতীক ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতে , ‘ মাঝরাত্তির আসলে জীবনের অন্তিম অঙ্ক তথা মৃত্যুর প্রতীক ।
- ‘ রজনীবাবু ভয়ে চিৎকার করে পিছিয়ে যান । ‘ –কাকে , কী অবস্থায় দেখে রজনীবাবু ভয় পেয়েছিলেন ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটক থেকে গৃহীত উপরিউক্ত অংশে রজনীবাবু পরনে ময়লা পাজামা , গায়ে কালো চাদর , এলোমেলো চুল , বুড়ো কালীনাথকে হঠাৎ দেখে ভয় পেয়েছিলেন ।
- ‘ সব গভীর অন্ধকারে ডুবে আছে ’ বলতে কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মাঝরাতে ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে দূরের ব্যালকনি , ফার্স্ট – সেকেন্ড – থার্ড – ফোর্থ বক্সগুলিকে গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকতে দেখে শ্মশানের শূন্যতাকে উপলব্ধি করেছেন ।
- জীবনের শেষ কথাগুলো কোথায় লেখা আছে ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতে , অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহের দেয়ালে কালো কালো অঙ্গারে জীবনের শেষ কথাগুলো লেখা আছে ।
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বয়স কত হয়েছিল ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছিল । আটষট্টি বছর ।
- প্রম্পটার কালীনাথ সেনের বয়স কত হয়েছিল ?
Ans: প্রম্পটার কালীনাথ সেনের বয়স হয়েছিল ষাট বছর ।
- অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কত বছর ধরে অভিনয় করছেন ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে । থিয়েটারে অভিনয় করেছিলেন ।
- ‘ সব ভূতুড়ে বাড়ির মতো খাঁ খাঁ করছে ‘ — বলা হয়েছে । কেন ?
Ans: অন্ধকার মধ্যরাত্রে জনমানবহীন প্রেক্ষাগৃহটিকে দেখে । অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মনে হয়েছে সব ভূতুড়ে বাড়ির মতো খাঁ খাঁ করছে ।
- ‘ আপনার মতো বয়স হয়েছে যাদের তারা কী করে ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতো আটষট্টি বছরের বৃদ্ধরা সাধারণত সময়মতো খাওয়াদাওয়া করে , সকাল – সন্ধে হেঁটে , সন্ধেবেলায় ভগবানের নাম কিংবা কীর্তন করে সময় কাটায় ।
- আর আপনি রজনীবাবু এসব কী করছেন মশাই’— রজনীবাবু কী করছিলেন ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মধ্যরাতে ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে দিলদারের পোশাক পরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নাটুকে ভাষায় আবোলতাবোল বকছিলেন ।
- ‘ কী যে পাগলামি করেন । সারারাত ধরে এইসব ভাবলে হঠাৎ হার্টফেল করবেন যে ।’— কে এমন মন্তব্য করেছে ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিবেক বা অন্তর্মনই এমন মন্তব্য করেছে ।
- ‘ কে ? কী চাই তোমার ? … কে তুমি ? ‘ — রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কাকে দেখে এমন মন্তব্য করেছিলেন ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মধ্যরাতে ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে উইংসের পাশ দিয়ে বেরোতে গিয়ে প্রম্পটার কালীনাথকে দেখে এমন মন্তব্য করেছিলেন ।
- কালীনাথ সেনের পোশাক – পরিচ্ছদ কেমন ছিল ?
Ans: বৃদ্ধ প্রম্পটার কালীনাথ সেনের পরনে ছিল ময়লা পাজামা ও গায়ে কালো চাদর । তার মাথার চুল ছিল এলোমেলো ।
- ‘ তুমি এত রাতে কী করছিলে এখানে ? ‘ — উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করছিল ?
Ans: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি তথা প্রম্পটার কালীনাথ সেনের কোথাও শোয়ার জায়গা না থাকায় তিনি রোজ ‘ এখানে ‘ অর্থাৎ গ্রিনরুমে ঘুমোতেন ।
- সেদিনও তিনি তা – ই করছিলেন । ‘ একেবারে বেঘোরে মারা পড়ব তাহলে ‘ — এমন বলার কারণ কী ছিল ?
Ans: কোথাও শোয়ার জায়গা না থাকায় কালীনাথ সেন রোজ গ্রিনরুমে ঘুমোতেন । বরখাস্ত হওয়ার ভয়ে তিনি এসব মালিককে না – বলার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ।
- ‘ এ কথাটা মালিকের কানে তুলবেন না চাটুজ্জেমশাই’— ‘ কথাটা ’ কী ?
Ans: কোথাও শোয়ার জায়গা না থাকায় বৃদ্ধ প্রম্পটার কালীনাথ সেন বাধ্য হয়ে প্রিনরুমেই ঘুমোতেন । এখানে সেই ‘ কথাটার ‘ প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে ।
- ‘ মিছে কথা বলব না’— কেন ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ব্রাহ্মণ মানুষ হওয়ায় প্রম্পটার কালীনাথ তাঁর কাছে মিছে কথা বলেননি ।
- ‘ আপনি বামুন মানুষ , মিছে কথা বলব না ।’— বক্তা কোন্ সত্যি কথাটি বলেছিল ?
Ans: বক্তা প্রম্পটার কালীনাথ সেনের কোথাও শোয়ার জায়গা না – থাকায় রোজ লুকিয়ে গ্রিনরুমে ঘুমোন — এই সত্যি কথাটি তিনি রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে বলেছিলেন ।
- ‘ মরা হাতি সোয়া লাখ ’ —– কোন্ প্রসঙ্গে এমন উক্তি ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের দিলদারের চরিত্রে অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে এক দর্শক এমন মন্তব্য করেছিল ।
- ‘ যতক্ষণ স্টেজে দাঁড়িয়ে থাকি ততক্ষণ কদর ।’— কে এমন অভিমত প্রকাশ করেছিল ?
Ans: নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নিজের সম্পর্কে এমন অভিমত প্রকাশ করেছিলেন ।
- ‘ একটুও ভালো লাগে না বাড়িতে । -ভালো না লাগার কারণ কী ছিল ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বউ , ছেলেমেয়ে , সঙ্গীসাথি কেউ ছিল না । এই দুঃসহ একাকিত্বের কারণেই তাঁর বাড়িতে ভালো লাগত না ।
- রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ব্যক্তিজীবনের একাকিত্বের সঙ্গে । কীসের তুলনা করেছেন ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ধু – ধু করা দুপুরে জ্বলন্ত মাঠে । সঙ্গীহীন বাতাসের সঙ্গে নিজের জীবনের একাকিত্বের তুলনা করেছেন ।
- ‘ সদ্বংশের পবিত্র রক্ত ।’— রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নিজের বংশপরিচয় সম্পর্কে কী বলেছিলেন ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নিজের বংশপরিচয় দিতে গিয়ে বলেছিলেন রাঢ় বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন ভদ্র ব্রাহ্মণ বংশে তিনি জন্মেছিলেন ।
- অভিনয়ে আসার আগে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী করতেন ?
