সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি (একাদশ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer :
- একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষার ওপর যে আন্তর্জাতিক কমিশন গঠিত হয় তার নেতৃত্বে ছিলেন—
(A) ফেডেরিকো মেয়র /
(B) জ্যাক ডেলর /
(C) এডগার ডব্লিউ হেককিন্স /
(D) এঁদের কেউই নন ।
Ans: (B) জ্যাক ডেলর /
- জ্যাক ডেলর কোন দেশের অধিবাসী ছিলেন ? (A) ইংল্যান্ডের /
(B) মেক্সিকোর /
(C) ফ্রান্সের /
(D) আমেরিকার ।
Ans: (C) ফ্রান্সের /
- জ্যাক ডেলরের নেতৃত্বে ‘ লানিং দ্য ‘ ট্রেজার উইদিন ’ রিপোর্টটি কবে পেশ করা হয় ?
(A) ১৯৯২ খ্রি : /
(B) ১৯৯৬ খ্রি : /
(C) ১৯৮৮ খ্রি : /
(D) ২০০০ খ্রি :।
Ans: (B) ১৯৯৬ খ্রি : /
- 2000 সালে ডাকারে কোন বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ?
(A) অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা /
(B) পরিবেশ শিক্ষা /
(C) প্রারম্ভিক শিক্ষা /
(D) সকলের জন্য শিক্ষা ।
Ans: (D) সকলের জন্য শিক্ষা ।
- ডেলর কমিশন প্রস্তাবিত বিশ্বশিক্ষার স্তম্ভ সংখ্যা
(A) দুই /
(B) ছয় /
(C) চার /
(D) পাঁচ ।
Ans: (C) চার /
- কর্মের জন্য শিক্ষা বলতে বোঝায়—
(A) বৌদ্ধিক শিক্ষা /
(B) উচ্চশিক্ষা /
(C) শিক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করা /
(D) পারদর্শিতার শিক্ষা ।
Ans: (D) পারদর্শিতার শিক্ষা ।
- ‘ শিক্ষণের জন্য শিক্ষা ’ যে স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত
(A) জাতীয় বয়স্ক শিক্ষা /
(B) মানুষ হওয়ার শিক্ষা /
(C) জানার জন্য শিক্ষা /
(D) একত্রে বসবাসের শিক্ষা ।
Ans: (C) জানার জন্য শিক্ষা /
- কর্মের জন্য শিক্ষা বলতে বোঝায় –
(A) নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন /
(B) বিভিন্ন পরিস্থিতিতে উৎকর্ষের সঙ্গে কাজ করা /
(C) যৌথবদ্ধভাবে কাজ করা /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- পরিবেশ শিক্ষার ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলন নামে পরিচিত—
(A) বেলগ্রেড সম্মেলন /
(B) তেহরান / সম্মেলন /
(C) টিবিলিস সম্মেলন /
(D) (A) ও (C) ।
Ans: (D) (A) ও (C) ।
- ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বমানের পাঠ্যপুস্তক –
(A) টিচিং প্রাইমারি স্কুল ম্যাথামেটিক্স /
(B) গাইডলাইন্স ফর টেক্সট বুক রাইটিং /
(C) সোর্স বুক অব জিয়োগ্রাফি টিচিং /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- 1972 সালে এডগার ফাউরের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন যে নামে পরিচিত হয়—
(A) লার্নিং – দ্য ট্রেজার উইদিন /
(B) লার্নিং টু বি /
(C) লার্নিং টু নো /
(D) লং লাইফ এডুকেশন ।
Ans: (B) লার্নিং টু বি /
- EFA- এর সম্পূর্ণ নাম—
(A) এডুকেশন ফর অ্যাডাল্ট /
(B) এডুকেশন ফর অ্যাকশন / অল
(C) এডুকেশন ফর অল /
(D) এডুকেশন ফর এনি টাইম ।
Ans: (C) এডুকেশন ফর অল /
- কোন ভারতীয় শিক্ষাবিদের বক্তব্যে শিক্ষার চারটি স্তম্ভের প্রভাব দেখা যায় ?
