উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – কোঠারি কমিশন ও ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা (সপ্তম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর

 সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো |

  1. ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিস ‘ চালু করার সুপারিশ করে কোন কমিশন ? 

(A) কোঠারি কমিশন / 

(B) মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন / 

(C) জনার্দন রেড্ডি কমিশন / 

(D) জাতীয় শিক্ষানীতি ( 1986 ) । 

Ans: (A) কোঠারি কমিশন / 

 

  1. সাধারণ শিক্ষা বলতে বোঝায় – 

(A) জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রচলিত বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষা 

(B) সর্বসাধারণের শিক্ষা 

(C) সেইসব দক্ষতা অর্জন যা ব্যক্তিকে নতুন জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে / 

(D) ওপরের সবক’টি । 

Ans: (D) ওপরের সবক’টি । 

 

  1. কমিশনের মতে প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য – 

(A) পড়তে শেখা / 

(B) শব্দের উচ্চারণ শেখা / 

(C) পড়তে এবং লিখতে শেখা / 

(D) সু – অভ্যাস গড়ে তোলা । 

Ans: (D) সু – অভ্যাস গড়ে তোলা । 

 

  1. প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি ‘ সুপারিশ করে কোন কমিশন ?

(A) হান্টার কমিশন / 

(B) কোঠারি কমিশন / 

(C) রাধাকৃত্স্নণ কমিশন / 

(D) ১৯৯২ সালের জনার্দন রেড্ডি কমিশন । 

Ans: (B) কোঠারি কমিশন /

 

  1. কোঠারি কমিশন প্রথাগত শিক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে— 

(A) ৪ বছর / 

(B) ৫ বছর + / 

(C) ৬ বছর + / 

(D) নির্দিষ্ট করা হয়নি । 

Ans: (C) ৬ বছর + /

 

  1. কোঠারি কমিশন সাধারণ শিক্ষার জন্য কী সুপারিশ করেছিল ? 

(A) আট বছরের / 

(B) দশ বছরের / 

(C) এগারো বছরের / 

(D) চোদ্দো বছরের । 

Ans: (B) দশ বছরের / 

 

  1. বিদ্যালয়গুচ্ছ ( স্কুল কমপ্লেক্স ) -এর সুপারিশ করেছে কোন কমিশন ?

(A) মুদালিয়র কমিশন / 

(B) কোঠারি কমিশন /

(C) রাধাকৃয়ণ কমিশন / 

(D) হান্টার কমিশন । 

Ans: (B) কোঠারি কমিশন /

 

  1. কমিশনের মতে জাতীয় শিক্ষা কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য – 

(A) সকলের জন্য শিক্ষার সম সুযোগ নিশ্চিত করা / 

(B) জাতীয় সংহতিকে নিশ্চিত করা / 

(C) বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার / 

(D) দেশের সমাজ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সাহায্য করা । 

Ans: (A) সকলের জন্য শিক্ষার সম সুযোগ নিশ্চিত করা / 

 

  1. কোন কমিশনে শিক্ষার কাঠামো 10 + 2 + 3 + 2 করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ? 

(A) কোঠারি কমিশনে / 

(B) মুদালিয়র কমিশনে / 

(C) রাধাকৃষ্ণণ কমিশনে / 

(D) রেড্ডি কমিশনে । 

Ans: (A) কোঠারি কমিশনে /

 

  1. যে সমস্যাটির উপর কোঠারি কমিশন বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল— 

(A) সাধারণ শিক্ষা / 

(B) মাতৃভাষা শিক্ষা / 

(C) পেশাগত শিক্ষা / 

(D) আধুনিকীকরণের সমস্যা । 

Ans: (D) আধুনিকীকরণের সমস্যা । 

 

  1. কোঠারি কমিশনে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিকে শিক্ষার কোন স্তর হিসেবে উল্লেখ করা বলা হয়েছে ? 