Ans: পেশাদারি থিয়েটারে অভিনয়ে আসার আগে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় পুলিশের ‘ ইনস্পেক্টর ‘ পদে চাকরি করতেন ।
- ‘ ছোকরা বয়স ’ – এ রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কেমন ছিলেন ?
Ans: ছোকরা বয়সে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক শক্তি , সাহস এবং চেহারায় আকর্ষণীয় জেল্লা থাকায় তিনি কারও পরোয়া করতেন না ।
- ‘ তারপর একদিন , বুঝলে চাকরিটা ছেড়ে দিলাম । বক্তা চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন কেন ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । নাটকের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসার কারণেই পুলিশের চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন ।
- ‘ আর একরকম করে জীবন শুরু করা গেল ‘ — সে জীবন কেমন ছিল ?
Ans: তরুণ বয়সে প্রতিভাবান অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । চাকরিবাকরি ছেড়ে নাটক নিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করেন । তাই তাঁর খ্যাতি ও খাতির কোনোটাই কম ছিল না ।
- ‘ আমার চোখের সামনে মেলে ধরেছে ।’— কে , কী মেলে ধরেছে ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে থিয়েটারের অন্ধকার দেয়াল বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের চোখের সামনে জীবনের এ সমস্ত খাতাখানাকে মেলে ধরেছিল ।
- “ আর সেইদিনই বুঝলুম পাবলিকের আসল চরিত্রটা কী ! —পাবলিকের আসল চরিত্র কী ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে রজনীকান্তবাবু উপলব্ধি করেছেন পাবলিক সারাদিন খেটেখুটে আনন্দ পেতে । অভিনয় দেখে হাততালি , দেবে কিন্তু নাটকের কলাকুশলীদের সঙ্গে মেয়ে কিংবা বোনের অভিনয় দেখতে আসেন মেডেল , সার্টিফিকেট বিয়ে দেবে না ।
- ‘ সেইদিনই বুঝলুম পাবলিকের আসল চরিত্রটা কী ।’— কার উক্তি ? কোন দিন বক্তা এই উপলব্ধিতে পৌঁছান ।
Ans: আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বস্তুা অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ।
যেদিন রজনীবাবুর প্রেমিকা তাঁকে বিয়ে করার শর্ত হিসেবে অভিনয় ছেড়ে দিতে বলেন সেই রাত্রে তিনি এই উপলব্ধিতে পৌঁছান ।
- সেই রাত্রেই জীবনে প্রথম মোক্ষম বুঝলুম ‘ — এখানে কোন্ রাত্রের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ের প্রস্তাবে যেদিন তাঁর প্রেমিকা শর্ত হিসেবে অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিল , প্রশ্নোবৃত অংশে সেই রাত্রের কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ এসব বাজে কথায় আমি বিশ্বাস করি না ।’— ‘ বাজে কথা ’ – টি কী ?
Ans: দর্শকদের হাততালি , খবরের কাগজের প্রশংসা , মেডেল , সার্টিফিকেট এবং ‘ নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প ’ — এমন মন্তব্যকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ‘ বাজে কথা ‘ বলে মনে করেছেন ।
- ‘ তা নইলে বাইরে জাহির করবেন কী করে ? ’ — বাইরে কী জাহির করবেন ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতে , সাধারণ মানুষের কাছে অভিনেতাদের কোনো সামাজিক সম্মান নেই । কেবল বাইরে জাহির করার জন্যই তারা অভিনেতাদের সঙ্গে আলাপ – পরিচয়ের ভান করে ।
- ‘ কাউকে বিশ্বাস করি না ‘ — এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় পেশাদারি থিয়েটারের টিকিট কেনা দর্শকদের কাউকে বিশ্বাস না করার কথা বলেছেন ।
- ‘ পবিত্রতার নামাবলিটা … ফাঁস হয়ে গেল আমার সামনে ‘ পবিত্রতার নামাবলিটা ‘ কী ?
Ans: ‘ নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প ’ — এই তথাকথিত আপ্তবাক্যটি সম্পর্কে অন্তর্মনের বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ায় রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় এমন মন্তব্য করেছেন ।
- ‘ আমারও আর কিছু ভালো লাগত না ‘ — বস্তার কিছু ভালো না লাগার কারণ কী ?
Ans: থিয়েটারকে ভালোবাসার কারণে রজনীকান্তের প্রেমিকার সঙ্গে চিরবিচ্ছেদ ঘটেছিল । অথচ সেই থিয়েটারের দর্শকদের কাছে সত্যিকারের সামাজিক সম্মান না পাওয়ায় তাঁর ভালো লাগত না ।
- ‘ আবোলতাবোল সব পার্ট করতে লাগলাম ‘ — এর কারণ কী ছিল ?
Ans: নাটকের কারণে প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং এর ফলে নাটকের প্রতি মোহভঙ্গ হওয়ায় রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বাছবিচার না – করে ‘ আবোলতাবোল সব পার্ট করতে লাগলেন ।
- ‘ আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম ‘ — কী বুঝতে পারলেন ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় থিয়েটারের দেয়ালে কালো অঙ্গারের জ্বলন্ত অক্ষরে তাঁর প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ লেখা হয়ে গেছে — এ কথা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন ।
- আস্তে আস্তে বয়স বাড়ল – ফলে কী হল ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতে , বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গলার কাজ এবং চরিত্রকে বুঝে ফুটিয়ে তুলতে পারার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে থাকল ।
- শাহাজাদি সম্রাটনন্দিনী মৃত্যুভয় দেখাও কাহারে ? ‘ উদ্ধৃতাংশটি কোন নাটকের অন্তর্গত ?
Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি মনমোহন রায়ের ‘ রিজিয়া ‘ নাটকের অন্তর্গত ।
- ‘ খুব খারাপ হচ্ছে না , কী বলো ? ‘ — কী খারাপ হচ্ছে না ?
Ans: উত্তর নানা রঙের দিন ‘ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ‘ রিজিয়া ‘ নাটক থেকে বক্তিয়ায়ের সিনটা অভিনয় করে , খারাপ হচ্ছে কিনা তা প্রম্পটার কালীনাথ সেনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ।
- ‘ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ‘ — কে ?
