উচ্চমাধ্যমিক দর্শন – মিলের পরিক্ষণমুলক পদ্ধতি (তৃতীয় অধ্যায়) আরোহমূলক তর্কবিদ্যা প্রশ্ন ও উত্তর

 সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো 

  1. ‘ যে পূর্ববর্তী ঘটনাকে বাদ দিলে কার্যের হানি হয় না , সেটি সেই অর্থে সেই কার্যের কারণ বা কারণের অংশ নয় ‘ – সূত্রটি মিল – এর

(A) সহপরিবর্তন 

(B) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী 

(C) ব্যতিরেকী

(D) অন্বয়ী । 

Ans: (D) অন্বয়ী

 

  1. মিল যে পদ্ধতিকে ‘ প্রধানত আবিষ্কারের পদ্ধতি , প্রমাণের পদ্ধতি নয় ’ বলছেন তা হলো – 

(A) পরিবেশ পদ্ধতি 

(B) অন্বয়ী পদ্ধতি

(C) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(D) সহপরিবর্তন পদ্ধতি । 

Ans: (B) অন্বয়ী পদ্ধতি

 

  1. মিল – এর যে পদ্ধতি কার্যকারণকে পৃথক করতে পারে না তা হলো – 

(A) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(B) মিশ্র পদ্ধতি

(C) অন্বয়ী পদ্ধতি সহ অবস্থান থেকে 

(D) সহপরিবর্তন পদ্ধতি । 

Ans: (C) অন্বয়ী পদ্ধতি 

 

  1. ব্যাতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য কয়টি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন ? 

(A) বহু 

(B) 4 টি 

(C) 3 টি 

(D) 2 টি । 

Ans: (D) 2 টি ।

 

  1. মিল – এর যে পদ্ধতিতে ‘ কাকতালীয় দোষ ’ হয় তা হলো – 

(A) ব্যতিরেকী পদ্ধতি পদ্ধতি 

(B) সহপরিবর্তন পদ্ধতি 

(C) অন্বয়ী পদ্ধতি 

(D) যুগ্ম পদ্ধতি ( মিশ্র পদ্ধতি ) । 

Ans: (A) ব্যতিরেকী 

 

  1. মিলের পাঁচটি পদ্ধতির মধ্যে মৌলিক পদ্ধতি কয়টি ? 

(A) ১ টি 

(B) ৫ টি 

(C) ২ টি 

(D) ৩ টি । 

Ans: (C) ২ টি 

 

  1. ” যে পূর্ববর্তী ঘটনাকে বাদ দিলে কার্যের হানি হয় , সেটি সেই অর্থে সেই কার্যের কারণ বা কারণের অংশ ‘ – সূত্রটি মিল এর– 

(A) অন্বয়ী 

(B) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী 

(C) সহপরিবর্তন – পদ্ধতির ভিত্তি 

(D) ব্যতিরেকী । 

Ans: (D) ব্যতিরেকী ।

 

  1. দ্বৈত অস্বয়ী পদ্ধতি হলো— 

(A) যুগ্ম পদ্ধতি 

(B) ব্যতিরেকী পদ্ধতি

(C) সহপরিবর্তন পদ্ধতি 

(D) অন্বয়ী পদ্ধতি । 

Ans: (A) যুগ্ম পদ্ধতি

 

  1. অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ হয় যে পদ্ধতির ভুল প্রয়োগে— 

(A) অন্বয়ী 

(B) ব্যতিরেকী 

(C) মিশ্র 

(D) পরিশেষ । 

Ans: (A) অন্বয়ী

 

  1. ______ পদ্ধতিতে আমরা কার্য থেকে কারণে যেতে পারি না 

(A) মিশ্র 

(B) অন্বয়ী 

(C) ব্যতিরেকী 

(D) পরিশেষ । 

Ans: (C) ব্যতিরেকী

 

  1. ______ পদ্ধতি একটি যৌগিক পদ্ধতি । 

(A) অন্বয়ী 

(B) ব্যতিরেকী 

(C) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী 

(D) সহপরিবর্তন । 

Ans: (C) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী

 

  1. অদ্বয়ী পদ্ধতির সিদ্ধান্ত হলো— 

(A) সুনিশ্চিত 

(B) সম্ভাব্য 

(C) অনিশ্চিত 

(D) বিশ্লেষণাত্মক । 

Ans: (B) সম্ভাব্য

 