(A) প্রাথমিক স্তর / 

(B) উচ্চ মাধ্যমিক স্তর 

(C) উচ্চ প্রাথমিক স্তর / 

(D) প্রারম্ভিক স্তর । 

Ans: (D) প্রারম্ভিক স্তর ।

 

  1. প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার উপর সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেয় কোন কমিশন – 

(A) হান্টার কমিশনে / 

(B) কোঠারি কমিশনে / 

(C) জাতীয় শিক্ষানীতিতে ( 1986 ) / 

(D) সার্জেন্ট কমিশনে । 

Ans: (B) কোঠারি কমিশনে /

 

  1. কোঠারি কমিশনে টাস্কফোর্সের মোট সংখ্যা ছিল— 

(A) 10 / 

(B) 12 / 

(C) 13 / 

(D) 151 

Ans: (B) 12 

 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – কোঠারি কমিশন ও ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা (সপ্তম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer : 

  1. SUPW- এর পুরো কথাটি কী ? 

Ans: SUPW- এর পুরো কথাটি হলো Socially Useful Productive Work . 

  1. NLM- এর পুরো নাম উল্লেখ করো ? 

Ans: NLM- এর পুরো নাম National Literacy Mission . 

  1. POA বলতে কী বোঝো ? 

Ans: রামমূর্তি কমিটি ( 1990 ) এবং জনার্দন রেড্ডি কমিটি ( 1992 ) প্রদত্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে 1986 সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে কিছু বদল আনা হয় । সেটিই পোগ্রাম অব অ্যাকশন , সংক্ষেপে POA নামে পরিচিত । 

  1. মাধ্যমিক শিক্ষা বলতে কী বোঝো ? 

Ans: যে শিক্ষা প্রাথমিক শিক্ষার পর শুরু হয়ে সুনাগরিক হয়ে ওঠার পথে ব্যক্তিকে সার্বিক সহায়তা করে ও সামাজিক গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে মানুষকে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উপযোগী হতে শেখায় তাকে মাধ্যমিক শিক্ষা বলে । 

  1. মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে বৃত্তিশিক্ষা বিষয়ে সুপারিশ কী ছিল ? 

Ans:;বালক ও বালিকা দু’জনের জন্য পূর্ণ এবং আংশিক সময়ের কোর্সের বন্দোবস্ত করতে হবে । 

  1. কোঠারি কমিশনের কাজ কবে শুরু হয় এবং কবে রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ? 

Ans: কোঠারি কমিশন 1964 সালের 2 অক্টোবর কাজ শুরু করে । 1966 সালের 29 জুন ‘ এডুকেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ‘ নামে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। 

  1. বৃত্তিমূলক শিক্ষার দু’টি সমস্যার উল্লেখ করো ।

Ans: বৃত্তিমূলক শিক্ষার বহুবিধ সমস্যা বর্তমান । এর মধ্যে কয়েকটি হলো— 

  1. ব্যাঙের ছাতার মতো দেশের যত্রতত্র বৃত্তিমূলক কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । এর ফলে প্রয়োজনের সঙ্গে ডিপ্লোমাধারী শিক্ষার্থী সংখ্যার ফারাক থেকে যাচ্ছে । ফলে বাড়ছে বেকারি । 
  2. এধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের সমন্বয় থাকে না । ফলে প্রশিক্ষণ শেষেও বেশিরভাগ ছাত্র চাকরি পাচ্ছে না । 
  3. সাধারণধর্মী শিক্ষা কাকে বলে ? 

Ans: সাধারণধর্মী শিক্ষা বলতে সেই শিক্ষাকে বোঝায় যা ব্যক্তিকে বিকশিত করে , জাতি গড়ে তোলে এবং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করে । 

  1. বৃত্তিমূলক বা কারিগরি শিক্ষা কী ? 

Ans: বিশেষ কোনো বৃত্তি বা পেশায় দক্ষতা অর্জনের জন্য লক্ষ্য সামনে রেখে শিক্ষালাভ করাই হলো বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা । 

  1. উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো ? 

Ans: উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান পলিটেকনিক – কলেজ । 

  1. কারিগরি শিক্ষার দু’টি প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো । 

Ans: 

  1. ITI বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট : এটি সরকার নিয়ন্ত্রিত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ( অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য ) । 
  2. পলিটেকনিক কলেজ : উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । 
  3. কোঠারি কমিশনের ত্রিভাষা সূত্রটি কী ?