Ans: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতে , তাঁর সামনে যেন বুড়ো এক রজনী চাটুজ্জে এসে দাঁড়িয়েছিল ।
- দেশের ছোঁড়াগুলো গোল্লায় যাচ্ছে । ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: জ্ঞানী ব্যক্তিদের মতে , রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নাটকের যা – তা পার্ট দেখে দেশের ছেলে – ছোকরারা গোল্লায় যাচ্ছে ।
- ‘ সেসব দিনে কী না পারতাম ।’— কী পারার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: অল্পবয়সে প্রতিভাবান অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় খুব সহজেই এক – একটি চরিত্রকে বুঝে নিয়ে আশ্চর্য সব নতুন রঙে ভরিয়ে তাদের প্রাণবন্ত করে তুলতেন ।
- ‘ কাম অন , কুইক ! মহম্মদের ক্যাচটা দাও তো , মহম্মদ কে ? কে মহম্মদের ক্যাচ দিয়েছিলেন ?
Ans: প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ডি এল রায়ের ‘ সাজাহান ‘ নাটকে ঔরঙ্গজীব – পুত্র মহম্মদের কথা বলা হয়েছে । → প্রম্পটার কালীনাথ সেন , রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে মহম্মদের ক্যাচ দিয়েছিলেন ।
- মিরজুমলাকে তোমার সাহায্যে রেখে গেলাম ।’— মিরজুমলা কে ?
Ans: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজীবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মিরজুমলা । ছিলেন বাংলার শাসনকর্তা । ইনি অহম ও কোচ রাজাকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন ।
- ‘ রাজনীতি বড়ো কূট ‘ — বক্তা কে ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ সাজাহান ‘ নাটক থেকে গৃহীত মন্তব্যটির বক্তা ঔরঙ্গজীব ।
- ‘ আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি ‘ — বক্তা কী বুঝতে পেরেছিলেন ?
Ans: বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁর প্রতিভা এখনও মরেনি ।
- ‘ আমার অ্যাকটিং তোমার তোমার ভালো লেগেছে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিটি কে ?
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ‘ সাজাহান ‘ নাটকের একটি অংশের অভিনয় শেষে প্রম্পটার কালীনাথ সেনকে এ কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন ।
- ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে রজনীকান্ত , ঔরঙ্গজীব ও মহম্মদের যে দৃশ্যের কথা বলেছিলেন সেটি কোন্ নাটকের অংশ ?
Ans: অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে ঔরঙ্গজীব ও মহম্মদের যে – দৃশ্যের কথা বলেছিলেন তা ডি এল রায়ের ‘ সাজাহান ‘ নাটকের অংশ ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | নানা রঙের দিন (নাটক) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Nana Ronger Din Question and Answer :
1. ‘ আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়া গেছে’— ‘ পাগল ’ – টি কে ? তার ‘ পাল্লায় পড়া ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । তিনি এখানে ‘ পাগল ’ বলতে রামব্রীজের কথা বলেছেন ।
‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁকা মঞ্চে দিলদারের পোশাকে এসে উপস্থিত হতে দেখা যায় । তিনি অভিনয় শেষে অতিরিক্ত মদ্যপান করে গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । মধ্যরাতে নির্জন প্রেক্ষাগৃহে অসংলগ্ন অবস্থায় রজনীকান্তের ভয় করতে শুরু করে । তিনি নিরুপায় হয়ে চিৎকার করে রামব্রীজকে ডাকতে থাকেন । কিন্তু নিঝুম থিয়েটার হলে ধ্বনিত – প্রতিধ্বনিত হয়ে কেবল তাঁর গলাটাই ঘুরে ফিরে ভেসে আসে । গত রাতেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল । তখন মাঝরাতে রামব্রীজই তাঁকে ঘুম থেকে তুলে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে দিয়েছিল । এমন উপকারের জন্য কৃতজ্ঞতাবশে আজ সন্ধেবেলায় তিনি রামব্রীজকে তিন টাকা বকশিশ দিয়েছিলেন । এর ফলে আজ রামব্রীজ নিজেই প্রচুর পরিমাণ ধেনো ন খেয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে । আর এতক্ষণে প্রেক্ষাগৃহের প্রধান দরজাতেও নির্ঘাত তালা পড়ে গেছে । তাই রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বাড়ি ফেরার কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে প্রশ্নের মন্তব্যটি করেছেন ।
2. ‘ এখন শুধু মাঝরাত্তিরের অপেক্ষা ’ — প্রসঙ্গ নির্দেশ করে বক্তার এমন মনোভাবের কারণ আলোচনা করো ।
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় জীবনের প্রান্তে এসে একদিন দিলদারের চরিত্রে অভিনয় শেষে মদ্যপান করে গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়েন । ঘুম ভাঙার পর অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ অবস্থায় রজনীকান্ত যেন দুর্বিষহ বাস্তবের মুখোমুখি হন ।
রজনীবাবু টের পান এভাবে আটষটি বছর অতিক্রম করে মৃত্যুর শিয়রে এসে পৌঁছেছেন । এখন তাঁর একমাত্র সম্বল সোনালি অতীত । এখন তিনি একজন ফুরিয়ে যাওয়া মানুষ । তাঁকে বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকে অভিনয়ের সেইসব বর্ণময় মুহূর্তগুলি । যখন তাঁর আশ্চর্য প্রতিভায় চরিত্রগুলি নতুন রঙে নতুন চেহারায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠত । অথচ আজ থিয়েটারের দেয়ালে কালো কালো অক্ষরে জীবনের শেষ কথাগুলো তিনি ফুটে উঠতে দেখেন । এ সময়ে তাঁরই সমবয়সিরা হেঁটে – বেড়িয়ে ভগবানের নাম করে পরম নিশ্চিন্তে জীবন কাটান আর বৃদ্ধ নেশাগ্রস্ত রজনীকান্ত নৈরাশ্যে – যন্ত্রণায় মধ্যরাত্রে আবোলতাবোল বকে চলেন । এই অস্থির – আক্ষেপ আসলে শিল্পী রজনীকান্তের ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের হাহাকার । তাঁর প্রতিভা থাকলেও বয়স পেরিয়ে গেছে । এক ‘ বুড়ো রজনী চাটুজ্জে ’ মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে পথরোধ করে দাঁড়ানোয় ; আবেগে হতাশায় রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন ।
3. ‘ আমি রোজ লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রিনরুমে ঘুমোই চাটুজ্জেমশাই – কেউ জানে না — কোন্ নাটকের অংশ ? বক্তা কে ? তিনি কেন গ্রিনরুমে ঘুমান ?