  1. মিলের যে পদ্ধতি কার্যকারণকে সহ – অবস্থান থেকে পৃথক করতে পারে না সেটি হলো – 

(A) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(B) সহপরিবর্তন পদ্ধতি

(C) অন্বয়ী পদ্ধতি 

(D) মিশ্র পদ্ধতি । 

Ans: (C) অন্বয়ী পদ্ধতি

 

  1. মিলের প্রথম অপসারণ সূত্রের ভিত্তি হলো – 

(A) পর্যবেক্ষণ 

(B) সহপরিবর্তন পদ্ধতি

(C) সদর্থক ও নঞর্থক 

(D) তৃতীয় সুত্রের ভিত্তিতে ।

Ans: (D) তৃতীয় সুত্রের ভিত্তিতে ।

 

  1. সহপরিবর্তন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অপসারণের – 

(A) দ্বিতীয় সূত্রের 

(B) চতুর্থ সূত্রের

(C) প্রথম সূত্রের 

(D) তৃতীয় সুত্রের ভিত্তিতে ।

Ans: (D) তৃতীয় সুত্রের ভিত্তিতে ।

 

  1. মিলের অপসারণের সূত্র হলো – 

(A) ৪ টি 

(B) ২ টি 

(C) ৩ টি 

(D) কোনোটিই নয় । 

Ans: (C) ৩ টি

 

  1. মিলের পাঁচটি পদ্ধতিকে কীরূপ পদ্ধতি বলা হয় ? 

(A) গঠনমূলক 

(B) সমালোচনামূলক

(C) পরীক্ষণমূলক 

(D) পর্যবেক্ষণমূলক

Ans: (C) পরীক্ষণমূলক

 

  1. অপসারণ সূত্রগুলির ভিত্তি কী ? 

(A) কার্যের নিয়ম 

(B) কার্যকারণ নিয়ম

(C) কারণের নিয়ম 

(D) পরীক্ষণের নিয়ম ।

Ans: (B) কার্যকারণ নিয়ম

 

  1. অন্বয়ী পদ্ধতির একটি পরিবর্তিত রূপ হলো – (A) পরিশেষ পদ্ধতি 

(B) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(C) সহপরিবর্তন পদ্ধতি 

(D) ব্যতিরেকী পদ্ধতি । 

Ans: (B) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি

 

  1. অন্বয়ী পদ্ধতি মূল – 

(A) প্রমাণের পদ্ধতি 

(B) উভয়ই

(C) আবিষ্কারের পদ্ধতি 

(D) কোনোটিই নয় । 

Ans: (C) আবিষ্কারের পদ্ধতি

 

  1. অপসারণের তৃতীয় সূত্রের ভিত্তি হলো 

(A) বচন 

(B) পদ 

(C) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ 

(D) কারণের গুণগত লক্ষণ । 

Ans: (C) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ

 

  1. অন্বয়ী পদ্ধতির সিদ্ধান্তটি হলো – 

(A) অনিশ্চিত

(B) বিশ্লেষণাত্মক 

(C) সুনিশ্চিত

(D) সম্ভাব্য । 

Ans: (D) সম্ভাব্য ।

 

  1. মিলের সহপরিবর্তন পদ্ধতির ভিত্তি হলো 

(A) কারণের গুণগত লক্ষণ 

(B) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ 

(C) পর্যবেক্ষণ

(D) পরীক্ষণ ।

Ans: (B) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ

 

  1. মিলের পদ্ধতিগুলিকে আর কী নামে চেনা হয় ? 

(A) উপমামূলক পদ্ধতি 

(B) সাধারণ অনুমান পদ্ধতি 

(C) আরোহমূলক পদ্ধতি 

(D) অবরোহমূলক পদ্ধতি । 

Ans: (C) আরোহমূলক পদ্ধতি 

 

  1. দ্বৈত – অন্বয়ী পদ্ধতি হলো – 

(A) সহপরিবর্তন পদ্ধতি 

(B) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(C) অন্বয়ী পদ্ধতি 

(D) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি । 

Ans: (D) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি ।

 

  1. মিল – এর যে আরোহমূলক পদ্ধতিতে দুটিমাত্র দৃষ্টান্ত যাচাই করা হয় সেটি হলো— 

(A) সহপরিবর্তন পদ্ধতি 

(B) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

(C) অন্বয়ী পদ্ধতি 

(D) অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি । 

Ans: (B) ব্যতিরেকী পদ্ধতি

 

  1. অপসারণের দ্বিতীয় সূত্রের ভিত্তি হলো – 

(A) পর্যবেক্ষণ 

(B) কারণের গুণগত লক্ষণ 

(C) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ 

(D) পরীক্ষা । 

Ans: (B) কারণের গুণগত লক্ষণ

 

  1. মিলের পরীক্ষামূলক পদ্ধতির ক’টি দিক আছে ? 