Ans: মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমের বিষয়ে কোঠারি কমিশনের সুপারিশে ত্রি – ভাষা সূত্র উল্লেখ করা হয় । এটি হলো –1. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা । 2. রাষ্ট্রভাষা ( হিন্দি ) বা সহকারী ভাষা ( ইংরেজি ) । 3. একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা বিদেশি ভাষা যা পাঠক্রম – এর অন্তর্ভুক্ত নয় । এই তিনটি ভাষা আবশ্যিক । 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – কোঠারি কমিশন ও ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা (সপ্তম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer : 

  1. মাধ্যমিক শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো। 

Ans: শিক্ষার প্রসার : মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারে কোঠারি কমিশন ছাত্রসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ , শিক্ষার মান উন্নয়ন , যোগ্য শিক্ষার্থী ভর্তি ও বিদ্যালয়গুচ্ছ গঠনের উপর গুরুত্ব দিয়েছে ।

 [ A ] ছাত্রসংখ্য নিয়ন্ত্রণ : কুড়ি বছরের মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণকারী ছাত্রসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে— বিদ্যালয়গুলির অবস্থান সম্পর্কিত যথাযথ পরিকল্পনা , শিক্ষার মান উন্নয়ন ও যোগ্যতম শিক্ষার্থী নির্বাচন করা জরুরি ।

 [ B ] শিক্ষার মান উন্নয়ন : জেলাভিত্তিক মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন সংক্রান্ত পরিকল্পনা রচনা করা ও ১০ বছরের মধ্যে তা কার্যকর করা । 

 [ C ] যোগ্য শিক্ষার্থী : মাধ্যমিক স্তরে যোগ্যতম শিক্ষার্থীকে যাতে ভর্তি করা যায় তার ব্যবস্থা করা দরকার ।

 [ D ] বিদ্যালয়গুচ্ছ গঠন : কোনো অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলিকে নিয়ে বিদ্যালয়গুচ্ছ গড়ে তোলা এবং ঐ বিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মান উন্নয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন । 

  1. শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ :

 [ A ] নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে ২০ শতাংশ এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৫০ শতাংশ ছাত্র যাতে বৃত্তিশিক্ষার সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে ।

 [ B ] গ্রাম – শহরের ছেলে – মেয়েদের চাহিদা অনুযায়ী বা তাদের উপযোগী আংশিক ও পূর্ণ সময়ের বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে । 

 স্ত্রীশিক্ষার প্রসার :

 [ A ] কুড়ি বছরের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে বালক ও বালিকাদের অনুপাত ১ : ২ এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১ : ৩ করা ।

 [ B ] বালিকাদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ ।

 [ C ] ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা ।

 [ D ] দুরের ছাত্রীদের জন্য ছাত্রীনিবাস তৈরির সুপারিশ । 

  1. ভাষাশিক্ষা : নবম দশম শ্রেণিতে তিনটি ভাষা , যথা— মাতৃভাষা , রাষ্ট্রভাষা বা সহযোগী ভাষা ও আধুনিক জাতীয় ভাষা এবং একাদশ , দ্বাদশ শ্রেণিতে দু’টি ভাষা , যেমন— মাতৃভাষা , রাষ্ট্রভাষা বা সহযোগী ভাষা বাধ্যতামূলক করা । : 
  2. শিক্ষার গুরুত্ব : শিক্ষার্থীদের দেশের ভাবী নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত করা , তাদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য তৈরি করা এবং সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ সাধন করা । 
  3. অন্যান্য :

 [ A ] নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষায় গুরুত্ব প্রদান ও সমাজসেবা এবং

 [ B ] দশম শ্রেণির শেষে প্রথম বহির্বিভাগীয় পরীক্ষা ও দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহির্বিভাগীয় পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করে কমিশন । 

  1. বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক নিরূপণ করো । 

অথবা , বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা কাকে বলে ? উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করো । 

Ans: সংজ্ঞা : আর্থিক চাহিদা মানুষের চাহিদাগুলির মধ্যে অন্যতম । আর্থিক চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে ব্যক্তিকে বৃত্তি বা পেশা গ্রহণ করতে হয় । কিন্তু পেশাগত দক্ষতা আপনা থেকেই তৈরি হয় না , এজন্য প্রশিক্ষণের দরকার । বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ কারিগরেরা এই বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মপটু করে তুলতে পারেন । যে শিক্ষা বিশেষ ধরনের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি কাজ করার জন্য পরিকল্পিত মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে তাকেই বলা হয় বক্তিমুখী বা বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা । উভয় ধরনের শিক্ষার ধারণার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে । যেমন— 