(A) স্বামী বিবেকানন্দ /
(B) মহাত্মা গান্ধি /
(C) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর /
(D) বিদ্যাসাগর ।
Ans: (A) স্বামী বিবেকানন্দ /
- নীচের কোনগুলি আন্তর্জাতিক সংস্থা ?
(A) UNO /
(B) WHO /
(C) UNICEF /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (D) উপরের সবক’টি ।
- শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ দেখভাল করে কোন সংস্থা ?
(A) WHO /
(B) UNICEF /
(C) UNESCO /
(D) উপরের সবক’টি ।
Ans: (C) UNESCO /
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি (একাদশ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer :
- Delore Commission- এর সভাপতির নাম লেখো ।
Ans: Arid Delore Commission- এর সভাপতি হলেন ফ্রান্সের প্রাক্তন অর্থনীতি । রাজস্ব বিষয়ক মন্ত্রী Jacques Delore .
- ‘ জানার জন্য শিক্ষা’— এর অর্থ কী ?
Ans: ব্যাপক সাম্প্রতিক বিষয়মূলক জ্ঞানের সঙ্গে ছোটোখাটো বিষয়ের উপর নিবিড় জ্ঞানের সমন্বয়কেই জানার জন্য শিক্ষা বলা হয় ।
3 মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
Ans: শিক্ষার্থীর জন্মগত গুণাবলির বিকাশ , মূল্যবোধ , নীতিবোধ , স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা ইত্যাদির শিক্ষাকেই মানুষ হওয়ার শিক্ষা বলে ।
- ডেলর কমিশন প্রস্তাবিত শিক্ষার স্তম্ভগুলি উল্লেখ করো ।
Ans: ডেলর কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি এইরূপ— 1. জানার জন্য শিক্ষা 2. কর্মের জন্য শিক্ষা 3. একত্রে বসবাসের শিক্ষা এবং 4. মানুষ হওয়ার শিক্ষা ।
- একত্রে বাঁচার শিক্ষার উদাহরণ দাও ।
Ans: শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বা অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব প্রদর্শন ‘ একত্রে বাঁচার শিক্ষা ‘ – র উদাহরণ ।
- ডেলর কমিশন কত সালে UNESCO- কে তাদের রিপোর্ট জমা দেয় ?
Ans: 1996 সালে ডেলর কমিশন UNESCO- কে রিপোর্ট জমা দেয় ।
- UNESCO- র সম্পূর্ণ নাম লেখো ।
Ans: UNESCO- র পুরো নাম United Nations Educational Scientific and Cultural Organization .
- বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান নিয়ন্ত্রক কাকে বলা হয় ?
Ans: সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ ( UNO ) – র একটি শাখা ইউনাইটেড নেশন্স এডুকেশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনকে বলা হয় প্রধান নিয়ন্ত্রক ।
- Delore Commission- এর চারটি স্তম্ভ ( Four Pillars ) কী ?