(A) ৩ টি 

(B) ২ টি 

(C) ৪ টি 

(D) ৫ টি । 

Ans: (B) ২ টি 

 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক দর্শন – মিলের পরিক্ষণমুলক পদ্ধতি (তৃতীয় অধ্যায়) আরোহমূলক তর্কবিদ্যা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Philosophy Question and Answer : 

  1. মিলের সহপরিবর্তন পদ্ধতিটি আলোচনা করো । [ সংজ্ঞা, আকার, সুবিধা ( ২ টি ) , অসুবিধা ( ২ টি ) ] 

Ans: সহপরিবর্তন পদ্ধতির সূত্র : যখন কোনো একটি ঘটনা একভাবে পরিবর্তিত হয় , অন্য একটি ঘটনা তখন যদি একইভাবে পরিবর্তিত হয় , তবে পূর্ববর্তী ঘটনাটি পরবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণাংশ বা ঘটনা দু’টি কার্যকারণ সম্বন্ধে যুক্ত সহপরিবর্তন সূত্রের ভিত্তি : অপসারণ পদ্ধতির সূত্রানুযায়ী যদি একটি ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধি হয় , অন্য একটি ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধি না হয় , তবে বুঝতে হবে ঘটনা দু’টির মধ্যে কোনো কার্যকারণ সম্বন্ধ নেই । অপসারণ পদ্ধতির এই সুত্রের উপর ভিত্তি করে সহপরিবর্তন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত । 

  কারণের পরিমাণগত লক্ষণের উপর ভিত্তি করেও এই পদ্ধতিটি প্রতিষ্ঠিত । পরিমাণগত লক্ষণ বলতে বোঝায় কারণ ও কার্য পরিমাণের দিক থেকে সমান । অর্থাৎ কারণ ও কার্যের মধ্যে সমান পরিমাণ শক্তি থাকে । এই কারণে কারণের পরিমাণের হ্রাস – বৃদ্ধি ঘটলে কার্যের পরিমাণেরও হ্রাস – বৃদ্ধি ঘটে । তাই বলা যায় , পূর্ববর্তী ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধির ফলে যদি পরবর্তী ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধি ঘটে , তবে পূর্ববর্তী ঘটনা অবশ্যই পরবর্তী ঘটনার কারণ । 

সহপরিবর্তনের দু’টি রূপ : 

  1. একমুখী হ্রাসবৃদ্ধি : একমুখী হ্রাস – বৃদ্ধি বলতে বোঝায় , পূর্ববর্তী ঘটনার বৃদ্ধির সাথে সাথে পরবর্তী ঘটনা বৃদ্ধি পায় ; আবার পূর্ববর্তী ঘটনা হ্রাস পেলে পরবর্তী ঘটনাও হ্রাস পায় । 

উদাহরণ : আবহাওয়া যতই উত্তপ্ত হয় , ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা ততই বৃদ্ধি পায় । আবার উত্তাপের পরিমাণ যতই কমতে থাকে , তাপমান যন্ত্রের পারদস্তম্ভের উচ্চতা ততই কমতে থাকে । সুতরাং উত্তাপ বৃদ্ধি পারদস্তত্তের বৃদ্ধির কারণ । 

2.বিপরীতমুখী হ্রাসবৃদ্ধি : এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী ঘটনার বৃদ্ধি ঘটলে পরবর্তী ঘটনা হ্রাস পায় । আবার পূর্ববর্তী ঘটনা হ্রাস পেলে পরবর্তী ঘটনা বৃদ্ধি পায় । 

উদাহরণ — ভোগ্যপণ্যের দাম যতই বৃদ্ধি পায় , তার চাহিদা ততই হ্রাস পায় ; আবার দাম যতই হ্রাস পায় চাহিদা ততই বৃদ্ধি পায় । সুতরাং ভোগ্যপণ্যের মূল্যের সঙ্গে চাহিদার কার্যকারণ সম্বন্ধ আছে । 