  1. সর্বজনীনতার অভাব : বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার কোনোটিই সর্বজনীন নয় । তাই সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পারে না ।  
  2. প্রয়োগক্ষেত্র : দুই ধরনের শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্য ব্যবহারিক জ্ঞানার্জন ও বাস্তবক্ষেত্রে এর প্রয়োগ । 
  3. লক্ষ্য : বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য ছাত্র – ছাত্রীদের কোনো বৃত্তিগত পারদর্শিতা অর্জনে সহায়তা করা । 
  4. কাজের সুযোগ : উভয় প্রকার শিক্ষাই ব্যক্তিকে কাজের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে । 
  5. আর্থিক সহায়তা : কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যক্তির আর্থিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । : 
  6. কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা : কোনো কর্মক্ষেত্রকে সামনে রেখে উভয় প্রকার শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হয় । 
  7. নির্দিষ্ট পাঠক্রম নেই : বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সাধারণ পাঠক্রম থাকে না । সাধারণ শিক্ষারও এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় । 
  8. জ্ঞানের বিশেষীকরণ : কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জ্ঞানের বিশেষীকরণের সুযোগ থাকে । এক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে সম্পূর্ণ বিষয়গত জ্ঞানের পরিবর্তে নির্দিষ্ট অংশের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের সুযোগ ঘটে । 
  9. সৃজনশীলতার সুযোগ : উভয় প্রকার শিক্ষায় ব্যক্তির সৃজনশীলতা ও আত্মবিকাশের সুযোগ রয়েছে। 

  পরিশেষে , উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । 

  1. উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি কী ? 

Ans: উচ্চশিক্ষা : উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষা গ্রহণ করে তাকে উচ্চশিক্ষা বলে । শিক্ষার্থীরা এই স্তরে নিজস্ব রুচি ও ক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষাগ্রহণে অগ্রসর হয় । 

উচ্চশিক্ষা বিষয়ে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ : 

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কমিশন শিক্ষার সময়কাল , ভাষাশিক্ষা , পাঠক্রমের পুনর্নবীকরণ প্রভৃতি বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে । এগুলি মোটামুটি এইরূপ— 

  1. সময়কাল : প্রথম ডিগ্রি স্তর হবে ন্যূনতম তিন বছর । দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের স্থিতিকাল হবে দুই বা তিন বছর । 
  2. ভাষাশিক্ষা : উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি এইরূপ — 
  3. i) উচ্চশিক্ষার স্তরে কোনো ক্ষেত্রে ভাষাশিক্ষা আবশ্যিক নয় । তবে আঞ্চলিক ভারতীয় ভাষা বা প্রাচীন ভাষা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে উচ্চশিক্ষার স্তরে থাকবে । 
  4. ii) বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ধীরে ধীরে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে । প্রথম দিকে প্রথম ডিগ্রি স্তরে আঞ্চলিক ভাষায় পড়ানো যেতে পারে , তবে দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হবে ইংরেজি । 

  iii) উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষককে অন্তত দু’টি ভাষা জানতে হবে ( আঞ্চলিক ভাষা ও ইংরেজি ) , দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের শিক্ষার্থীদের দু’টি ভাষা জানা দরকার । 

  1. iv) এই স্তরে ইংরেজি ভাষা ছাড়াও অন্যান্য বিদেশি ভাষা , বিশেষ করে রাশিয়ান ভাষা শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে । 
  2. পাঠক্রমের পুনর্বিন্যাস : মাস্টার্স ডিগ্রি স্তরে পাঠক্রমের পুনর্বিন্যাস করতে হবে । পাঠক্রম হওয়া উচিত ‘ জেনেরাল বেড ’ অথবা একটি বা দু’টি বিশেষ ক্ষেত্রে ‘ ইন্টারভিউইং ট্রেনিং ’ – এর ব্যবস্থা হবে । 
  3. বিষয় নির্বাচনে নমনীয়তা : প্রথম ডিগ্রি স্তরে কলা , বিজ্ঞান ও কোর্সে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে নমনীয়তা প্রয়োজন । 
  4. বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবহারিক কাজের গুরুত্ব : বিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক । ব্যবহারিক কাজের মধ্যে সমতা আনা দরকার । পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে ব্যবহারিক কাজের প্রতি দৃষ্টি আরোপ করতে হবে । জীবনবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ‘ মাইক্রো অরগানিজম ‘ অধ্যয়ন এবং সেক্ষেত্রে ওষুধের ভূমিকার ওপর বেশি জোর দিতে হবে । 
  5. বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা বলতে কী বোঝো ? এই শিক্ষার গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো । 