Ans: প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা রঙের দিন ‘ নাটকের অংশ ।
উদ্ধৃতিটির বক্তা প্রম্পটার কালীনাথ সেন ।
নটিক শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ঘুম থেকে উঠে পেশাদারি থিয়েটারের ফাঁকা অন্ধকার মঞ্চে যখন একাকী রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় অস্থির , ভীত , বেসামাল এবং তিনি উইংস দিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করলে ময়লা পাজামা ও কালো চাদর গায়ে । এলোমেলো চুলে আর – এক বৃদ্ধ এসে ঢোকেন । তিনি প্রম্পটার কালীনাথ সেন । প্রথমে বৃদ্ধ রজনীবাবু কালীনাথকে চিনতে পারেনি । পরে তার পরিচয় জানতে পারলে এত রাতে তিনি কী করছেন জানতে চাইলে বৃদ্ধ কালীনাথ সেন জানান তার শোবার জায়গা না থাকায় তাকে গ্রিনরুমে ঘুমোতে হয় । তখন এই মানুষটির চালচুলোহীন । হতদরিদ্র অবস্থাটি সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয় । নাটককে ভালোবেসে নিজের ব্যক্তিজীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাকাননি কালীনাথ সেন । তাই তিনি রজনীবাবুকে বলেছেন গ্রিনরুমে ঘুমানোর কথাটা যেন মালিকের কানে না – যায় তাহলে তিনি বেঘোরে মারা পড়বেন এবং শোবার জায়গাটুকু চলে যাবে । অর্থাৎ প্রশ্নোধৃত উক্তির মধ্যে । স্পষ্ট হয় তৎকালীন সময়ে নাটকের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জীবন বঞ্চনার অন্ধকারে ঢাকা পড়ে থাকত ।
4. ধু – ধু করা দুপুরে জ্বলন্ত মাঠে বাতাস যেমন একা যেমন সঙ্গীহীন — তেমনি অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতার যে করুণ ছবি ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে ফুটে উঠেছে , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো ।
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা রঙের দিন ‘ নাটকের নায়ক পেশাদারি থিয়েটারের এক বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । যৌবনের বর্ণময় জীবনকে অতিক্রম করে তিনি জীবনসায়াহ্নে এসে পৌঁছেছেন । এখন নাটকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তাঁকে অভিনয় করতে হয় । এভাবে ক্রমশ খ্যাতি – প্রতিপত্তি ও খাতিরকে পিছনে ফেলে ; সব কিছুকেই বিবর্ণতার আঁধারে তলিয়ে যেতে দেখে তিনি অস্থির 8 হয়ে ওঠেন । মদের নেশায় নিজেকে ভুলিয়ে চট্টোপাধ্যায়ের একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতা রাখার চেষ্টা করেন । তাঁর বিশ্বাস , মঞ্চের বাইরে অভিনেতার কোনো কদর নেই । তিনি অভিনয়ের জন্য এখনও ক্ল্যাপ পান কিংবা প্রশস্তিসূচক মন্তব্য শোনেন ; কিন্তু ওটুকুই । বৃদ্ধ মাতাল রজনীকান্ত চাটুজ্জের কেউ খোঁজ রাখে না । কোনো দর্শক তাঁকে মাতাল অবস্থায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথাও ভাবে না । এমন একটাও লোক নেই যে আদর করে তাঁর সঙ্গে দুটো কথা বলবে । বয়স্ক মানুষটাকে হাত ধরে বিছানায় শুইয়ে দেবে । মরবার সময়ে মুখে দু – ফোঁটা জল দেবে , এমন কেউ নেই তাঁর । নিঃসঙ্গতার এই তীব্র কষ্টে ও যন্ত্রণায় বৃদ্ধ রজনীকান্ত হাহাকার করে ওঠেন । নিরাশ্রয় – নিরাপত্তাহীনতার গভীর অনুভূতিকে ফুটিয়ে তুলতেই তিনি জ্বলন্ত মাঠের বাতাসের একাকিত্বের সঙ্গে নিজের নিঃসঙ্গ জীবনের তুলনা করেছেন ।
5. ‘ দেয়ালে অঙ্গারের গভীর কালো অক্ষরে লেখা , আমার জীবনের পঁয়তাল্লিশটা বছর ‘ — নানা রঙের দিন ‘ নাটক অবলম্বনে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকে নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এক বৃদ্ধ প্রতিভাবান অভিনেতার জীবননাট্যকে উন্মোচন করেছেন । নাটকের প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । তিনি একদিন অভিনয় শেষে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়েন । মাঝরাতে ঘুম ভেঙে উঠে ফাঁকা মঞ্চে দাঁড়িয়ে একাকিত্বে – হতাশায় তিনি প্রম্পটার কালীনাথ সেনের কাছে নিজের বর্ণময় অতীতের স্মৃতিচারণ করতে শুরু করেন ।
রাঢ় বাংলার এক ভদ্র ব্রাক্ষ্মণ বংশে রজনীকান্ত জন্মেছিলেন । কিন্তু নাটকের প্রতি অদম্য ভালোবাসায় রজনীকান্ত পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেন । নাটককে অবলম্বন করেই যশ – প্রতিপত্তি ও খাতিরে পূর্ণ হয়ে ওঠে তাঁর জীবন । এসময় একটি মেয়ে তাঁর প্রেমে পড়ে । বিয়ের স্বপ্ন দেখেন রজনীকান্ত , কিন্তু বিয়ের আগে থিয়েটার ছাড়ার প্রস্তাব মেনে নিতে পারেন না । সেদিন তিনি উপলব্ধি করেন অভিনেতার কদর শুধু মঞে । অভিনেতা আসলে একজন ভাঁড় , যার কোনো সামাজিক স্বীকৃতি বা সম্মান নেই । এরপর থেকে এলোমেলো হয়ে ওঠে রজনীকান্তের অভিনয় জীবন । তিনি আবোলতাবোল সব পার্ট করতে থাকেন । ক্রমশ ব্যক্তিগত জীবনে একাকিত্ব ও হতাশায় তিনি ডুবে যেতে থাকেন । এই আঘাত – যন্ত্রণা ও নিঃসঙ্গতাকেই তিনি প্রেক্ষাগৃহের দেয়ালে দেয়ালে কালো অঙ্গারে ফুটে উঠতে দেখেছেন ।
6. ‘ একদিন একটা মেয়ে থিয়েটার দেখে প্রেমে পড়ল আমার ’ কার প্রেমে পড়েছিল ? বক্তা মেয়েটির রূপের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা লেখো । প্রেমের পরিণতি কী হয়েছিল ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকে মেয়েটি রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমে পড়েছিল ।
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কালীনাথ সেনকে তাঁর অতীতের কথা বলতে গিয়ে তাঁর প্রেমের কথা বলেছেন । রজনীবাবুর মতে তখন তিনি সবে নাটকে নেমেছেন তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে একটি মেয়ে তার প্রেমে পড়ে । রজনীবাবুর বর্ণনা অনুসারে সে বেশ বড়লোকের মেয়ে , বেশ সুন্দর দেখতে লম্বা , ফরসা , সুন্দর ছিপছিপে গড়ন । মেয়েটির টানাটানা কালো চোখ এবং ঢেউখেলানো রাশিরাশি কালো চুল ।