Ans: 1. জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা , 2. অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষা , 3. প্রথা বহির্ভূত শিক্ষা 4. কর্মের জন্য শিক্ষা ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান – শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি (একাদশ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | HS Education Question and Answer :
- সাক্ষরতা কাকে বলে ? জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচির লক্ষ্য লেখো ।
Ans: সাক্ষরতা অক্ষরজ্ঞান রয়েছে এমন ব্যক্তিই হলো সাক্ষর । সাধারণভাবে সাক্ষরতা বলতে বোঝায় মাতৃভাষায় নিজের নাম লিখতে পারা । বিশেষ অর্থে সাক্ষরতা বলতে বোঝায় লিখতে পারা , সংবাদপত্র ও বই পড়তে পারা ও গণিতের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা ।
সাক্ষরতা কর্মসূচির লক্ষ্য : জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল ১৯৯০ সালের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের ৩০ মিলিয়ন ব্যক্তিকে এবং ১৯৯৫ সালের মধ্যে আরও ৫০ মিলিয়ন ব্যক্তিকে কার্যকরী সাক্ষর করা । কর্মসূচির অন্যান্য লক্ষগুলি নিম্নরূপ—
- শিক্ষা থেকে বঞ্ছিত থাকার কারণ সম্পর্কে সচেতন করা ।
- সাক্ষরতা ও গাণিতিক প্রক্রিয়া অর্জনে আত্মবিশ্বাস অর্জন করা ।
- আর্থিক অবস্থা ও সাধারণভাবে সচ্ছল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন ও এব্যাপারে সচেতন হওয়া ।
- উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে যোগদানের মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নয়ন ।
- জাতীয় সংহতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং নারীজাতির প্রতি ন্যায়বিচার ও ক্ষুদ্র পরিবারের মতো বিষয়ে সচেতনতা মূল্যবোধ গড়ে তোলা ।
- জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচি কী ? কীভাবে জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচির মূল্যায়ন করা হয় ?
Ans: স্বাধীন ভারতে রাষ্ট্রনেতারা বুঝতে পারেন সাক্ষরতা ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা , সামাজিক ও জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয় । ফলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সাক্ষরতা প্রসারে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে । এই কর্মসূচির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় সাক্ষরতা কর্মসূচি ।
সাক্ষরতা কর্মসূচির মূল্যায়ন : পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের সাক্ষরতা কর্মসূচির মূল্যায়নের জন্য একটি সমীক্ষা করে । ঐ সমীক্ষায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ চিত্র ধরা পড়েছে । যেমন— 1. এরাজ্যের এক – তৃতীয়াংশ জনগণ নিরক্ষর । 2. রাজ্যের ৬৫ শতাংশ বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই ।
- রাজ্যের ১৬ শতাংশ বিদ্যালয়ে কোনো পরিকাঠামো নেই ।
- এ রাজ্যে ১৬৮ টি গ্রামে কোনো সাক্ষর মহিলা নেই ।
- রাজ্যে ৯৫ শতাংশ বিদ্যালয়ে বালিকাদের পৃথক শৌচাগার নেই ।
- পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩০ শতাংশ নিরক্ষর স্ত্রীলোক বাস করে ।
- প্রায় ৩১ শতাংশ বিদ্যালয়ে স্কুলছুটের সংখ্যা বেশি ।
- একত্রে বসবাসের শিক্ষা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো ।
Ans: সমাজে একে অন্যের সঙ্গে জোট বেঁধে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পাশাপাশি বসবাসই অন্য অর্থে একত্রে বসবাসের শিক্ষা বলে পরিচিত । বিশ্বায়নের যুগে পৃথিবীটাই এখন একটি ‘ গ্লোবাল ভিলেজ ’ – এ পরিণত হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে মানুষের মন থেকে সম্প্রদায় ও জাতি ভেদে অন্যের প্রতি দ্বেষ , হিংসা ও ক্ষুদ্রতার মানসিকতা সরিয়ে একসূত্রে সংহত করতে শেখায় এধরনের শিক্ষা । সভ্যতার অগ্রগতির কারণে এধরনের জোটবদ্ধ মানসিকতা না প্রসারিত হলে মানবিকতার অবক্ষয়ের কারণে বাড়বে গৃহযুদ্ধ । দেখা দেবে । সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও অসুস্থ প্রতিযোগিতা । প্রত্যেক ভারতীয়ের মধ্যে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ‘ এই মানসিকতার সঞ্চার করতে হবে । কেননা এর অভাব ঘটেছে বলেই বাড়ছে নানাবিধ সংকট ।
- জানার জন্য শেখা ‘ বলতে কী বোঝো ?