Ans: মানুষের অন্যতম চাহিদা হলো আর্থিক চাহিদা । আর্থিক চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে ব্যক্তিকে বৃত্তি বা পেশা গ্রহণ করতে হয় । কিন্তু পেশাগত দক্ষতা আপনা থেকেই তৈরি হয় না , তার জন্য প্রশিক্ষণের দরকার হয় । বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ কারিগরেরা এই বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মপটু করে তুলতে পারেন । যে শিক্ষা বিশেষ ধরনের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি কাজ করার জন্য পরিকল্পিত মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে তাকেই বলা হয় বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা । 

বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা— 

পাঠক্রম সুনির্দিষ্ট : বৃত্তিশিক্ষায় সুনির্দিষ্ট পাঠক্রমের ভিত্তিতে পঠন – পাঠন ও প্রশিক্ষণের কাজ চলে । এই পাঠক্রম অনুশীলন করে শিক্ষার্থীরা দক্ষ কর্মীতে ( Skilled ) worker ) পরিণত হয় । 

আর্থিক চাহিদা পূরণ : বৃত্তিশিক্ষা সাফল্য সম্পূর্ণ করে শিক্ষার্থী তার কর্মজীবনে প্রবেশ করছে এবং পারিবারিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম হচ্ছে । এর ফলে তার আর্থিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয় । 

স্বনির্ভর নিয়োগ : বৃত্তিমূলক ও পেশাগত শিক্ষার সামাজিক গুরুত্ব সুদূরপ্রসারী । বৃত্তিশিক্ষার সুষ্ঠু পরিচালনার দ্বারা জাতীয় পরিকল্পনায় ( National Planning ) মানবসম্পদের পূর্ণ সদ্ব্যবহার সম্ভব । সমাজে স্বনির্ভর নিযুক্তি ( Self – employment ) ও স্বাবলম্বনের কার্যক্রমকে সম্পূর্ণতা দিতে পারে বৃত্তিমূলক শিক্ষা । 

কুশলী যন্ত্রবিদের সংখ্যাবৃদ্ধি : বৃত্তিশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব যাচাই করে এই শিক্ষাগ্রহণে অধিক সংখ্যক ছাত্র উৎসাহী হলে উপযুক্ত ও কুশলী বিশেষজ্ঞদেরও নিযুক্ত করা রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভবপর হয় । মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তিশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়বে । দেশে আরও নতুন নতুন বৃত্তিমুখী ও পেশাদারি প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দেবে । 

  1. প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষা কী ? প্রাকৃপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্য , কাঠামো এবং পাঠক্রম সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশসমূহ উল্লেখ করো । 

Ans: প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হওয়ার আগে শিশুদের জন্য যে শিক্ষা তাকে বলে প্রাক্‌ – প্রাথমিক শিক্ষা । মোটামুটিভাবে পাঁচ – ছয় বছর পর্যন্ত শিশুকে প্রাক্‌ – প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয় । 

প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ : 

উদ্দেশ্য / লক্ষ্য : 

  1. শিশুর নান্দনিক বোধে উৎসাহ দেওয়া । 
  2. শিশুর চিন্তা ও অনুভূতিগুলি সাবলীলভাবে প্রকাশের ক্ষমতার বিকাশসাধন । 
  3. শিশুর নিজস্ব চিন্তা – চেতনা ও সৃজনশীলতায় উৎসাহদান । 
  4. শিশুদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ায় ও ব্যক্তিগত অভিযোজনে সহায়তা করা । 
  5. শিশুকে তার পরিবেশ সম্পর্কে জানা ও পরিবেশ বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা । 