( ক ) অন্বয়ী পদ্ধতির বিশেষ রূপ হিসাবে সহপরিবর্তন পদ্ধতি : 

অন্বয়ী পদ্ধতির বিশেষ রূপ হিসাবে এই পদ্ধতিতে ভিন্ন ভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার 3 মধ্যে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ঘটনার মধ্যে একভাবে বা ভিন্নভাবে হ্রাস – বৃদ্ধি লক্ষ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ স্থাপিত হয় । 

প্রতীকী দৃষ্টান্ত : 

পূর্ববর্তী ঘটনা 

Abc

A , ef

A₂ gh

 পূর্ববর্তী ঘটনা 

Abc 

A + bc 

A – bc .. 

A হলো a- এর কারণ । 

( খ ) ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিশেষ রূপ হিসাবে সহপরিবর্তন পদ্ধতি : 

পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ঘটনা অপরিবর্তিত পারিপার্শ্বিক অবস্থায় একইভাবে বা বিপরীতভাবে হ্রাস – বৃদ্ধি লক্ষ করে যদি কার্যকারণ সম্বন্ধ স্থাপন করা হয় তবে অনুমান করতে হবে সহপরিবর্তন পদ্ধতিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিশেষ রূপ প্রয়োগ হয়েছে । 

প্রতীকী দৃষ্টান্ত : 

একমুখী পরিবর্তন : 

: . A হলো a- এর কারণ । বিপরীতমুখী পরিবর্তন : 

পরবর্তী ঘটনা 

abc

a + b c 

ef 

পূর্ববর্তী ঘটনা : 

Abc 

A + bc 

A – bc 

a . : . A এবং কার্যকারণ সম্বন্ধে যুক্ত । 

সহপরিবর্তন পদ্ধতির সুবিধা : 

  1. ব্যতিরেকী পদ্ধতিতে না – বাচক দৃষ্টান্তে কারণকে পুরোপুরি বাদ দিতে হয় । কিন্তু উত্তাপ , মাধ্যাকর্ষণ প্রভৃতি স্থায়ী কারণকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া যায় না । এই ক্ষেত্রে সহপরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করে দু’টি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা সম্ভব হয় । অর্থাৎ সহপরিবর্তন পদ্ধতি ব্যতিরেকী পদ্ধতির পরিপূরক হিসাবে কাজ করতে পারে । 
  2. সহপরিবর্তন পদ্ধতির দু’টি উদ্দেশ্য- কার্যকারণ সম্বন্ধ খুঁজে বের করা , কার্যকারণের পরিমাণগত অনুপাত নির্ণয় করা । 
  3. বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যান্য পদ্ধতির উপরে এই পদ্ধতির বিশেষ মূল্য আছে ।

সহপরিবর্তন পদ্ধতির অসুবিধা : 

  1. যে সব ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধি অর্থাৎ পরিমাণগত তারতম্য লক্ষ করা যায় , শুধুমাত্র সেসব ঘটনার ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা চলে । স্থিতিশীল ঘটনার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অচল । 
  2. ঘটনার পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কার্যকরী । গুণগত বা জাতিগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় না । 
  3. এই পদ্ধতি পরিমাণগত হ্রাস – বৃদ্ধির একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত কাজ করে । এই সীমার বাইরে এই পদ্ধতি কাজ করে না । 
  4. দৃষ্টান্ত সহ মিলের ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা ও বিচার করো । [ সংজ্ঞা , আকার , দৃষ্টান্ত , সুবিধা ( ২ টি ) , অসুবিধা ( ২ টি ) ]

Ans: ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্র : মিল তাঁর A System of Logic গ্রন্থে ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রে বলেছেন : “ বিচার্য ঘটনাটি যে দৃষ্টান্তে উপস্থিত আছে এবং যে দৃষ্টান্তে উপস্থিত নেই , সেই দু’টি দৃষ্টান্তের মধ্যে যদি একটি ব্যাপার ছাড়া বাকি সব ব্যাপারে মিল থাকে , তাহলে যে ব্যাপারটির জন্য দু’টি দৃষ্টান্তের মধ্যে পার্থক্য , সেই ব্যাপারটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ । ” 