রজনীকান্তের মতে মেয়েটির সহজসরল মনে কোনো জটিলতা ছিল না । রজনীকান্ত তাঁর হৃদয়ের মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন পশ্চিম আকাশের সূর্যাস্তের আগুন । অভিনয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত রজনীকান্ত বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে একদিন মেয়েটিকে বিয়ের প্রেমের পরিণতি প্রস্তাব দেন । কিন্তু মেয়েটি বিয়ের আগে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে থিয়েটার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে । সেদিন রজনীকান্ত উপলব্ধি করেছিলেন ধনী ঘরের সুন্দরী মেয়ে জীবনভর নাটকের অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করলেও বিয়ে করে সংসার করার কথা ভাবতেও পারে না । অর্থাৎ তাদের প্রেম বিবাহে রূপান্তরিত হল না । সারাজীবন নিঃসঙ্গ অবিবাহিত থেকে গেলেন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ।
7. ‘ সে কী আশ্চর্য মেয়ে কেমন করে বোঝাব তোমাকে ? –বক্তার তার সম্পর্কে অনুভূতি এবং এ ঘটনার পরিণতি কী হয়েছিল লেখো ।
অথবা , ও কী বলল জানো ? ‘ — প্রসঙ্গ নির্দেশ করে ‘ সে ’ কী বলেছিল আলোচনা করো ।
Ans: নানা রঙের দিন ‘ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বিবর্ণ বর্তমানের হতাশা – যন্ত্রণাকে দূরে সরিয়ে ক্রমে । সোনালি অতীতের দিনগুলিতে ফিরে যান । তখন তিনি এক প্রতিভাবান তরুণ অভিনেতা । যশ – প্রতিপত্তি ও ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ তাঁর জীবন । এসময় আলমগিরের চরিত্রে অভিনয় মেয়েটি সম্পর্কে রজনীকান্তের অনুভূতি দেখে একটি মেয়ে প্রেমে পড়ে তাঁর । ধনী ঘরের এই মেয়েটি সুন্দর দেখতে ছিল । মেয়েটির সহজসরল মনে কোনো জটিলতা ছিল না । রজনীকান্ত তাঁর হৃদয়ের মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন পশ্চিম আকাশের সূর্যাস্তের আগুন । তাঁর টানাটানা কালো চোখে যেন প্রতিফলিত হত কোনো অচেনা দিনের আলো । মেয়েটির দীর্ঘ কালো চুলে লুকিয়ে ছিল । সমুদ্রের ঢেউয়ের আশ্চর্য শক্তি । ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর এই মেয়েটি প্রেমের অপ্রতিহত শক্তিতে রজনীকান্তকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল । তাঁর একরকম অদ্ভুত করে চেয়ে থাকার সম্মোহন রজনীকান্তকে আজও তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় ।
ঘটনার পরিণতি অভিনয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত রজনীকান্ত বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে একদিন মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন । কিন্তু মেয়েটি বিয়ের আগে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে থিয়েটার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে । সেদিন রজনীকান্ত উপলব্ধি করেছিলেন ধনী ঘরের সুন্দরী মেয়ে জীবনভর নাটকের অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করলেও বিয়ে করে সংসার করার কথা ভাবতেও পারে না ।
7. নানা রঙের দিন নাটকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় একবার বলেছেন — ‘ যারা বলে নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প , তারা সব গাধা আবার অন্যত্র বলেছেন — ‘ শিল্পকে যে – মানুষ ভালোবেসেছে তার বার্ধক্য নেই কালীনাথ , একাকীত্ব নেই — রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের দু – বার দু – রকম উপলব্ধির কারণ কী ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা রঙের দিন ‘ নাটকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় প্রেক্ষাগৃহে দাঁড়িয়ে নিজের যৌবনের সোনালি অতীতে ফিরে যান । স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে ফুটে ওঠে তাঁর একমাত্র প্রেমের ঘটনার কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্ত । প্রেমের পরিণতি স্বরুপ রজনীকান্ত মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মেয়েটি বিয়ের আগে তাঁর কাছে থিয়েটার ছেড়ে দেওয়ার শর্ত আরোপ করে । নাটক – অন্তপ্রাণ রজনীকান্ত প্রেমিকার সঙ্গে চিরবিচ্ছেদের সেই রাতেই উপলব্ধি করেন অভিনেতা আসলে ভাঁড় । সে সার্কাসের ক্লাউন বা জোকারের মতো দর্শকদের মনোরঞ্জন করে মাত্র । এই মেডেল – করতালি প্রশংসা সার্টিফিকেট শুধু মঞ্চে অভিনয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ । বাস্তবজীবনে অভিনেতার কোনো সামাজিক স্বীকৃতি বা প্রতিষ্ঠা নেই । তাই রজনীবাবুর প্রথম উপলব্ধি — ‘ যারা বলে নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প , তারা সব গাধা । ‘
রজনীবাবু আবার পরক্ষণেই তাঁর নাট্যাভিনয়ের গৌরবোজ্জ্বল অতীত মনে করেন । নির্ভীক ‘ বক্তিয়ার ’ , নিঃসঙ্গ রক্তাক্ত ‘ ঔররঙ্গজীব ’ কিংবা পিয়ারাবানুকে বলা সুজার শেষ রজনীবাবুর দ্বিতীয় সংলাপের প্রেমমগ্ন আবেগ রজনীকান্ত খুঁজে উপলব্ধি পান নিজের দুঃখময় জীবনের প্রতিচ্ছবি । তিনি নাটককে ভালোবেসেই তো চাকরি ছেড়েছেন , বিসর্জন দিয়েছেন প্রেম ; যৌবন , আদর্শ , শক্তি , সম্ভ্রম ও নারী — এসব কিছুকে নাটকের কাছেই নির্দ্বিধায় উৎসর্গ করেছেন । আজ তিনি উপলব্ধি করেছেন , ‘ আমার প্রতিভা এখনও মরেনি । ‘ প্রথমে রজনীবাবু হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন কারণ , বৃদ্ধ হয়ে গেছেন বলে তাঁকে দিলদারের চরিত্রে অভিনয় করতে হচ্ছে এবং তাঁর প্রেমিকা তাঁকে ছেড়ে গেছে বলে কিন্তু দুই উপলব্ধির কারণ পরক্ষণেই তাঁর শিল্পীসত্তার জয় স্বীকৃত হয়েছে । ও শিল্পীসত্তার জয় কেননা শিল্পীর কাছে শিল্প সৃষ্টির তাগিদ ছাড়া বাকি সব তুচ্ছ ; তার জীবনের চরমতম সত্য হল শিল্পের প্রতি ভালোবাসা , সৃষ্টিশীলতার প্রতি চূড়ান্ত আত্মনিবেদন ।
8. প্রাক্তন অভিনেতা রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ । ‘ – কে বলেছেন ? এই অপমৃত্যু কীভাবে ঘটে বলে বক্তা মনে করেন ?