Ans: আমরা কেন জানব– এর উত্তরে বলা যায় , মানুষকে তার চারপাশের জগৎটাকে চেনার জন্য জানতে হবে , শিখতে হবে । আবার জানার জন্য শিখতে গিয়ে এক ধরনের আনন্দ পাওয়া যায় , যা মেলে উপলব্ধি ( Understandig ) জ্ঞান ( Knowledge ) এবং আবিষ্কার ( Discovery ) থেকে । জ্ঞানের ক্ষেত্র প্রসারিত হলে পরিবেশের উপাদানগুলিকেও নতুন করে চেনা যায় ।
এই পৃথিবীর সব কিছুই জানতে হবে , এটা সত্যি নয় । জ্ঞানের রাজ্যে Specialisation বা বিশেষীকরণ প্রয়োজন । তার মানে এই নয় যে , সাধারণ শিক্ষাকে অবহেলা করা হবে । UNESCO- র প্রতিবেদনে তাই বলা হয়েছে ” A truly educated person now a days need a broad general education and the opportunity to study a small number of Subjects in depth . ” “ আজকের যুগে একজন যথার্থ শিক্ষিত ব্যক্তিকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি শুধু গুটিকয়েক বিষয়কে গভীরভাবে অনুশীলন করতে হবে । ”
কী প্রক্রিয়ায় মনঃসংযোগ , স্মরণদক্ষতা এবং চিন্তন দক্ষতা বাড়িয়ে শিক্ষালাভ করা যায় তাকেই বলে ‘ জানার জন্য শিখন ‘ । এই সমস্ত ক্ষমতার উন্নতি ঘটানো যায় খেলাধুলা , ভ্রমণ ও ব্যবহারিক বিজ্ঞানের নানা কাজ অনুশীলনের মাধ্যমে ।
- জ্যাক ডেলরের মতানুযায়ী শিক্ষার চারটি স্তর বা স্তম্ভ আলোচনা করো ।
অথবা , শিক্ষার আধুনিক উদ্দেশ্যগুলি কী ?
Ans: শিক্ষার চারটি স্তর : ১৯৯৭ সালে ফরাসি শিক্ষাবিদ জ্যাক ডেলর ( Jacques Delore ) – এর নেতৃত্বে ইউনেস্কোর ( UNESCO ) উদ্যোগে যে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষার উপর প্রকাশিত হয় • Learning : The treasure within . ‘ । এই প্রতিবেদনে শিক্ষার চারটি উদ্দেশ্য বা শিখনের চারটি স্তর উল্লেখ করা হয় ।
চারটি স্তর বা স্তম্ভ :
- জানার জন্য শিক্ষা : জানার জন্য শিক্ষা হলো সেই শিখন প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীকে অজানাকে জানতে শেখায় । শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য জ্ঞান আহরণ করা বা অজানাকে জানা । জ্ঞান হলো শক্তি যা ব্যক্তিকে দৃঢ় এবং সৎ চরিত্রের অধিকারী করে তোলে । জ্ঞানের আরেক নাম উপলব্ধি ।
- কর্মদক্ষতা অর্জনের জন্য শিক্ষা : শিক্ষার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হলো কর্মের জন্য শিক্ষা । বর্তমানে শিক্ষা পাঠক্রমে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে , যার দ্বারা শিক্ষার্থীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সে বিদ্যালয় জীবন থেকেই কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় ।
- একত্রে বসবাসের শিক্ষা : মানুষে মানুষে পরস্পর মিলেমিশে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে শিক্ষা । বিশ্বের সমস্ত মানুষকে একসূত্রে বাঁধার আদর্শে গঠিত এই শিক্ষাকে বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও রূপ দেওয়া হয়েছে ।