কাঠামো : কমিশনের মতে , ৩ বা ৪ বছর বয়সি শিশুরা প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের জন্য উপযুক্ত । ৫-৬ বছর পর্যন্ত এই স্তরে পাঠগ্রহণ করে শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হবে । প্রাকৃপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকাঠামো অনুযায়ী কেজি ওয়ানে ৩ ° বয়সি শিশুরা এবং কেজি টু স্তরে ৪ বছরের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে । 

পাঠক্রম : 

  1. শারীরিক কার্যকলাপ ও শারীরশিক্ষা । 
  2. গণনা ও পাটিগণিত শেখা । 
  3. প্রাকৃতিক বস্তুসামগ্রী ও শিশুদের উপযোগী জিনিসপত্রের মাধ্যমে শিক্ষা । 
  4. নানা ধরনের হাতের কাজ , ছবি আঁকা ইত্যাদিতে গুরুত্ব । 
  5. সব শিশুর একসঙ্গে মুক্তভাবে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ ও শিক্ষালাভ । 
  6. ভাষা শেখা , স্বাস্থ্যের নিয়ম ও প্রকৃতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা । প্রসঙ্গত , শিক্ষা কমিশন শিক্ষার লক্ষ্য , কাঠামো ও পাঠক্রম বিষয়ে শুধু সুপারিশই করতে পারে । সেই সুপারিশ অনুযায়ী সর্বত্র শিক্ষা ব্যবস্থা যথাযথভাবে পরিচালনা করা কিংবা সেই পাঠক্রম চালু করার দায়িত্ব বা এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের শিক্ষা বোর্ড ও বিশেষজ্ঞ কমিটি । 
  7. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কী ? উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য , কাঠামো ও পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করো ।

Ans: মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর অর্থাৎ দশ বছরের শিক্ষান্তে বহি : পরীক্ষার মাধ্যমে সফল ছাত্র – ছাত্রীরা নিজ সামর্থ্য অনুসারে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠগ্রহণ করে । এটাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা । প্রকৃতপক্ষে মাধ্যমিক শিক্ষার শেষভাগ হলো উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা । 

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ : 

লক্ষ্য : 

  1. নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষাকে প্রসারিত , দৃঢ়তর করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া । এর উদ্দেশ্য চরম বিশেষীকরণ না করে ছাত্র – ছাত্রীদের আরো বিশেষীকরণমুখী করা । 
  2. জীবনের প্রথম বহিঃপরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র – ছাত্রীরা স্থির করবে ভবিষ্যতে কোন বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করবে । এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা , উৎসাহ , রুচি ও আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় বাছাইয়ের সুযোগ পাবে । 
  3. ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী কলা ও বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্জন এবং বাকি ৫০ শতাংশ ছাত্র – ছাত্রী বাণিজ্য , কৃষি ও কারিগরিবিদ্যার মতো বৃত্তিশিক্ষার সুযোগ পাবে পুরো বা আংশিক সময়ের জন্য । 

কাঠামো : উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর দু’বছরের । যথা – একাদশ শ্রেণি ও দ্বাদশ শ্রেণি । এই শিক্ষাস্তরে ছাত্র – ছাত্রীদের বয়স হবে ১৬ ও ১৭। প্রসঙ্গত , মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এই দু’ভাগে বিভক্ত । 

পাঠক্রম : 

  1. ভাষা : উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের যেকোনো দু’টি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক । এর মধ্যে থাকবে আধুনিক ভারতীয় ভাষা , প্রাচীন ভাষা ও বিদেশি ভাষার বিকল্প থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ । 
  2. ঐচ্ছিক বিষয় : এর মধ্যে রয়েছে – 1)একটি অতিরিক্ত ভাষা , ভূগোল , ইতিহাস , অর্থনীতি , মনোবিজ্ঞান , তর্কবিদ্যা , সমাজবিজ্ঞান , পদার্থবিদ্যা , গণিত , রসায়ন , জীববিজ্ঞান , গার্হস্থ্যবিজ্ঞান প্রভৃতি ।   2) কর্মশিক্ষা 3) শারীরশিক্ষা 4) হস্তশিল্প 5) নৈতিক শিক্ষা । 

  প্রসঙ্গত , বিভিন্ন স্তরের পাঠক্রম সম্পর্কে কমিশন শুধু সুপারিশ করতে পারে । পাঠক্রম কী হবে এসম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকারের শিক্ষা বোর্ড ও বোর্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে গড়া বিশেষজ্ঞ কমিটি ।