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটক থেকে সংকলিত প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন নাটকের মুখ্য চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ।
রজনী চাটুজ্জে আটষট্টি বছর বয়সে এসে পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনের স্মৃতিচারণায় মগ্ন হয়েছেন । কমবয়সে তিনি যখন অভিনয়জীবনে আসেন তখন একটি মেয়ে রজনীর অভিনয় দেখে প্রেমে পড়ে । সেই মেয়েটি রজনীকে বিয়েও করতে চায় , কিন্তু শর্ত হিসেবে মেয়েটি জানায় রজনী যদি অভিনয় ছেড়ে দেয় , তবেই সে বিয়ে করবে । সেদিন রজনী বুঝতে পারেন , যারা বলে ‘ নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প ’ তারা সব গাধা । তারপর থেকে সেই মেয়েটির আর কোনো খোঁজ পাননি ; তবে রজনীরও আর কিছু ভালো লাগত না । ভবিষ্যৎ চিন্তা , ভালো বই বাছাই করা , ভালো চরিত্র ফুটিয়ে তোলা — সব লাটে উঠতে লাগল । বয়স বাড়ল , গলার কাজ নষ্ট হয়ে গেল , একটা চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেল । সেদিন রজনী দেখতে পেলেন কোনো অদৃশ্য হাত থিয়েটারের দেয়ালে অঙ্গারের কালো কালো অক্ষরে লিখে দিয়ে গেল , রজনী চাটুজ্জের প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ ।
9. ‘ ধরো – ধরো ‘ সাজাহান ‘ নাটকের ঔরঙ্গজীবের সেই ভয়ংকর সিনটা — কোন্ নাটকের অংশ ? ঔরঙ্গজীবের সেই ভয়ংকর সিনটার বর্ণনা দাও ।
Ans: আলোচ্য অংশটি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের অংশ ।
বৃদ্ধ রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় রঙ্গমঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর অতীতের সোনালি দিনগুলি স্মরণ করতে থাকেন কালীনাথের সামনে । এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে কখনও তাঁর কণ্ঠে উঠে আসে ‘ রিজিয়া ’ নাটকে বক্তিয়ারের কথা , আবার কখনও ‘ সাজাহান ’ নাটকে ঔরঙ্গজীবের সংলাপ । এসময় ভ্রাতৃহত্যার রক্তে রক্তাক্ত ঔরঙ্গজীবের দুঃস্বপ্ন – গ্লানি ও অন্তর্দ্বন্দ্বের অংশটি অভিনয় করেন । সেই ভয়ংকর দৃশ্যটি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ সাজাহান ’ নাটকের । ঔরঙ্গজীব নিজের পিতাকে বন্দি করে এবং অন্যান্য ভাইদের হত্যা করে সিংহাসনে আরোহণ করলেও মনের মধ্যে এক চরম আত্মগ্লানিতে ভোগেন । রাত্রে ঔরঙ্গজীবের ঘুম আসে না । যখন সবাইকে খুন করে সিংহাসন পেয়েছেন ঔরঙ্গজীব তখন মাঝরাতে একাকী ঔরঙ্গজীব নিজের মনেই সান্ত্বনা পেতে চান — যা করেছি ধর্মের জন্য । যদি অন্য উপায়ে সম্ভব হত । উঃ কী অন্ধকার । ‘ সেই রাত্রে কোনোমতেই চিন্তা দূর করতে পারছিলেন না ঔরঙ্গজীব । তন্দ্রায় ঢুলে পড়ছিলেন তবুও নিদ্রা আসছিল না । এক তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বে ও আত্মগ্লানিতে ভুগছিলেন । তিনি মনে করেছেন তাঁকে ঘিরে নাচছে তাঁর দাদা দারার ছিন্ন শির , তাঁর আর এক দাদা সুজার রক্তাক্ত দেহ । তাঁর ভাই মোরাদের কবন্ধ । জ্যোতির্ময়ী ধূমশিখার মতো মাঝেমাঝে তাঁর জাগ্রত তন্দ্রায় এসে দেখা দিয়েছে তাঁরা । শাজাহানের বড়ো ছেলে মোরাদকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছিলেন । কিন্তু ঔরঙ্গজীব তাঁর সিংহাসনের পথকে মসৃণ করতে এই পাপ কাজে মগ্ন হয়েছিলেন । কিন্তু আত্মগ্লানি তাঁর পিছু ছাড়েনি — এই ভয়ংকর দৃশ্যই তার প্রমাণ ।
10. ‘ প্রতিভা যার আছে , বয়েসে তার কী আসে যায় ‘ — বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় শূন্য রঙ্গমঞ্চে দাঁড়িয়ে অতীতের স্মৃতিচারণায় ডুব দেন । মধ্যরাতে প্রেক্ষাগৃহের দেয়ালে কালো কালো জ্বলন্ত অক্ষরে যেন কারো অদৃশ্য হাতে লিখিত হতে দেখেন তাঁর প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ ।
বৃদ্ধ রজনী চাটুজ্জেকে নিজেরই সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় হতাশা ও যন্ত্রণায় শিউরে ওঠেন । তাঁর মনে পড়ে যায় , যৌবনের দিনগুলির কথা , যখন প্রতিভার আশ্চর্য স্পর্শে নাটকের চরিত্রগুলি নতুন রঙে জীবন্ত হয়ে উঠত । এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে কখনও তাঁর কণ্ঠে উঠে আসে ‘ রিজিয়া নাটকের বক্তিয়ারের কথা , আবার কখনও ‘ সাজাহান ‘ নাটকের ঔরঙ্গজীবের সংলাপ । এসময় ভ্রাতৃহত্যার রক্তে রক্তাক্ত ঔরঙ্গজীবের দুঃস্বপ্ন – গ্লানি ও অন্তর্দ্বন্দ্বের অংশটি অভিনয় করার পরে তৃপ্তিতে তিনি হাততালি দিয়ে জোরে হেসে ওঠেন । তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারেন প্রতিভার অবিনাশী ঐশ্বর্যের কথা । তিনি টের পান , একে একে আটষট্টিটা বছর অতিক্রান্ত হলেও , প্রতিভা তাকে ছেড়ে যায়নি । তাঁর রক্তের মধ্যে মিশে থাকা প্রতিভার গুণেই তিনি বার্ধক্যকেও পর্যুদস্ত করতে পেরেছেন । একেই এক শিল্পীর জীবনের চিরকালীন সত্য বলে মনে করে , রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছেন ।
11. ‘ ওথেলোর সেই কথাগুলো তোমার ! —নানা রঙের দিন ‘ নাটকটির শেষাংশ কী তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকটি পেশাদারি থিয়েটারের বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের শিল্পীহৃদয়ের আর্তি ও আর্তনাদে পরিপূর্ণ । সেখানে তাঁর ফেলে আসা জীবনের প্রতিভার বিচ্ছুরণ যেমন আছে , তেমনই আছে মৃত্যুর শিয়রে উপস্থিত বৃদ্ধ বয়সের একাকিত্ব , হতাশা ও বেদনার অসহায় হাহাকারের ছবি । তিনি একদিকে উপলব্ধি করেন প্রতিভার লয় – ক্ষয় – বিনাশ নেই , অন্যদিকে টের পান এই অন্ধকার বর্তমান তাঁকে ক্রমে মজলিশি গল্পের আস্তাকুঁড়ে নির্বাসিত করছে ।
শিল্পী রজনীকান্ত তাঁর ব্যক্তিজীবনের যন্ত্রণার সাদৃশ্য খুঁজে পান কখনও ওথেলোর সংলাপে , আবার কখনও ম্যাকবেথের অসামান্য খেদ ও আক্ষেপের প্রকাশে । শেকসপিয়রের তাৎপর্য রজনীকান্তের নাটকের দুটি বিখ্যাত ট্র্যাজিক চরিত্র হল হৃদয়ের ক্ষতবিক্ষত প্রকাশ ওথেলো এবং ম্যাকবেথ । ডেসডিমোনোর প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ওথেলো যেমন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিদায় নেন , সেভাবেই প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুতে নিঃসঙ্গ ম্যাকবেথ নিজের সঙ্গে এক অসহায় অভিনেতার চিরবিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়ার তুলনা করেন । এ দুটি চরিত্রের মধ্যে রজনীকান্ত নিজের যন্ত্রণাদগ্ধ ট্র্যাজিক জীবনের মিল খুঁজে পান । নাটকের শেষে মঞ্চের পিছন থেকে ভেসে আসা রিচার্ড দ্য থার্ডের সংলাপে , প্রিয় ঘোড়ার জন্য তাঁর অন্তরের আর্তনাদ আসলে স্মৃতিতাড়িত রজনীকান্তের ক্ষতবিক্ষত হৃদয়কেই প্রকাশ করে ।
12. নানা রঙের দিন ‘ নাটক অবলম্বনে প্রম্পটার কালীনাথ সেনের চরিত্রবিশ্লেষণ করো ।
Ans: নানা রঙের দিন ‘ নাটকের পার্শ্বচরিত্র কালীনাথ সেন আজীবন পেশাদারি থিয়েটারে প্রম্পটারের পার্শ্বচরিত্র কালীনাথ সেন কাজ করেছেন । তাঁর ভূমিকায় যেমন মঞ্চের আলো পড়ে না , তেমনই জীবনও বঞ্চনার অন্ধকারে ঢাকা পড়ে থাকে ।
কালীনাথের ময়লা পাজামা ও কালো চাদরে অভাব এবং দারিদ্রের চিহ্ন স্পষ্ট । এরপর তিনি যখন বলেন সহায়সম্বলহীন শোয়ার জায়গা না থাকায় তাঁকে গ্রিনরুমে ঘুমোতে হয় , তখন এই মানুষটির চালচুলোহীন হতদরিদ্র অবস্থাটি সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয় ।
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ – বিক্ষোভ – হতাশা – একাকিত্ব সহানুভূতিশীল কালীনাথকেও আলোড়িত করে । বৃদ্ধ রজনী চাটুজ্জেকে শান্ত করতে কালীনাথ পুরোনো দিনের কথা না – ভাবার পরামর্শ দেন ।
প্রম্পটার কালীনাথেরও যে নাটকের প্রতি দরদ কিছু কম নয় , তা বোঝা যায় যখন তিনি সাবলীলতার সঙ্গে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মহম্মদের সংলাপ বলতে শুরু করেন । তাই নাট্যপ্রেমী । প্রতিভাবান বৃদ্ধ রজনীকান্তের অসামান্য একক অভিনয় তাঁর চোখে জল আনে । শেষে তিনি যখন বলে ওঠেন , ‘ আমি বলছি রজনী চাটুজ্জে মরবে না — কিছুতেই না— তখন যেন বৃদ্ধ শিল্পীর প্রতি এক নীরব নাট্যপ্রেমীর শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতিবাক্য ধ্বনিত হয় ।
এভাবেই কালীনাথ সেন মানবিকতায় সাহচর্যে ও দুঃখযন্ত্রণার অংশীদারিত্বে একটি সার্থক রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে ওঠে ।
13. ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের সূচনায় মঞ্চসজ্জার যে বর্ণনা আছে , তা নিজের ভাষায় লেখো । নাটকটির নামকরণ কতখানি সার্থকতা আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নানা রঙের দিন ‘ নাটকের সূচনায় মঞ্চসজ্জার যে বর্ণনা আছে , তা এইরূপ — পর্দা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় একটি পেশাদারি থিয়েটারের ফাঁকা রঙ্গমঞ্চ । প্রায় মহসজ্জার বর্ণনা অন্ধকার সেই মঞ্চে রয়েছে রাত্রে অভিনীত ‘ সাজাহান ’ নাটকের দৃশ্যপট , আর বেশ কিছু জিনিসপত্র এদিক – ওদিক ছড়ানো । মঞ্চের মাঝে আছে একটি ওলটানো টুল । দর্শক – আসনও একেবারে ফাকা ।
দ্বিতীয় অংশের উত্তরের জন্য ‘ নামকরণের তাৎপর্য অংশটি দ্যাখো ।
14. ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকে নাট্যকার অজিতেশ প্রশ্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংলাপ সৃষ্টির কৃতিত্ব আলোচনা করো ।
Ans: নাট্যকার নাট্যবিষয়কে প্রাণবন্ত ও হৃদয়গ্রাহী করে তোলেন সংলাপের সাহায্যে । তাই সংলাপ হল নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত নাটকে আবহ , চরিত্র এবং ঘটনার ঘাতপ্রতিঘাতে নাট্যসংলাপ গড়ে ওঠে ।
পাঠ্য ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকেও নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কৌশল অবলম্বন করেছেন । এখানে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের অন্তর্মনের দ্বন্দ্বই হয়ে উঠেছে সংলাপের প্রাণ । মাঝরাতে ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে নিজের সঙ্গে কথা মৃত্যুর শিয়রে দাঁড়িয়ে নেশাগ্রস্ত বৃদ্ধের স্বগতোক্তি , স্মৃতিচারণ এবং পুরোনো দিনের বিভিন্ন নাটকের অভিনয়ে উন্মোচিত হয় এক শিল্পীর রক্তাক্ত হৃদয় । এক্ষেত্রে চলতি হিন্দি বুলি ( ‘ ক্যায়া হোগা তুম্সে ? কুছ নেহি । ‘ ) , বহুল প্রচলিত বাংলা লব্জ ( মাইরি , এই না হলে অ্যাকটিং ! ) , পুরোনো নাট্যসংলাপ ( শাহাজাদি ! সম্রাটনন্দিনী ! মৃত্যুভয় দেখাও কাহারে ? ) প্রভৃতির সঙ্গে শেকসপিয়রীয় নাটকের ( Farewell the tranquil mind ! farewell content ! ) সংমিশ্রণে নাট্যবিষয় এক আশ্চর্য গতিময়তা পায় । আবার রজনীকান্ত যখন বলে ওঠেন , ‘ আমি একদম একা — একেবারে নিঃসঙ্গ – কেমন জানো ? ধু – ধু করা দুপুরে জ্বলন্ত মাঠে বাতাস যেমন একা ‘ ; তখন সংলাপের কাব্যধর্মিতায় এক নিঃস্ব মানুষের হাহাকার দর্শকমনকে স্পর্শ করে যায় । রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের দীর্ঘ সংলাপগুলিতে তাঁর অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির প্রকাশে নাট্যকার সুকৌশলে ছেদ ও যতিচিহ্নের ব্যবহার করেন , যা চরিত্রের ভিতরকার টানাপোড়েনের সার্থক প্রকাশ ঘটায় । আর এভাবেই নাট্যকারের সংলাপ রচনার মুনশিয়ানায় এক প্রতিভাবান শিল্পীর দ্বন্দ্ব – ক্ষোভ – ভালোবাসা – হতাশা ও আক্ষেপ দর্শকের চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে ।
15. ‘ নানা রঙের দিন নাটকের সংলাপ রচনায় নাট্যকারের কৃতিত্ব ‘ নানা রঙের দিন একাঙ্ক নাটক হিসেবে কতখানি সার্থক আলোচনা করো ।
Ans: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নানা রঙের দিন ‘ একটি সার্থক একাঙ্ক নাটক । নাটকের একাঙ্ক , পঞ্চাঙ্ক ইত্যাদি বিভাজন হ থাকে । সাধারণত স্বল্প পরিসরে সীমায়িত নাট্যঘটনা একটিমাত্র অঙ্কের মধ্যে বিন্যস্ত হলে তাকে একাঙ্ক নাটক বলা হয় । একাঙ্ক নাটকের কখনও দৃশ্য বিভাজন থাকে , আবার কখনও দৃশ্য বিভাজন ছাড়াই সমগ্র নাটকটি অভিনীত হয় । যেমন , ‘ নানা রঙের দিন ’ – এ কোনো দৃশ্য বিভাজন নেই । এখানে একটি রাতের মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ঘটনার সূত্রপাত – দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি নাটকীয় উৎকণ্ঠা এবং নাটকীয় পরিণাম ; এক মাত্রাহীন ব্যঞ্জনা লাভ করেছে ।
পাঠ্য ‘ নানা রঙের দিন ’ নাটকের
মুখ্য চরিত্র পেশাদারি রঙ্গমঞ্চের এক সময়কার খ্যাতিমান অভিনেতা বৃদ্ধ
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় । তিনি মধ্যরাতে ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চের কালো
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে মৃত্যুর পদধ্বনি শুনতে পান । তিনি টের পান এই
সুদীর্ঘ অভিনেতা জীবনে যৌবন , আদর্শ , শক্তি , সম্ভ্রম , প্রেম ও নারী —
একে একে সব পার করে এসেছেন । যে অনায়াসে সাবলীলতায় চরিত্রগুলিকে নতুন রঙে
ভরিয়ে তুলতে পারতেন , বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দক্ষতাও তিনি
হারিয়েছেন । চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার সামর্থ্য আর গলার কাজ তাঁর নষ্ট হয়ে
গেছে । তাই তাঁর মনে হয়েছে , থিয়েটারের দেয়ালে কারও অদৃশ্য হাত অঙ্গারের
কালো কালো জ্বলন্ত অক্ষরে লিখে দিয়ে গেছে অভিনেতা রজনী চাটুজ্জের
প্রতিভার অপমৃত্যুর করুণ সংবাদ । এখন তিনি নায়কের চরিত্রের বদলে
পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন । কিন্তু আর কয়েক বছর পর তাঁকে সেখানেও মানাবে
না । শুধু ব্যক্তিগত আবেগ ও নাটকের প্রতি ভালোবাসা দিয়ে তো আর জীবনের
পাত্রকে পূর্ণ করা যায় । না । শিল্পীর জীবন থেকে প্রতিভা – সম্মান –
খ্যাতি ও জৌলুষ একে একে বিদায় নেয় । এক অভিনেতার শিল্পী হৃদয়ের আর্তি ও
আর্তনাদ , চরিত্রচিত্রণে , একমুখী ঘটনার সংহত তীব্রতায় এবং তীক্ষ্ণ
মর্মস্পর্শী সংলাপে ‘ নানা রঙের দিন ‘ একটি একাঙ্ক নাটক হিসেবে প্রাণবন্ত
হয়ে উঠেছে ।