- মানুষ তৈরির জন্য শিক্ষা : মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলতে বোঝায় সেই শিক্ষা যার মাধ্যমে বিবেক , মনুষ্যত্ব , নৈতিকতা , পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটে । শিক্ষার মধ্য দিয়ে এমন একজন মানুষ তৈরি করতে হবে যে দৈহিক , মানসিক , সামাজিক , আধ্যাত্মিক , নৈতিক গুণাবলিতে সমৃদ্ধ । এই শিক্ষার মূল কথা হলো মূল্যবোধ ’ গড়ে তোলা । সে হবে সমাজের একজন সুযোগ্য নাগরিক ।
- কর্মের জন্য শিক্ষা বলতে কী বোঝো ? এই ধরনের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো ।
Ans: কর্মের জন্য শিক্ষা : সম্প্রতি বিদ্যালয়ের পাঠক্রমে এমন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যার দ্বারা শিক্ষার্থীর একদিকে কর্মদক্ষতার বিকাশ ঘটবে , অপরদিকে সে ছাত্রজীবন থেকেই কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে । কর্মের শিক্ষার অর্থ শুধুমাত্র কাজ করা নয় , কাজে উৎকর্ষ আনা এবং কাজে দক্ষতা অর্জন করা । শিক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থী হয়ে ওঠে কর্মক্ষম ও কর্মদক্ষ ব্যক্তি । এর ফলে তার মধ্যে আসে সামাজিক সচেতনতা এবং সেবামূলক দৃষ্টিভঙ্গি । কর্মদক্ষতা অর্জনের দ্বারা শিক্ষার্থী হয়ে ওঠে পরিশ্রমী , দৃঢ়চেতনাসম্পন্ন ও শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং একজন সুযোগ্য নাগরিক ।
কর্মের জন্য শিক্ষাকে চারটি আলাদা দিক থেকে ব্যাখ্যা করা যায় । যেমন—
- দৈহিক বিকাশের শিক্ষা : এর প্রধান উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশ ও সুস্বাস্থ্য গঠনে সাহায্য করা ।
- বৌদ্ধিক কর্মের শিক্ষা : এই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর নিজস্ব চিন্তার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা ।
- সৃজনশীল কর্মের শিক্ষা : এই শিক্ষার লক্ষ্য শিক্ষার্থীর মধ্যে নানা ধরনের সৃজনাত্মক কাজের প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে সৃজনীশক্তির বিকাশ ঘটানো ।
- সামাজিক কর্মের শিক্ষা : এই শিক্ষার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর সামাজিক চেতনার বিকাশ ঘটানো । তার মন থেকে কুসংস্কার , অপসংস্কৃতি দূর করা । এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজ তথা নিরক্ষরতা দূরীকরণ , রক্তদান প্রভৃতিতে উদ্বুদ্ধ করা ।
কর্মের জন্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা / উপযোগিতা : বর্তমানে প্রত্যেক নাগরিক , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে তৎপর হয় । কাজ করার জন্য শিক্ষা কীভাবে শিক্ষার্থীকে এগিয়ে দেয় নীচে তা আলোচনা হলো –
- কর্মজগৎ সম্পর্কে অবহিত করা : কর্মের জন্য শিক্ষা শিক্ষার্থীকে সামাজিক স্তর থেকে শুরু করে জাতীয় স্তর এমনকী আন্তর্জাতিক স্তরের কর্মজগৎ সম্পর্কেও অবহিত করে ।
- সামাজিক সমস্যা সমাধানে আগ্রহী করে : কর্মের জন্য শিক্ষা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করে , অন্যদিকে এই সব সমস্যা সমাধানে অগ্রসর হতে অনুপ্রেরণা জোগায় ।
- সৃজনশীল গুণের চর্চা : এধরনের শিক্ষা শিক্ষার্থীকে কর্মদক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নতুন কিছু সৃষ্টি করতে অনুপ্রাণিত করে । এই ধরনের শিক্ষা বিভিন্ন শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত সৃজনশীল গুণের বিকাশ ঘটায় ।