পদ্ধতিটির ব্যাখ্যা : ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে , এই পদ্ধতিকে প্রয়োগ করতে হলে কেবলমাত্র দু’টি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয় : একটি হলো সদর্থক দৃষ্টান্ত এবং অপরটি হলো নঞর্থক দৃষ্টান্ত । পরীক্ষণের সাহায্যে এই দুই রকম দৃষ্টান্ত সংগৃহীত হয় । এই দু’টি দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি মাত্র ঘটনার পার্থক্য থাকে এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ঘটনাগুলির মধ্যে মিল থাকে । প্রথম দৃষ্টাত্তে একটিমাত্র বিশেষ ঘটনা উপস্থিত থাকলে আলোচ্য ঘটনাটিও উপস্থিত থাকে । আর দ্বিতীয় দৃষ্টান্তে একটিমাত্র ঘটনা অনুপস্থিত থাকলে আলোচ্য ঘটনাটিও অনুপস্থিত থাকে । এর থেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে , দৃষ্টান্ত দু’টির মধ্যে যে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পার্থক্য , সেই ঘটনাটিই হলো আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ । ..সুতরাং A হলো a- এর কারণ । 

এখানে ১ নং উদাহরণে পূর্ববর্তী ঘটনা থেকে A- কে বাদ দেওয়ার জন্যে অনুবর্তী ঘটনা থেকে a বাদ পড়লে এবং ২ য় উদাহরণে পূর্ববর্তী ঘটনার সঙ্গে A- কে যোগ করার ফলে অনুবর্তী ঘটনাতে a যোগ হলো । কিন্তু অন্যান্য সব অবস্থা অপরিবর্তিত । সুতরাং A হলো a- এর কারণ ।

বাস্তব উদাহরণ : একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে ঘণ্টা বাজিয়ে দেখা গেল যে , ঘণ্টার শব্দ হচ্ছে । কিন্তু পাত্রটিকে বায়ুশূন্য করে ঘণ্টা বাজিয়ে দেখা গেল যে , ঘণ্টার শব্দ হচ্ছে না । এর থেকে অনুমান করা যায় যে , ‘ বায়ুর উপস্থিতি হলো শব্দের কারণ । ‘ 

ব্যতিরেকী পদ্ধতির সুবিধা : 

  1. ব্যতিরেকী পদ্ধতি হলো মূলত পরীক্ষামূলক পদ্ধতি । এই জন্য এই পদ্ধতি নিশ্চিতভাবে কার্য – কারণ সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারে । 
  2. অন্যান্য পদ্ধতির সাহায্যে পাওয়া সিদ্ধান্তের পরীক্ষণ ও প্রমাণ এই পদ্ধতির সাহায্যে করা যেতে পারে । 
  3. প্রয়োগের দিক থেকে এই পদ্ধতি খুবই সহজ ও সরল । কারণ এই পদ্ধতির প্রয়োগের জন্য একটি সদর্থক ও একটি নঞর্থক দৃষ্টান্ত প্রয়োজন হয় । 4. ব্যতিরেকী পদ্ধতি যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারলে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব । ব্যতিরেকী পদ্ধতির অসুবিধা : 
  4. ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়োগক্ষেত্র খুবই সীমিত । যে সকল ক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয় সেই সব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় না । 
  5. এই পদ্ধতির সাহায্যে কারণ থেকে কার্যে যাওয়া যায় , কিন্তু কার্য থেকে কারণে সোজাসুজি আসা যায় না । 
  6. ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে কাকতালীয় দোষ দেখা দেয় । ধূমকেতু দেখা গেল এবং তার পরেই যুদ্ধ আরম্ভ হলো— এটি একটি ব্যতিরেকী পদ্ধতির ভুল প্রয়োগ । 
  7. ব্যতিরেকী পদ্ধতি কারণ ও শর্তের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না । 

যেমন— বারুদ আছে + আগুন নেই – বিস্ফোরণ নেই । 

বারুদ আছে + আগুন আছে – বিস্ফোরণ আছে । : . আগুন = কারণ , বিস্ফোরণ – কার্য । অক্সিজেনের উপস্থিতি ইত্যাদি । 

কিন্তু আগুন বিস্ফোরণের একটি শর্ত মাত্র । অন্যান্য শর্তগুলি হলো দাহ্যতা , শুষ্কতা , এই পদ্ধতি বহু কারণের সম্ভাবনা থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয় 

মন্তব্য : ব্যতিরেকী পদ্ধতির কিছু ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । মিল বলেন , ব্যতিরেকী পদ্ধতি হলো প্রমাণ পদ্ধতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি ।